পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৬-[২২] আবুদ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নামবাসীদের ভীষণ ক্ষুধায় লিপ্ত করা হবে এবং ক্ষুধার কষ্ট সেই ’আযাবের সমান হবে, যা তারা পূর্ব হতে জাহান্নামে ভোগ করছিল। তারা প্রার্থনা করবে। এর প্রেক্ষিতে তাদেরকে যরী’ নামক এক প্রকার কাঁটাযুক্ত দুর্গন্ধময় খাদ্য দেয়া হবে। তা তাদেরকে তৃপ্ত করবে না এবং ক্ষুধা নিবারণ করবে না। অতঃপর পুনরায় খাদ্যের জন্য প্রার্থনা করবে, এবার এমন খাদ্য দেয়া হবে, যা তাদের গলায় আটকে যাবে। তখন তাদের দুনিয়ার ঐ কথাটি স্মরণে আসবে যে, এভাবে গলায় কোন খাদ্য আটকে গেলে তখন পানি পান করে তাকে নীচের দিকে ঢুকানো হত, অতএব তারা পানির জন্য ফরিয়াদ করবে, তখন তপ্ত গরম পানি লোহার কড়া দ্বারা উঠিয়ে কাছে ধরা হবে, যখন তা তাদের মুখের কাছাকাছি করা হবে, তখন তাদের মুখের গোস্ত ভাজা-পোড়া হয়ে যাবে, আর যখনই সে পানি তাদের পেটের ভিতরে ঢুকবে, তা তাদের পেটের ভিতরে যা কিছু আছে, তা খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলবে। এবার জাহান্নামীগণ একে অপরে বলবে, জাহান্নামের রক্ষীদেরকে আহ্বান কর; (যেন আমাদের শাস্তি হ্রাস করা হয়) তখন রক্ষীগণ বলবেন, তোমাদের কাছে কি আল্লাহর রাসূল (সা.) স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ নিয়ে উপস্থিত হননি? তারা বলবে, হ্যা, এসেছিলেন।
তখন প্রহরীরা বলবেন, তোমাদের প্রার্থনা তোমরা নিজেরাই কর। অথচ কাফিরদের প্রার্থনা অর্থহীন (কবুল করবেন না) তিনি (সা.) বলেন, এবার জাহান্নামীগণ বলাবলি করবে, (জাহান্নামের দারোগা) মালিককে ডাক। তখন তারা বলবে, হে মালিক! তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের কাছে এই আবেদন কর, তিনি যেন আমাদেরকে মৃত্যু দান করেন। উত্তরে মালিক বলবেন, তোমরা সর্বদার জন্য এখানে এ অবস্থাতেই থাকবে। অধস্তন রাবী আমাশ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমাকে বর্ণনা করা হয়েছে, জাহান্নামীদের আহ্বান বা ফরিয়াদ আর মালিকের উত্তরের মাঝখানে একহাজার বছর অতিবাহিত হবে। তিনি (সা.) বললেন, জাহান্নামীগণ সর্বদিক হতে নিরাশ হয়ে অতঃপর তারা পরস্পরে বলবে, এবার তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে সরাসরি ফরিয়াদ কর। তোমাদের রবের চেয়ে উত্তম আর কেউ নেই। তখন তারা বলবে, হে আমাদের পরোয়ারদিগার! আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের ওপর প্রবল হয়ে গেছে, ফলে আমরা গোমরাহ সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছি। হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে এ জাহান্নাম হতে বের করে দাও। এরপরও যদি আমরা আবার অবাধ্যতায় লিপ্ত হই, তাহলে আমরাই হব নিজেদের উপর অত্যাচারী।
তিনি (সা.) বলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে উত্তর দেবেন, (হে হতভাগার দল!) দূর হও, জাহান্নামেই পড়ে থাক, তোমরা আমার সাথে আর কথা বলবে না। তিনি (সা.) বলেন, এ সময় তারা আল্লাহ তা’আলার সর্বপ্রকারের কল্যাণ হতে নিরাশ হয়ে পড়বে এবং এরপর হতে তারা (জাহান্নামের মধ্যে থেকে) বিকটভাবে চিৎকার ও হা-হুতাশ এবং নিজেদের ওপর ধিক্কার করতে থাকবে। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, লোকেরা এ হাদীসটি মারফু’রূপে বর্ণনা করেন না। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالنار وَأَهْلهَا)
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُلْقَى عَلَى أَهْلِ النَّارِ الْجُوعُ فَيَعْدِلُ مَا هُمْ فِيهِ مِنَ الْعَذَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ مِنْ ضَرِيعٍ لَا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِي مِنْ جُوعٍ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالطَّعَامِ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ ذِي غُصَّةٍ فَيَذْكُرُونَ أَنَّهُمْ كَانُوا يُجِيزُونَ الْغُصَصَ فِي الدُّنْيَا بِالشَّرَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالشَّرَابِ فَيُرْفَعُ إِلَيْهِمُ الْحَمِيمُ بِكَلَالِيبِ الْحَدِيدِ فَإِذَا دَنَتْ مِنْ وُجُوهِهِمْ شَوَتْ وُجُوهَهُمْ فَإِذَا دَخَلَتْ بُطُونَهُمْ قطعتْ مَا فِي بطونِهم فيقولونَ: ادْعوا خَزَنَةَ جهنمَ فيقولونَ: أَلمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ؟ قَالُوا: بَلَى. قَالُوا: فَادْعُوا وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ قَالَ: فيقولونَ: ادْعوا مَالِكًا فيقولونَ: يَا مالكُ ليَقْضِ علَينا ربُّكَ قَالَ: «فيُجيبُهم إِنَّكم ماكِثونَ» . قَالَ الْأَعْمَشُ: نُبِّئْتُ أَنَّ بَيْنَ دُعَائِهِمْ وَإِجَابَةِ مَالِكٍ إِيَّاهُمْ أَلْفَ عَامٍ. قَالَ: فَيَقُولُونَ: ادْعُوا رَبَّكُمْ فَلَا أَحَدَ خَيْرٌ مِنْ رَبِّكُمْ فَيَقُولُونَ: رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَالِّينَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَالِمُونَ قَالَ: فيُجيبُهم: اخْسَؤوا فِيهَا وَلَا تُكلمونِ قَالَ: «فَعِنْدَ ذَلِكَ يَئِسُوا مِنْ كُلِّ خَيْرٍ وَعِنْدَ ذَلِكَ يَأْخُذُونَ فِي الزَّفِيرِ وَالْحَسْرَةِ وَالْوَيْلِ» . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: وَالنَّاسُ لَا يرفعونَ هَذَا الحديثَ. رَوَاهُ الترمذيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2586) * الاعمش مدلس و عنعن و قال احمد :’’ الاعمش لم یسمع من شمر بن عطیۃ ‘‘ (المراسیل لابن ابی حاتم ص 82) ۔
(ضعيفٌ)
ব্যাখ্যা: (فَيَعْدِلُ مَا هُمْ فِيهِ) অর্থাৎ তাদের ওপর এমন ক্ষুধা লাগিয়ে দেয়া হবে যে, তারা আর সমস্ত শাস্তি থেকে এই ‘আযাবকেই অধিক কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক মনে করবে বা অন্য সমস্ত শাস্তির সমান মনে করবে শুধু ক্ষুধার শাস্তিটাকেই।
(ضَرِيعٍ) এটা হিজাযের একটি উদ্ভিত যার কাটা রয়েছে এবং কোন প্রাণী এর নিকটে যায় না তার দুর্গন্ধের কারণে আর যদি কোন প্রাণী তা ভক্ষণ করে তাহলে মারা যায়। এখানে উদ্দেশ্য হলো আগুনের কাটা যা এক প্রকার তিক্ত গাছের রসের থেকেও তিক্ত এবং মৃত প্রাণী থেকেও দুর্গন্ধ এবং আগুনের চেয়েও গরম।
(ذِي غُصَّةٍ) যা গলার মধ্যে আটকে যাবে এবং গিলতে পারবে না হাড্ডি বা অন্য কোন কিছুর কারণে যা উপরেও উঠবে না নিচেও নামবে না। (غُصَّة) এটা এক বচন এর বহুবচন (غُصَص) অর্থ হলো কাঁটা।
(كَلَالِيبِ)এটা বহুবচন একবচন হলো (كَلَاب) অর্থ লোহার বাঁকা পেরেক।
(الزَّفِيرِ وَالْحَسْرَةِ وَالْوَيْلِ)বলা হয় নিজেকে জালিয়ে দেয়া কঠোরতার কারণে। আর (الْحَسْرَةِ) হলো লজ্জা (الْوَيْلِ) হলো ধ্বংস ও শাস্তির কঠোরতা। কেউ বলেছেন, এটা জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)