পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৯০-[৭] নাবী (সা.) -এর জনৈক সাহাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা এক মজলিসে বসা ছিলাম, এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের মধ্যে এ অবস্থায় আগমন করলেন যে, তার মাথায় (সদ্য গোসলের) পানির চিহ্ন ছিল। আমরা বললাম : হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনাকে প্রফুল্ল হৃদয়ের দেখছি। তিনি (সা.) বললেন : হ্যাঁ, ঠিকই। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকজন মাল-সম্পদের আলোচনায় লিপ্ত হল, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন : যে ব্যক্তি মহাপরাক্রমশালী আল্লাহকে ভয় করে তার জন্য সম্পদশালী হওয়াতে কোন ত্রুটি নেই। মূলত মুত্তাক্বীদের জন্য সুস্থ হওয়া সম্পদশালী হওয়া অপেক্ষা অনেক উত্তম এবং মানসিক প্রশান্তি আল্লাহ তা’আলার নি’আমাতসমূহের অন্যতম একটি নি’আমাত। (আহমাদ)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
عَنْ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كُنَّا فِي مَجْلِسٍ فَطَلَعَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَى رَأْسِهِ أَثَرُ مَاءٍ فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ نَرَاكَ طَيِّبَ النَّفْسِ. قَالَ: أَجَلْ. قَالَ: ثُمَّ خَاضَ الْقَوْمُ فِي ذِكْرِ الْغِنَى فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا بَأْسَ بِالْغِنَى لِمَنِ اتَّقَى اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَالصِّحَّةُ لِمَنِ اتَّقَى خَيْرٌ مِنَ الْغِنَى وَطِيبُ النَّفس من النَّعيم» رَوَاهُ أَحْمد
اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (5 / 372 ح 23545) [و ابن ماجہ (2141)] ۔
ব্যাখ্যা : (نَرَاكَ طَيِّبَ النَّفْسِ) আপনাকে আনন্দিত দেখছি অর্থাৎ আপনার চেহারায় আনন্দ ও খুশির ঝলক যেন চকচক করে প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
(قَالَ: ثُمَّ خَاضَ الْقَوْمُ فِي ذِكْرِ الْغِنَى) বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকজন ধন-সম্পদ সম্পর্কে বিভিন্ন খারাপ মন্তব্য ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা শুরু করল।
(فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا بَأْسَ بِالْغِنَى لِمَنِ اتَّقَى اللَّهَ) অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “দরিদ্রতাই উত্তম তবে সম্পদশালী হওয়া দোষণীয় নয়, যে তাক্বওয়া অবলম্বন করবে তার জন্য।”
(وَالصِّحَّةُ) তথা দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তির সম্পদশালী হওয়া দোষণীয় নয়, যে তাকওয়া অবলম্বন করবে। অথবা ধন-সম্পদ থেকে বেঁচে থাকার পরও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া দোষণীয় নয়, বরং এটাই উত্তম ঐ ধনী লোকের চেয়ে যে পরকালে হিসাব ও শাস্তির সম্মুখীন হবে।
(وَطِيبُ النَّفس من النَّعيم) স্বচ্ছল ও অসচ্ছল সর্বাবস্থায় ধৈর্যধারণ করে কৃতজ্ঞতায় হাসিখুশি থাকা নি'আমতের অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ জান্নাতুন্ নাঈমের অধিকারী হওয়া। যেমনটি আল্লাহ তা'আলা বলেন, (وَ لِمَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ جَنَّتٰنِ), “আর যে তার প্রতিপালকের সামনে হাজির হওয়ার ভয় রাখে তার জন্য আছে দুটো বাগান”- (সূরাহ্ আর রহমান ৫৫ : ৪৬)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৯১-[৮] সুফইয়ান আস্ সাওরী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, অতীতকালে ধন-সম্পদকে অপছন্দ মনে করা হত। কিন্তু আজকাল ধন-সম্পদ হলো মু’মিন ব্যক্তির ঢাল। যদি এ দীনারসমূহ না থাকত এ সমস্ত রাজা-বাদশাহগণ আমাদেরকে হাত মোছার রুমাল বানিয়ে ফেলত (ঘৃণা ও তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখত)। তিনি আরো বলেন : যার হাতে এ ধন-সম্পদের কিছু পরিমাণ আছে, সে যেন অবশ্যই তার সঠিক ব্যবহার করে। কেননা, বর্তমান সময় যদি কেউ অভাবে পতিত হয়, সে ব্যক্তি সর্বপ্রথম স্বীয় দীনের বিনিময়ে দুনিয়া অর্জন করবে। সুফইয়ান আরো বলেছেন : হালালভাবে অর্জিত মালের মধ্যে অপচয়ের অবকাশ নেই। (শারহুস্ সুন্নাহ্)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
وَعَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ قَالَ كَانَ الْمَالُ فِيمَا مَضَى يُكْرَهُ فَأَمَّا الْيَوْمَ فَهُوَ تُرْسُ الْمُؤْمِنِ وَقَالَ لَوْلَا هَذِهِ الدَّنَانِيرُ لَتَمَنْدَلَ بِنَا هَؤُلَاءِ الْمُلُوكُ وَقَالَ مَنْ كَانَ فِي يَدِهِ مِنْ هَذِهِ شَيْءٌ فَلْيُصْلِحْهُ فَإِنَّهُ زَمَانٌ إِنِ احْتَاجَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ يَبْذُلُ دِينَهُ وَقَالَ: الْحَلَالُ لايحتمل السَّرف. رَوَاهُ فِي شرح السّنة
ضعیف مردود ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (14 / 291 بعد 4098 بدون سند ولم اجدہ مسندًا ۔ وقولہ من اکن المال الی ترس المومن ، رواہ ابو نعیم فی حلیۃ الاولیاء (6 / 381) و سندہ ضعیف جدًا ۔ فیہ داود (رواد) بن الجراح وھو متروک و شطر الثانی رواہ ابو نعیم ایضًا فی الحلیہ (6 / 381) و سندہ ضعیف فیہ جماعۃ لم اجد لھم توثیقًا یعتمد علیہ) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (تُرْسُ الْمُؤْمِنِ) তথা (সম্পদ) মুমিনের ঢালস্বরূপ। কারণ বৈধ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তি হারাম ও সন্দেহযুক্ত সম্পদে পতিত হওয়া থেকে বেঁচে থাকতে পারে। আর অত্যাচারী ও যুলুমের সাহচর্য থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়। অথবা সর্বসাধারণের নিকট নিজেকে সম্পদের বহিঃপ্রকাশ করা থেকে লুকিয়ে রাখতে পারে।
(لَوْلَا هَذِهِ الدَّنَانِيرُ لَتَمَنْدَلَ بِنَا هَؤُلَاءِ الْمُلُوكُ) যদি আমাদের হাতে কোন টাকা-পয়সা না থাকত তাহলে রাজা-বাদশাহরা আমাদেরকে তাদের পকেটের রুমাল বানাত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আমাদেরকে অপদস্থ করত অথবা তাদের মন্দ পরিকল্পনার সত্যায়নকারী হিসেবে ব্যবহার করত। তাই বলা হয়েছে, আল্লাহর নিকট হিসাবের ভয়ে তা পরিত্যাগ করার চেয়ে উত্তম হলো মানুষের নিকট হাত না পাতা। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়া উত্তম, তাকে ছাড়া অন্যের প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে।
(لْحَلَالُ لايحتمل السَّرف) হালাল সম্পদ কম হওয়ার কারণে বেশি করে খরচ করার অবকাশ নেই। ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তার দ্বারা দু ধরনের উদ্দেশ্য হতে পারে :
এক : হালাল কম হওয়ার দরুন অপচয় করার সম্ভাবনা রাখে না।
দুই : হালাল জিনিস বেশি করে খরচ করা উচিত নয়। কেননা পরবর্তীতে অন্যের নিকট হাত পাতার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
মূলকথা হলো হালাল জিনিস কম হোক বা বেশি হোক প্রয়োজন ব্যতিরেকে অপচয় করা ঠিক নয়। যেমন সুনাম অর্জন বা লোক দেখানো উদ্দেশে বেশি করে খাদ্য দান করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৯২-[৯] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন একজন ঘোষণাকারী এ ঘোষণা করবেন, ষাট বছর বয়সপ্রাপ্ত লোকেরা কোথায়? এটা বয়সের এমন একটি সীমা, যার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা (কুরআন মাজীদে) বলেছেন : “আমরা কি তোমাদেরকে এমন বয়স দান করিনি যাতে কোন উপদেশ গ্রহণকারী উপদেশ গ্রহণ করতে পারে? অথচ তোমাদের কাছে ভীতি প্রদর্শনকারী এসেছে “এখন তোমরা শাস্তি আস্বাদন করো, তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই”। (বায়হাক্বী’র শুআবুল ঈমান)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُنَادِي مُنَادٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: أَيْنَ أَبْنَاءُ السِتِّينَ؟ وَهُوَ الْعُمُرُ الَّذِي قَالَ اللَّهُ تَعَالَى [أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تذكَّرَ وجاءكُم النذير] رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10254 ، نسخۃ محققۃ : 9773) * فیہ ابراھیم بن الفضل المخزومی : متروک و ابوبکر بن ابی دارم : کذاب و لکنہ توبع ، انظر المعجم الکبیر للطبرانی (11 / 177 ۔ 178 ح 11415) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (أَيْنَ أَبْنَاءُ السِتِّينَ؟) ষাট বছর বয়সের অধিকারী ব্যক্তিরা কোথায়? আর এই বয়স সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন : (… اَوَ لَمۡ نُعَمِّرۡکُمۡ مَّا یَتَذَکَّرُ فِیۡهِ مَنۡ تَذَکَّرَ ….)“...তোমাদেরকে এই পরিমাণ বয়স দান করেছি যাতে তোমাদের মধ্যে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে...।” (সূরাহ্ আল ফা-ত্বির ৩৫ : ৩৭)
(..وَ جَآءَکُمُ النَّذِیۡرُ ..)“...আর তোমাদের কাছে এসেছে সতর্ককারী..."- (সূরাহ্ আল ফা-ত্বির ৩৫ : ৩৭)। এখানে সতর্ককারী বলতে বুঝানো হয়েছে- বার্ধক্যের চুলপাকা অথবা আল কুরআন অথবা রসূল অথবা মৃত্যু অথবা উল্লেখিত সবগুলোই উদ্দেশ্য। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৯৩-[১০] ’আবদুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার ’আহ্ গোত্রীয় তিন ব্যক্তি নাবী (সা.) -এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) (সাহাবায়ে কেরামদের উদ্দেশে) বললেন : তোমাদের মাঝে কে এদের দায়িত্ব নিতে পারে? ত্বলহাহ্ (রাঃ) বললেন : আমি। (শাদ্দাদ বলেন :) অতএব তারা ত্বলহাহ্-এর কাছে থাকতে লাগল, এরপর এক সময় নাবী (সা.) কোন এক অভিযানে একদল সৈন্য পাঠালেন, তখন তাদের একজন ঐ সেনাদলের সাথে বের হলো এবং যুদ্ধে শহীদ হয়ে গেল। অতঃপর নাবী (সা.) অন্য একটি সেনাদল পাঠালেন। এ দলের সাথেও দ্বিতীয় একজন বের হলো এবং সেও শহীদ হলো। এরপর (একদিন) তৃতীয়জন (স্বাভাবিক অবস্থায়) নিজ বিছানায় মৃত্যুবরণ করল। বর্ণনাকারী (ইবনু শাদ্দাদ) বলেন, ত্বলহাহ্ (রাঃ) বললেন : এরপর আমি এক সময় উক্ত তিন ব্যক্তিকে (স্বপ্নযোগে) জান্নাতের মধ্যে দেখতে পেলাম এবং এটাও দেখলাম যে, স্বীয় বিছানায় মৃত ব্যক্তিটি তাদের সামনে রয়েছে এবং দ্বিতীয় অভিযানে শহীদ ব্যক্তিটি রয়েছে তার পিছনে, আর এর পিছনে রয়েছে প্রথম ব্যক্তি। [ত্বলহাহ্ (রাঃ) বলেনঃ] তাদের এ ক্রমিক মানে আমার মনে একটি সন্দেহ জাগল। অতএব এ কথাটি আমি নাবী (সা.) -এর নিকট উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেন: কিসে তুমি আশ্চর্যান্বিত হলে? (জেনে রাখো!) যে ঈমানদার ইসলামের মধ্যে থেকে তাসবীহ, তাকবীর ও তাহলীল আদায় করার জন্য অতিরিক্ত বয়সের অবকাশ পেয়েছে এমন মু’মিন অপেক্ষা আল্লাহর নিকট অন্য কেউ উত্তম নয়। (আহমাদ)।
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
وَعَن عبدِ الله بنِ شدَّادٍ قَالَ إِنَّ نَفرا من بني عذرةثلاثة أَتَوُا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْلَمُوا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ يَكْفِينِيهِمْ؟» قَالَ طَلْحَةُ: أَنَا. فَكَانُوا عِنْدَهُ فَبَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْثًا فَخَرَجَ فِيهِ أَحَدُهُمْ فَاسْتُشْهِدَ ثُمَّ بَعَثَ بَعْثًا فَخَرَجَ فِيهِ الْآخَرُ فَاسْتُشْهِدَ ثُمَّ مَاتَ الثَّالِثُ عَلَى فِرَاشِهِ. قَالَ: قَالَ طَلْحَةُ: فَرَأَيْتُ هَؤُلَاءِ الثَّلَاثَةَ فِي الْجَنَّةِ وَرَأَيْتُ الْمَيِّتَ عَلَى فِرَاشِهِ أَمَامَهُمْ وَالَّذِي اسْتُشْهِدَ آخِرًا يَلِيهِ وَأَوَّلَهُمْ يَلِيهِ فَدَخَلَنِي مِنْ ذَلِكَ فَذَكَرْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: «وَمَا أَنْكَرْتَ مِنْ ذَلِكَ؟ لَيْسَ أَحَدٌ أَفْضَلَ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ مُؤْمِنٍ يُعَمَّرُ فِي الْإِسْلَام لتسبيحه وتكبيره وتهليله»
سندہ ضعیف ، رواہ احمد (1 / 163 ح 1401) * السند مرسل ولہ طریق آخر عند البزار (954 کشف الاستار) و ابی یعلی (634) و سندہ ضعیف ۔
ব্যাখ্যা : (فَرَأَيْتُ هَؤُلَاءِ الثَّلَاثَةَ فِي الْجَنَّةِ وَرَأَيْتُ الْمَيِّتَ عَلَى فِرَاشِهِ أَمَامَهُمْ) আবূ ত্বলহাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি স্বপ্নে ঐ তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে দেখলাম। আর যে বিনা যুদ্ধে বিছানায় মারা গিয়েছে তাকে দেখলাম সবার সামনে। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মূলত এ কথা বলা উচিত ছিল : “তাদের দু'জনের সামনে দেখলাম, কিন্তু তা না বলে তাদের সকলের সামনে দেখলাম” দ্বারা এ কথার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, (أَقَلَّ الْجَلَمْع اشْنَانِ) তথা বহুবচনের সর্বনিম্ন সংখ্যা হচ্ছে দুই।
(فَدَخَلَنِي مِنْ ذَلِكَ) তাদের তিনজনের মধ্যে যিনি পরে মারা গেছেন, তিনি সবার আগে, তারপর ২য় ব্যক্তি, তার পর ১ম ব্যক্তি। এরূপ ধারাবাহিকতা দেখে আমার মনে প্রশ্ন দেখা দিল। তাই এ ব্যাপারটি রাসূল (সা.) -এর নিকট পেশ করি। তিনি আমার কথা শুনে বললেন, তুমি এখানে কোন্ বিষয়টিকে অপছন্দ করছ?
(لَيْسَ أَحَدٌ أَفْضَلَ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ مُؤْمِنٍ يُعَمَّرُ فِي الْإِسْلَام) আল্লাহর নিকট ইসলামের উপর অধিক বয়সপ্রাপ্ত মু'মিনের চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। কেননা যে বেশি বয়স পেয়েছে সে তাসবীহ, তাকবীর ও তাহলীলসহ যাবতীয় মৌখিক ও শারীরিক ‘ইবাদাত বেশি পরিমাণে করতে সক্ষম হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা
৫২৯৪-[১১] মুহাম্মাদ ইবনু আবূ ’আমীরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তিনি বলেছেন: যে বান্দা জন্মদিন হতে আল্লাহর আনুগত্যে ও বন্দেগীতে নতশির থেকে বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুবরণ করে, সে কিয়ামতের দিন তার কৃত ’ইবাদত বন্দেগীকে খুবই নগণ্য মনে করবে এবং এ আকাঙ্ক্ষা পোষণ করবে যদি তাকে পুনরায় দুনিয়াতে ফেরত পাঠানো হয় তবে সে প্রতিদান ও সাওয়াবকে আরো বৃদ্ধি করতে সক্ষম হত। (আহমাদ)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)
وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي عَمِيرَةَ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ عَبْدًا لَوْ خَرَّ عَلَى وَجْهِهِ مِنْ يَوْمَ وُلِدَ إِلَى أَنْ يَمُوتَ هَرَمًا فِي طَاعَةِ اللَّهِ لَحَقَّرَهُ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ وَلَوَدَّ أَنَّهُ رُدَّ إِلَى الدُّنْيَا كَيْمَا يَزْدَادَ من الْأجر والثَّواب رَوَاهُمَا أَحْمد
اسنادہ صحیح ، رواہ احمد (4 / 185 ح 17800) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : (خَرَّ) পতিত হওয়া, মাথা অবনমিত করা, (هَرَمً) অতিবৃদ্ধ, (حَقَّرَهٗ) তাকে তুচ্ছ মনে করবে। অর্থাৎ সারা জীবনের ‘আমাকে তার নিকট খুবই নগণ্য বলে মনে হবে।
(لَوَدَّ) অবশ্যই কামনা করবে, ভালো মনে করবে। (كَيْمَا يَزْدَادَ) অর্থাৎ যাতে সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘আমলের প্রতিদান আরো বাড়িয়ে নিতে পারে। অধিক মর্যাদার অধিকারী হওয়ার জন্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ)