পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১১৬-[১৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ মহীয়ান ও গরীয়ানের দৃষ্টিতে কোন বান্দা রাগের ঢোকের চেয়ে উত্তম ঢোক গিলে না, যা সে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য গিলে থাকে। (আহমাদ)[1]
عَنِ ابْنِ
عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا تَجَرَّعَ عَبْدٌ أَفْضَلَ عِنْدَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ جُرْعَةِ غَيْظٍ يكظمها اتبغاء وَجه الله تَعَالَى» . رَوَاهُ أَحْمد
ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীসে মানুষের রাগ এবং তার তীব্রতাকে নিয়ন্ত্রণ করার ফাযীলাত বর্ণনা করা হয়েছে। কোন বান্দা যদি রাগকে মনের সাথে চেপে রাখে এবং তা প্রকাশ না করে, ফলে মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে মনে মনে রাগ হজম করার কারণে আল্লাহর পক্ষ হতে তার জন্য অনেক বড় পুরস্কার বরাদ্দ থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১১৭-[১৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহ তা’আলার বাণী- اِدْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ (অর্থাৎ- ’’তুমি খারাপকে ভালো দ্বারা দমন করো...’’- (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩ : ৯৬)-এর ব্যাখ্যায় বলেনঃ রাগের সময় ধৈর্যধারণ করা এবং বিপদের সময় ক্ষমা করাই এর তাৎপর্য। যখন মানুষ এরূপ করে, তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে বিপদাপদ হতে রক্ষা করেন এবং শত্রুদেরকে তাদের জন্য নত ও অনুগত করে দেন, যেন তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। (ইমাম বুখারী হাদীসটি বিনা সনদে বর্ণনা করেন।)[1]
وَعَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: (ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أحسن)
قَالَ: الصَّبْرُ عِنْدَ الْغَضَبِ وَالْعَفْوُ عِنْدَ الْإِسَاءَةِ فَإِذَا فَعَلُوا عَصَمَهُمُ اللَّهُ وَخَضَعَ لَهُمْ عَدُوُّهُمْ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ قَرِيبٌ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ تَعْلِيقًا
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১১৮-[১৫] বাহয ইবনু হাকীম (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাগ ঈমানকে বিনষ্ট করে দেয়, যেমন সাবির (গাছের তিক্ত আঠা) মধুকে বিনষ্ট করে দেয়।[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘মুখয়য়িস (مخيس)’’ নামের বর্ণনাকারী মাজহূল বা অপরিচিত। আর হিশাম ইবনু ‘আম্মার-এর মধ্যে দুর্বলতা আছে। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ১৯১৮।
وَعَنْ بَهْزِ
بْنِ حَكِيمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْغَضَبَ لَيُفْسِدُ الْإِيمَانَ كَمَا يُفْسِدُ الصبرُ الْعَسَل»
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১১৯-[১৬] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন তিনি মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা বিনয়ী হও। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তা’আলা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। সে নিজেকে নিজে ছোট মনে করে কিন্তু মানুষের চোখে খুবই মহান ও সম্মানিত হয়। যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তা’আলা তাকে হেয় করে দেন। সে মানুষের দৃষ্টিতে ছোট- অপাংক্তেয় এবং সে নিজেকে নিজে খুব বড় মনে করে। এমনকি সে শেষ পর্যন্ত মানুষের চোখে কুকুর ও শূকরের চেয়েও অধিক ঘৃণিত বলে বিবেচিত হয়।[1]
হাদীসটি জাল হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘সা‘ঈদ ইবনু সাল্লাম’’ নামের বর্ণনাকারী মিথ্যুক। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ১২৯৫, হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৭৭।
وَعَن عمر
قَالَ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ تَوَاضَعُوا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ تَوَاضَعَ لِلَّهِ رَفَعَهُ اللَّهُ فَهُوَ فِي نَفْسِهِ صَغِيرٌ وَفِي أَعْيُنِ النَّاسِ عَظِيمٌ وَمَنْ تَكَبَّرَ وَضَعَهُ اللَّهُ فَهُوَ فِي أَعْيُنِ النَّاسِ صَغِيرٌ وَفِي نَفْسِهِ كَبِيرٌ حَتَّى لَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِمْ مِنْ كَلْبٍ أَوْ خنزيرٍ»
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১২০-[১৭] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মূসা ইবনু ’ইমরান (আ.)আল্লাহ তা’আলার কাছে জিজ্ঞেস করলেন, হে রব্! তোমার বান্দাদের মধ্যে তোমার কাছে প্রিয়তম কে? আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষমতা থাকতেও যে ক্ষমা করে দেয়।[1]
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ مُوسَى بْنُ عِمْرَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: يَا رَبِّ مَنْ أَعَزُّ عِبَادِكَ عِنْدَكَ؟ قَالَ: مَنْ إِذَا قَدَرَ غَفَرَ
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১২১-[১৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের রসনাকে সংযত রাখে, আল্লাহ তা’আলা তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন। যে ব্যক্তি নিজের রাগকে দমন করে, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার ওপর থেকে শাস্তি থামিয়ে দেন। যে নিজের কৃত পাপের জন্য আল্লাহ তা’আলার দরবারে অজুহাত দেখায়, আল্লাহ তা’আলা তার অজুহাত কবুল করেন।[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘রবী‘ ইবনু সুলায়মান আল আযদী’’ নামের বর্ণনাকারী য‘ঈফ। দেখুন- সিলসিলাতুয্ য‘ঈফাহ্ ১৯১৬।
وَعَنْ أَنَسٍ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ خَزَنَ لِسَانَهُ سَتَرَ اللَّهُ عَوْرَتَهُ وَمَنْ كَفَّ غَضَبَهُ كَفَّ اللَّهُ عَنْهُ عَذَابَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنِ اعْتَذَرَ إِلَى الله قَبِلَ الله عذره»
পরিচ্ছেদঃ ২০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১২২-[১৯] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস পরিত্রাণকারী এবং তিনটি জিনিস ধ্বংসকারী। পরিত্রাণকারী জিনিসগুলো হল- ১. প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা, ২. সন্তুষ্ট ও অসন্তুষ্ট উভয় অবস্থায় উচিত কথা বলা, ৩. ধনী ও দরিদ্র উভয় অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। আর ধ্বংসকারী জিনিসগুলো হল- ১. প্রবৃত্তির অনুসারী হওয়া, ২. লোভ-লালসা করা, ৩. কোন ব্যক্তি নিজেকে নিজে সম্মানিত মনে করা। আর এ স্বভাবটিই সবচেয়ে খারাপ স্বভাব। (উপরিউক্ত পাঁচটি হাদীস বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমানে’’ বর্ণনা করেছেন।)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ وَثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ فَأَمَّا الْمُنْجِيَاتُ: فَتَقْوَى اللَّهِ فِي السِّرِّ والعلانيةِ والقولُ بالحقِّ فِي الرضى وَالسُّخْطِ وَالْقَصْدُ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ. وَأَمَّا الْمُهْلِكَاتُ: فَهَوًى مُتَّبَعٌ وَشُحٌّ مُطَاعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ «. رَوَى الْبَيْهَقِيُّ الْأَحَادِيثَ الْخَمْسَةَ فِي» شعب الْإِيمَان