পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৭৯৫-[১৩] কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেন, আল্লাহ তা’আলা কবিতা সম্পর্কে যা অবতীর্ণ করার অবতীর্ণ করেছেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মু’মিন ব্যক্তি তাঁর তরবারি ও রসনা দ্বারা জিহাদ করে। সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমরা কবিতা দ্বারা কাফিরদেরকে এমনভাবে আঘাত করছ, যেভাবে তীর দ্বারা আঘাত করা হয়। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
كِتَابُ الْاِسْتِيْعَابِ (ইসতী’আব কিতাব)-এ ইবনু ’আবদুল বার (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! কবিতা রচনা ও আবৃত্তি সম্পর্কে আপনি কী আদেশ করেন? তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মু’মিন তাঁর তরবারি এবং মুখের বাক্য উভয় দ্বারা যুদ্ধ করে।
عَن كعبِ بنِ مالكٍ أَنَّهُ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قد أنزلَ فِي الشعرِ مَا أَنْزَلَ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْمُؤْمِنَ يُجَاهِدُ بِسَيْفِهِ وَلِسَانِهِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَكَأَنَّمَا تَرْمُونَهُمْ بِهِ نَضْحَ النَّبْلِ» رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ
وَفِي «الِاسْتِيعَابِ» لِابْنِ عَبْدِ الْبَرِّ أَنَّهُ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَاذَا تَرَى فِي الشِّعْرِ؟ فَقَالَ: «إِنَّ الْمُؤْمِنَ يُجَاهد بِسَيْفِهِ وَلسَانه»
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ اللهَ تَعَالٰى قد أنزلَ فِي الشعرِ) এ কথার দ্বারা কা‘ব (রাঃ) কবিতার নিন্দা করেছেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা কবিদের নিন্দা করে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন,
وَالشُّعَرَاءُ يَتَّبِعُهُمُ الْغَاوُونَ অর্থাৎ ‘‘পথভ্রষ্টরাই কবিদের অনুরণ করে।’’ (সূরাহ্ আশ্ শু‘আরা ২৬ : ২২৪)
‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উত্তরের মূল কথা হলো সাধারণত কাব্য চর্চা নিন্দার নয় কিন্তু যদি কাব্য চর্চাটা পথভ্রষ্ট করে দেয় তাহলে তা নিন্দনীয়। আর মু’মিন কাফিরদের পরাজিত করার জন্যই কাব্য চর্চা করে থাকে। এটাও এক ধরনের জিহাদ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৭৯৬-[১৪] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ লজ্জা ও রসনা সংযত রাখা ঈমানের দু’টো শাখা। পক্ষান্তরে অশ্লীল ও অপ্রয়োজনীয় কথা বলা মুনাফিক্বীর দু’টো শাখা। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَبِي
أُمَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْحَيَاءُ وَالْعِيُّ شُعْبَتَانِ مِنَ الْإِيمَانِ وَالْبَذَاءُ وَالْبَيَانُ شُعْبَتَانِ مِنَ النِّفَاقِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যাঃ (الْعِيُّ) অল্প কথা বলা। এখানে উদ্দেশ্য হলো অশ্লীল গদ্য-পদ্য থেকে দূরে থাকা।
ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) (الْعِيُّ)-এর ব্যাখ্যায় বলেন, অনর্থক বিষয় বা পাপে পতিত হওয়ার আশংকায় কম কথা বলা।
(الْبَذَاءُ) অশ্লীল কথা যা শালীনতার বিপরীত।
(الْبَيَانُ) বেশি বাগ্মিতা দিয়ে কথা বলা যেটা মানুষ সাধারণভাবে বুঝতে পারে না এবং যার একাধিক উদ্দেশ্য হয়। যেমনটা মুনাফিকরা করত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُعْجِبُكَ قَوْلُه فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا
‘‘মানুষের মধ্যে এমন আছে, পার্থিব জীবন সম্পর্কিত যার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করে...’’- (সূরাহ্ আল বাকবারাহ্ ২ : ২০৪)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২০২৭)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৭৯৭-[১৫] আবূ সা’লাবাহ্ আল খুশানী (রাঃ)হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়তম ও আমার সবচেয়ে নিকটতম সেই ব্যক্তি হবে, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে চরিত্রবান। আর আমার কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ও সবচেয়ে দূরতম সে ব্যক্তি হবে, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে চরিত্রহীন, বেশি কথা বলে, অসতর্কভাবে যা-তা বলে এবং কথাবার্তায় নিজেকে বড় বলে প্রকাশ করে। (বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমান’’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)[1]
وَعَن أبي
ثَعلبةَ الخُشنيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ أَحَبَّكُمْ إِلَيَّ وَأَقْرَبَكُمْ مِنِّي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَحَاسِنُكُمْ أَخْلَاقًا وَإِنَّ أَبْغَضَكُمْ إِلَيَّ وَأَبْعَدَكُمْ مني مساويكم أَخْلَاقًا الثرثارون المتشدقون المتفيقهون» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৭৯৮-[১৬] ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) জাবির (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে যে, লোকেরা জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! আমরা তো اَلثَّرْثَارُوْنَ এবং اَلْمُتَشَدِّقُوْنَ-এর অর্থ বুঝলাম; কিন্তু اَلْمُتَفَيْهِقُوْنَ কারা? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ অহংকারীরা।[1]
وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ
نَحْوَهُ عَنْ جَابِرٍ وَفِي رِوَايَتِهِ قَالُوا: يَا رَسُول الله قد علمنَا الثرثارونَ والمتشدقون فَمَا المتفيقهون؟ قَالَ: «المتكبرون»
ব্যাখ্যাঃ (الثَّرْثَارُوْنَ) অনর্থক ও অন্যায়মূলক বিষয়ে বেশি কথা যারা বলে তাদের ثرثارون বলা হয়।
(الْمتَشَدِّقُوْنَ) সংযত ও সতর্ক না হয়ে যারা কথা বলে।
(الْمُتَفَيْهِقُوْنَ) অহংকারবশত যারা কথা বলে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২০১৮)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৭৯৯-[১৭] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত ঐ সময় পর্যন্ত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না এমন একদল লোকের আবির্ভাব হবে, যারা নিজেদের রসনার সাহায্যে এমনভাবে ভক্ষণ করবে, যেভাবে গাভী তার রসনার সাহায্যে ভক্ষণ করে থাকে। (আহমাদ)[1]
وَعَنْ
سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَخْرُجَ قَوْمٌ يَأْكُلُونَ بِأَلْسِنَتِهِمْ كَمَا تَأْكُلُ الْبَقَرَةُ بألسنتها» رَوَاهُ أَحْمد
ব্যাখ্যাঃ তারা তাদের জিহবাকে খাবারের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করবে অর্থাৎ তারা হালাল হারাম বাছাই করবে না যেমন গাভী তার জিহবাকে হালাল হারাম বাছাই করা ছাড়া খাবারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৮০০-[১৮] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা মানুষের মাঝে ভাষা-অলঙ্কারবিদকে ঘৃণা করেন, যে বাকশৈলী ও বাক-নিপুণতা প্রদর্শন করতে গিয়ে নিজের জিহবাকে এমনভাবে নাড়াচাড়া করে, যেভাবে গাভী নিজের জিহবা নাড়াচাড়া করে। [তিরমিযী ও আবূ দাঊদ; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ হাদীসটির গরীব।][1]
وَعَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ يُبْغِضُ الْبَلِيغَ مِنَ الرِّجَالِ الَّذِي يَتَخَلَّلُ بِلِسَانِهِ كَمَا يَتَخَلَّلُ الْبَاقِرَةُ بِلِسَانِهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث غَرِيب
ব্যাখ্যাঃ ঐ সমস্ত বাগ্মী যারা অসংযতভাবে কথা বলে এবং কথাকে প্যাঁচায় যেমনভাবে গাভী জিহবা দ্বারা তার খাবার প্যাঁচায়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৮৫৩)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৮০১-[১৯] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মি’রাজের রাতে আমার গমন এমন একদল লোকের নিকট দিয়ে হলো, যাদের জিহবা আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল। আমি জিবরীল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করলামঃ হে জিবরীল! এরা কারা? জিবরীল (আ.) বললেনঃ এরা আপনার উম্মাতের মধ্যে ধর্মোপদেশদাতাগণ, যারা এমন কথা বলত, যার উপর তারা নিজেরা ’আমল করত না। [তিরমিযী; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি গরীব।][1]
وَعَنْ
أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَرَرْتُ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِي بقومٍ تُقْرَضُ شفاهُهم بمقاريض النَّارِ فَقُلْتُ: يَا جِبْرِيلُ مَنْ هَؤُلَاءِ؟ قَالَ: هَؤُلَاءِ خُطَبَاءُ أُمَّتِكَ الَّذِينَ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৮০২-[২০] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কিছু কথা শিক্ষা করে, যাতে পুরুষদের বা লোকেদের অন্তরকে আকৃষ্ট এবং সম্মোহিত করা যায়, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার নফল ও ফরয (’ইবাদাত) কোনটাই কবুল করবেন না। (আবূ দাঊদ)[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে আছে ‘‘যহ্হাক ইবনু শুরাহবীল’’ নামের একজন বর্ণনাকারী। ইনি একজন মিসরী। ইবনু ইউনুস তাকে মিসরীয়দের ইতিহাস নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ইমাম বুখারী ও ইবনু আবী হাকিম (রহিমাহুল্লাহ)-ও তার আলোচনা করেছেন কিন্তু তারা কোন সাহাবী থেকে তার হাদীস বর্ণনার কথা উল্লেখ করেননি। তার বর্ণনা কেবলামাত্র তাবি‘ঈদের থেকে আর অত্র হাদীসটি তিনি আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেছেন, এ কারণেই হাদীসটি মুনকত্বি‘ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থেকে গেছে। দেখুন- ‘আওনুল মা‘বূদ ১৩/২৩৮ পৃঃ, হাঃ ৫০০৬।
وَعَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَعَلَّمَ صَرْفَ الْكَلَامِ لِيَسْبِيَ بِهِ قُلُوبَ الرِّجَالِ أَوِ النَّاسِ لَمْ يَقْبَلِ اللَّهُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلَا عدلا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যাঃ صرفا তাওবাহ্ অথবা নফল ‘ইবাদাত। عدلا মুক্তিপণ অথবা ফরয ‘ইবাদাত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৯৮)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৮০৩-[২১] ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে খুব দীর্ঘ বক্তব্য দিলেন। তখন ’আমর বললেনঃ যদি সে তার বক্তৃতা সংক্ষেপ করত, তবে খুব ভালো হত। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি দেখেছি অথবা আমাকে আদেশ করা হয়েছে যে, যেন আমি বক্তব্য সংক্ষেপ করি। কেননা সংক্ষেপ করাই উত্তম। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن عمْرِو
بن العاصِ أَنَّهُ قَالَ يَوْمًا وَقَامَ رَجُلٌ فَأَكْثَرَ الْقَوْلَ. فَقَالَ عَمْرٌو: لَوْ قَصَدَ فِي قَوْلِهِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَقَدْ رَأَيْتُ - أَوْ أُمِرْتُ - أَنْ أَتَجَوَّزَ فِي الْقَوْلِ فَإِنَّ الْجَوَازَ هُوَ خير» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যাঃ বক্তব্যের নিয়ম খুব বেশিও না আবার কমও না বরং প্রয়োজন অনুপাতে মধ্যম ধরনের বক্তব্য দিতে হবে। এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিয়ম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৫০০০)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বক্তৃতা ও কবিতা আবৃত্তি
৪৮০৪-[২২] সখর ইবনু ’আবদুল্লাহ ইবনু বুরয়দাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা করেন, তিনি (বুরয়দাহ্) বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কোন কোন বক্তৃতা যাদুবিশেষ (অর্থাৎ- যাদুর মতো সম্মোহনী শক্তি থাকে), কোন কোন বিদ্যা মূর্খতার নামান্তর, কোন কোন বাক্য কৌশলের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং কোন কোন কথা জীবনের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (আবূ দাঊদ)[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে আছে ‘‘আবূ জা‘ফার আন্ নাহবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাবিত’’ নামের বর্ণনাকারী মাজহূল। ইবনু হাজার আল ‘আসকালানী এবং ইমাম যাহাবী (রহিমাহুল্লাহ) তাকে মাজহূল বলেছেন। জাওয়ামিউল কালিম। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/২৭১ পৃঃ।
وَعَنْ
صَخْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَن أَبِيه عَن جدِّه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا وَإِنَّ مِنَ الْعِلْمِ جَهْلًا وَإِنَّ مِنَ الشِّعْرِ حُكْمًا وَإِنَّ مِنَ الْقَوْلِ عِيَالًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ مِنَ الْعِلْمِ جَهْلًا) এর উদ্দেশ্য :
* অনর্থক কোন বিষয়ের জ্ঞান অর্জন করা যাতে কোন উপকার নেই। এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের চেয়ে অজ্ঞতা উত্তম। যেমন : জ্যোতিষশাস্ত্র ইত্যাদি।
* আল্লামা আযহারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘ইলম অনুপাতে ‘আমল না করা। আর ‘আমল পরিত্যাগ করাটা জ্ঞানের অজ্ঞতা।
* কতিপয় বিদ্বান না জানা বিষয়ে জানার ভান করবে। এটাই জ্ঞানের অজ্ঞতা।
(إِنَّ مِنَ الْقَوْلِ عِيَالًا) এর উদ্দেশ্য :
* বক্তার কিছু কথা কখনো কখনো তার বিপদের কারণ হয়।
* অস্থানে ও অপাত্রে কোন কথা বলা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৫০০৪)