পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৩-[৪] রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গাছের ফল এবং খেজুরের থোড় চুরির অপরাধে কারো হাতে কাটা যাবে না। (মালিক, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী ও ইবনু মাজাহ)[1]
عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا قَطْعَ فِي ثَمَرٍ وَلَا كَثَرٍ» رَوَاهُ مَالِكٌ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: ইমাম আবূ হানীফার মতে এ হাদীসের আলোকে ফল চুরিতে হাত কাটা যাবে না, চাই তা সংরিক্ষত হোক বা না হোক। এর উপর তিনি ক্বিয়াস করে বলেছেন গোশ্ত/গোশত, দুধ ও পানীয় চুরি করলেও হাত কাটা যাবে না।
আবার অনেকে সংরক্ষিত ফলের ক্ষেত্রে চুরি করলে হাত কাটতে হবে- এটা মালিক ও শাফি‘ঈ-এর মত। আর শাফি‘ঈ গাছের ঝুলন্ত ফলকে অরক্ষেত হিসেবে তা’বীল করেছেন।
আর মদীনার অধিকাংশ খেজুরের বাগানে কোনো দেয়াল ছিল না।
আর ‘আমর বিন শু‘আয়ব-এর হাদীসে প্রমাণিত হয়, সুরক্ষিত ফল হাত কাটা হবে যা সামনে আসবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৪-[৫] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, গাছ থেকে ফল চুরির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যে গাছ থেকে ফল কেটে খলায় স্তূপকৃত, সংগ্রহ করার পর কেউ তাত্থেকে চুরি করল এবং তার মূল্য যদি একটি ঢালের সমপরিমাণও হয়, তবুও সে হাত কাটার অপরাধী হবে। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو بْنِ الْعَاصِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الثَّمَرِ الْمُعَلَّقِ قَالَ: «مَنْ سَرَقَ مِنْهُ شَيْئًا بَعْدَ أَنْ يُؤْوِيَهُ الْجَرِينَ فَبَلَغَ ثَمَنَ الْمِجَنِّ فَعَلَيْهِ الْقَطْعُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: হাদীসে কিছু মাসআলাহ্ সাব্যস্ত হয়-
প্রথমতঃ যদি গ্রহণ করে নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য তাহলে তা বৈধ। তথা ক্ষুধার্থ হলে ক্ষুধা নিবারণের জন্য গ্রহণ করা বৈধ।
দ্বিতীয়তঃ তা থেকে বের করে নিয়ে যাওয়াটা হারাম, আর বের করে নিয়ে যাওয়াটা হতে পারে বিভক্ত হওয়া বা গাছ হতে চয়ন করে স্তূপীকৃত করা পরে বা পূর্বে। যদি বিভক্ত হওয়ার পূর্বে হয় তাহলে তার ওপর জরিমানা ও শাস্তি হবে। আর যদি কর্তন ও স্তূপীকৃত হওয়ার পরে হয় তাহলে নিসাব পরিমাণ হলে হাত কর্তন করা হবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৮২)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৫-[৬] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আব্দুর রহমান ইবনু আবূ হুসায়ন আল মাক্কী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গাছে দৃশ্যমান ফল এবং পাহাড়ে বিচরণশীল জন্তু-জানোয়ার চুরির অপরাধে হাত কাটা যাবে না। তবে কেউ যদি পাহাড়ে বিচরণশীল জন্তু-জানোয়ার স্বীয় আশ্রয়স্থলে হয় এবং ফল খলায় স্তূপকৃত হয় তাহলে সেখান থেকে চুরির অপরাধে হাত কাটা হবে, যদি চুরির মাল ঢালের মূল্যের সমান হয়। (মালিক)[1]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ الْمَكِّيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا قَطْعَ فِي ثَمَرٍ معلَّقٍ وَلَا فِي حَرِيسَةِ جَبَلٍ فَإِذَا آوَاهُ الْمُرَاحُ وَالْجَرِينُ فَالْقَطْعُ قيمًا بلغ ثمن الْمِجَن» . رَوَاهُ مَالك
ব্যাখ্যা: ত্বীবী বলেনঃ حَرِيسَةِ দ্বারা উদ্দেশ্য পাহাড়ে সংরক্ষিত এমন বিচরণশীল প্রাণী যা পাহাড়ে চড়ে এবং তার রাখাল রয়েছে। কারো মতে রাতে চুরিকৃত ছাগল আর পাহাড়ের দিকে সম্বোধন করা উদ্দেশ্য, কেননা চোর তা চুরি করে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে যায় যাতে চূড়ান্তভাবে সংরক্ষিত হতে পারে।
আর হাদীসে রয়েছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : পাহাড়ে বিচরণশীল জানোয়ার সম্পর্কে। জবাবে বলেছেনঃ অনুরূপ জরিমানা লাগবে। ইবনু হুমাম বলেছেনঃ যদি চুরি করা হয় রেলগাড়ী থেকে উট বা অন্য কোনো মালামাল তাহলে হাত কাটা যাবে না, কেননা তা দ্বারা সংরক্ষণ উদ্দেশ্য না। কেননা সংরক্ষণের ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। এই ড্রাইভার চালক ও বহনকারী ব্যক্তিরা তাদের উদ্দেশ্য হলো গন্তব্যস্থনে পৌঁছানো। সংরক্ষণের জন্য না, যদিও বহনের সময় পাহাদার থাকে। আবার কেউ বলেন হাত কাটা হবে কারণ মালামাল বস্থাতে ভরে রাখা সংরক্ষণের মতই। আর তিন ইমামের নিকট হাত কাটা হবে, কেননা ড্রাইভার চালক বহনকারী ব্যক্তিরা পাহাদারের মতো। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৬-[৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছিনতাইকারীর হাত কাটা যাবে না। আর যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে ছিনতাই করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ عَلَى الْمُنْتَهِبِ قَطْعٌ وَمَنِ انْتَهَبَ نُهْبَةً مَشْهُورَةً فَلَيْسَ مِنَّا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: الهب ছিনতাই, যে জিনিস দিব্য বা প্রকাশ্যে নেয়া হয় গোপনে বা প্রচ্ছন্ন নেয়া হয় না। আর যা হয়ে থাকে জোরপূর্বক তাতে হাত কাটা যাবে না। কেননা চুরির হুকুম না থাকায়।
(فَلَيْسَ مِنَّا) আমাদের মিল্লাত বা আদর্শের অন্তর্ভুক্ত না। ধমকি স্বরূপ বলা হয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৮৩)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৭-[৮] উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মসাৎকারী, ছিনতাইকারী ও লুটতরাজকারীর হাত কাটা যাবে না। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ্ ও দারিমী)[1]
وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيْسَ عَلَى خَائِنٍ وَلَا مُنْتَهِبٍ وَلَا مُخْتَلِسٍ قَطْعٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ والدارمي
ব্যাখ্যা: হাদীসে দলীল সাব্যস্ত হয় যে, লুটকারী, ছিনতাইকারী ও আত্মসাৎকারীর হাত কাটা যাবে না। ইবনু হুমাম হানাফী বলেনঃ এটা আমাদের মাযহাব বাকী অন্য তিন মাজহাবও আর এটা ‘উমার, ইবনু মাস্‘ঊদ ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এরও মাযহাব। ‘উলামারাও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। তবে ইসহক, আহমাদ-এর অপর এক বর্ণনায় হাত কাটা হবে।
ইমাম নববী বলেন, কাযী ‘ইয়ায বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা চোরের হাত কাটাকে ফরয করেছেন আর অন্য কারো জন্য করেননি। যেমন ছিনতাইকারী, আত্মসাৎকারী ও লুটপাটকারী; কেননা চুরির তুলনায় এটা কম, আর এ প্রকারের সম্পদ প্রশাসকের নিকট আবেদনের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব, আর প্রমাণ সংগ্রহ করাও সহজ হয় তবে চুরির ক্ষেত্রে অত সহজ নয়। কেননা তা প্রমাণ করা খুব কমই হয়ে থাকে ফলে বিষয়টি অনেক বড় এবং এর শাস্তিও অনেক কঠিন, যাতে তা হতে বিরত হওয়া অধিকতর ভূমিকা পালন করে থাকে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৮৪; মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৮-[৯] আর ’শারহুস্ সুন্নাহ্’তে বর্ণিত আছে যে, একদিন সফ্ওয়ান ইবনু উমাইয়্যাহ্ মদীনায় আসলেন, অতঃপর স্বীয় চাদরটি বালিশের ন্যায় মাথার নিচে রেখে মসজিদে ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন এক চোর এসে চাদরটি তুলে নিতে উদ্যত হলে সফ্ওয়ান তাকে ধরে ফেললেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিয়ে আসলেন। এমতাবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার হাত কাটার হুকুম দিলেন। কিন্তু সফ্ওয়ান বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি তাকে এ কারণে নিয়ে আসেনি যে, আপনি (চুরির দায়ে) তার হাত কেটে দেবেন। আমি মূলত চাদরটি তাকে সাদাকা করে দিয়েছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তবে আমার নিকট আনার পূর্বেই তো তুমি তাকে সাদাকা করে দিতে পারতে?[1]
وَرُوِيَ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» : أَنَّ صَفْوَانَ بْنَ أُمَيَّةَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَنَامَ فِي الْمَسْجِدِ وَتَوَسَّدَ رِدَاءَهُ فَجَاءَ سَارِقٌ وَأَخَذَ رِدَاءَهُ فَأَخَذَهُ صَفْوَانُ فَجَاءَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ أَنْ تُقْطَعَ يَدُهُ فَقَالَ صَفْوَانُ: إِنِّي لَمْ أُرِدْ هَذَا هُوَ عَلَيْهِ صَدَقَةٌ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَهَلا قبل أَن تَأتِينِي بِهِ»
ব্যাখ্যা: সফ্ওয়ান বিন উমাইয়্যাহ্ বিন খালফ আল জাহমী আল কুরাশী। তিনি মক্কা বিজয়ের দিনে পলায়ন করেছিলেন তার নামে মৃত্যুর পরওয়ানা ছিল। তার জন্য নিরাপত্তা চাইলেন ‘উমার বিন ওয়াহ্ব এবং তার পুত্র ওয়াহ্ব বিন ‘উমায়র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট। অতঃপর তিনি নিরাপত্তা দিলেন আর আমানত স্বরূপ তাদের দু’জনকে তার চাদর দিলেন। সফ্ওয়ান-এর জন্য ওয়াহ্ব তাকে পেলেন এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে গেলেন। আর সফ্ওয়ান বললেন, ওয়াহ্ব দাবী করেছে, আপনি আমাকে দু’ মাসের জন্য নিরাপত্তা দিয়েছেন। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াহ্বকে বললেনঃ তাকে আরো বেশি সময়ের জন্য নিরাপত্তা দাও। তখন সফ্ওয়ান বললেন, এটা যেন সুস্পষ্ট হয় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য চার মাসের নিরাপত্তা দিলেন। আর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে হুনায়নে বের হলেন, তিনি হুনায়নের যুদ্ধ আর ত্বায়িফের কাফিরদেরকে প্রত্যক্ষ করলেন, আর তিনি তাদেরকে গনীমাতের মাল অনেক দিলেন। তখন সফ্ওয়ান বললেন, আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য দিচ্ছি! এই নাবী কতই না উত্তম নাবী সেদিনই ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং তিনি মক্কায় অবস্থান করলেন ও মদীনায় হিজরত করলেন। তিনি ‘আব্বাস -এর কাছে মেহমান হলেন আর বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আব্বাস (রা) উপস্থাপন করলেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ لَا هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ মক্কা বিজয়ের পর আর কোনো হিজরত নেই তথা মদীনাহ্ হিজরত নেই। সফ্ওয়ান জাহিলী যুগের কুরাইশদের সম্মানিত ব্যক্তি এবং কবিও ছিলেন। ইসলামে আসার জন্য যাকে অনুদান দেয়া হতো তার ইসলাম গ্রহণ চমৎকার ছিল।
হিদায়াহ্ প্রণেতা বলেনঃ মাথার নীচে কোনো কিছু রাখা বিশুদ্ধ মতে তা সংরক্ষিত বলে বিবেচিত হবে।
হাদীসে প্রমাণিত হয় যে, চোরকে প্রশাসকের নিকট পেশ করার পূর্বে ক্ষমা করা বৈধ।
আর প্রশাসকের নিকট উপস্থাপন করলে হাত কাটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে এবং কোনো অবস্থাতেই তা রহিত করা হবে না। অনুরূপ বক্তব্য ত্বীবী এবং ইবনু মালিক বলেন। ইবনু হুমাম বলেন, চোরকে চুরির জন্য যখন হাত কাটার ফায়সালা দিবে এমতাবস্থায় মালিক যদি চুরিকৃত সম্পদ দান করে দেয় তাকে অথবা তাকে হেবা করে দেন অথবা বিক্রি করে দেয় তাহলে হাত কাটা যাবে না। আর যুফার, শাফি‘ঈ, আহমাদ-এর মতে হাত কাটা হবে। যা সফ্ওয়ান-এর হাদীস সুস্পষ্ট প্রমাণ করে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৫৯৯-[১০] আর ইবনু মাজাহ্ হাদীসটি ’আবদুল্লাহ ইবনু সফ্ওয়ান থেকে, তিনি তার পিতা হতে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন।[1]
وَرَوَى نَحْوَهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بن صَفْوَان عَن أَبِيه
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০০-[১১] আর দারিমী বর্ণনা করেছেনঃ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে।[1]
والدارمي عَن ابْن عَبَّاس
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০১-[১২] বুসর ইবনু আরত্বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যুদ্ধাভিযানে থাকা অবস্থায় চোরের হাত কাটা যাবে না। (তিরমিযী, দারিমী, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1] তবে আবূ দাঊদ ও নাসায়ী ’যুদ্ধের’ স্থলে ’’সফর’’ বলেছেন (অর্থাৎ- সফর অবস্থায় চোরের হাত কাটা যাবে না)।
وَعَنْ بُسْرِ بْنِ أَرْطَاةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا تُقْطَعُ الْأَيْدِي فِي الْغَزْوِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ إِلَّا أَنَّهُمَا قَالَا: «فِي السّفر» بدل «الْغَزْو»
ব্যাখ্যা: ইমাম আওযা‘ঈ বলেন, সফর হোক কিংবা জিহাদ কোনো অবস্থাতেই চোরের হাত কর্তিত হবে না। আবার কেউ বলেন, এখানে الْغَزْوِ জিহাদ অর্থ হলো গনীমাত বা যুদ্ধলব্ধ মাল বিতরণের পূর্বে ওটা চুরি করলে হাত কাটা যাবে না। কেননা উক্ত মালের মধ্যে তার এক অংশ আছে যদিও ওটা অনির্দিষ্ট। আবার কেউ কেউ বলেন, হাত কাটার অধিকার রয়েছে ইমাম বা খলীফার, সেনা শাসকের নয়। কাজেই তিনি হাদ্দ কার্যকরী করতে পারেন না। আবার কেউ বলেন, শত্রুর মোকাবেলা যুদ্ধস্থলে বা শত্রুর এলাকায় ‘‘হাদ্দ’’ বা শারী‘আত শাস্তি প্রয়োগ করলে ফিতনা তথা শত্রুর সাথে মিশে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই সফর কিংবা জিহাদে যে কোনো অপরাধের শাস্তি কার্যকর হবে না বরং ওটা থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত মূলতবী রাখতে হবে। তবে ইমাম আবূ হানীফাহ্ বলেন, ইসলামী রাষ্ট্রের পরিধি সেই এলাকা পর্যন্ত বিসত্মৃতি হলে শাস্তি কার্যকর করা যেতে পারে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০২-[১৩] আবূ সালামাহ্ (রহঃ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোর সম্পর্কে বলেছেনঃ যদি কেউ চুরি করে তাহলে প্রথম তার (ডান) হাত কেটে দাও। যদি সে পুনরায় চুরি করে তাহলে তার (বাম) পা কেটে দাও। অতঃপর যদি সে পুনরায় চুরি করে তাহলে তার (বাম) হাত কেটে দাও। আবার যদি সে (চতুর্থবার) চুরি করে তাহলে তার (ডান) পা কেটে দাও। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
وَعَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ فِي السَّارِقِ: «إِنْ سَرَقَ فَاقْطَعُوا يَدَهُ ثُمَّ إِنْ سَرَقَ فَاقْطَعُوا رِجْلَهُ ثُمَّ إِنْ سَرَقَ فَاقْطَعُوا يَدَهُ ثُمَّ إِنْ سَرَقَ فَاقْطَعُوا رِجْلَهُ» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة
ব্যাখ্যা: প্রথমবার চুরি করলে ডান হাত এবং দ্বিতীয়বার চুরি করলে বাম পা কাটা হবে এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন।
ইবনু হুমাম বলেনঃ অধিকাংশ ‘উলামার নিকট পায়ের টাখনু পর্যন্ত কাটা হবে। ‘উমার (রাঃ) এমনটি করেছেন। আবূ হাওর বলেনঃ পায়ের অর্ধেক, জুতার ফিতা বাধার স্থান থেকে। কেননা ‘আলী এমনটি করেছেন। যাতে পায়ে পিছনের অংশ রাখা হবে যাতে হাঁটতে পারে।
এ হাদীস অনুযায়ী ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে চারবার চুরি করলে বিপরীত দিক থেকে হাত পা কাটা হবে। আর ইমাম আবূ হানীফাহ্ বলেন, দু’বার পর্যন্ত বিপরীত দিক থেকে হাত পা কাটা যাবে, যদি তৃতীয়বার চুরি করে তাহলে যাবজীবন কারাগার আটক রাখতে হবে। সহাবায়ি কিরাম এ ব্যাপারে ইজমা করেছেন। আর উপরোক্ত হাদীস সহী হলে তা ধমকানো অথবা রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত বলে প্রমাণ করে। যেমন আমাদের কতক ‘আলিম বলে থাকেন, শারহুস্ সুন্নাতে রয়েছে, সবাই একমত হয়েছে, প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার চুরি করলে বিপরীতভাবে হাত পা কাটা হবে আর এরপরে চুরি করলে, কাটার ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। কারো মতে তৃতীয়বার চুরি করলে বাম হাত কাটা হবে আর চতুর্থ বার চুরি করলে ডান পা কাটা হবে, এর পরে চুরি করলে তাকে তিরস্কার করা হবে এবং কারাবন্দী করে রাখবে। এটা আবূ বাকর থেকে বর্ণিত। আর ‘আলী থেকে বর্ণিত, তৃতীয়বার চুরি করলে হাত কাটা যাবে না। আর হিদায়াহ্ প্রণেতা বলেন, তৃতীয়বার চুরি করলে তিরস্কার করা হবে এবং কারাদণ্ড দিতে হবে সে তাওবাহ্ করবে অথবা মৃত্যুবরণ করবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৩-[১৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক চোরকে ধরে আনা হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ করলেন, তার (ডান) হাত কেটে দাও। সুতরাং তার হাত কেটে ফেলা হলো। পরে পুনরায় চুরির দায়ে তাকে দ্বিতীয়বার আনা হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তার (বাম) পা কেটে দাও। সুতরাং তার পা কেটে ফেলা হলো। এরপর পুনরায় তৃতীয়বার তাকে চুরির অপরাধে আনা হলো। এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিলেন, তার (বাম) হাত কেটে দাও। সুতরাং তার হাত কেটে ফেলা হলো। পরে চতুর্থবার তাকে চুরির অপরাধে আনা হলো। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিলেন, তার (ডান) পাও কেটে দাও। সুতরাং তার পাও কেটে ফেলা হলো। তারপর পঞ্চমবার তাকে চুরির অপরাধে উপস্থিত করা হলো। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবার তাকে হত্যার হুকুম দিলেন। সুতরাং আমরা তাকে টেনে নিয়ে এসে একটি কূপের মধ্যে ফেলে দিলাম এবং তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করলাম। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: جِيءَ بِسَارِقٍ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الثَّانِيَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الثَّالِثَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الرَّابِعَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ فَأُتِيَ بِهِ الْخَامِسَةَ فَقَالَ: «اقْتُلُوهُ» فَانْطَلَقْنَا بِهِ فَقَتَلْنَاهُ ثُمَّ اجْتَرَرْنَاهُ فَأَلْقَيْنَاهُ فِي بِئْرٍ وَرَمَيْنَا عَلَيْهِ الحجارةَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: কতক ‘আলিম বলেন, হাদীস যদি সহীহ হয় এটা মানসূখ বা রহিত। لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِإِحْدٰى ثَلَاثٍ কোনো মুসলিমের রক্ত হালাল না তবে তিনটির যে কোনো একটি পাওয়া গেলে বৈধ। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে, বিবাহিত পুরুষ বা স্ত্রী যিনা করলে, আর মুরতাদ হলে। এ হাদীস দ্বারা আর সিরাজিয়্যাহ্-তে রয়েছে, শাসকের জন্য রাজনীতির দৃষ্টিভঙ্গীতে হত্যা করা বৈধ।
ইমাম খত্ত্বাবী বলেনঃ চোর যত বারই চুরি করুক না কেন কিন্তু কোনো ইমাম বা ফাকীহের মতে তাকে হত্যা করা জায়িয নেই। অতএব, বর্ণিত হাদীসে কতল করার নির্দেশ এজন্য দেয়া হয়নি যে, সে চোর- চুরি করেছে, বরং সে দেশে বিশৃঙ্খলা এবং সমাজের মধ্যে ফাসাদ ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে। সুতরাং শাসক একজন দুস্কৃতিকারীর জন্য দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তি কার্যকর করতে পারেন।
আমরা তাকে নিয়ে গেলাম এবং তাকে হত্যা করলাম। অতঃপর তাকে টেনে এনে একটি কূপের মধ্যে ফেলে দিলাম। ত্বীবী বলেনঃ এটা প্রমাণ করে তার হত্যাটি ছিল লাঞ্ছনা ও অপমানকর। অথচ কোনো মুসলিমের সাথে এ ধরনের আচরণ সমীচীন নয় যদিও কবীরা গুনাহ করে, কেননা সে সালাত আদায় করে আর বিশেষ করে শাস্তি প্রয়োগ ও পবিত্রতার পর সম্ভবত তার সাথে এ আচরণের কারণ হলো যে, মুরতাদ হয়েছিল আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুরতাদ হওয়ার বিষয়টি জেনেছিলেন যেমনটি ‘উরায়নাহ্ গোত্রের ক্ষেত্রে জেনেছিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৪-[১৫] আর ইমাম বাগাবী (রহঃ) শারহুস্ সুন্নাহ্-তে ’চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গে’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, ’তার হাত কেটে দাও এবং গরম তেল দিয়ে তা দাগিয়ে দাও।’[1]
وَرُوِيَ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ فِي قَطْعِ السَّارِقِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْطَعُوهُ ثمَّ احسموه»
ব্যাখ্যা: ইবনু হুমাম বলেনঃ কাটার ক্ষতস্থানে গরম ঈতল দেয়ার দলীল হাকিমের হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّه عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ أُتِيَ بِسَارِقٍ سَرَقَ شَمْلَةً فَقَالَ ﷺ : مَا أَخَالُه سَرَقَ، فَقَالَ السَّارِقُ : بَلٰى يَا رَسُولَ اللّٰهِ فَقَالَ : اذْهَبُوا بِه فَاقْطَعُوهُ ثُمَّ احْسِمُوهُ، ثُمَّ ائْتُونِي بِه. فَقُطِعَ ثُمَّ حُسِمَ ثُمَّ أُتِيَ فَقَالَ : تُبْتُ إِلَى اللّٰهِ قَالَ : تَابَ اللّٰهُ عَلَيْكَ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একজন চোরকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে আনা হলো। সে একটি জুববা বা পাগড়ী চুরি করেছিল। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, আমার ধারণা, তুমি চুরি করনি। চোরটি বললো, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! চুরি করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাকে নিয়ে যাও এবং তার হাত কাটো। অতঃপর গরম তৈল ক্ষতস্থানে দিবে। তারপর আমার কাছে নিয়ে আসবে। হাত কাটা হলো এবং তৈল দেয়া হলো। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে আসা হলো আর চোরটি বললো, আমি আল্লাহর নিকট তাওবাহ্ করেছি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার তাওবাহ্ আল্লাহ কবুল করেছেন। হাদীসটি সহীহ মুসলিমের শর্তে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৫-[১৬] ফাযালাহ্ ইবনু ’উবায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার হাত কাটার নির্দেশ দিলেন। পরে তিনি হুকুম দিলেন এবার তার হাত কেটে যেন তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হয় (যাতে অন্যেরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে)। অতএব ঐ হাত তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হলো। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ قَالَ: أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بسارقٍ فقُطِعَتْ يَدَهُ ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَعُلِّقَتْ فِي عُنُقِهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: এটা অন্য লোকেদের জন্য চুরি করা হতে বিরত থাকার দৃষ্টান্ত হবে।
ইবনু হুমাম বলেনঃ শাফি‘ঈ ও আহমাদ থেকে বর্ণিত, চোরের হাত কাটার পর তা তার গর্দানে লটকানো সুন্নাহ। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা আদেশ করেছেন।
আমাদের (হানাফীদের) নিকট বিষয় ‘আম্ প্রশাসকের জন্য তিনি যদি মনে করেন লটকাবে না হলে লটকাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
মুল্লা ‘আলী কারী বলেনঃ শারহেস্ সুন্নাহ্-তে বলেন, গোলাম যখন চুরি করে, চাই পলায়নকারী হোক বা না হোক। ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণিত, তার দাস চুরি করেছে আর সে পলায়নকারী ছিল। তিনি তাকে ধরে সা‘ঈদ বিন ‘আস-এর নিকট পাঠালেন যাতে তার হাত কেটে দেয়। সা‘ঈদ অস্বীকার করলেন এবং বললেন, না, পলায়নকারী গোলামের হাত কাটা যাবে না, সে যখন চুরি করবে। ‘আব্দুল্লাহ বললেন, আপনি এটা কোন্ কিতাবে পেয়েছেন? অতঃপর ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার হাত কাটার নির্দেশ দিলেন এবং হাত কাটা হলো। ‘উমার বিন ‘আব্দুল ‘আযীয এমনটি আদেশ করেছেন।
ইহা শাফি‘ঈ, মালিক ও বলা চলে সকল ‘উলামার অভিমত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৪০৩)
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৬-[১৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গোলাম যদি চুরি করে তাহলে তাকে বিক্রি করে ফেল, যদিও বিশ দিরহামের (রৌপ্যমুদ্রার) বিনিময় হয়। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا سَرَقَ الْمَمْلُوكُ فَبِعْهُ وَلَوْ بِنَشٍّ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: এক উকিয়ার অর্ধেক অর্থাৎ বিশ দিরহামকে এক নাশ্ব বলে। অর্থাৎ তাকে অতি সামান্য মূল্য হলেও বিক্রয় করে দাও।