পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৭-[১৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক চোরকে আনা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার হাত কেটে দিলেন। তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা বুঝতে পারিনি যে, আপনি তার হাত কেটে দেবেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যদি (আমার মেয়ে) ফাত্বিমাহ্ও হত, তবুও আমি তার হাত কেটে দিতাম। (নাসায়ী)[1]
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِسَارِقٍ فَقَطَعَهُ فَقَالُوا: مَا كُنَّا نَرَاكَ تَبْلُغُ بِهِ هَذَا قَالَ: «لَوْ كانتْ فاطمةُ لقطعتَها» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: আল্লাহর ‘‘হাদ্দ’’ কায়িম করার ব্যাপারে কোনো অনুকম্পার অবকাশ নেই। যেমন আল্লাহর বাণী: وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللّٰهِ ‘‘আল্লাহর আইন কার্যকর করার ব্যাপারে তাদের প্রতি দয়ামায়া তোমাদেরকে যেন প্রভাবিত না করে’’- (সূরা আন্ নূর ২৪ : ২)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৮-[১৯] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি তার এক গোলামকে ’উমার (রাঃ)-এর নিকট নিয়ে এসে বলল, তার হাত কেটে দিন। কেননা সে আমার সহধর্মিণীর আয়না চুরি করেছে। তখন ’উমার বললেনঃ তার হাত কাটা যাবে না। কারণ সে তোমাদের খাদিম, সে তোমাদের জিনিসই নিয়েছে। (মালিক)[1]
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى عُمَرَ بِغُلَامٍ لَهُ فَقَالَ: اقْطَعْ يَدَهُ فَإِنَّهُ سرقَ مرآةَ لأمرأتي فَقَالَ عمَرُ رَضِي اللَّهُ عَنهُ: لَا قَطْعَ عَلَيْهِ وَهُوَ خَادِمُكُمْ أَخَذَ مَتَاعَكُمْ. رَوَاهُ مَالك
ব্যাখ্যা : ইবনু হুমাম বলেনঃ মুনীব যদি তার মুকাতাবের (নির্ধারিত অর্থ পরিশোধের বিনিময়ে মুক্ত হবে এমন গোলাম) অর্থ সম্পদ চুরি করে তাহলে সর্বসম্মতভাবে হাত কাটা হবে না। কেননা মুনীবের অধিকার আছে তার সম্পদে।
অনুরূপভাবে যদি মুকাতাব যদি তার মুনীবের সম্পদ চুরি করে তাহলে তার হাত কাটা যাবে না। কেননা সে তার দাস এমনকি তার মুনীবের স্ত্রীরও সম্পদ চুরি করে। আর তা এজন্য যে, সম্পদ তার দৃষ্টির বা নাগালের বাইরে রক্ষিত বা গচ্ছিত না।
আর ইমাম মালিক, আবূ সাওর এবং ইবনুল মুনযির-এর মতে কুরআন ‘আম্ আমানাতের দলীল প্রমাণ করে হাত কাটা যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৯-[২০] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে আবূ যার! আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার খিদমাতে উপস্থিত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ঐ সময় তুমি কি করবে, যখন আকস্মিক মহামারিতে ব্যাপকভাবে মানুষ মারা যাবে। এমনকি একটি ঘরের তথা কবরের মূল্য একটি গোলামের মূল্যের সমপরিমাণ হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ এবং তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক অবগত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এমতাবস্থায় তুমি ধৈর্যধারণ করবে। হাম্মাদ ইবনু আবূ সুলায়মান বলেন : কাফন চোরের হাত কাটা যাবে। কারণ সে মৃত ব্যক্তির ঘরে (চুরির উদ্দেশে) প্রবেশ করেছে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ» قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ: «كَيْفَ أَنْتَ إِذَا أَصَابَ النَّاسَ مَوْتٌ يَكُونُ الْبَيْتُ فِيهِ بِالْوَصِيفِ» يَعْنِي الْقَبْرَ قُلْتُ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «عَلَيْكَ بِالصَّبْرِ» قَالَ حمَّادُ بنُ أبي سُليمانَ: تُقْطَعُ يَدُ النَّبَّاشِ لِأَنَّهُ دَخَلَ عَلَى الْمَيْتِ بيتَه. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও ইমাম মুহাম্মাদ প্রমুখগণ বলেন, দাফনের পর কবর থেকে মৃত লাশের কাফন চুরি করলে চোরের হাত কাটা যাবে না। কেননা কবর গৃহের ন্যায় সুরক্ষিত স্থান নয় এবং তাতে কোনো পাহারাদারও নেই। এমন গৃহকে সুরক্ষিত বলা যায় না। এরূপ ঘর থেকে চুরি হলে চোরের হাত কাটা যাবে না। অবশ্য শাসক অন্য যে কোনো শাস্তি দিতে পারেন। তবে ইমাম আবূ হানীফাহ্-এর প্রসিদ্ধ উস্থায হাম্মাদ ইবনু আবূ সুলায়মান ও অন্যান্য ইমামগণ বলেন, কাফন চোরের হাত কাটা যাবে। তার উক্ত হাদীসের শব্দ থেকে প্রমাণ গ্রহণ করেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরকে (বায়ত) গৃহ বলেছেন। আর গৃহ থেকে চুরি করলে হাত কর্তিত হয়। কিন্তু শুধু ‘গৃহ’ শব্দ দ্বারা কাফন চুরির প্রতি ‘‘হাদ্দ’’ সাব্যস্ত করা যুক্তিযুক্ত নয়। কেননা কবর গৃহ হলেও সুরক্ষিত নয়। অথচ সুরক্ষিত মাল চুরি ব্যতীত হাদ্দ প্রযোজ্য হয় না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)