পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৯০-[১৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিবাহ বন্ধন হতে (বিনা কারণে) বিচ্ছিন্নকারিণীগণ (অর্থাৎ- ধন-সম্পদের বিনিময়ে খুলা’ তালাক প্রার্থনাকারিণীগণ) মুনাফিক রমণী। (নাসায়ী)[1]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْمُنْتَزِعَاتُ وَالْمُخْتَلِعَاتُ هُنَّ الْمُنَافِقَاتُ» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: যদি কোনো নারী বিনা কারণে, স্বামীর বিবাহ বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন বা মুক্তির অভিলাষী হয় এবং স্বামীর নিকটে খুলা‘ ত্বলাকের প্রার্থনা করে তবে সে মুনাফিক।
‘আল্লামা ত্বীবী মুনাফিক বলার ব্যাপারে বলেন, এটা তিরস্কারের ক্ষেত্রে মুবালাগাহ্ করা হয়েছে।
‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) مُنَافِقَاتُ-এর ব্যাখ্যায় বলেন, «الْعَاصِيَاتُ بَاطِنًا، وَالْمُطِيعَاتُ ظَاهِرًا» অর্থাৎ গোপনে অবাধ্যচারিণী কিন্তু প্রকাশ্যে হবে, অনুগতশীলা।
ইবনুল হুমাম (রহঃ) সামান্য শব্দ পার্থক্যসহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে হাদীসটি এসেছে সেই উদ্ধৃতি পেশ করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৯১-[১৮] নাফি’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি ’সফিয়্যাহ্ বিনতু আবূ ’উবায়দ’-এর ক্রীতদাসী হতে বর্ণনা করেন, সফিয়্যাহ্ (রাঃ) তাঁর স্বামী [’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে নিজের সমস্ত সহায়-সম্পত্তির বিনিময়ে খুলা’ (তালাক) চান। অথচ ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার(রাঃ) এতে কোনো দ্বিমত পোষণ করেননি। (মালিক- মুয়াত্ত্বা)[1]
وَعَنْ نَافِعٍ عَنْ مَوْلَاةٍ لِصَفِيَّةَ بِنْتِ أَبِي عُبَيْدٍ أَنَّهَا اخْتَلَعَتْ مِنْ زَوْجِهَا بِكُلِّ شَيْءٍ لَهَا فَلَمْ يُنْكِرْ ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عمر. رَوَاهُ مَالك
ব্যাখ্যা: সফিয়্যাহ্ হলেন মুখতার ইবনু আবূ ‘উবায়দাহ্ আস্ সাকাফিয়্যাহ্-এর বোন এবং ‘উমার তনয় ‘আব্দুল্লাহ-এর স্ত্রী। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন এবং তাঁর নিকট থেকে হাদীস শ্রবণও করেছেন, তবে তিনি সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস রিওয়ায়াত করেননি, অবশ্য ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হাফসাহ্ (রাঃ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি তার স্বামী ‘আবদুল্লাহ -এর নিকট থেকে খুলা‘র প্রস্তাব দেন। বলা হয়েছে, (بِكُلِّ شَيْءٍ لَهَا) তার সকল কিছুর বিনিময়ে। এই সকল কিছু বলতে তার নিজের সকল সম্পদ অথবা তার কাছে স্বামীর দেয়া সকল সম্পদ অথবা তার স্বামীর অধিকার বা পাওনা সকল সম্পদ হতে পারে। ‘আব্দুল্লাহ তা প্রদানে অস্বীকার করেননি।
খুলা‘ করতে গিয়ে স্ত্রীর তার প্রাপ্ত মোহরের টাকা ফেরত দিবে। সে তার প্রাপ্ত টাকার চেয়ে আরো বেশি টাকা কি ফেরত দিতে পারবে? এবং স্বামী তার দেয়া মোহরের চেয়ে বেশি নিতে পারবে কিনা?
ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, নাসায়ী, ‘ইকরিমাহ্, মুজাহিদ প্রমুখ ফাকীহ বলেন, মোহরের চেয়ে বেশি সম্পদের বিনিময়ে স্ত্রীর খুলা‘ করা বৈধ আছে। সাহাবীদের মধ্যে ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু ‘উমার প্রমুখের একই মত। পক্ষান্তরে ইমাম আহমাদ, ইসহক প্রমুখের মতে মোহরের অতিরিক্ত সম্পদ দিয়ে খুলা‘ বৈধ নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
এ সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা ফাতহুল কদীর ৫৮-৫৯ পৃঃ দ্রষ্টব্য।
পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৯২-[১৯] মাহমূদ ইবনু লাবীদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, তিনি তার স্ত্রীকে একসঙ্গে তিন তালাক দিয়েছেন। এটা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভীষণভাবে রাগের সাথে দাঁড়িয়ে বললেন- আমি তোমাদের মধ্যে থাকাবস্থায় আল্লাহর কিতাব (শারী’আতের বিধান)-এর সাথে খেলা (অবজ্ঞা-অবহেলা) করছ? এ কথা শুনে জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাকে হত্যা করব? (নাসায়ী)[1]
حَدِيث رِجَاله ثِقَات وَعَن مَحْمُود بن لبيد قل: أَخْبَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلَاثَ تَطْلِيقَاتٍ جَمِيعًا فَقَامَ غَضْبَانَ ثُمَّ قَالَ: «أَيُلْعَبُ بِكِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَأَنَا بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ؟» حَتَّى قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَا أَقْتُلُهُ؟ . رَوَاهُ النَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসের বর্ণনাকারী মাহমূদ ইবনু লাবীদ বানী আশহাল গোত্রের আনসারী ছিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তার থেকে বেশ কিছু হাদীসও বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহচার্য লাভ করেছেন। ইমাম হাকিম বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সহচার্যের কথা জানা যায় না। ইমাম মুসলিম তাকে তাবি‘ঈনদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। ইবনু ‘আব্দিল বার (রহঃ) বলেন, ইমাম বুখারীর কথাটি সঠিক।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوْفٍ أَوْ تَسْرِيْحٌ بِاحْسَانٍ
তালাক দুইবার মাত্র। অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিমত রেখে দিবে, না হয় স্বহৃদয়তার সাথে মুক্ত করে দিবে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘অতঃপর সে যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়, তবে সে তার জন্য বৈধ হবে না, যে পর্যন্ত না সে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ২২৯-৩০)
অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ ‘‘তোমরা আল্লাহর আয়াতকে খেল-তামাশা হিসেবে গ্রহণ করো না।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ২৩১)
উপরে উল্লেখিত তিনটি আয়াত উল্লেখপূর্বক মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন এভাবে,
التَّطْلِيقُ الشَّرْعِيُّ تَطْلِيقَةٌ بَعْدَ تَطْلِيقَةٍ عَلَى التَّفْرِيقِ دُونَ الْجَمْعِ وَالْإِرْسَالِ دَفْعَةً وَاحِدَةً
শারী‘আত তালাক হলো একটির পর একটি পৃথক পৃথকভাবে প্রদান করা, (দু’টি বা তিনটি) একত্রে প্রদান না করা। এজন্য ‘উলামাগণ সাধারণভাবে একত্রে তিন তালাক প্রদানকে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেননা এতে কুরআনে উল্লেখিত التَّطْلِيقُ الشَّرْعِيُّ এর যথাযথ সুযোগ থাকে না।
মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, একত্রে তিন তালাক প্রদান করা হারাম। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোস্বা ও প্রত্যাখ্যান পাপের কারণ ছাড়া হয়নি। তিনি শুনে গোস্বায় অগ্নিশর্মা হয়ে দাঁড়িয়ে যান এবং বলে উঠেন: (أَيُلْعَبُ بِكِتَابِ اللّٰهِ) আমি তোমাদের মধ্যে বর্তমান থাকতেই আল্লাহর কিতাব নিয়ে খেল তামাশা? তিনি আরও বলেনঃ এটা বড় ধরনের অস্বীকার, বরং পূর্ণ চূড়ান্ত প্রত্যাখ্যান ও অস্বীকার।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ একত্রে তালাক প্রদান না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পৃথক পৃথক ভাবে তালাক প্রদান করার হিকমাত বা গুরুত্ব হলো আল্লাহর কুরআনের এই আয়াতের দাবী বাস্তবায়ন। আল্লাহর বাণী : ‘‘আশা করা যায় আল্লাহ এর পরেও (অর্থাৎ ‘ইদ্দত মোতাবেক বা দুই ত্বলাকের পরও সমঝোতার) কোনো পথ বের করে দিতে পারেন।’’ (সূরা আত্ব তালাক ৬৫ : ০১)
স্বামী যখন তাকে ‘ইদ্দত অনুযায়ী তালাক দিয়ে পৃথক করে দিবেন আল্লাহ তখন তার রাগ-গোস্বাকে মুহববাত দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। তার প্রতি ঘৃণার স্থলে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন এবং চূড়ান্ত ত্বলাকের দৃঢ় ইচ্ছা বা সংকল্পকে আল্লাহ অনুতপ্তে পরিবর্তন করে দিবেন, ফলে সে তার স্ত্রীকে রজ্‘আহ্ বা প্রত্যাহার করে নিবে। ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ কেউ যদি তার স্ত্রীকে বলে- ‘‘তুমি তিন তালাক’’ তার ব্যাপারে ইমাম ও ফুকাহাগণ মতবিরোধ করেছেন।
ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, আবূ হানীফাহ্, আহমাদ এবং জুমহূর সালাফ ও খলাফ বলেনঃ এ ক্ষেত্রে তিন তালাক-ই পতিত হবে। সহাবা তাবি‘ঈগণ থেকে শুরু করে সালাফ ও খলাফের কতিপয় মুহাক্কিক ‘উলামাহ্ বলেন, এ ক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হবে। ইমাম ত্বাউস ও আহলুয্ যাহিরগণও এই মতের প্রবক্তা। এ মতের অনুকূলে একাধিক বিশুদ্ধ হাদীস রয়েছে। ৩২৮৩ নং হাদীসে এর কিঞ্চিৎ প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।
ইবনু মুকাতিল এবং ইসহক-এর (এক বর্ণনা) মতে এ ক্ষেত্রে কোনো তালাক-ই পতিত হবে না। কারণ একত্রে তিন তালাক দেয়া হারাম এবং গুনাহের কাজ। আর সেই হারাম পদ্ধতিতে কোনো কাজ করলে তা কার্যকর হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৯৩-[২০] মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তাঁর নিকট (বিশ্বস্ত সূত্রে) খবর এসেছে যে, জনৈক ব্যক্তি ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, আমি স্বীয় স্ত্রীকে একশ’ তালাক দিয়েছি, এ সম্পর্কে আমার প্রতি আপনার অভিমত কি? উত্তরে তিনি বললেন, তিনটির মাধ্যমেই তোমার স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত হয়েছে, বাকি সাতানব্বইটি দ্বারা তুমি আল্লাহর আয়াত (শারী’আতের বিধান)-এর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেছ। (মুয়াত্ত্বা)[1]
وَعَن مَالك بلغه رَجُلًا قَالَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ: إِنِّي طَلَّقْتُ امْرَأَتِي مِائَةَ تَطْلِيقَةٍ فَمَاذَا تَرَى عَلَيَّ؟ فَقَالَ ابْن عَبَّاس: طلقت مِنْك ثَلَاث وَسَبْعٌ وَتِسْعُونَ اتَّخَذْتَ بِهَا آيَاتِ اللَّهِ هُزُوًا. رَوَاهُ فِي الْمُوَطَّأ
ব্যাখ্যা: ত্বলাকের উদ্দেশ্য হলো স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করা, বিবাহ বন্ধন থেকে মুক্ত করা। এই উদ্দেশ্য এক ত্বলাকের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা যায়, দুই বা তিন ত্বলাকের প্রয়োজন হয় না। এরপরও যদি কেউ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক দিতে চায় তাহলে এই তিন পর্যন্তই, তার বেশি নয়।
পবিত্র কুরআনে এই তিনের কথাই বলা হয়েছে এবং তা পর্যায়ক্রমে যে, সূরা আল বাকারা-এর ২২৯ ও ২৩০ আয়াতে যা উল্লেখ হয়েছে।
ত্বলাকের এই অধিকার ও পন্থা পরিত্যাগ করে কেউ যদি একই সঙ্গে বহু সংখ্যক তালাক প্রদান করে তবে সেটা সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর কিতাব বা বিধান নিয়ে খেল-তামাশার শামিল হবে।
পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৯৪-[২১] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে মু’আয! আল্লাহ তা’আলা জমিনের উপর ক্রীতদাস মুক্ত করা হতে সর্বোৎকৃষ্ট কোনো কাজ সৃষ্টি করেননি। অনুরূপভাবে আল্লাহ তা’আলা তালাক অপেক্ষা তার নিকট নিকৃষ্ট কাজও জমিনের উপর ব্যবস্থা করেননি। (দারাকুত্বনী)[1]
وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مُعَاذُ مَا خَلَقَ اللَّهُ شَيْئًا عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنَ الْعَتَاقِ وَلَا خَلَقَ اللَّهُ شَيْئًا عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ أَبْغَضَ إِلَيْهِ مِنَ الطَّلاقِ» . رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ
ব্যাখ্যা: হাদীসের প্রথমাংশে ইতিপূর্বে বলা হয়েছে দাস-দাসীর প্রচলন বর্তমানে নেই তাই এর ব্যাখ্যা পরিহার করা হলো।
হাদীদের দ্বিতীয় অংশ হলো জমিনের উপর আল্লাহর নিকট ত্বলাকের চেয়ে অধিক অপ্রিয় এবং অধিক অপছন্দনীয় কোনো বস্তু করেননি। এ হাদীস এবং এই অর্থের আরো দুই একটি হাদীসের উপর গবেষণা করে দেখা গেছে এগুলো য‘ঈফ বা দুর্বল, য‘ঈফ হাদীস ‘আমলযোগ্য নয়। কেননা এর বিপরীত কুরআন ও সহীহ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তার নাবীকে বলেন, ‘‘হে নাবী! আপনারা যখন স্ত্রীদের তালাক দিতে যাবেন, তখন তাদের ‘ইদ্দত পালনের জন্য তালাক দিবেন।’’ (সূরা আত্ব তালাক ৬৫ : ০১)
প্রশ্ন হলো আল্লাহ তা‘আলা কি তার নাবীকে অপছন্দনীয় কাজটি করার কথা বলেছেন? সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কোনো এক স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন, পরে তাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় সাহাবীগণ অনেকেই তাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন, হাদীসের এর বহু প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। তবে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণ সকলেই কি আল্লাহর কাছে অপ্রিয় কাজটিই করেছেন? না‘ঊযুবিল্লাহ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)