পরিচ্ছেদঃ ৩৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১৩-[৫] আবুদ্ দারদা ও আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা দু’জনে বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হে বানী আদম! তুমি আমার জন্যে চার রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর দিনের প্রথমে। আমি তোমার জন্যে যথেষ্ট হবো দিনের শেষে। (তিরমিযী)[1]

وَعَن أَبِي الدَّرْدَاءِ وَأَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَنِ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَنَّهُ قَالَ: يَا ابْن آدم اركع لي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ: أَكْفِكَ آخِرَهُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي الدرداء وابي ذر رضي الله عنهما قالا: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: عن الله تبارك وتعالى انه قال: يا ابن ادم اركع لي اربع ركعات من اول النهار: اكفك اخره . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: এখানে (اركع) বলতে صَلِّ ‘‘সালাত আদায় কর’’ উদ্দেশ্য অর্থাৎ খাস করে আমার সন্তুষ্টির জন্য। (أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ) কেউ বলেছেন, এর দ্বারা সালাতুয্ যুহা উদ্দেশ্য, কেউ বলেছেন এর দ্বারা সালাতুল ইশরাক্ব উদ্দেশ্য, আবার কেউ বলেছেন ফাজ্‌রের (ফজরের) সুন্নাত এবং ফরয। কেননা শার‘ঈভাবে দিনের প্রথম ফরয সালাত হলো ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাত।

আমি বলব যে, ইমাম আত্ তিরমিযী ও আবূ দাঊদ (রহঃ) এ চার রাক্‘আত সালাতুয্ যুহা এর অর্থ গ্রহণ করেছেন, আর এ কারণেই তারা উভয়েই এ হাদীসটিকে সালাতুয্ যুহা অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। এ মতপার্থক্য আমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, দিনের সূচনাটা ফাজ্‌র (ফজর) উদয় থেকে শুরু হবে? না-কি সূর্য উদয় থেকে শুরু হবে।

জমহূর ভাষাবিদ ও শার‘ঈ ‘উলামাগণের প্রসিদ্ধ বক্তব্য এ মর্মে প্রমাণ বহন করে যে, দিনের সূচনা ফাজ্‌র (ফজর) উদয় থেকে শুরু হয়। দিন ফাজ্‌র (ফজর) উদয় থেকে শুরু হয় এটাই নির্ধারিত। তারা বলেন, আলোচ্য চার রাক্‘আত দ্বারা সূর্য উদয়ের পরের সালাত উদ্দেশ্য এতে কোন বাধা নেই, কেননা ঐ সময়টি দিনের সূচনা থেকে বের হয়নি এবং এটাই আলোচ্য হাদীসের বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মানুষের ‘আমল। অতএব এ চার রাক্‘আত দ্বারা সালাতুয্ যুহা-ই উদ্দেশ্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১৪-[৬] এ হাদীসটি নু’আয়ম ইবনু হাম্মার আল গাত্বাফানী থেকে আবূ দাঊদ ও দারিমী বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেছেন তাদের নিকট থেকে।[1]

وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ عَنْ نُعَيْمِ بْنِ همار الْغَطَفَانِي وَأحمد عَنْهُم

ورواه ابو داود والدارمي عن نعيم بن همار الغطفاني واحمد عنهم

ব্যাখ্যা: অনুরূপ হাদীস আহমাদ (২য় খন্ডের ২৮৬, ২৮৭ পৃঃ) এবং বায়হাক্বীর (৩য় খন্ডের ৪৮ পৃঃ) নু‘আয়ম থেকে বর্ণিত রয়েছে এবং তিনি সাহাবী ছিলেন।

এখানে গাত্বাফানী বলতে গাত্বফান গোত্রকে বুঝানো হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১৫-[৭] বুরায়দাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ মানুষের শরীরে তিনশত ষাটটি জোড়া আছে। প্রত্যেক লোকের উচিত প্রত্যেকটি জোড়ার জন্যে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করা। সাহাবীগণ আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! কার সাধ্য আছে এ কাজ করতে? তিনি বললেন, মসজিদে পড়ে থাকা থুথু মুছে ফেলাও একটি সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। পথ থেকে কোন কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরিয়ে দেয়াও একটি সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। তিনশত ষাট জোড়ার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেবার মতো কোন জিনিস না পেলে ’যুহার (চাশ্‌ত/চাশত) দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়া তোমার জন্যে যথেষ্ট। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن بُرَيْدَة قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «فِي الْإِنْسَانِ ثَلَاثُمِائَةٍ وَسِتُّونَ مَفْصِلًا فَعَلَيْهِ أَنْ يَتَصَدَّقَ عَنْ كُلِّ مَفْصِلٍ مِنْهُ بِصَدَقَةٍ» قَالُوا: وَمَنْ يُطِيقُ ذَلِكَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ؟ قَالَ: «النُّخَاعَةُ فِي الْمَسْجِدِ تَدْفِنُهَا وَالشَّيْءُ تُنَحِّيهِ عَنِ الطَّرِيقِ فَإِنْ لَمْ تَجِدْ فَرَكْعَتَا الضُّحَى تُجْزِئُكَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن بريدة قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «في الانسان ثلاثماىة وستون مفصلا فعليه ان يتصدق عن كل مفصل منه بصدقة» قالوا: ومن يطيق ذلك يا نبي الله؟ قال: «النخاعة في المسجد تدفنها والشيء تنحيه عن الطريق فان لم تجد فركعتا الضحى تجزىك» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: মানুষের উপর প্রতিটি হাড়ের জোড়ার জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করা উচিত। এখানে (عَلى) শব্দটি সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদান করা মুস্তাহাব বুঝানোর জন্য, এটি শার‘ঈ ওয়াজিব সাব্যস্তকরণের জন্য নয়।

কারণ সালাতুয্ যুহা দু’ রাক্‘আত আদায় করা ওয়াজিব এবং উল্লেখিত সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদান করা ওয়াজিব এটা কেউ বলেননি, যদিও আল্লাহ তা‘আলার নি‘আমাতের উপর কৃতজ্ঞতা করাটা স্বাভাবিকভাবে ওয়াজিব।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১৬-[৮] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যে লোক যুহার বারো রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্যে জান্নাতে সোনার বালাখানা তৈরি করবেন। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি গরীব। এজন্য এ সূত্র ব্যতীত আর কোন সূত্রে এ বর্ণনা পাওয়া যায়নি।)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى الضُّحَى ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ لَهُ قَصْرًا مَنْ ذَهَبٍ فِي الْجَنَّةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ هَذَا الْوَجْهِ

وعن انس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من صلى الضحى ثنتي عشرة ركعة بنى الله له قصرا من ذهب في الجنة» . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب لا نعرفه الا من هذا الوجه

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা থেকে সালাতুয্ যুহার যে সংখ্যা বর্ণিত রয়েছে এটি তার (১২ রাক্‘আত) সর্বাধিক সংখ্যা। আল্লামা ‘আয়নী (রহঃ) ও অন্যান্যজন বলেন যে, সালাতুয্ যুহার রাক্‘আত সংখ্যা এর বেশী আর বর্ণিত হয়নি।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১৭-[৯] মু’আয ইবনু আনাস আল জুহানী (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সমাপ্তির পর যে লোক তার মুসাল্লায় সূর্য উপরে উঠে আসা পর্যন্ত বসে থাকে, তারপর যুহার দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে এবং এ সময়ে ভাল কথা ছাড়া আর কোন কথা না বলে, তাহলে তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। সে গুনাহ যদি সাগরের ফেনারাশির চেয়েও অনেক হয়ে থাকে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن معَاذ بن أنس الْجُهَنِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَعَدَ فِي مُصَلَّاهُ حِينَ يَنْصَرِفُ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتَّى يُسَبِّحَ رَكْعَتَيِ الضُّحَى لَا يَقُولُ إِلَّا خَيْرًا غُفِرَ لَهُ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ أَكْثَرَ مِنْ زَبَدِ الْبَحْرِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن معاذ بن انس الجهني قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من قعد في مصلاه حين ينصرف من صلاة الصبح حتى يسبح ركعتي الضحى لا يقول الا خيرا غفر له خطاياه وان كانت اكثر من زبد البحر» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ঐ সময়ের আল্লাহর যিকিরে সর্বদা ব্যস্ত থাকবে, কোন খারাপ কথা বলবে না। ‘আমলটি করলে সগীরাহ্ গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ ক্ষমা হতে পারে। আলোচ্য হাদীস সালাতুল ইশরাক্বের ফাযীলাতের দলীল, কেননা ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের পর অধিক নিকবর্তী সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো ইশরাক্ব। অবশ্য পূর্বে আলোচনা হয়েছে যে, সালাতুল ইশরাক্ব সালাতুয্ যুহারই অন্তর্ভুক্ত।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে