পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩২-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পূর্ণ মাপে বেশি বেশি সাওয়াব লাভে আনন্দিত হতে চায় সে যেন আমার ওপর দরূদ পাঠ করে, আহলে বায়তের ওপরও যেন দরূদ পাঠ করে। বলে,
আল্লা-হুম্মা সল্লি ’আলা- মুহাম্মাদীন্ নবীয়্যিল উমমিয়্যি, ওয়া আয্ওয়া-জিহী, ওয়া উম্মাহা-তিল মু’মিনীনা, ওয়া যুররিইয়্যাতিহী ওয়া আহলে বায়তিহী, কামা- সল্লায়তা ’আলা- আ-লি ইব্র-হীমা, ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ’’।
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! নবী মুহাম্মাদ, তাঁর স্ত্রীগণ, মু’মিনদের মা, তাঁর বংশধর ও পরিবার-পরিজনের ওপর রহমত অবতীর্ণ কর। যেভাবে তুমি রহমত অবতীর্ণ করেছো ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের ওপর)। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَكْتَالَ بِالْمِكْيَالِ الْأَوْفَى إِذَا صَلَّى عَلَيْنَا أَهْلَ الْبَيْتِ فَلْيَقُلْ اللَّهُمَّ صَلِّ على مُحَمَّد وَأَزْوَاجِهِ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ وَذُرِّيَّتِهِ وَأَهْلِ بَيْتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حُمَيْدٌ مَجِيدٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: উত্তম দরূদ হলো ইতিপূর্বে উল্লিখিত কা‘ব ইবনু ‘উজরাহ্, অথবা আবূ হুমায়দ বা আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত দরূদ যা বুখারীতে এসেছে। সেখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণেরকে দরূদ শিক্ষা দিয়েছেন যখন সাহাবীরা দরূদ পাঠের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। সুতরাং প্রমাণ করে সেটা উত্তম দরূদ, কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জন্য সবচেয়ে উত্তমটা পছন্দ করেন। তবে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসের দরূদটিও ভালো, কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভাষ্য।
হাদীস বিশারদরা এ হাদীসটিকে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী ও সন্তানেরা তাঁর পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৩-[১৫] খলীফাহ্ ’আলী ইবনু আবী ত্বালিব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রকৃত কৃপণ হলো সে ব্যক্তি, যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হবার পর আমার ওপর দরূদ পাঠ করেনি। (তিরমিযী ও আহমাদ;[1]
হাদীসটি ইমাম আহমাদ হুসায়ন ইবনু ’আলী হতে নকল করেছেন; আর ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব।
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْبَخِيلُ الَّذِي ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَرَوَاهُ أَحْمَدُ عَنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
ব্যাখ্যা: (الْبَخِيْلُ) কৃপণতা এখানে পূর্ণ কৃপণতার পরিচয় ফুটিয়ে উঠেছে। কেননা (দরূদ পাঠ করতে) তার কোন ক্ষতি বা লোকসান হয় না এবং কোন কষ্ট নেই। বরং অনেক সাওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে।
(فَلَمْ يُصَلِّ عَلَـيَّ) যে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করলো না, সে নিজের ওপর কৃপণতা করলো। আল্লাহর রহমাত দশবার লাভ করা হতে বঞ্চিত হলো। কারণ একবার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ করলে দশবার আল্লাহর রহমাত বর্ষিত হয়।
মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেনঃ যে ব্যক্তি তাঁর ওপর দরূদ পাঠ করলো না সে কৃপণতা করলো এবং নিজকে বঞ্চিত করলো সাওয়াবের পাল্লা পরিপূর্ণ করতে। সুতরাং এর চেয়ে আর বড় কেউ কৃপণ হতে পারে না।
যেমন অন্য রিওয়ায়াতে আছে- (اَلْبَخِيْلُ كُلُّ الْبَخِيْلِ) ‘‘কৃপণ সত্যিকারে কৃপণ।’’
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস- ‘‘ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধূসরিত হোক যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে অথচ সে দরূদ পাঠ করেনি’’।
আর জাবির (রাঃ)-এর হাদীস ত্ববারানীতে মারফূ‘ সূত্রে- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘‘হতভাগা সে বান্দা যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে অথচ আমার ওপর দরূদ পাঠ করেনি।’’
মুসান্নাফ ইবনু ‘আবদুর রাযযাক্বে ক্বাতাদাহ্ হতে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘‘উপেক্ষামূলক আচরণ হলো যার সামনে আমার নাম উচ্চারিত হয় আর সে আমার ওপর দরূদ পাঠ করে না’’।
আর ‘আম্মার ইবনু ইয়াসার এর হাদীস ত্ববারানীতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘‘যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে আর সে আমার ওপর দরূদ পাঠ করেনি, আল্লাহ তাকে দূরে ঠেলে দিবেন’’। আর এর সমর্থনে আরো অনেক হাদীস রয়েছে যেমন মালিক ইবনু হুওয়াইরিস। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ’আবদুল্লাহ ইবনু হারিস ত্ববারানীতে।
হাফিয ইবনু হাজার বলেন, এ সকল হাদীস সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণ করে যখন তাঁর নাম উচ্চারিত হয় তখন তাঁর ওপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব। কেননা ধূলায় ধূসরিত হওয়া ও দুর্ভাগা হওয়ার কামনা এবং কৃপণতার বৈশিষ্ট্য ও উপেক্ষামূলক আচরণ দাবী করে শাস্তির। আর শাস্তিই হলো ওয়াজিব হওয়ার নিদর্শন।
আবার কেউ হাদীসসমূহকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে সে সালাতে শেষ জবাবে তাঁর ওপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব। কেননা তাঁর নাম উচ্চারণের সময় তাঁর ওপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব হিসেবে প্রমাণ করে আর তাশাহুদে তাঁর নাম উচ্চারিত হয়েছে। যারা এভাবে দলীল গ্রহণ করেছে এটাও একটি গ্রহণযোগ্য মত বা বিষয়।
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৪-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার কবরের কাছে দাঁড়িয়ে থেকে আমার ওপর দরূদ পড়ে আমি তা সরাসরি শুনতে পাই। আর যে ব্যক্তি দূর থেকে আমার প্রতি দরূদ পড়ে তা আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى عَلَيَّ عِنْدَ قَبْرِي سَمِعْتُهُ وَمَنْ صَلَّى عَلَيَّ نَائِيًا أُبْلِغْتُهُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شعب الْإِيمَان
ব্যাখ্যা: (مَنْ صَلّـى عَلَـىَّ عِنْدَ قَبْرِىْ) ‘‘যে ব্যক্তি আমার ওপর আমার কবরের নিকট দরূদ পাঠ করে’’ অর্থাৎ- আমার ঘরে আমার কবরের অতি নিকটবর্তী এটা সুস্পষ্ট কিন্তু বর্তমানে তা সম্ভব নয়। কেননা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর ঘর যেখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দাফন করা হয়েছে এবং তা বন্ধ করা হয়েছে।
কবরের চতুর্দিকে উঁচু দেয়াল রয়েছে, এ কারণে ঘরে প্রবেশ করা এবং ক্ববরের নিকটে যাওয়া সম্ভব না।
মা'নাবী বলেন, মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাগণের) মাধ্যমে সংবাদ দেয়া হয় কেননা তাঁর রূহ্ সম্মানিত স্থানে অবস্থিত আর জমিনের জন্য নাবীগণের শরীর খাওয়া তথা পঁচে ফেলাটা হারাম। সুতরাং তার অবস্থা একজন নিদ্রিত ব্যক্তির মতো হতে পারে। আল্লাহই ভালো জানেন।
আর হাদীসটি তার কবরে উপস্থিত হয়ে দরূদ পাঠ ও অনুপস্থিত ব্যক্তির দরূদ পাঠের মধ্যে পার্থক্য প্রমাণ করে।
যে কবরের কাছে দরূদ পাঠ করে তার দরূদ পাঠ স্বয়ং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনতে পান আর যে দূর হতে পাঠ করে তারটা পৌঁছিয়ে দেয়া হয়।
সুতরাং হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যারা কবরের নিকট দরূদ পাঠ করে তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফাযীলাত যারা দূর হতে দরূদ পাঠ করে তাদের চেয়ে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মাতের মধ্যে হতে যে কেউ তার ওপর দরূদ বা সালাম পেশ করে সেটা তাঁর কাছে পৌঁছিয়ে দেয়া হয় এবং উপস্থাপন করা হয় দরূদ পাঠকারী চাই কাছে থাকুক আর দূরে থাকুক কোন অবস্থাতেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনতে পান না বরং তার নিকট পৌঁছানো হয় কোন প্রকার পার্থক্য ছাড়াই চাই দূরে হোক আর নিকটে হোক। আর এটা নিষেধাজ্ঞার হাদীসের বিপরীত যা ইতিপূর্বে গেছে যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরকে মেলার স্থান বানাতে নিষেধ করেছেন আর যেখানেই থাকুক না কেন সেখান হতে দরূদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আরো এটা এ হাদীসের বিপরীত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন সাওয়াবের উদ্দেশে কোন স্থানে সফর করা তবে তিনটি মাসজিদ ব্যতিরেকে।
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৫-[১৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর মালায়িকাহ্ তার ওপর সত্তরবার দরূদ পাঠ করেন। (আহমাদ)[1]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: مَنْ صَلَّى عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَمَلَائِكَتُهُ سَبْعِينَ صَلَاةً. رَوَاهُ أَحْمد
ব্যাখ্যা: এ হাদীস এবং ইতিপূর্বে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস মারফূ‘ সূত্রে ‘‘যে ব্যক্তি একবার আমার ওপর দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা দশবার তার ওপর রহমাত নাযিল করবেন’’ দু’ হাদীসের দ্বন্দ্বের সমাধান আলোচিত হয়েছে পূর্বে।
আর মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেন, সম্ভবত এটা জুমু‘আর দিনের সাথে সংশ্লিষ্ট কারণ বর্ণিত আছে, জুমু‘আর দিনের ‘আমল সত্তর গুণে বৃদ্ধি করা হয়।
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৬-[১৮] রুওয়াইফি’ ইবনু সাবিত আল আনসারী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পড়বে এবং বলবে, ’’আল্লা-হুম্মা আনযিলহু মাক্ব’আদাল মুক্বররাবা ’ইনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়া-মাতি’’! (হে আল্লাহ! তাঁকে তুমি কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তোমার কাছে মর্যাদাপূর্ণ স্থান দিও) আমার সুপারিশ তার জন্য অনিবার্য হয়ে যাবে। (আহমাদ)[1]
وَعَن رويفع أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَقَالَ: اللَّهُمَّ أَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَجَبَتْ لَهُ شَفَاعَتِي . رَوَاهُ أَحْمد
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৭-[১৯] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে একটি খেজুর বাগানে প্রবেশ করলেন। এখানে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর দরবারে সাজদারত হলেন। সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) এত দীর্ঘ করলেন যে, আমি ভীত হয়ে পড়লাম। আল্লাহ না করুক তাঁকে তো আবার আল্লাহ মৃত্যুমুখে পতিত করেননি? ’আবদুর রহমান বলেন, তাই আমি তাঁর কাছে এলাম, পরখ করে দেখার জন্য। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাথা উঠালেন এবং বললেন, কি হয়েছে? আমি তাঁকে আমার আশংকার কথা বললাম। ’আবদুর রহমান বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন আমাকে বললেনঃ জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, আমি কি আপনাকে এই সুসংবাদ দিবো না যা আল্লাহ তা’আলা আপনার ব্যাপারে বলেন? যে ব্যক্তি আপনার ওপর দরূদ পাঠ করবে আমি তার প্রতি রহমত বর্ষণ করব। যে ব্যক্তি আপনার প্রতি সালাম পাঠাবে আমি তার প্রতি শান্তি নাযিল করব। (আহমাদ)[1]
وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى دَخَلَ نَخْلًا فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ حَتَّى خَشِيتُ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ تَعَالَى قَدْ تَوَفَّاهُ. قَالَ: فَجِئْتُ أَنْظُرُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ: «مَا لَكَ؟» فَذَكَرْتُ لَهُ ذَلِكَ. قَالَ: فَقَالَ: إِنَّ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ لي: أَلا أُبَشِّرك أَن اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ لَكَ مَنْ صَلَّى عَلَيْكَ صَلَاةً صَلَّيْتُ عَلَيْهِ وَمَنْ سَلَّمَ عَلَيْكَ سلمت عَلَيْهِ . رَوَاهُ أَحْمد
পরিচ্ছেদঃ ১৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা
৯৩৮-[২০] ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’আ আসমান ও জমিনের মধ্যে লটকিয়ে থাকে। এর থেকে কিছুই উপরে উঠে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের নবীর ওপর দরূদ না পাঠাও। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: إِنَّ الدُّعَاءَ مَوْقُوفٌ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَا يَصْعَدُ مِنْهُ شَيْءٌ حَتَّى تُصَلِّيَ عَلَى نبيك. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: হাদীসটি তাদের মতকে আরো শক্তিশালী করে যারা বলে শেষ বৈঠকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ করা ওয়াজিব।
হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, হাদীসটির সমর্থনে মারফূ' হাদীস রয়েছে।
ইতিপূর্বে বর্ণিত ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ)-এর হাদীস- ‘‘যে ব্যক্তি তাশাহুদ পড়বে, তারপরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ করবে, অতঃপর নিজের জন্য দু‘আ করবে।’’
দরূদ শেষে দু‘আ ও সালাত শেষ বা পরিসমাপ্তির পদ্ধতি।