পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬২-[৪১] মু’আয ইবনু ’আবদুল্লাহ আল জুহানী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুহায়নাহ্ বংশের এক ব্যক্তি তাকে বলেছেন, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ফাজ্রের (ফজরের) সালাতের দু’ রাক্’আতেই সূরাহ্ ’ইযা- যুলযিলাত’ তিলাওয়াত করতে শুনেছেন। আমি বলতে পারি না, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভুলে গিয়েছিলেন না ইচ্ছা করেই পড়েছিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]
عَن معَاذ بن عبد الله الْجُهَنِيّ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا مِنْ جُهَيْنَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَرَأَ فِي الصُّبْح (إِذا زلزلت)
فِي الرَّكْعَتَيْنِ كلتهما فَلَا أَدْرِي أَنَسِيَ أَمْ قَرَأَ ذَلِكَ عَمْدًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬৩-[৪২] ’উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) ফাজ্রের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। উভয় রাক্’আতেই তিনি সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ তিলাওয়াত করলেন। (মালিক)[1]
وَعَنْ عُرْوَةَ قَالَ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ صَلَّى الصُّبْحَ فَقَرَأَ فِيهِمَا بِ (سُورَةِ الْبَقَرَةِ)
فِي الرَّكْعَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا. رَوَاهُ مَالك
পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬৪-[৪৩] ফুরাফিসাহ্ ইবনু ’উমায়র আল্ হানাফী (রহঃ) বলেন, আমি সূরাহ্ ইউসুফ ’উসমান ইবনু ’আফফান (রাঃ)থেকে শুনে শুনে মুখস্থ করেছি। কেননা তিনি এ সূরাটিকে বিশেষ করে ফাজ্রের (ফজরের) সালাতে প্রায়ই তিলাওয়াত করতেন। (মালিক)[1]
وَعَن الفرافصة بن عُمَيْر الْحَنَفِيّ قَالَ: مَا أَخَذْتُ سُورَةَ يُوسُفَ إِلَّا مِنْ قِرَاءَةِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ إِيَّاهَا فِي الصُّبْحِ وَمن كَثْرَة مَا كَانَ يُرَدِّدهَا. رَوَاهُ مَالك
পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬৫-[৪৪] ’আমির ইবনু রবী’আহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আমীরুল মু’মিনীন খলীফাহ্ ’উমার (রাঃ) ফারূক (রাঃ)-এর পিছনে ফাজ্রের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলাম। তিনি এর দু’ রাক্’আতেই সূরাহ্ ইউসুফ ও সূরাহ্ হাজ্জকে থেমে থেমে তিলাওয়াত করেছেন। কেউ আমিরকে জিজ্ঞেস করলো যে, খলীফাহ্ ’উমার (রাঃ) ফাজ্রের (ফজরের) ওয়াক্ত শুরু হবার সাথে সাথেই কি সালাতে আদায়ে দাঁড়িয়ে যেতেন? উত্তরে আমির বলেন, হ্যাঁ। (মালিক)[1]
وَعَنْ عَبْدُ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ قَالَ: صلينَا وَرَاء عمر ابْن الْخطاب الصُّبْح فَقَرَأَ فيهمَا بِسُورَةِ يُوسُفَ وَسُورَةِ الْحَجِّ قِرَاءَةً بَطِيئَةً قِيلَ لَهُ: إِذًا لَقَدْ كَانَ يَقُومُ حِينَ يَطْلُعُ الْفجْر قَالَ: أجل. رَوَاهُ مَالك
ব্যাখ্যা: (فَقَرَأَ فِيهمَا بِسُورَةِ يُوسُفَ وَسُورَةِ الْحَجِّ) ‘‘তিনি ফাজরের (ফজরের) দু’ রাক্‘আতে সূরাহ্ ইউসুফ এবং সূরাহ্ আল্ হাজ্জ পাঠ করলেন।’’ অর্থাৎ- প্রথম রাক্‘আতে সূরাহ্ ইউসুফ পুরাটাই পাঠ করলেন এবং দ্বিতীয় রাক্‘আতে সূরাহ্ আল্ হাজ্জ পুরাটাই পাঠ করলেন।
(قِرَاءَةً بَطِيئَةً) ‘‘থেমে থেমে পাঠ করলেন।’’ অর্থাৎ- দ্রুত পাঠ না করে তাজবীদ সহকারে থেমে থেমে পাঠ করলেন।
বিভিন্ন আসার প্রমাণ করে যে, খুলাফায়ে রাশিদাগণ ফাজরের (ফজরের) সালাতে ক্বিরাআত (কিরআত) দীর্ঘ করতেন। তা এজন্য যে, তাদের পিছনে যে সকল মুক্তাদীগণ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন তারা দীর্ঘ ক্বিরাআত (কিরআত) পছন্দ করতেন এবং এ বিষয়টি তাদের জানা ছিল তাই তারা ক্বিরাআত (কিরআত) দীর্ঘ করতেন। তবে বর্তমান সময়ে ক্বিরাআত (কিরআত) হালকা করাই উত্তম। কেননা বর্তমান সময়ের মুক্তাদীগণের অবস্থা পূর্বকালের মুক্তাদীগণের মতো নয়। তাছাড়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ من أم الناس فليخفف ‘‘যিনি ইমামাত করবেন তিনি যেন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সংক্ষিপ্ত করেন।’’
পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬৬-[৪৫] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তার পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মুফাসসাল সূরার (হুজুরাত থেকে নাস পর্যন্ত) ছোট-বড় সকল সূরাহ্ দিয়েই ফরয সালাতের ইমামতি করতে শুনেছি। (মালিক)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: مَا مِنَ الْمُفَصَّلِ سُورَةٌ صَغِيرَةٌ وَلَا كَبِيرَةٌ إِلَّا قَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَؤُمُّ بِهَا النَّاسَ فِي الصَّلَاة الْمَكْتُوبَة. رَوَاهُ مَالك
পরিচ্ছেদঃ ১২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৬৭-[৪৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উতবাহ্ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের সালাতে সূরাহ্ ’হা-মিম আদ্ দুখান’ তিলাওয়াত করলেন। (নাসায়ী)[1]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَلَاةِ الْمَغْرِبِ بِ (حم الدُّخَانِ)
رَوَاهُ النَّسَائِيّ مُرْسلا
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসসমূহ দ্বারা এটা বুঝা যায় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক এক সময় একেক সূরাহ্ পাঠ করতেন এবং কখনো এক সূরাহ্ ভাগ করে পড়তেন। এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমস্ত কুরআন পাঠ করতেন আর বর্ণনাকারীগণ যখন যা শুনেছেন বা অবগত হয়েছেন তাই বর্ণনা করেছেন। মোটকথা বিশেষ বিশেষ সালাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব সূরাহ্ পড়েছেন বলে সহীহভাবে প্রমাণিত আছে সেগুলোর উপর ‘আমল করা সুন্নাত। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, কোন সালাতের জন্য কোন সূরাহ্ বা আয়াতকে খাস করে নেয়া ঠিক নয়। তাই মাঝে মধ্যে সূরাহ্ পরিবর্তন করে পড়া ভালো।