পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৩-[৩] (’আবদুল্লাহ) ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় আযানের বাক্য দু’ দু’বার ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের বাক্য এক একবার ছিল। কিন্তু ’’ক্বদ্ ক্ব-মাতিস্ সলা-হ্’’-কে (অর্থাৎ- সালাতে দাঁড়ানোর সময় নিকটবর্তী হয়েছে) মুয়াযযিন দু’বার করে বলতেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও দারিমী)[1]
عَن ابْن عمر قَالَ: كَانَ الْأَذَانُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ وَالْإِقَامَةُ مَرَّةً مَرَّةً غَيْرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ: قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ والدارمي
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে আযানের বাক্যগুলো দু’ বার করে এবং ইক্বামাত একবার করে দেয়া হত। ক্বারী বলেন, আযানের শুরুতে তাকবীর (আল্লা-হু আকবার) চারবার দিতে হবে। আর শেষে তাহলীল (লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ) একবার বলতে হবে। এ দু’টি বিষয় অত্র হাদীসের ব্যাপক হুকুমের বাইরে বিশেষ হুকুম। বাহ্যিকভাবে এ হাদীস যদিও তারজী' আযানকে নিষিদ্ধ করে কিন্তু আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা তারজী' আযান প্রমাণিত হয়। যেহেতু আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ) বর্ণিত সহীহ হাদীসে আযানের অতিরিক্ত বাক্যগুলো রয়েছে এবং এর নিষিদ্ধতার কোন হাদীস নেই সেহেতু অতিরিক্ত বাক্য সম্বলিত হাদীসটি গ্রহণ করা আবশ্যক। যদিও ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কথা দ্বারা তারজী' আযানের বিরোধী কথা প্রমাণিত হলেও আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা তারজী' আযান-এর গ্রহণযোগ্য হওয়া প্রমাণিত হয়। আর নিয়ম হলো, নেতিবাচক হুকুমের উপর ইতিবাচক হুকুম অগ্রাধিকার পাবে। মুয়াযযিন ইক্বামাতের মধ্যে ‘‘ক্বদ্ ক্ব-মাতিস্ সলা-হ্’’ বাক্যটি দু’বার বলবে।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৪-[৪] আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঊনিশ বাক্যে আযান আর সতের বাক্যে ইক্বামাত(ইকামত/একামত) শিক্ষা দিয়েছেন। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَهُ الْأَذَانَ تِسْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً وَالْإِقَامَةَ سَبْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: আযান-এর বাক্য উনিশটি। প্রথমে ৪ বার আল্লা-হু আকবার, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বাক্যটি তারজী' সহ ৪ বার, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লা-হ বাক্যটি তারজী সহ ৪ বার, হাইয়্যা আলাস্ সলা-হ্ ২ বার, হাইয়্যা ‘আলাল ফালা-হ ২ বার, আল্লা-হু আকবার ২ বার, শেষে ১ বার লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, এ মোট ঊনিশ বাক্য। আযানের মধ্যে তারজী' সুন্নাহসম্মত হওয়ার পক্ষে এ হাদীস স্পষ্ট দলীল। ইক্বামাতের বাক্য সতেরটি। প্রথমে আল্লা-হু আকবার ৪ বার, শাহাদার বাক্য দু’টিতে তারজী' বাদ দিতে হবে, আর ক্বদ্ ক্ব-মাতিস্ সলা-হ্ বাক্যটি ১ বার যোগ করতে হবে। বাকী বাক্যগুলো আযানের মতই থাকবে। তাহলেই ইক্বামাতের বাক্য সতেরটি হয়।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৫-[৫] উক্ত রাবী [আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের নিয়ম শিখিয়ে দিন। তিনি [আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)] বলেন, (আমার কথা শুনে) তিনি আমার অথবা এবং বললেন, বলোঃ আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার। এ বাক্যগুলো তুমি খুব উচ্চস্বরে বলবে। এরপর তুমি নিম্নস্বরে বলবে, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ। তুমি পুনরায় উচ্চস্বরে শাহাদাত বাক্য বলবেঃ আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, হাইয়্যা ’আলাস্ সলা-হ্, হাইয়্যা ’আলাস্ সলা-হ্; হাইয়া ’আলাল ফালা-হ, হাইয়্যা ’আলাল ফালা-হ। এ আযান ফজরের (ফজরের) সালাতের জন্য হলে বলবে, আস্সলা-তু খয়রুম মিনান্ নাওম, আস্সলা-তু খয়রুম মিনান্ নাওম। আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার। লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي سنة الْأَذَان قَالَ: فَمسح مقدم رَأسه. وَقَالَ: وَتقول اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ تَرْفَعُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَقُولَ: أَشْهَدُ أَن لَا إِلَه إِلَّا الله أشهد أَن لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ تَخْفِضُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَرْفَعُ صَوْتَكَ بِالشَّهَادَةِ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ أَشْهَدُ أَن لَا إِلَه إِلَّا الله أشهد أَن مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ فَإِنْ كَانَ صَلَاةُ الصُّبْحِ قُلْتَ: الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)-এর এ হাদীস ‘আমল না করার পিছনে ওযর পেশ করে ‘‘হিদায়া’’ গ্রন্থকার বলেন, এরূপ করা হয়েছিল প্রশিক্ষণের জন্য। আর প্রশিক্ষণকে আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ) তারজী' হিসেবে ধারণা করে নিয়েছেন। ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) তাঁর ‘শারহুল আসার’ গ্রন্থে বলেছেন, আবূ মাহযূরাকে তারজী' শিক্ষা দেয়া হয়েছিল এজন্য যে, তিনি এ দু’ বাক্যে তার স্বরকে উচ্চ করেননি। সেজন্যই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘‘তুমি ফিরে যাও এবং তোমার স্বরকে টেনে ও উচ্চ করে বলো’’।
ইবনুল জাওযী বলেন, আবূ মাহযূরাহ্ ইসলাম গ্রহণের পূর্বে কাফির ছিলেন। তিনি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আযান শিক্ষা দিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি শাহাদার বাক্যগুলো পুনরাবৃত্তি করিয়েছিলেন। এটা এজন্য করেছিলেন যে, যাতে শাহাদার ব্যাপারটি তার অন্তরে গেঁথে যায়.....।
ইমাম যায়লা‘ঈ তার নাসবুর্ রায়াহ গ্রন্থে উপর্যুক্ত তিনটি মত উল্লেখ করে বলেছেন, মর্মের দিক থেকে এ তিনটি মতই নিকটবর্তী (অর্থাৎ- প্রায় একই)। এরপর তিনি এ মতগুলোর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, আবূ দাঊদে বর্ণিত অত্র হাদীস এ মতগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে। এ হাদীসে সাহাবী ও বর্ণনাকারী আবূ মাহযূরাহ্ বলেছেন, ‘‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের পদ্ধতি বা নিয়ম শিক্ষা দিন। অতঃপর এ হাদীসের মধ্যেই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তারজী' সহ আযান শিক্ষা দিলেন এবং এ তারজী'কে আযানের নিয়মের অন্তর্ভুক্ত করলেন। তাছাড়া এ মতগুলো প্রত্যাখ্যান করার আরো অনেক কারণ রয়েছে। যা সত্যানুসন্ধানী, ন্যায়নিষ্ঠ চিন্তাশীল ব্যক্তির নিকট অজ্ঞাত বা গোপন নয়।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৬-[৬] বিলাল (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ ফজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ব্যতীত কোন সালাতেই ’তাসবীব’ করবে না। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَنْ بِلَالٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُثَوِّبَنَّ فِي شَيْءٍ مِنَ الصَّلَوَاتِ إِلَّا فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: أَبُو إِسْرَائِيلَ الرَّاوِي لَيْسَ هُوَ بِذَاكَ الْقَوِيِّ عِنْدَ أهل الحَدِيث
ব্যাখ্যা: তাসবীব تَثْوِيْبٌ অর্থ হলো কোন সংবাদ দেয়ার পর সংবাদ দেয়া বা বিজ্ঞপ্তি জানানোর পর বিজ্ঞপ্তি জানানো। তাসবীব বলতে সাধারণত ইক্বামাতকে বুঝানো হয়, যা আযানের পরে আসে। (আযান দ্বারা একবার সালাতের সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। অতঃপর ইক্বামাত দ্বারা আবার সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, তাই তাসবীব বলা হয়েছে।) তাসবীব বলতে ফাজরের (ফজরের) আযানে ‘‘আস্ সলা-তু খয়রুম্ মিনান্ নাওম’’ বলা বুঝানো হয়। এ দু’টি অর্থই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত অর্থ। তবে মানুষেরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগের পরে আযান এবং ইক্বামাতের মাঝে তৃতীয় আরেকটি সংবাদ প্রচারকে নতুন করে চালু করেছে। (যা বিদ্‘আত এবং অবশ্যই বর্জনীয়)
বিলাল (রাঃ)-এর এ হাদীসে তাসবীব বলতে ফাজরের (ফজরের) সালাতে মুয়াযযিনের ‘‘আস্ সলা-তু খয়রুম্ মিনান্ নাওম’’ বলাকে বুঝানো হয়েছে। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শুধু ফজরের (ফজরের) সালাতে ‘‘হাইয়্যা ‘আলাল ফালা-হ’’ বাক্যের পরে ‘‘আস্ সলা-তু খয়রুম মিনান্ নাওম’’ বাক্য বলা সুন্নাত। যেমনটি পূর্বের আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৭-[৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে বললেন, যখন আযান দিবে ধীর গতিতে (উচ্চকণ্ঠে) দিবে এবং যখন ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিবে দ্রুতগতিতে (নিচু স্বরে) দিবে। তোমরা আযান ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের মধ্যে এ পরিমাণ বিরতি রাখবে যাতে খাদ্য গ্রহণকারী খাওয়া, পানরত লোক পান করা, পায়খানা-প্রস্রাবে রত লোক হাজাত পূর্ণ করতে পারে। আর আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা সালাতে কাতারবদ্ধ হবে না। (তিরমিযী)[1]
ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসকে আমরা ’আবদুল মুন্’ইম ছাড়া আর কারও থেকে শুনিনি আর এর সানাদ মাজহূল (অপরিচিত)
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِبِلَالٍ: «إِذَا أَذَّنْتَ فَتَرَسَّلْ وَإِذا أَقمت فاحدر وَاجعَل بَيْنَ أَذَانِكَ وَإِقَامَتِكَ قَدْرَ مَا يَفْرُغُ الْآكِلُ مِنْ أَكْلِهِ وَالشَّارِبُ مِنْ شُرْبِهِ وَالْمُعْتَصِرُ إِذَا دَخَلَ لِقَضَاءِ حَاجَتِهِ وَلَا تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ: لَا نعرفه إِلَّا ن حَدِيث عبد الْمُنعم وَهُوَ إِسْنَاد مَجْهُول
ব্যাখ্যা: আযান এবং ইক্বামাতের মাঝে কিছু সময়ের বিরতি এজন্য রাখতে বলা হয়েছে যাতে যারা সালাতে অনুপস্থিত তারা সালাতে উপস্থিত হতে পারে। আর যেহেতু আযান দেয়া হয় অনুপস্থিতদের উপস্থিত করার জন্য সেহেতু উপস্থিত হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে উপস্থিত হওয়ার জন্য একটি সময় নির্ধারণ জরুরী। আযান ও ইক্বামাতের মাঝে সময় না দেয়া হলে আযানের উদ্দেশ্য অর্জিত হবে না, অর্থাৎ- লোকজন সালাতের জামা‘আতে উপস্থিত হতে পারবে না।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৮-[৮] যিয়াদ ইবনু হারিস আস্ সুদায়ী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিলেন ফাজ্রের (ফজরের) সালাতের আযান দিতে। আমি আযান দিলাম। তারপর (সালাতের সময়) বিলাল ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিতে চাইলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, সুদায়ীর ভাই আযান দিয়েছে। আর যে আযান দিবে সে ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ও দিবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَن زِيَاد بن الْحَارِث الصدائي قَالَ: أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِن أؤذن فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ» فَأَذَّنْتُ فَأَرَادَ بِلَالٌ أَنْ يُقِيمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِن أَخا صداء قد أذن وَمن أَذَّنَ فَهُوَ يُقِيمُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুয়াযযিনই ইক্বামাত দেয়ার অধিকার রাখে। মুয়াযযিন উপস্থিত থাকা অবস্থায় অন্য কেউ ইক্বামাত দেয়া মাকরূহ। অধিকাংশ ইসলামী পন্ডিতের মত হলো, যে আযান দিবে সে-ই ইক্বামাত দিবে। মুয়াযযিন কর্তৃক ইক্বামাত দেয়া এবং অন্য কেউ ইক্বামাত দেয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বিষয়টি প্রশস্ত। ইমামদ্বয় ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ-এর হাদীস দ্বারা দলীল দেন। কিন্তু সানাদের দিক থেকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) হাদীস অপেক্ষা যিয়াদ ইবনুল হারিস্ আস্ সুদায়ী (রাঃ)-এর হাদীস অধিক শক্তিশালী। তাই সুদায়ী (রাঃ)-এর হাদীস অনুযায়ী হুকুম দেয়া উচিত।