পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তায়াম্মুম
৫৩০-[৫] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাক-পবিত্র মাটি মুসলিমকে পবিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ করে, যদি দশ বছরও সে পানি না পায়। পানি যখন পাবে তখন সে যেন তার গায়ে পানি লাগায়। এটাই তার জন্য উত্তম। (আহমাদ, তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1] নাসায়ীতে ’’যদি দশ বছরও পানি না পায়’’ পর্যন্ত অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الصَّعِيدَ الطَّيِّبَ وَضُوءُ الْمُسلم وَإِن لم يجد لاماء عشر سِنِين فغذا وجد المَاء فليمسه بشره فَإِنَّ ذَلِكَ خَيْرٌ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ
وَرَوَى النَّسَائِيُّ نَحْوَهُ إِلَى قَوْلِهِ: عَشْرَ سِنِين
ব্যাখ্যা: পাক মাটি মুসলিমের জন্য উযূর স্থলাভিষিক্ত, যদিও দশ বৎসর যাবৎ পানি না পাওয়া যায়।
তায়াম্মুম করে ফরয ও নফল সব রকমের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে পারে। ইমাম খাত্ত্বাবী বলেনঃ এ হাদীস থেকে দলীল গ্রহণ করা যায় যে, তায়াম্মুমকারী একবার তায়াম্মুম করে কয়েক ওয়াক্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে পারবে।
পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তায়াম্মুম
৫৩১-[৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা (কিছু লোক) সফরে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমাদের একজন (মাথায়) পাথরের আঘাত পেল এবং তার মাথায় ক্ষত হলো। তারপর তার স্বপ্নদোষ হলে সে তার সাথী ভাইদেরকে জিজ্ঞেস করলো, এ অবস্থায় কি আমার জন্য তায়াম্মুম করার সুযোগ আছে? তারা বললেন, এ অবস্থায় (যখন পানি ব্যবহার করতে পারছো) তোমার তায়াম্মুম করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে করি না। অতঃপর লোকটি গোসল করলো, আর এতে সে মারা গেল। আমরা সফর হতে ফিরে এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম। তাঁর নিকট সব ঘটনা বলা হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, লোকেরা তাকে মেরে ফেলেছে, আল্লাহ তাদেরকে হত্যা করুন। তারা যখন জানে না তখন অন্যদের কেন জিজ্ঞেস করলো না? কারণ, না জানার চিকিৎসাই হলো জানতে চাওয়া। অথচ তার জন্য তায়াম্মুম করা এবং আহত স্থানে ব্যান্ডেজ বেঁধে তার উপর মাসাহ করাই যথেষ্ট ছিল। অতঃপর নিজের সমস্ত শরীর ধুয়ে নিতে পারত।[1]
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رجلا منا حجر فَشَجَّهُ فِي رَأسه ثمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابه فَقَالَ هَل تَجِدُونَ لي رخصَة فِي التَّيَمُّم فَقَالُوا مَا نجد لَك رخصَة وَأَنت تقدر على الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أخبر بذلك فَقَالَ قَتَلُوهُ قَتلهمْ الله أَلا سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَن يتَيَمَّم ويعصر أَو يعصب شكّ مُوسَى عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِر جسده. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ভালো করে খোঁজ-খবর না নিয়ে বা না জেনে কোন বিষয়ে সমাধান দেয়া ঠিক নয়। বিশেষ করে যেক্ষেত্রে মানুষের জীবন মরণের প্রশ্ন জড়িত থাকে। আহত ব্যক্তি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতে অক্ষম হলে তায়াম্মুম করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে এবং গোসল ফরয হলে তায়াম্মুম করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে। এটাও প্রমাণ হয় যে, শারী‘আতের কোন মাস্আলাহ্ না জানা থাকলে প্রশ্ন করবে।
পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তায়াম্মুম
৫৩২-[৭] ইবনু মাজাহ এ বর্ণনাটিকে ’আত্বা ইবনু আবী রবাহ (রহঃ) হতে, তিনি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاح عَن ابْن عَبَّاس
পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তায়াম্মুম
৫৩৩-[৮] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুই লোক সফরে বের হলো। পথিমধ্যে সালাতের সময় হলো, অথচ তাদের কাছে পানি ছিল না। তাই তারা দু’জনই পাক মাটিতে তায়াম্মুম করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নিলো। অতঃপর সালাতের সময়ের মধ্যেই তারা পানি পেয়ে গেল। তাই তাদের একজন উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে আবার সালাত আদায় করে নিলো এবং দ্বিতীয়জন তা করলো না। এরপর তারা ফিরে এসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তা বর্ণনা করলো। যে ব্যক্তি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেনি তাকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি সুন্নাতের উপরই ছিলে। এ সালাতই তোমার জন্য যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি উযূ করে পুনরায় সালাত আদায় করেছে তাকে বললেন, তোমার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে। (আবূ দাঊদ ও দারিমী; আর নাসায়ীও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন)[1]
وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ قَالَ: خَرَجَ رَجُلَانِ فِي سَفَرٍ فَحَضَرَتِ الصَّلَاةُ وَلَيْسَ مَعَهُمَا مَاءٌ فَتَيَمَّمَا صَعِيدًا طَيِّبًا فَصَلَّيَا ثُمَّ وَجَدَا الْمَاءَ فِي الْوَقْتِ فَأَعَادَ أَحَدُهُمَا الصَّلَاة وَالْوُضُوء وَلَمْ يَعُدِ الْآخَرُ ثُمَّ أَتَيَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فذكرا ذَلِك لَهُ فَقَالَ لِلَّذِي لَمْ يُعِدْ: «أَصَبْتَ السُّنَّةَ وَأَجْزَأَتْكَ صَلَاتُكَ» وَقَالَ لِلَّذِي تَوَضَّأَ وَأَعَادَ: «لَكَ الْأَجْرُ مَرَّتَيْنِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ وَرَوَى النَّسَائِيُّ نَحوه
ব্যাখ্যা: সফরে পানি না পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার সুযোগ রয়েছে। অতঃপর যদি ঐ সালাতের সময়ের মধ্যে পানি পাওয়া যায়, তবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের প্রয়োজন নেই। আর যদি কেউ পড়ে তবে তা তার জন্য নফল হবে। আর এ হাদীস থেকে এটাও প্রমাণ হয় যে, ইজতিহাদে ভুল হলেও নেকী পাওয়া যায়।
পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - তায়াম্মুম
৫৩৪-[৯] ইমাম নাসায়ী ও ইমাম আবূ দাঊদ উভয়ে এ হাদীসটি ’আত্বা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
وَقَدْ رَوَى هُوَ وَأَبُو دَاوُدَ أَيْضًا عَنْ عَطاء بن يسَار مُرْسلا