পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ
৪৪৮-[১৯] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’’বীর্যস্খলন হলেই গোসল ফরয হয়’’- এ হুকুম ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় ছিল। এরপর তা বাতিল করে দেয়া হয়েছে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: إِنَّمَا كَانَ الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ رُخْصَةً فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ ثمَّ نهي عَنْهَا
ব্যাখ্যা: উপরোক্ত হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সহবাসে বীর্যপাত হলে গোসল ওয়াজিব। আর বীর্যপাত না হলে গোসল ওয়াজিব নয়। বিধানটি ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে অনুমোদিত ছিল। পরবর্তীতে তা নিষিদ্ধ করা হয়। শুধু সহবাসের কারণেই গোসল ওয়াজিব হবে এতে বীর্যপাত হোক বা না হোক।
পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ
৪৪৯-[২০] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, আমি ফরয গোসল করেছি এবং ফজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছি। এরপর আমি দেখলাম শরীরে নখ পরিমাণ জায়গায় পানি পৌঁছেনি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যদি এ শুকনা জায়গাটা হাত দিয়ে মুছে নিতে তাহলে তোমার জন্য সেটাই যথেষ্ট হতো। (ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَن عَليّ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ إِنِّي اغْتَسَلْتُ مِنَ الْجَنَابَةِ وَصليت الْفجْر ثمَّ أَصبَحت فَرَأَيْتُ قَدْرَ مَوْضِعِ الظُّفُرِ لَمْ يُصِبْهُ الْمَاءُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ كُنْتَ مَسَحْتَ عَلَيْهِ بِيَدِكَ أَجْزَأَكَ» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ হলো যদি গোসলের সময় শরীরের কোন স্থানে পানি না পৌঁছে তবে সেই সময়েই উক্ত স্থানে ভিজা হাত দ্বারা মাসাহ করলে তা যথেষ্ট হবে। এ ব্যাপারে মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেন, যদি তুমি গোসলের সময় পানি না পৌঁছানোর স্থানে তোমার ভিজা হাত দ্বারা মাসাহ কর। অর্থাৎ- হালকাভাবে ধৌত কর তবে যথেষ্ট হবে। অন্যথায় শুধু ভিজা হাতের স্পর্শই যথেষ্ট নয়। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ)-এর মতে, গোসলের সময় যদি উক্ত স্থানে পানি দিয়ে মাসাহ করা হয় তবে গোসল পূর্ণ হবে। তা না হলে পরবর্তীতে নতুন করে গোসল করতে হবে এবং সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বাযা আদায় করতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গোসলের বিবরণ
৪৫০-[২১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রথমে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয ছিল পঞ্চাশ ওয়াক্ত। পবিত্রতার গোসল ছিল সাতবার এবং প্রস্রাবের কাপড় ধোয়া ছিল সাতবার। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর দরবারে আবেদন করতে থাকেন, অবশেষে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ফরয করা হয় পাঁচ ওয়াক্ত, পবিত্রতার গোসল ফরয করা হয় একবার এবং প্রস্রাব হতে কাপড় ধোয়া ফরয করা হয় একবার। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن عبد الله بن عمر قَالَ كَانَتِ الصَّلَاةُ خَمْسِينَ وَالْغُسْلُ مِنَ الْجَنَابَةِ سبع مرار وَغسل الْبَوْل من الثَّوْب سبع مرار فَلَمْ يَزَلْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْأَلُ حَتَّى جعلت الصَّلَاة خمْسا وَالْغسْل من الْجَنَابَة مرّة وَغسل الْبَوْل من الثَّوْب مرّة. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: হাদীসে মি‘রাজের রজনীতে প্রথম ধাপে যে ৫০ ওয়াক্ত ফরয করা হয়েছিল তাই বুঝানো হয়েছে। হাদীস থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, পরিধেয় বস্ত্রতে নাপাকি লাগলে তা একবার ধৌত করলেই পবিত্র হয়ে যাবে। তবে তিনবার ধৌত করা মুসতাহাব।
‘আল্লামা বুরহানুদ্দীন মারগিলানী নাপাকীকে ২ ভাগে ভাগ করেছেনঃ ১. দৃশ্যমান নাপাকী। ২. অদৃশ্যমান নাপাকী। প্রথম প্রকারের ক্ষেত্রে নাপাকীর চিহ্ন দূর হলেই কাপড় পবিত্র হবে এবং দ্বিতীয় প্রকারের ক্ষেত্রে যখন ধৌতকারীর মনে পবিত্র হওয়ার ধারণা প্রাধান্য পাবে তখনই কাপড় পবিত্র হবে।