মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)
৪৬০৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

’আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ স্বপ্নের মূলতত্ত্ব হচ্ছে এই যে, আল্লাহ ঘুমন্ত ব্যক্তির অন্তরে ’ইলমসমূহ এবং দৃষ্টিজ্ঞান সৃষ্টি করেন যেমন জাগ্রত অবস্থায় করে থাকেন। আর ঘুমন্ত ব্যক্তির মধ্যে এ ধরনের ’ইলমসমূহের সৃষ্টি হচ্ছে অন্যান্য বিষয়াদির নিদর্শন, যা ভবিষ্যতে হবে। আর এটা কখনো স্পষ্ট হবে। আবার কখনো হবে ইঙ্গিতাকারে।


৪৬০৬-[১] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নুবুওয়াতের কোন চিহ্ন এখন আর অবশিষ্ট নেই। তবে শুধু সুসংবাদ বহনকারী রয়ে গেছে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, সুসংবাদ বহনকারী কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ভালো স্বপ্ন। (বুখারী)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَمْ يَبْقَ مِنَ النُّبُوَّةِ إِلَّا الْمُبَشِّرَاتُ» قَالُوا: وَمَا الْمُبَشِّرَاتُ؟ قَالَ: «الرُّؤْيَا الصالحةُ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يبق من النبوة الا المبشرات قالوا وما المبشرات قال الرويا الصالحة رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলার বাণী : (তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে) সূরাহ্ ইউনুস আয়াত ৬৪ অত্র আয়াতে সুসংবাদ দ্বারা সত্য স্বপ্নকে বুঝানো হয়েছে।

এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীস ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত, আমার পরে সুসংবাদ অবশিষ্ট থাকবে না তবে সত্য স্বপ্ন থাকবে। হুযায়ফাহ্ ইবনু উসায়দ  হতে মারফূ‘ সনদে বর্ণিত নুবুওয়াত শেষ হয়ে যাবে সুসংবাদ অবশিষ্ট থাকবে। (ফাতহুল বারী ১২ খন্ড, হাঃ ৬৯৯০)

জেনে রাখা ভালো যে, স্বপ্ন তিন প্রকার। সত্য স্বপ্ন, শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা ও মনের কল্পনা। তবে ভালো ও সত্য স্বপ্ন দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাকে সুসংবাদ প্রদান করেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬০৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬০৭-[২] ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) ’আত্বা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে আরো অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন : ঐ ভালো স্বপ্নটি কোন মুসলিম নিজের জন্য দেখে থাকে অথবা অন্য কেউ তার জন্য দেখে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَزَادَ مَالِكٌ بِرِوَايَةِ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ: «يَرَاهَا الرجل الْمُسلم أَو ترى لَهُ»

وزاد مالك برواية عطاء بن يسار يراها الرجل المسلم او ترى له

ব্যাখ্যাঃ (يَرَاهَا الرَّجُلُ الْمُسْلِمُ أَوْ تُرٰى لَهٗ) ভালো স্বপ্নটি কোন মুসলিম নিজের জন্য দেখে থাকে অথবা কেউ তার জন্য দেখে। অর্থাৎ কোন মুসলিম তার নিজের জন্য কোন সত্য স্বপ্ন দেখে অথবা অপর কোন মুসলিমের জন্য স্বপ্ন দেখবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬০৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬০৮-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম স্বপ্ন নুবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ»

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الرويا الصالحة جزء من ستة واربعين جزءا من النبوة

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসের রিওয়ায়াত সম্পর্কে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। তার মাঝে অধিক নির্ভরযোগ্য মত হলো যা সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। অন্য একটি রিওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে, ৭০ ভাগের এক ভাগ। ইবনু ‘আবদুল বার (রহিমাহুল্লাহ)-এর নিকটে ২৬ ভাগের এক ভাগ। ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর নিকট চব্বিশ ভাগের একভাগ। এ সমস্ত রিওয়ায়াতগুলো বিরল। যা কম বা অল্প করে বর্ণিত হয়েছে। আর উদ্দেশ্য হলো এই যে, নুবুওয়াতের অনেকভাগ রয়েছে তা অবশিষ্ট থাকবে তবে তার কিছু ভাগ হচ্ছে সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে সুসংবাদ।

আর ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগের ব্যাখ্যাটি এভাবে করেছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিপূর্ণ নুবুওয়াতের সময় ছিল তেইশ বছর এর মাঝে ছয় মাস পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা স্বপ্নের মাধ্যমে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে ওয়াহী করেছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্নকে নুবুওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ বলা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফতীহ)

কাযী আবূ বকর ইবনুল ‘আরাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সৎ মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের অংশ। আর ফাসিকের স্বপ্নকে নবূয়াতের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয় না।

কাযী আবূ বকর ইবনুল ‘আরাবী (রহিমাহুল্লাহ) আরো বলেছেনঃ স্বপ্ন নুবুওয়াতের অংশ। এর বাস্তবতা শুধু মালাক (ফেরেশতা), অথবা নবীগণ জানেন।

মুলহিব (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ মানুষ তিন স্তরে বিভক্ত। যথা : ১. নবীগণ। তাদের স্বপ্ন সত্য। তাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়। ২. সৎ লোকগণ। তাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। ৩. সাধারণ লোকগণ তাদের ভালো-মন্দ উভয় ধরনের স্বপ্ন হয়। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৯৮৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬০৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬০৯-[৪] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্নে দেখবে, সে সত্যই আমাকে দেখবে। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «من رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ فِي صُورَتِي»

وعن ابي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من راني في المنام فقد راني فان الشيطان لا يتمثل في صورتي

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসটির ব্যাখ্যায় বিভিন্ন ধরনের মত বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়, স্বপ্ন দেখা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগের সময়ের সাথে নির্দিষ্ট। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, এটা সব সময়ের জন্য। সুতরাং যে ব্যক্তি তাকে দুনিয়াতে স্বপ্নে দেখবে সে সত্য সত্যই তাকে দেখবে এবং পরকালে তার সাথে সাক্ষাত লাভ করবে। কারণ শয়তান তার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। বলা হয় : যে ব্যক্তি সংবাদ দিবে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখেছে তার স্বপ্ন সত্য এবং হক তা খারাপ স্বপ্ন নয়।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন, এ বিষয়ে মতভেদ সংঘটিত হয়েছে। অতঃপর ইবনু বাকিল্লানী বলেছেনঃ এর অর্থ হলো নিশ্চয় তার স্বপ্ন সত্য এবং খারাপ স্বপ্ন নয়। যেমন কেউ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বার্ধক্য অবস্থায় স্বপ্ন দেখেছে। আবার কেউ কেউ যুবক অবস্থায় স্বপ্ন দেখেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১০-[৫] আবূ কতাদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্নে দেখেছে সে সত্যই দেখেছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ رَآنِي فَقَدْ رَأَى الْحَقَّ»

وعن ابي قتادة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من راني فقد راى الحق

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীস সম্পর্কে ‘উলামাগণ বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বপ্নে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখবে তা সত্যই। চাই সে ব্যক্তি স্বপ্নটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যৌবনে উপনীত অবস্থায় দেখুক বা বৃদ্ধ বয়সে উপনীত অবস্থায় দেখুক। যদি তার স্বপ্ন দেখা এমন হয় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাথার চুল যতগুলো সাদা হয়েছিল স্বপ্নের মাঝে তাও দেখেছে তাহলেও তাঁর স্বপ্ন সত্যই। স্বপ্ন দেখলে তা সত্যই হবে। এতে মিথ্যার সম্ভাবনা নেই। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা হলো অনেক ‘উলামা বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখলে তার গুণাবলী ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কেননা কোন জুব্বা, টুপি, পাগড়ী পরা লোকের আকৃতি ধরে শয়তান ধোঁকা দিতে পারে এবং নবী বলে দাবি করতে পারে- তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১১-[৬] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্নে দেখবে, সে অচিরেই জাগ্রত অবস্থায়ও আমাকে দেখবে। আর শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «من رَآنِي فِي الْمَنَام فيسراني فِي الْيَقَظَةِ وَلَا يَتَمَثَّلُ الشَّيْطَانُ بِي»

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من راني في المنام فيسراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي

ব্যাখ্যাঃ ‘‘যে আমাকে স্বপ্নে দেখবে, সে অচিরেই জাগ্রত অবস্থায়ও আমাকে দেখবে’’ উল্লেখিত উক্তির ব্যাখ্যায় বিভিন্ন উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থাৎ তা দুনিয়াতে হতে পারে অথবা আখিরাতে হতে পারে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এখানে তিনটি যে কোন একটি উদ্দেশ্য হবে, (এক) এ কথাটির দ্বারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগের মানুষদের বুঝানো হয়েছে। এর অর্থ হলো : যে ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখে এবং সে হিজরত করেনি, আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে হিজরতের তাওফীক দান করবেন এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জাগ্রত অবস্থার দেখবে। (দুই) নিশ্চয় যে ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখবে তা সত্য স্বপ্নে দেখবে জাগ্রত অবস্থার ন্যায়। সে আখিরাতেও দেখবে সমস্ত উম্মাতের মাঝে। (তিন) যে ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে স্বপ্নে দেখবে যেন আখিরাতেও বিশেষত্বের সাথে দেখবে। আর সে ব্যক্তি বিশেষ শাফা‘আতের উপযুক্ত হবে। ‘‘শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না’’ এ মর্মে বুখারী, মুসলিম, ইবনু মাজাহসহ অন্যান্য হাদীসের গ্রন্থে অনেকগুলো হাদীস বর্ণিত হয়েছে যার সারমর্ম হলো যে, শয়তানের পক্ষ কোনভাবেই সম্ভব নয় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আকৃতি ধারণ করা। (শারহুন নাবাবী ১৫শ খন্ড, হাঃ ২২৬৬/১০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১২-[৭] আবূ কতাদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ হতে, আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ হতে। কাজেই তোমাদের যে কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে, সে যেন তা শুধু এমন ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে যাকে সে ভালোবাসে। আর যদি কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা তার নিকট অপছন্দনীয়, তাহলে সে যেন তার ক্ষতি এবং শয়তানের অনিষ্ট হতে আল্লাহর নিকট পানাহ চায় এবং (বামদিকে) তিনবার থুথু ফেলে। আর স্বপ্নটি যেন কারো নিকট প্রকাশ না করে, তাতে তার আর কোন ক্ষতি হবে না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ مِنَ اللَّهِ وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يُحِبُّ فَلَا يُحَدِّثُ بِهِ إِلَّا مَنْ يُحِبُّ وَإِذَا رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَلْيَتْفُلْ ثَلَاثًا وَلَا يُحَدِّثْ بِهَا أحدا فَإِنَّهَا لن تضره»

وعن ابي قتادة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الرويا الصالحة من الله والحلم من الشيطان فاذا راى احدكم ما يحب فلا يحدث به الا من يحب واذا راى ما يكره فليتعوذ بالله من شرها ومن شر الشيطان وليتفل ثلاثا ولا يحدث بها احدا فانها لن تضره

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসের মাঝে স্বপ্নের প্রকারসমূহের মধ্যে হতে দুই প্রকারকে উল্লেখ করা হয়েছে। উত্তম স্বপ্ন এবং খারাপ স্বপ্ন। উত্তম স্বপ্ন দেখলে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করবে- এ মর্মে মহান আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ করেন : ‘‘আপনার পালনকর্তার নি‘আমাতের কথা প্রকাশ করুন’’- (সূরাহ্ আয্ যুহা- ৯৩ : ১১)। আর খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয় হলো ধৈর্য ধারণ করা এবং কারো নিকটে প্রকাশ না করা- এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বাণী : ‘‘আপনি সবর করবেন। আপনার সব্র আল্লাহর জন্য ব্যতীত নয়’’- (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ১২৭)। ইয়াকুব  (আ.) যখন ইউসুফ  (আ.)-কে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, দুঃখের মাঝে পতিত হয়েছিল ঐ সময়ের কথা বর্ণনা করেন, ‘‘তিনি ইয়াকুব  (আ.) বললেনঃ আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি’’- (সূরাহ্ ইউসুফ ১২ : ৮৬)।

কাযী আবূ বকর ইবনুল ‘আরাবী বর্ণনা করেছেন, উত্তম স্বপ্ন দেখলে যাদের নিকট বর্ণনা করা যাবে-

(ক) জ্ঞানী ব্যক্তির নিকটে : তিনি স্বপ্নের ভালো ব্যাখ্যা করবেন যা সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, অথবা নাসীহত করবে বা পরামর্শ দিবে যার দ্বারা তার উপকার হবে।

(খ) বিচক্ষণ ব্যক্তির নিকট : তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানেন, তিনি জানাবেন যা তার ওপর সংঘটিত হবে অথবা চুপ থাকবেন।

(গ) প্রিয় ব্যক্তির নিকট : তিনি যদি ভালো কিছু জানেন তাহলে বলবেন। আর যদি ঐ সম্পর্কে অজানা বা সন্দেহ পোষণ করে থাকেন তাহলে চুপ থাকবেন। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৯৮৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৩-[৮] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে যা সে খারাপ মনে করে, তখন সে যেন নিজের বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে। আর আল্লাহর কাছে তিনবার শয়তান হতে পানাহ চায় এবং স্বপ্ন দেখার সময় যে পাঁজরে শায়িত ছিল, সে যেন পাঁজর পরিবর্তন করে নেয়। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا رَأَى أَحَدُكُمُ الرُّؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلْيَبْصُقْ عَنْ يَسَارِهِ ثَلَاثًا وَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ ثَلَاثًا وَلْيَتَحَوَّلْ عَنْ جَنْبِهِ الَّذِي كانَ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا راى احدكم الرويا يكرهها فليبصق عن يساره ثلاثا وليستعذ بالله من الشيطان ثلاثا وليتحول عن جنبه الذي كان عليه رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীস এবং পূর্বের হাদীসের মানে স্বপ্নের আদব বর্ণনা করা হয়েছে। ভালো স্বপ্নের আদবগুলো হলো আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করা, সুসংবাদ গ্রহণ করা, জ্ঞানী ব্যক্তি বা নিকটতম ব্যক্তির নিকট তা বর্ণনা করা। আর খারাপ স্বপ্নের বৈশিষ্ট্য হলো : আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া শয়তানের অনিষ্টতা হতে পানাহ চাওয়া, বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলা, ঘুমের মাঝে পার্শ্ব পরিবর্তন করে শোয়া, কারো কাছে তা প্রকাশ না করা, দুই রাক্‘আত সালাত আদায় করা।

কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ তিনবার থুথু ফেলা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ঐ শয়তানকে তাড়ানোর যে উপস্থিত হয়ে অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখায় এবং তাকে তুচ্ছ করা। এগুলো বাস্তবায়ন করলে মানুষ শয়তানের অনিষ্ট হতে দূরে থাকবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২২৭৭)

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ থুথু ফেলার বিষয়টি সম্পর্কে, থুথু নিক্ষেপ করার দ্বারা ঐ শয়তানকে তাড়ানো যে মানুষের নিকট খারাপ স্বপ্ন উপস্থাপনা করে এবং তাকে অপমান, লাঞ্ছনা করা এবং তার কাজকে ঘৃণা করা। আর বাম পার্শ্বকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ কারণে যে, এ স্থান থেকে নোংরা, অপছন্দনীয় কাজ সংঘটিত হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৪-[৯] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যামানা নিকটবর্তী হলে মু’মিনের স্বপ্ন মিথ্যা হবে না। আর মু’মিনদের স্বপ্ন নুবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। বস্তুতঃ যে জিনিস নুবুওয়াতের অংশ হয়, তা কখনো মিথ্যা হতে পারে না।

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আমি এ কথা বলি যে, স্বপ্ন তিন প্রকার হয়ে থাকে। প্রথমতঃ মনের খেয়াল বা কল্পনা। দ্বিতীয়তঃ শয়তানের পক্ষ হতে ভীতি প্রদর্শন। আর তৃতীয়তঃ আল্লাহর পক্ষ হতে সুসংবাদ প্রদান। অতএব কেউ কোন অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে তা অন্যের নিকট যেন না বলে এবং তখনই উঠে যেন সালাত আদায় করে।

ইবনু সীরীন (রহিমাহুল্লাহ) আরো বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে (গলদেশে) শৃঙ্খল পরা অবস্থা দেখাকে অপছন্দ করতেন। অবশ্য (পায়ে) শিকল পরা অবস্থায় দেখাকে পছন্দ করতেন। আর বলা হয় যে, শিকল পরার অর্থ হলো, দীনের উপর অবিচল থাকা। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ يَكَدْ يَكْذِبُ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ وَرُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَمَا كَانَ مِنَ النُّبُوَّةِ فَإِنَّهُ لَا يَكْذِبُ» . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ: وَأَنَا أَقُولُ: الرُّؤْيَا ثَلَاثٌ: حَدِيثُ النَّفْسِ وَتَخْوِيفُ الشَّيْطَانِ وَبُشْرَى مِنَ اللَّهِ فَمَنْ رَأَى شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلَا يَقُصَّهُ عَلَى أَحَدٍ وَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ قَالَ: وَكَانَ يُكْرَهُ الْغُلُّ فِي النَّوْمِ وَيُعْجِبُهُمُ الْقَيْدُ وَيُقَال: الْقَيْد ثبات فِي الدّين

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اقترب الزمان لم يكد يكذب رويا المومن ورويا المومن جزء من ستة واربعين جزءا من النبوة وما كان من النبوة فانه لا يكذب قال محمد بن سيرين وانا اقول الرويا ثلاث حديث النفس وتخويف الشيطان وبشرى من الله فمن راى شيىا يكرهه فلا يقصه على احد وليقم فليصل قال وكان يكره الغل في النوم ويعجبهم القيد ويقال القيد ثبات في الدين

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসে ‘‘যামানার নিকটবর্তী’’ হওয়ার দ্বারা হাদীস বিশারদদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) ‘‘মায়ালি মুত্ তানযিল’’-এর মাঝে দু’টি কথা উল্লেখ করেছেন : (ক) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রাত-দিনের সমান হওয়া উদ্দেশ্য। এ সময় যেহেতু মানুষের মেজাজ সঠিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ থাকে এবং সময়ের স্বপ্নের মাঝে সংমিশ্রণ হয় না। এ সময়ের স্বপ্ন ন্যায়সঙ্গত হয়। এ জন্য স্বপ্ন মিথ্যা হয় না (খ) যামানা নিকটবর্তী হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো : সময় শেষ হওয়া যখন কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার নিকটবর্তী হবে।

হাফিয ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ প্রথম মতের উপর মু’মিনদের সীমাবদ্ধতা হওয়া দূরবর্তী বিষয়। কেননা এ সময়ে মানুষের অভ্যাস সঠিক বা ন্যায় ইনসাফের উপর বিশেষত থাকে তা নির্দিষ্ট না। ইবনু বাত্ত্বল দৃঢ়ভাবে প্রথম মতটি সঠিক বলেছেন। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৭০১৭)

ফায়িক গ্রন্থকার, যামানা নিকটবর্তী হওয়ার তিনটি কথা বলেছেন, (এক) শেষ যামানা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া। দীর্ঘ সময়, কম, খাটো হওয়া। (দুই) রাত ও দিনের মাঝের সময় সমান হওয়া। (তিন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী সময় নিকটবর্তী হবে এমনকি বছর হবে মাসের ন্যায়। আর মাস হবে এক জুমু‘আহ্ হতে আরেক জুমু‘আহ্ (সপ্তাহের) ন্যায়। আর সপ্তাহ হবে দিনের ন্যায়। দিন ঘণ্টার সমান মনে হবে। তারা বলেছে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইমাম মাহদীর সময়ের আবির্ভাব হওয়া।

মিরক্বাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকারের মতে : এর উদ্দেশ্য হলো দাজ্জাল এবং ইয়া’জূজ ও মা’জূজ-এর আগমনের সময়।

ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) المفهم গ্রন্থে বলেছেন, এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অধিক অবগত রয়েছেন। তবে কিছু সময় বাকী থাকবে ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম  (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করার পর। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৭০১৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৫-[১০] ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) উক্ত হাদীসটি কতাদাহ্, ইউনুস, হুশায়ম এবং আবূ হিলাল ইবনু সীরীন-এর মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন এবং ইউনুস বলেনঃ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ’’পায়ে বেড়ি পরা’’ স্বপ্ন দেখার কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত।

ইমাম মুসলিম (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আমি জানি না ঐ বাক্যটি হাদীসের অংশ নাকি ইবনু সীরীন-এর নিজস্ব অভিমত।

অন্য এক রিওয়ায়াতেও অনুরূপ মন্তব্য উল্লেখ রয়েছে। আর স্বপ্নে ’’গলদেশে শৃঙ্খল পরা দেখা আমি পছন্দ করি না’’ হতে শেষ পর্যন্ত হাদীসের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

قَالَ البُخَارِيّ: رَوَاهُ قَتَادَة وَيُونُس وَهِشَام وَأَبُو هِلَالٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَقَالَ يُونُسُ: لَا أَحْسَبُهُ إِلَّا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقَيْدِ
وَقَالَ مُسْلِمٌ: لَا أَدْرِي هُوَ فِي الْحَدِيثِ أَمْ قَالَهُ ابْنُ سِيرِينَ؟ وَفِي رِوَايَةٍ نَحْوُهُ وَأَدْرَجَ فِي الْحَدِيثِ قَوْلَهُ: «وَأَكْرَهُ الْغُلَّ. . .» إِلَى تَمام الْكَلَام

قال البخاري رواه قتادة ويونس وهشام وابو هلال عن ابن سيرين عن ابي هريرة وقال يونس لا احسبه الا عن النبي صلى الله عليه وسلم في القيدوقال مسلم لا ادري هو في الحديث ام قاله ابن سيرين وفي رواية نحوه وادرج في الحديث قوله واكره الغل الى تمام الكلام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৬-[১১] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমি স্বপ্নে দেখেছি আমার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, তার কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এবং বললেনঃ শয়তান যখন তোমাদের কারো সাথে ঘুমের মধ্যে তামাশা করে, তখন তা কোন মানুষের কাছে বর্ণনা করা উচিত নয়। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَن جَابر قَالَ: جَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ رَأْسِي قُطِعَ قَالَ: فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «إِذَا لَعِبَ الشَّيْطَانُ بِأَحَدِكُمْ فِي مَنَامِهِ فَلَا يُحَدِّثْ بِهِ النَّاس» . رَوَاهُ مُسلم

وعن جابر قال جاء النبي صلى الله عليه وسلم فقال رايت في المنام كان راسي قطع قال فضحك النبي صلى الله عليه وسلم وقال اذا لعب الشيطان باحدكم في منامه فلا يحدث به الناس رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, খারাপ স্বপ্ন বা এমন স্বপ্ন যার মাঝে শয়তানের প্রভাব রয়েছে তা মানুষের বলা উচিত নয়।

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ ধরনের স্বপ্নের মাঝে সম্ভাবনা রয়েছে যে, তা খারাপ স্বপ্ন হবে অথবা তাতে শয়তানের পক্ষ হতে এমন বিবাদে লাগিয়ে দেয়া হয় যা অপছন্দনীয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারীগণ বলেছেন, তাদের গ্রন্থসমূহের মাঝে : মাথাকাটা অর্থ নি‘আমাত ছিনিয়ে নেয়া, সমাজ হতে, বিচ্ছিন্ন হওয়া নেতৃত্ব চলে যাওয়া, মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হওয়া সকল ক্ষেত্রে, দাসের স্বাধীন হওয়া, অসুস্থ ব্যক্তির সুস্থ হওয়া, ঋণী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ হওয়া। আর যে ব্যক্তি হজ্জ করেনি তার হজ্জ করা ভীতু ব্যক্তির নিরাপদ হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা অধিক ভালো জানেন। (শারহুন নাবাবী ২২৬৮/১৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৭-[১২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি ঘুমের ঘোরে যেভাবে স্বপ্ন দেখে একরাত্রে আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি আমার সাহাবীগণ সমবেত ’উকবাহ্ ইবনু রাফি’ এর গৃহে উপবিষ্ট। তখন আমাদের সম্মুখে কিছু তাজা পাকা খেজুর উপস্থিত করা হলো। যাকে রুত্বাব ইবনু ত্বাব বলা হয়। অতএব আমি এটার এ তা’বীর করেছি যে, দুনিয়াতে আমাদেরও মর্যাদা বুলন্দ করা হবে এবং পরকাল হবে সুখময়; আর আমাদের ধর্ম হবে সর্বোত্তম। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَأَيْتُ ذَاتَ لَيْلَةٍ فِيمَا يَرَى النَّائِمُ كَأَنَّا فِي دَارِ عُقْبَةَ بْنِ رَافِعٍ فَأُوتِينَا بِرُطَبٍ مِنْ رُطَبِ ابْنِ طَابٍ فَأَوَّلْتُ أَنَّ الرِّفْعَةَ لَنَا فِي الدُّنْيَا وَالْعَاقِبَةَ فِي الْآخِرَةِ وَأَنَّ دِينَنَا قَدْ طَابَ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم رايت ذات ليلة فيما يرى الناىم كانا في دار عقبة بن رافع فاوتينا برطب من رطب ابن طاب فاولت ان الرفعة لنا في الدنيا والعاقبة في الاخرة وان ديننا قد طاب رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীসের মাঝে ‘উকবাহ্ ইবনু রাফি‘ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, সে একজন গ্রাম্য অনারব লোক ছিল। ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন যে, সে মদীনাহ্ বাসী ছিল। ‘কামূস’ গ্রন্থকার বলেছেন যে, মদীনাহ্ শহরটি সুন্দর ছিল। আর রিফা‘আহ্ দ্বারা মর্যাদা বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন’’- (সূরাহ্ আল মুজাদালাহ্ ৫৮ : ১১)। আর ‘আক্বিবাহ্ দ্বারা পরকালীন কল্যাণ বুঝানো হয়েছে, এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘‘তারই পুরস্কার উত্তম এবং তারই প্রদত্ত প্রতিদান শ্রেষ্ঠ’’- (সূরাহ্ আল কাহফ ১৮ : ৪৪)। আল্লাহর বাণী, ‘‘শেষ কল্যাণ মুত্তাক্বীদের জন্যই রয়েছে’’- (সূরাহ্ আল আ‘রাফ ৭ : ১২৮)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

বিঃ দ্রঃ ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে জাহিলী যুগে মদীনার নাম ছিল ইয়াসরিব তায়বাহ্, ইসলামী যুগে আল্লাহ তা‘আলা নাম দিয়েছেন মদীনাহ্ এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাম রেখেছেন ত্বাবা এবং তায়বাহ্।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৮-[১৩] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমি মক্কা হতে এমন এক ভূ-খন্ড-র দিকে হিজরত করছি যেখানে খেজুর গাছ রয়েছে। আমার ধারণা হলো, এটার দ্বারা ইয়ামান বা হিজরের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিন্তু পরে প্রকাশ পেল, তা মদীনাহ্ মুনাওয়ারা, যার নাম ইয়াসরিব। আমি স্বপ্নে এটাও দেখতে পেলাম যে, আমি তলোয়ার নাড়াচ্ছি। এমন সময় তার মধ্যখান ভেঙ্গে গেল। আর তার তা’বীর ’’উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের ওপর নেমে আসা বিপর্যয়’’ দ্বারা প্রকাশ পেল। অতঃপর আমি পুনরায় তলোয়ার নাড়া দিলাম, তখন দেখলাম, তা পূর্বাপেক্ষা আরো উত্তম হয়ে গেছে। আর তা’বীর যা আল্লাহ তা’আলা পরবর্তী সময়ে দান করেছেন (মক্কা) বিজয় এবং মুসলিমদের সম্মিলিত শক্তি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أُهَاجِرُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى أَرْضٍ بِهَا نَخْلٌ فَذَهَبَ وَهْلِي إِلَى أَنَّهَا الْيَمَامَةُ أَوْ هَجَرُ فَإِذَا هِيَ الْمَدِينَةُ يَثْرِبُ وَرَأَيْتُ فِي رُؤْيَايَ هَذِهِ: أَنِّي هَزَزْتُ سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيبَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ أُخْرَى فعادَ أحسنَ مَا كانَ فإِذا هوَ جَاءَ اللَّهُ بِهِ مِنَ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِينَ

وعن ابي موسى عن النبي صلى الله عليه وسلم قال رايت في المنام اني اهاجر من مكة الى ارض بها نخل فذهب وهلي الى انها اليمامة او هجر فاذا هي المدينة يثرب ورايت في روياي هذه اني هززت سيفا فانقطع صدره فاذا هو ما اصيب من المومنين يوم احد ثم هززته اخرى فعاد احسن ما كان فاذا هو جاء الله به من الفتح واجتماع المومنين

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীসের মাঝে আলোচনা করা হয়েছে যে, মদীনাকে ইয়াসরিব বলা বৈধ না অবৈধ? ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ জাহিলী যুগে ইয়াসরিব নাম ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা মদীনাহ্ নামে নামকরণ করেছেন। আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাম দিয়েছেন ত্বায়বাহ্ ও ত্বাবা। হাদীসে ইয়াসরিব নামে নামকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা ‘ইয়াসরিব’ শব্দের অর্থ হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। বলা হয় : সম্ভাবনা রয়েছে এই নাম ছিল নিষেধ হওয়ার পূর্বে। আর এটা বর্ণনা করার জন্য বলা জায়িয। নিষেধটি হলো মাকরূহ তানযীহি এবং উত্তমের বিপরীত।

মুসনাদ আহমাদ-এর মাঝে হাদীস বর্ণিত হয়েছে (মারফূ‘ সূত্রে) বারা’ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, যে ব্যক্তি মদীনাকে ইয়াসরিব নামে উচ্চারণ করবে সে যেন আল্লাহ তা‘আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। তা হচ্ছে ত্বাবা, তা হচ্ছে ত্বাবা। (মুসনাদে আহমাদ ৪/২৮৫)

মিরক্বাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেছেনঃ অধিক গুরুত্বের সাথে নিষেধ করা হয়েছে যে, মুনাফিক ও ইয়াহূদীদের কবিতাগুলোকে বর্জন করার জন্য। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন ইয়াসরিব নামে। মহান আল্লাহর বাণী : ‘‘ইয়াসরিববাসী, এটা টিকবার মতো জায়গা নয়, তোমরা ফিরে চলো’’- (সূরাহ্ আল আহযা-ব ৩৩ : ১৩)।

হাদীসে তরবারির ব্যাখ্যা সম্পর্কে ইমাম গাযালী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ কলম তরবারির ন্যায়, কলমের দ্বারা দীন ও দুনিয়ার সাহায্য নেয়া সম্ভব। অনুরূপভাবে তরবারি দ্বারা মু’মিন এবং কাফিরকে হত্যা করা যায়। [মিরক্বাতুল মাফাতীহ]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬১৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬১৯-[১৪] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদিন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, (স্বপ্নে) পৃথিবীর ধনভাণ্ডার আমার সামনে উপস্থিত করা হলো। আর আমার হাতে দু’টি সোনার বালা রাখা হলো যাতে আমি বড়ই অস্বস্তিকর বোধ করলাম। এমতাবস্থায় আমাকে ওয়াহীর মাধ্যমে জানানো হলো যেন আমি বালা দু’টিতে ফুঁক মারি। সুতরাং আমি ফুঁক দিলাম, সাথে সাথে উভয়টি উড়ে গেল। আমি দু’টি বালার তা’বীর করেছি দু’জন মিথ্যাবাদী দ্বারা, যে দু’জনের মাঝখানে আমি রয়েছি। তাদের একজন সন্’আবাসী আর অপরজন ইয়ামামাবাসী। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, এদের একজন মুসায়লামাহ্, সে ইয়ামামার অধিবাসী। অপরজন হলো (আসওয়াদ) আনাসী, সে হলো সন্’আ-এর অধিবাসী। মিশকাত গ্রন্থকার বলেনঃ এ হাদীস বুখারী ও মুসলিমে আমি পাইনি। তবে জামি’উল উসূলের প্রণেতা এটা তিরমিযী হতে বর্ণনা করেছেন।

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ بِخَزَائِنِ الْأَرْضِ فَوُضِعَ فِي كَفَّيَّ سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَكَبُرَا عَلَيَّ فَأُوحِيَ إِلَيَّ أَنِ انْفُخْهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَذَهَبَا فَأَوَّلْتُهُمَا الْكَذَّابَيْنِ اللَّذَيْنِ أَنَا بَيْنَهُمَا صَاحِبَ صَنْعَاءَ وَصَاحِبَ الْيَمَامَةِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ: «يُقَالُ لِأَحَدِهِمَا مُسَيْلِمَةُ صَاحِبُ الْيَمَامَةِ وَالْعَنْسِيُّ صَاحِبُ صَنْعَاءَ» لَمْ أَجِدْ هَذِهِ الرِّوَايَةَ فِي (الصَّحِيحَيْنِ)
وَذكرهَا صَاحب الْجَامِع عَن التِّرْمِذِيّ

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بينا انا ناىم بخزاىن الارض فوضع في كفي سواران من ذهب فكبرا علي فاوحي الي ان انفخهما فنفختهما فذهبا فاولتهما الكذابين اللذين انا بينهما صاحب صنعاء وصاحب اليمامة متفق عليه وفي رواية يقال لاحدهما مسيلمة صاحب اليمامة والعنسي صاحب صنعاء لم اجد هذه الرواية في الصحيحينوذكرها صاحب الجامع عن الترمذي

ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি : ‘‘একদিন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, (স্বপ্নে) পৃথিবীর ধনভাণ্ডার আমার সম্মুখে উপস্থিত করা হলো’’ অর্থাৎ আমার সামনে পৃথিবীর ধনভান্ডারের চাবি উপস্থিত করা হয়েছিল। কেউ কেউ বলেছেন, আমার সামনে গচ্ছিত সম্পদের প্রকারসমূহ উপস্থাপনা করা হয়েছে। হাদীস হতে জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় দু’জন ভন্ড ও মিথ্যা নুবুওয়াতের দাবি করেছিল। একজন হলো ইয়ামামাহ্ শহরের মুসায়লামাহ্ কায্যাব। আর দ্বিতীয়জন হলো সন্আ‘ অধিবাসীর আসওয়াদ আল আনাসী, যাকে আবূ বকর -এর খিলাফাতকালে সমূলে ধ্বংস করে দেয়া হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬২০-[১৫] আনসারী মহিলা উম্মুল ’আলা (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে ’উসমান ইবনু মায্’ঊন (রাঃ)-এর জন্য একটি প্রবহমান পানির ঝরণা দেখতে পেলাম এবং এ ঘটনা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বললাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা তার ’আমল। তা তার জন্য (কিয়ামত পর্যন্ত) জারি থাকবে। (বুখারী)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أُمِّ الْعَلَاءِ الْأَنْصَارِيَّةِ قَالَتْ: رَأَيْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ مَظْعُونٍ فِي النَّوْمِ عَيْنًا تَجْرِي فَقَصَصْتُهَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «ذَلِكِ عَمَلُهُ يُجْرَى لَهُ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وعن ام العلاء الانصارية قالت رايت لعثمان بن مظعون في النوم عينا تجري فقصصتها على رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ذلك عمله يجرى له رواه البخاري

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসের বর্ণনাকারী মহিলাটি ছিলেন তাকে জন্মাদানকারিণী মা। তার মা যখন অসুস্থ হয়েছিলেন, তাকে দেখার জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় মহিলাটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। ‘উসমান ইবনু মায্‘ঊন ছিলেন দুইবার হিজরতকারীদের অন্তর্ভুক্ত সাহাবী। তিনি বদর যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন। মদীনায় হিজরত করা সাহাবীদের মাঝে প্রথম ব্যক্তি। তার মৃত্যুর পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কপালে চুমা খেয়েছিলেন। তার ‘আমল কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। কেননা তিনি আল্লাহর রাস্তায় পাহারারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় পাহারারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে তার ‘আমল কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৬২১-[১৬] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল তিনি ফজরের সালাত শেষে প্রায়ই আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ আজ রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? রাবী বলেন, আমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখে থাকলে তাঁর নিকট বলত। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তার তা’বীর করতেন। যথারীতি একদিন সকালে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাদের কেউ (আজ রাতে) কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? আমরা জিজ্ঞেস করলামঃ না।

তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কিন্তু আমি দেখেছি, আজ রাতে দু’ ব্যক্তি আমার নিকট এলো এবং তারা উভয়ে আমার হাত ধরে একটি পবিত্র ভূমির দিকে (সম্ভবত তা শাম বা সিরিয়া) নিয়ে গেল। দেখলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর অপর এক ব্যক্তি লোহার সাঁড়াশি হাতে দাঁড়ানো। সে তা ঐ উপবিষ্ট ব্যক্তির গালের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে তা দ্বারা চিরে গর্দানের পিছন পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে। অতঃপর তার দ্বিতীয় গালের সাথেও অনুরূপ ব্যবহার করার মাঝে প্রথম গালটি ভালো হয়ে যায়। আবার সে পুনরায় তাই করে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন।

সম্মুখের দিকে চললাম। এ পর্যায়ে আমরা এমন এক ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছলাম, যে ঘাড়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে রয়েছে, আর অপর এক ব্যক্তি একখানা ভারী পাথর নিয়ে তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে ঐ পাথরের আঘাতে শায়িত ব্যক্তির মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করছে। যখনই সে পাথরটি নিক্ষেপ করে (মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করে) তা গড়িয়ে দূরে চলে যায়। তখন সে লোকটি পুনরায় পাথরটি তুলে আনতে যায় সে ফিরে আসার পূর্বেই ঐ ব্যক্তির মাথাটি পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যায় এবং পুনরায় সে তা দ্বারা তাকে আঘাত করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কী? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন।

আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম। সেখানে একটি গর্তের নিকট এসে পৌঁছলাম যা তন্দুরের মতো ছিল। এটার উপরিঅংশ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশটি ছিল প্রশস্ত। তার তলদেশে আগুন জ্বলছিল। আগুনের লেলিহান শিখা যখন উপরের দিকে উঠছে, তখন তার ভিতরে যারা রয়েছে তারাও উপরে উঠে আসছে এবং গর্ত হতে বাইরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। আর যখন অগ্নিশিখা কিছু স্তিমিত হচ্ছে তখন তারাও পুনরায় ভিতরের দিকে চলে যাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে কিছুসংখ্যক উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? তারা উভয়ে বলল : সামনে চলুন।

আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম এবং একটি রক্তের নহরের নিকট পৌঁছলাম। দেখলাম, তার মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং নহরের তীরে একজন লোক দণ্ডায়মান। আর তার সম্মুখে রয়েছে প্রস্তরখন্ড। নহরের ভিতরের লোকটি যখন তা হতে বের হওয়ার উদ্দেশে কিনারার দিকে অগ্রসর হতে চাচ্ছে, তখন তীরে দাঁড়ানো লোকটি ঐ লোকটির মুখ লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করছে এবং সে লোকটিকে ঐ স্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে যেখানে সে ছিল। মোটকথা, লোকটি যখনই বাইরে আসার চেষ্টা করে, তখনই তার মুখের উপর পাথর মেরে সে যেখানে ছিল পুনরায় সেখানে ফিরিয়ে দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? সঙ্গীদ্বয় বললেনঃ সামনে চলুন।

আমরা সম্মুখে অগ্রসর হয়ে শ্যামল সুশোভিত একটি বাগানে পৌঁছলাম। বাগানে ছিল একটি বিরাট বৃক্ষ। ঐ বৃক্ষের গোড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন একজন বৃদ্ধ লোক এবং বিপুল সংখ্যক বালক। ঐ বৃক্ষটির সন্নিকটে আরেক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যার সম্মুখে রয়েছে আগুন, যাকে সে প্রজ্জ্বলিত করছে। এরপর আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে ঐ বৃক্ষের উপরে আরোহণ করাল এবং সেখানে তারা আমাকে বৃক্ষরাজির মাঝখানে এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করাল যেমন সুন্দর ও মনোরম ঘর আমি আর কখনো দেখিনি। তার মধ্যে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও বালক। অনন্তর তারা উভয়ে আমাকে সে ঘর হতে বের করে বৃক্ষের আরো উপরে চড়াল এবং এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করাল যা প্রথমটি হতে আরো সুন্দর ও উত্তম। এতেও দেখলাম, কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক।

অনন্তর আমি সঙ্গীদ্বয়কে বললাম, আপনারা উভয়েই তো আমাকে আজ সারা রাতে অনেক কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখালেন। এখন বলুন, আমি যা কিছু দেখেছি তার তাৎপর্য কী? তারা উভয়ে বলল : হ্যাঁ, (তা বলছি)। ঐ যে এক ব্যক্তিকে দেখেছেন সাঁড়াশি দ্বারা যার গাল চেরা হচ্ছিল, সে মিথ্যাবাদী, সে মিথ্যা বলত এবং তার নিকট হতে মিথ্যা রটানো হত। এমনকি তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত। অতএব তার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণ করা হতে থাকবে, যা করতে আপনি দেখেছেন।

আর যে ব্যক্তির মস্তকে পাথর মেরে ঘায়েল করতে দেখেছেন, সে ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তা’আলা কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কুরআন হতে গাফিল হয়ে রাত্রে ঘুমাত এবং দিনেও তার নির্দেশ মোতাবেক ’আমল করত না। সুতরাং তার সাথে কিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণই করা হবে, যা আপনি দেখেছেন।

আর (আগুনের) তন্দুরে যাদেরকে দেখেছেন তারা হলো যিনাকার (নারী-পুরুষ)।

ঐ ব্যক্তি যাকে (রক্তের) নহরে দেখেছেন, সে হলো সুদখোর।

ঐ বৃদ্ধ ব্যক্তি যাকে একটি বৃক্ষের গোড়ায় উপবিষ্ট দেখেছেন, তিনি হলেন : ইবরাহীম (আ.)। তাঁর চতুষ্পার্শ্বের শিশুরা হলো মানুষের সন্তান-সন্ততি।

আর যে লোকটিকে অগ্নিকুন্ড প্রজ্জ্বলিত করতে দেখেছেন তা শহীদদের ঘর। আর আমি হলাম জিবরীল (আ.) এবং ইনি হলেন মীকাঈল (আ.)।

এবার আপনি মাথাটি উপরের দিকে তুলে দেখুন। তখন আমি মাথাটি তুলে দেখলাম, যেন আমার মাথার উপরে মেঘের মতো কোন একটি জিনিস রয়েছে। অপর এক রিওয়ায়াতে আছে, একের পর এক স্তবকবিশিষ্ট সাদা মেঘের মতো কোন জিনিস দেখলাম। তাঁরা বললেনঃ তা আপনারই বাসস্থান। আমি বললামঃ আমাকে সুযোগ দিন আমি আমার ঘরে প্রবেশ করি। তাঁরা বললেনঃ এখনো আপনার হায়াত বাকি আছে, যা আপনি এখনো পূর্ণ করেননি। আপনার যখন নির্দিষ্ট হায়াত পূর্ণ হবে, তখন আপনি আপনার বাসস্থানে প্রবেশ করবেন। (বুখারী)[1]

আর ’’মদীনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্বপ্ন’’ এ বিষয়ে ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি ’’হারামুল মদীনাহ্’’ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَن سُمرةَ بنِ جُندب قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ: «مَنْ رَأَى مِنْكُمُ اللَّيْلَةَ رُؤْيَا؟» قَالَ: فَإِنْ رَأَى أَحَدٌ قَصَّهَا فَيَقُولُ: مَا شَاءَ اللَّهُ فَسَأَلَنَا يَوْمًا فَقَالَ: «هَلْ رَأَى مِنْكُمْ أَحَدٌ رُؤْيَا؟» قُلْنَا: لَا قَالَ: لَكِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ رَجُلَيْنِ أَتَيَانِي فَأَخَذَا بِيَدَيَّ فَأَخْرَجَانِي إِلَى أَرْضٍ مُقَدَّسَةٍ فَإِذَا رَجُلٌ جَالِسٌ وَرَجُلٌ قَائِمٌ بِيَدِهِ كَلُّوبٌ مِنْ حَدِيدٍ يُدْخِلُهُ فِي شِدْقِهِ فَيَشُقُّهُ حَتَّى يَبْلُغَ قَفَاهُ ثُمَّ يَفْعَلُ بِشِدْقِهِ الْآخَرِ مِثْلَ ذَلِكَ وَيَلْتَئِمُ شِدْقُهُ هَذَا فَيَعُودُ فَيَصْنَعُ مِثْلَهُ. قُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ عَلَى قَفَاهُ وَرَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى رَأْسِهِ بِفِهْرٍ أَوْ صَخْرَةٍ يَشْدَخُ بِهَا رَأْسَهُ فَإِذَا ضَرَبَهُ تَدَهْدَهَ الْحَجَرُ فَانْطَلَقَ إِلَيْهِ لِيَأْخُذَهُ فَلَا يَرْجِعُ إِلَى هَذَا حَتَّى يَلْتَئِمَ رَأْسُهُ وَعَادَ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ فَعَادَ إِلَيْهِ فَضَرَبَهُ فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا إِلَى ثَقْبٍ مِثْلِ التَّنُّورِ أَعْلَاهُ ضَيِّقٌ وَأَسْفَلَهُ وَاسِعٌ تَتَوَقَّدُ تَحْتَهُ نَارٌ فَإِذَا ارْتَفَعَتِ ارْتَفَعُوا حَتَّى كَادَ أَنْ يَخْرُجُوا مِنْهَا وَإِذَا خَمَدَتْ رَجَعُوا فِيهَا وَفِيهَا رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ مِنْ دَمٍ فِيهِ رَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى وَسْطِ النَّهَرِ وَعَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ حِجَارَةٌ فَأَقْبَلَ الرَّجُلُ الَّذِي فِي النَّهَرِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ رَمَى الرَّجُلُ بِحَجَرٍ فِي فِيهِ فَرَدَّهُ حَيْثُ كَانَ فَجَعَلَ كُلَّمَا جَاءَ لِيَخْرُجَ رَمَى فِي فِيهِ بِحَجَرٍ فَيَرْجِعُ كَمَا كَانَ فَقُلْتُ مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ خَضْرَاءَ فِيهَا شَجَرَةٌ عَظِيمَةٌ وَفِي أَصْلِهَا شَيْخٌ وَصِبْيَانٌ وَإِذَا رَجُلٌ قَرِيبٌ مِنَ الشجرةِ بَيْنَ يَدَيْهِ نَارٌ يُوقِدُهَا فَصَعِدَا بِيَ الشَّجَرَةَ فأدخلاني دَار أوسطَ الشَّجَرَةِ لَمْ أَرَ قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهَا فِيهَا رِجَالٌ شُيُوخٌ وَشَبَابٌ وَنِسَاءٌ وَصِبْيَانٌ ثُمَّ أَخْرَجَانِي مِنْهَا فصعدا بِي الشَّجَرَة فأدخلاني دَار هِيَ أَحْسَنُ وَأَفْضَلُ مِنْهَا فِيهَا شُيُوخٌ وَشَبَابٌ فَقُلْتُ لَهُمَا: إِنَّكُمَا قَدْ طَوَّفْتُمَانِي اللَّيْلَةَ فَأَخْبِرَانِي عَمَّا رَأَيْتُ قَالَا: نَعَمْ أَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي رَأَيْتَهُ يُشَقُّ شِدْقُهُ فَكَذَّابٌ يُحَدِّثُ بِالْكَذْبَةِ فَتُحْمَلُ عَنْهُ حَتَّى تَبْلُغَ الْآفَاقَ فَيُصْنَعُ بِهِ مَا تَرَى إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالَّذِي رَأَيْتَهُ يُشْدَخُ رَأْسُهُ فَرَجُلٌ عَلَّمَهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَنَامَ عَنْهُ بِاللَّيْلِ وَلَمْ يَعْمَلْ بِمَا فِيهِ بِالنَّهَارِ يُفْعَلُ بِهِ مَا رَأَيْتَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالَّذِي رَأَيْتَهُ فِي الثَّقْبِ فَهُمُ الزُّنَاةُ وَالَّذِي رَأَيْتَهُ فِي النَّهَرِ آكِلُ الرِّبَا وَالشَّيْخُ الَّذِي رَأَيْتَهُ فِي أَصْلِ الشَّجَرَةِ إِبْرَاهِيمُ وَالصِّبْيَانُ حَوْلَهُ فَأَوْلَادُ النَّاسِ وَالَّذِي يُوقِدُ النَّارَ مَالِكٌ خَازِنُ النَّارِ وَالدَّارُ الْأُولَى الَّتِي دَخَلْتَ دَارُ عَامَّةِ الْمُؤْمِنِينَ وَأَمَّا هَذِهِ الدَّارُ فَدَارُ الشُّهَدَاءِ وَأَنَا جِبْرِيلُ وَهَذَا مِيكَائِيلُ فَارْفَعْ رَأْسَكَ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَإِذَا فَوْقِي مِثْلُ السَّحَابِ وَفِي رِوَايَةٍ مِثْلُ الرَّبَابَةِ الْبَيْضَاءِ قَالَا: ذَلِكَ مَنْزِلُكَ قُلْتُ: دَعَانِي أَدْخُلْ مَنْزِلِي قَالَا: إِنَّهُ بَقِيَ لَكَ عُمُرٌ لَمْ تَسْتَكْمِلْهُ فَلَوِ اسْتَكْمَلْتَهُ أَتَيْتَ مَنْزِلَكَ «. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ. وَذَكَرَ حَدِيثَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فِي رُؤْيَا النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَدِينَةِ فِي» بَاب حرم الْمَدِينَة

وعن سمرة بن جندب قال كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا صلى اقبل علينا بوجهه فقال من راى منكم الليلة رويا قال فان راى احد قصها فيقول ما شاء الله فسالنا يوما فقال هل راى منكم احد رويا قلنا لا قال لكني رايت الليلة رجلين اتياني فاخذا بيدي فاخرجاني الى ارض مقدسة فاذا رجل جالس ورجل قاىم بيده كلوب من حديد يدخله في شدقه فيشقه حتى يبلغ قفاه ثم يفعل بشدقه الاخر مثل ذلك ويلتىم شدقه هذا فيعود فيصنع مثله قلت ما هذا قالا انطلق فانطلقنا حتى اتينا على رجل مضطجع على قفاه ورجل قاىم على راسه بفهر او صخرة يشدخ بها راسه فاذا ضربه تدهده الحجر فانطلق اليه لياخذه فلا يرجع الى هذا حتى يلتىم راسه وعاد راسه كما كان فعاد اليه فضربه فقلت ما هذا قالا انطلق فانطلقنا حتى اتينا الى ثقب مثل التنور اعلاه ضيق واسفله واسع تتوقد تحته نار فاذا ارتفعت ارتفعوا حتى كاد ان يخرجوا منها واذا خمدت رجعوا فيها وفيها رجال ونساء عراة فقلت ما هذا قالا انطلق فانطلقنا حتى اتينا على نهر من دم فيه رجل قاىم على وسط النهر وعلى شط النهر رجل بين يديه حجارة فاقبل الرجل الذي في النهر فاذا اراد ان يخرج رمى الرجل بحجر في فيه فرده حيث كان فجعل كلما جاء ليخرج رمى في فيه بحجر فيرجع كما كان فقلت ما هذا قالا انطلق فانطلقنا حتى انتهينا الى روضة خضراء فيها شجرة عظيمة وفي اصلها شيخ وصبيان واذا رجل قريب من الشجرة بين يديه نار يوقدها فصعدا بي الشجرة فادخلاني دار اوسط الشجرة لم ار قط احسن منها فيها رجال شيوخ وشباب ونساء وصبيان ثم اخرجاني منها فصعدا بي الشجرة فادخلاني دار هي احسن وافضل منها فيها شيوخ وشباب فقلت لهما انكما قد طوفتماني الليلة فاخبراني عما رايت قالا نعم اما الرجل الذي رايته يشق شدقه فكذاب يحدث بالكذبة فتحمل عنه حتى تبلغ الافاق فيصنع به ما ترى الى يوم القيامة والذي رايته يشدخ راسه فرجل علمه الله القران فنام عنه بالليل ولم يعمل بما فيه بالنهار يفعل به ما رايت الى يوم القيامة والذي رايته في الثقب فهم الزناة والذي رايته في النهر اكل الربا والشيخ الذي رايته في اصل الشجرة ابراهيم والصبيان حوله فاولاد الناس والذي يوقد النار مالك خازن النار والدار الاولى التي دخلت دار عامة المومنين واما هذه الدار فدار الشهداء وانا جبريل وهذا ميكاىيل فارفع راسك فرفعت راسي فاذا فوقي مثل السحاب وفي رواية مثل الربابة البيضاء قالا ذلك منزلك قلت دعاني ادخل منزلي قالا انه بقي لك عمر لم تستكمله فلو استكملته اتيت منزلك رواه البخاري وذكر حديث عبد الله بن عمر في رويا النبي صلى الله عليه وسلم في المدينة في باب حرم المدينة

ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল প্রতিদিন ফজরের সালাতের পর সাহাবীদের সংবাদ নেয়া। বিশেষভাবে তাদের স্বপ্নের বিষয়ে খবর শুনতেন। অতঃপর স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো-মন্দ উভয়টি দেখেছেন আল্লাহ তা‘আলা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিবরীল (আ.) এবং মীকাঈল (আ.)-এর সাথে মিথ্যাকথা বলার শাস্তি, যিনা করার শাস্তি ও সুদ খাওয়ার শাস্তি দেখিয়েছেন। কারণ শেষ যামানায় এগুলো অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পারে। এজন্য যে, মানুষ যেন এগুলো থেকে দূরে থাকে। আবার জান্নাতের অবস্থাও দেখিয়েছেন যাতে করে মানুষ আগ্রহের সাথে জান্নাতে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২২-[১৭] আবূ রযীন আল ’উকায়লী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নুবুওয়াতের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন অন্যকে বলার পূর্ব পর্যন্ত উড়ন্ত পাখির পায়ের মধ্যে ঝুলতে থাকে। আর যখনই তা কারো নিকট বর্ণনা করা হয়, তখন তা বাস্তবায়িত হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাও বলেছেন যে, কোন বন্ধু অথবা জ্ঞানী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো কাছে স্বপ্নের কথাটি প্রকাশ করো না। (তিরমিযী)[1]

আর আবূ দাঊদ-এর রিওয়ায়াতের মধ্যে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বপ্নের তা’বীর না দেয়া পর্যন্ত পাখির পায়ে ঝুলতে থাকে। আর যখনই তার তা’বীর করা হয়, তখন তা বাস্তবায়িত হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাও বলেছেন যে, কোন বন্ধু অথবা কোন জ্ঞানী ব্যতীত অন্য কারো কাছে স্বপ্নের কথা বর্ণনা করো না।

الْفَصْلُ الثَّانِي

عَن أبي رزين العقيليِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يُحَدِّثْ بِهَا فَإِذَا حَدَّثَ بِهَا وَقَعَتْ» . وَأَحْسِبُهُ قَالَ: «لَا تُحَدِّثْ إِلَّا حَبِيبًا أَوْ لَبِيبًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: «الرُّؤْيَا عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ تُعْبَرْ فَإِذَا عُبِرَتْ وَقَعَتْ» . وَأَحْسِبُهُ قَالَ: «وَلَا تَقُصَّهَا إِلَّا عَلَى وَادٍّ أَوْ ذِي رأيٍ»

عن ابي رزين العقيلي قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم رويا المومن جزء من ستة واربعين جزءا من النبوة وهي على رجل طاىر ما لم يحدث بها فاذا حدث بها وقعت واحسبه قال لا تحدث الا حبيبا او لبيبا رواه الترمذي وفي رواية ابي داود قال الرويا على رجل طاىر ما لم تعبر فاذا عبرت وقعت واحسبه قال ولا تقصها الا على واد او ذي راي

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীসে সাধারণভাবে বলা হয়েছে যে, মু’মিনের স্বপ্ন নুবুওয়াতে ছেচল্লিশভাগের একভাগ। এ সম্পর্কে কিছু আসার হাদীস বর্ণিত রয়েছে। তবে ইসলামের প্রথমদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ছয় মাস স্বপ্ন দেখেছিলেন তা নুবুওয়াতের ছেচল্লিশভাগের এক-ভাগের মাঝে অন্তর্ভুক্ত।

‘‘স্বপ্নে পাখির পায়ের মধ্যে ঝুলতে থাকা’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য ভালো ও মন্দ উভয়টি হতে পারে। সুতরাং স্বপ্নের ব্যাখ্যা যাই দেয়া হবে তাই ঘটবে। ফলে যে কোন মানুষের নিকট স্বপ্নের কথা বলা উচিত না। স্বপ্নের কথা বলবে ‘আলিম, সৎলোকেদের নিকট। (মিরক্বাতুল মাফাহীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২৩-[১৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ওয়ারাকাহ্ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলো। খাদিজা (রাঃ) তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে বলেছিলেন, ওয়ারাকাহ্ তো আপনাকে সত্যবাদী বলে স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু আপনার নুবুওয়াত প্রকাশের পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওয়ারাকাকে স্বপ্নে আমাকে দেখানো হয়েছে, তার গায়ে সাদা কাপড় রয়েছে। যদি সে জাহান্নামী হত তাহলে তার গায়ে অন্য ধরনের কাপড় হত। (আহমাদ ও তিরমিযী)[1]

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن وَرَقَةَ. فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ: إِنَّهُ كَانَ قَدْ صَدَّقَكَ وَلَكِنْ مَاتَ قَبْلَ أَنْ تَظْهَرَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أُرِيتُهُ فِي الْمَنَامِ وَعَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيضٌ وَلَوْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَكَانَ عَلَيْهِ لِبَاسٌ غَيْرُ ذَلِك» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت سىل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ورقة فقالت له خديجة انه كان قد صدقك ولكن مات قبل ان تظهر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اريته في المنام وعليه ثياب بيض ولو كان من اهل النار لكان عليه لباس غير ذلك رواه احمد والترمذي

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীসের মাঝে ওয়ারাকাহ্ ইবনু নাওফাল ইবনু আসাদ আল কুরায়শী ছিলেন খাদিজা (রাঃ)-এর চাচাতো ভাই। তিনি জাহিলী ঈসায়ী ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তিনি পূর্বের আসমানী গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন করেছেন। তিনি একজন বৃদ্ধ লোক ও অন্ধ ছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রসূল হিসেবে বিশ্বাস করেছিলেন। এজন্য খাদিজা (রাঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রশ্ন করেছিল, সে জান্নাতে যাবে কি? রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যার দ্বারা বুঝা যায় যে, সে জান্নাতী। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২২৮৮; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২৪-[১৯] ইবনু খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রহঃ) তাঁর চাচা আবূ খুযায়মাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যেভাবে স্বপ্ন দেখে, তিনি অনুরূপ স্বপ্ন দেখলেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে সিজদা্ করছেন। তাঁকে স্বপ্নের কথাটি বর্ণনা করা হলে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি তোমার স্বপ্নটিকে বাস্তবায়ন করো, এ বলে তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লেন। অতঃপর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে সিজদা্ করলেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

এ প্রসঙ্গে আবূ বকরাহ্ বর্ণিত হাদীস, ’’যেন আসমান হতে একটি পাল্লা অবতীর্ণ হয়েছে’’ আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ)-এর মানাকিবে বর্ণিত হবে।

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنِ ابْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ عَمِّهِ أَبِي خُزَيْمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَنَّهُ رَأَى فِيمَا يَرَى النَّائِمُ أَنَّهُ سَجَدَ عَلَى جَبْهَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَاضْطَجَعَ لَهُ وَقَالَ: «صَدِّقْ رُؤْيَاكَ» فَسَجَدَ عَلَى جَبْهَتِهِ. رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أَبِي بَكْرَةَ: كَأَنَّ مِيزَانًا نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ فِي بَابِ «مَنَاقِبِ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا»

وعن ابن خزيمة بن ثابت عن عمه ابي خزيمة رضي الله عنهم انه راى فيما يرى الناىم انه سجد على جبهة النبي صلى الله عليه وسلم فاخبره فاضطجع له وقال صدق روياك فسجد على جبهته رواه في شرح السنةوسنذكر حديث ابي بكرة كان ميزانا نزل من السماء في باب مناقب ابي بكر وعمر رضي الله عنهما

ব্যাখ্যাঃ মিরক্বাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেছেন, খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) উপাধি ছিল আবূ আম্মারা আল আনসারী আল আওযী তিনি বদর যুদ্ধ এবং পরবর্তী সকল যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন। তিনি সিফফীন যুদ্ধে ‘আলী (রাঃ)-এর সাথে ছিলেন। যখন ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির-কে হত্যা করা হয়। তিনি তার তরবারি কোষমুক্ত করে লড়াই করতে থাকেন এমনকি তিনি নিহত (শাহীদ) হন।

মুযহির (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ যখন স্বপ্নে কেউ ভালো কিছু দেখে তার উপর ‘আমল করা মুস্তাহাব। যদি ঐ সপ্নটি ভালো বা আনুগত্য করার মতো হয়। যেমন কোন ব্যক্তি স্বপ্ন দেখেছে যে, সে সালাত আদায় করে, সওম পালন করে, তার সম্পদ হতে সাদাকা করে বা এ ধরনের ভালো কোন কিছু স্বপ্নে দেখে। অত্র হাদীসে আবূ খুযায়মাহ্ ভালো একটি স্বপ্ন দেখেছিল আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পালন করার সুযোগ করে দিলেন। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উচিত এ ধরনের ভালো স্বপ্ন পালন করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
৪৬২৫

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬২৫-[২০] সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (ফজরের সালাতের পরে) অধিকাংশ সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখত আল্লাহ তা’আলা তাওফীক দিলে তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বর্ণনা করত। একদিন সকালে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে বললেনঃ আজ রাতে দু’জন আগন্তুক (স্বপ্নের মধ্যে) আমার কাছে এসেছিল। তারা আমাকে উঠাল এবং বলল, আমাদের সঙ্গে চলুন। আমি তাদের সঙ্গে চললাম। অতঃপর প্রথম অধ্যায়ে যে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার অনুরূপ বিস্তারিত ঘটনাটি তিনি বর্ণনা করেছেন।

অবশ্য হাদীসে এমন কিছু কথা বর্ধিত আছে, যা পূর্বে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়নি। আর তা হলো, সম্মুখে আমরা একটি ঘন সন্নিবিষ্ট বাগানে এসে উপনীত হলাম। বাগানটি বসন্তের হরেক রকম ফুলে সুশোভিত ছিল। হঠাৎ বাগানের মধ্যস্থলে আমার দৃষ্টি এমন এক ব্যক্তির উপরে পড়ল, যিনি এত দীর্ঘকায় ছিলেন যে, উপরের দিকে তাঁর মাথা দেখা আমার জন্য কষ্টকর ছিল। তার চতুষ্পার্শ্বে এত বিপুল সংখ্যক শিশু ছিল, যাদেরকে আমি কখনো দেখিনি। আমি সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞেস করলামঃ এ লোকটি কে? আর এরাই বা কারা? কিন্তু তারা আমাকে বললেনঃ সামনে চলুন।

সুতরাং আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হয়ে বিরাট একটি বাগানে এসে উপনীত হলাম। এরূপ বড় ও সুন্দর বাগান এর পূর্বে আর আমি কখনো দেখিনি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা আমাকে বললেনঃ বাগানের বৃক্ষে আরোহণ করুন। আমরা তাতে আরোহণ করলে এমন একটি শহর আমাদের নজরে পড়ল যা সোনা ও রূপার ইট দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা ঐ শহরের দরজায় পৌঁছলাম, দরজা খুলতে বললে আমাদের জন্য দরজা খোলা হলো। তার ভিতরে প্রবেশ করে আমরা কতিপয় লোকের সাক্ষাৎ পেলাম। তাদের শরীরের অর্ধেক ছিল যেসব রূপ তুমি দেখেছ তার চেয়ে সৌন্দর্যপূর্ণ। আর অর্ধেক ছিল তোমার দেখা রূপের মধ্যে অত্যধিক বিশ্রী।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার সঙ্গী দু’জন ঐ সমস্ত লোকেদের উদ্দেশে বলল : যাও, তোমরা এ ঝরণায় নেমে পড়ো। তথায় প্রস্থের দিকে প্রবহমান একটি ঝরণা ছিল। তার পানি ছিল একেবারে সাদা। তারা গিয়ে তাতে নামলো। অতঃপর নহরের পানিতে ডুব দিয়ে তারা আমাদের কাছে ফিরে এলো। দেখা গেল, তাদের কদাকৃতি দূর হয়ে গিয়েছে। এক্ষণে তারা খুব সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট হয়ে গেছে।

হাদীসটির বর্ধিত এ কথাগুলোর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, বাগানে যে দীর্ঘাকৃতির লোকটিকে দেখেছিলেন, তিনি ছিলেন ইব্রাহীম (আ.)।আর তাঁর চারপাশের যে বালকগুলো ছিল তারা এ সমস্ত শিশু যারা দীনে ফিতরাতের (ইসলামের) উপর মৃত্যুবরণ করেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন মুসলিমদের কেউ কেউ জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আর মুশরিকদের সন্তান? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তারাও সেখানে। আর ঐ সমস্ত লোক যাদের শরীরের অর্ধেক অংশ সুন্দর ছিল আর বাকি অংশ ছিল কদাকার, তারা সে সমস্ত লোক, যারা ভালোর সাথে মন্দ কাজও মিশিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তাদের ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করে দেন। (বুখারী)[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

عَن سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يَكْثُرُ أَنْ يَقُولَ لِأَصْحَابِهِ: «هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنْ رُؤْيَا؟» فَيَقُصُّ عَلَيْهِ مَنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُصَّ وَإِنَّهُ قَالَ لَنَا ذَاتَ غَدَاةٍ: إِنَّهُ أَتَانِي اللَّيْلَةَ آتِيَانِ وَإِنَّهُمَا ابْتَعَثَانِي وَإِنَّهُمَا قَالَا لِي: انْطَلِقْ وَإِنِّي انْطَلَقْتُ مَعَهُمَا . وَذَكَرَ مِثْلَ الْحَدِيثِ الْمَذْكُورِ فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ بِطُولِهِ وَفِيهِ زِيَادَةٌ لَيْسَتْ فِي الْحَدِيثِ الْمَذْكُورِ وَهِيَ قَوْلُهُ: فَأَتَيْنَا عَلَى رَوْضَةٍ مُعْتِمَةٍ فِيهَا مِنْ كُلِّ نَوْرِ الرَّبِيعِ وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَيِ الرَّوْضَةِ رَجُلٌ طَوِيلٌ لَا أَكَادُ أَرَى رَأْسَهُ طُولًا فِي السَّمَاءِ وَإِذَا حَوْلَ الرَّجُلِ مِنْ أَكْثَرِ وِلْدَانٍ رَأَيْتُهُمْ قَطُّ قُلْتُ لَهُمَا: مَا هَذَا مَا هَؤُلَاءِ؟ قَالَ: قَالَا لِيَ: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا فَانْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ عَظِيمَةٍ لَمْ أَرَ رَوْضَةً قَطُّ أَعْظَمَ مِنْهَا وَلَا أَحْسَنَ . قَالَ: قَالَا لِيَ: ارْقَ فِيهَا . قَالَ: «فَارْتَقَيْنَا فِيهَا فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَدِينَةٍ مَبْنِيَّةٍ بِلَبِنِ ذَهَبٍ وَلَبِنِ فِضَّةٍ فَأَتَيْنَا بَابَ الْمَدِينَةِ فَاسْتَفْتَحْنَا فَفُتِحَ لَنَا فَدَخَلْنَاهَا فَتَلَقَّانَا فِيهَا رِجَالٌ شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ وَشَطْرٌ مِنْهُمْ كَأَقْبَحِ مَا أَنْتَ رَاءٍ» . قَالَ: قَالَا لَهُمُ: اذْهَبُوا فَقَعُوا فِي ذَلِكَ النَّهَرِ قَالَ: «وَإِذَا نَهَرٌ مُعْتَرِضٌ يَجْرِي كَأَنَّ مَاءَهُ الْمَحْضُ فِي الْبَيَاضِ فَذَهَبُوا فَوَقَعُوا فِيهِ ثُمَّ رَجَعُوا إِلَيْنَا قَدْ ذَهَبَ ذَلِكَ السُّوءُ عَنْهُمْ فَصَارُوا فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ» وَذَكَرَ فِي تَفْسِير هَذِه الزِّيَادَة: «وَأما الرجلُ الطويلُ الَّذِي فِي الرَّوْضَةِ فَإِنَّهُ إِبْرَاهِيمُ وَأَمَّا الْوِلْدَانُ الَّذِينَ حَوْلَهُ فَكُلُّ مَوْلُودٍ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ» قَالَ: فَقَالَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَأَوْلَادُ الْمُشْرِكِينَ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَأَوْلَادُ الْمُشْرِكِينَ وَأَمَّا الْقَوْمُ الَّذِينَ كَانُوا شطرٌ مِنْهُم حسن وَشطر مِنْهُمْ حَسَنٌ وَشَطْرٌ مِنْهُمْ قَبِيحٌ فَإِنَّهُمْ قَوْمٌ قَدْ خَلَطُوا عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا تَجَاوَزَ الله عَنْهُم» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن سمرة بن جندب قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم مما يكثر ان يقول لاصحابه هل راى احد منكم من رويا فيقص عليه من شاء الله ان يقص وانه قال لنا ذات غداة انه اتاني الليلة اتيان وانهما ابتعثاني وانهما قالا لي انطلق واني انطلقت معهما وذكر مثل الحديث المذكور في الفصل الاول بطوله وفيه زيادة ليست في الحديث المذكور وهي قوله فاتينا على روضة معتمة فيها من كل نور الربيع واذا بين ظهري الروضة رجل طويل لا اكاد ارى راسه طولا في السماء واذا حول الرجل من اكثر ولدان رايتهم قط قلت لهما ما هذا ما هولاء قال قالا لي انطلق فانطلقنا فانتهينا الى روضة عظيمة لم ار روضة قط اعظم منها ولا احسن قال قالا لي ارق فيها قال فارتقينا فيها فانتهينا الى مدينة مبنية بلبن ذهب ولبن فضة فاتينا باب المدينة فاستفتحنا ففتح لنا فدخلناها فتلقانا فيها رجال شطر من خلقهم كاحسن ما انت راء وشطر منهم كاقبح ما انت راء قال قالا لهم اذهبوا فقعوا في ذلك النهر قال واذا نهر معترض يجري كان ماءه المحض في البياض فذهبوا فوقعوا فيه ثم رجعوا الينا قد ذهب ذلك السوء عنهم فصاروا في احسن صورة وذكر في تفسير هذه الزيادة واما الرجل الطويل الذي في الروضة فانه ابراهيم واما الولدان الذين حوله فكل مولود مات على الفطرة قال فقال بعض المسلمين يا رسول الله واولاد المشركين فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم واولاد المشركين واما القوم الذين كانوا شطر منهم حسن وشطر منهم حسن وشطر منهم قبيح فانهم قوم قد خلطوا عملا صالحا واخر سيىا تجاوز الله عنهم رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পর্ব-২৪: স্বপ্ন (كتاب الرؤيا) 24. Visions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »