৯০ : ১
لَاۤ اُقۡسِمُ بِهٰذَا الۡبَلَدِ ۙ﴿۱﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১. আমি(১) শপথ করছি এ নগরের(২),
(১) এ সূরার প্রথমেই বলা হয়েছে, لا শব্দটির অর্থ, না। কিন্তু এখানে لا শব্দটি কি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ব্যাপারে দুটি মত রয়েছে। এক. এখানে لا শব্দটি অতিরিক্ত এবং আরবী বাকপদ্ধতিতে এর অতিরিক্ত ব্যবহার সুবিদিত। তবে বিশুদ্ধ উক্তি এই যে, প্রতিপক্ষের ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন করার জন্যে এই لا শব্দটি শপথ বাক্যের শুরুতে ব্যবহৃত হয়। উদ্দেশ্য এই যে, এটা কেবল আপনার ধারণা নয়; বরং আমি শপথ সহকারে যা বলছি, তাই বাস্তব সত্য। অথবা অমুক অমুক জিনিসের কসম খেয়ে বলছি আসল ব্যাপার হচ্ছে এই। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর]
(২) البلد বা নগরী বলে এখানে মক্কা নগরীকে বোঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর] সূরা আত-ত্বীনেও এমনিভাবে মক্কা নগরীর শপথ করা হয়েছে এবং তদসঙ্গে أمين বিশেষণও উল্লেখ করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া১। শপথ করছি এই (মক্কা) নগরের।[1]
[1] নগর বলে মক্কা নগরীকে বোঝানো হয়েছে। সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার সময় নবী (সাঃ) মক্কাতেই অবস্থিত ছিলেন। তাঁর জন্মস্থানও ছিল মক্কা শহর। অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা নবী (সাঃ)-এর জন্মস্থান এবং বাসস্থানের কসম খেয়েছেন। যার কারণে তার অতিরিক্ত মর্যাদার কথা সুস্পষ্ট হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ২
وَ اَنۡتَ حِلٌّۢ بِهٰذَا الۡبَلَدِ ۙ﴿۲﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২. আর আপনি এ নগরের অধিবাসী(১),
(১) حِلٌّ শব্দের দুটি অর্থ হতে পারে (এক) এটা حلول থেকে উদ্ভূত। অর্থ কোন কিছুতে অবস্থান নেয়া, থাকা ও অবতরণ করা। সে হিসেবে আয়াতের মর্মার্থ এই যে, মক্কা নগরী নিজেও সম্মানিত ও পবিত্র, বিশেষত আপনিও এ নগরীতে বসবাস করেন। বসবাসকারীর শ্রেষ্ঠত্বের দরুনও বাসস্থানের শ্রেষ্ঠত্ব বেড়ে যায়। কাজেই আপনার বসবাসের কারণে এ নগরীর মাহাত্ম্য ও সম্মান দ্বিগুণ হয়ে গেছে। [ফাতহুল কাদীর] (দুই) এটা حلال থেকে উদ্ভূত। অর্থ হালাল হওয়া। এদিক দিয়ে এক অর্থ এই যে, আপনাকে মক্কার কাফেররা হালাল মনে করে রেখেছে এবং আপনাকে হত্যা করার ফিকিরে রয়েছে; অথচ তারা নিজেরাও মক্কা নগরীতে কোন শিকারকেই হালাল মনে করে না।
এমতাবস্থায় তাদের যুলুম ও অবাধ্যতা কতটুকু যে, তারা আল্লাহর রাসূলের হত্যাকে হালাল মনে করে নিয়েছে। অপর অর্থ এই যে, আপনার জন্যে মক্কার হারামে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হালাল করে দেওয়া হবে। [ইবন কাসীর] বস্তুত মক্কা বিজয়ের সময় একদিনের জন্যেই তাই করা হয়েছিল। আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন মাথায় শিরস্ত্ৰাণ পরিধান করে মক্কায় প্রবেশ করলেন, তারপর যখন তিনি তা খুললেন, এক লোক এসে তাকে বলল যে, ইবনে খাতল কা’বার পর্দা ধরে আছে। তিনি বললেন, ‘তাকে হত্যা করা। [বুখারী: ১৮৪৬, মুসলিম: ৪৫০] কারণ, পূর্ব থেকেই তার মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণা রাসূল দিয়েছিলেন।
তাফসীরে জাকারিয়া২। আর তুমি এই নগরের অধিবাসী (বা বৈধতার অধিকারী হবে)।[1]
[1] এতে সেই সময়কার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে যখন মক্কা বিজয় হয়। সে সময় আল্লাহ তাআলা হারাম শহরে নবী (সাঃ) এর জন্য লড়াই-ঝগড়া বৈধ করে দিয়েছিলেন। অথচ সেখানে ঝগড়া-লড়ায়ের কোন প্রকার অনুমতি নেই। কেননা, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘এই শহরকে আল্লাহ সেই সময় থেকে হারাম (নিষিদ্ধ ঘোষণা) করেছেন, যে সময়ে তিনি আকাশ-পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব আল্লাহর এই হারাম-এর বিধান কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে। এই স্থানের গাছ কাটা যাবে না এবং কাঁটা তুলে ফেলা হবে না। তবে আমার জন্য মাত্র দিনের কিছু সময়ের জন্য তা হালাল করা হয়েছিল। পুনরায় আজ সেই নিষেধাজ্ঞা ফিরে এল যেমন গতকাল ছিল। এবার কেউ যদি যুদ্ধ করার ব্যাপারে আমার যুদ্ধকে দলীলরূপে পেশ করে তাহলে তাকে বল, আল্লাহ তো তাঁর রসূল (সাঃ)-কে ক্ষণেকের জন্য এই অনুমতি দিয়েছিলেন। তোমাকে তো এ অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ (সহীহ বুখারী শিক্ষা অধ্যায়, মুসলিম হজ্জ অধ্যায়, মক্কার হারাম পরিচ্ছেদ) এই কথা খেয়াল করে আয়াতের অর্থ হবেঃ ‘‘আর তুমি (ভবিষ্যতে) এই নগরের বৈধতার অধিকারী হবে।’’ কিছু উলামা এর অর্থ করেছেনঃ ‘‘আর তুমি এই নগরের অধিবাসী।’’ কিন্তু ইমাম শওকানী বলেন, এই অর্থ তখন সঠিক হবে, যখন আরবী ভাষায় এ কথা প্রমাণিত হবে যে, حِلّ বাস করার অর্থেও ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এ আয়াতটি বাগধারার মাঝে পৃথক বাক্য হিসাবে ব্যবহূত হয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৩
وَ وَالِدٍ وَّ مَا وَلَدَ ۙ﴿۳﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩. শপথ জন্মদাতার ও যা সে জন্ম দিয়েছে।(১)
(১) যেহেতু বাপ ও তার ঔরসে জন্ম গ্রহণকারী সন্তানদের ব্যাপারে ব্যপক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং সামনের দিকে মানুষের কথা বলা হয়েছে, তাই বাপ মানে আদম আলাইহিস সালামই হতে পারেন। আর তার ঔরসে জন্ম গ্রহণকারী সন্তান বলতে দুনিয়ায় বর্তমানে যত মানুষ পাওয়া যায়, যত মানুষ অতীতে পাওয়া গেছে এবং ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে সবাইকে বুঝানো হয়েছে। এভাবে এতে আদম ও দুনিয়ার আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সব বনী-আদমের শপথ করা হয়েছে। অথবা وَالِدٌ বলে প্রত্যেক জন্মদানকারী পিতা আর وَلَدَ বলে প্রত্যেক সন্তানকে বোঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৩। শপথ জন্মদাতার ও যা সে জন্ম দিয়েছে তার। [1]
[1] কোন কোন উলামাগণ বলেছেন যে, এ থেকে আদম (আঃ) ও তাঁর সন্তান-সন্ততি উদ্দেশ্য নেওয়া হয়েছে। আবার কেউ বলেন, এ শব্দটা হল ব্যাপক; অর্থাৎ প্রত্যেক পিতা এবং সন্তান-সন্ততি এর অন্তর্ভুক্ত।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৪
لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡ كَبَدٍ ؕ﴿۴﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৪. নিঃসন্দেহে আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে।(১)
(১) এখানে পূর্ববর্তী শপথসমূহের জওয়াবে বলা হয়েছে যে, (لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي كَبَدٍ) আয়াতে বর্ণিত كَبَد এর শাব্দিক অর্থ শ্রম ও কষ্ট। অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টিগতভাবে আজীবন শ্রম ও কষ্টের মধ্যে থাকে। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৪। অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি বিপদ-কষ্টের মধ্যে। [1]
[1] অর্থাৎ, মানুষের জীবন পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্টে পরিপূর্ণ। ইমাম ত্বাবারী এই অর্থকেই গ্রহণ করেছেন। আর এ বাক্যটি হল কসমের জবাব।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৫
اَیَحۡسَبُ اَنۡ لَّنۡ یَّقۡدِرَ عَلَیۡهِ اَحَدٌ ۘ﴿۵﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৫. সে কি মনে করে যে, কখনো তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৫। সে কি মনে করে যে, কখনো তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না? [1]
[1] অর্থাৎ, কেউ তাকে পাকড়াও করার শক্তি রাখে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৬
یَقُوۡلُ اَهۡلَكۡتُ مَالًا لُّبَدًا ؕ﴿۶﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৬. সে বলে, আমি প্রচুর অর্থ নিঃশেষ করেছি।(১)
(১) বলা হয়েছে সে বলে “আমি প্রচুর ধন-সম্পদ উড়িয়ে দিয়েছি”। এই শব্দগুলোই প্রকাশ করে, বক্তা তার ধন-সম্পদের প্রাচুর্যে কী পরিমাণ গর্বিত। যে বিপুল পরিমাণ ধন সে খরচ করেছে নিজের সামগ্রিক সম্পদের তুলনায় তার কাছে তার পরিমাণ এত সামান্য ছিল যে, তা উড়িয়ে বা ফুকিয়ে দেবার কোন পরোয়াই সে করেনি। আর এই সম্পদ সে কোন কাজে উড়িয়েছে? কোন প্রকৃত নেকীর কাজে নয়, যেমন সামনের আয়াতগুলো থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। বরং এই সম্পদ সে উড়িয়েছে নিজের ধনাঢ্যতার প্রদর্শনী এবং নিজের অহংকার ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করার জন্য।
তাফসীরে জাকারিয়া৬। সে বলে, ‘আমি রাশি রাশি অর্থ উড়িয়ে দিয়েছি।’ [1]
[1] لُبَد শব্দের অর্থ হল প্রচুর বা রাশি রাশি। অর্থাৎ, সে দুনিয়ার ব্যাপারে এবং ফালতু কাজে অনেকানেক পয়সা ব্যয় করে অতঃপর গর্বের সাথে লোকের কাছে তা বলে বেড়ায়। (অথবা সে দ্বীনের ব্যাপারে অর্থ ব্যয় করে, অতঃপর আক্ষেপের সাথে লোকের কাছে তা বলে বেড়ায়। -সম্পাদক)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৭
اَیَحۡسَبُ اَنۡ لَّمۡ یَرَهٗۤ اَحَدٌ ؕ﴿۷﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৭. সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৭। সে কি ধারণা করে যে, তাকে কেউই দেখে নি? [1]
[1] এমনিভাবেই আল্লাহর নাফরমানীতে অটল থেকে মাল খরচ করে আর ভাবে যে, তার পরিদর্শনকারী কেউ নেই। অথচ আল্লাহ সবই দেখছেন এবং সে ব্যাপারে তাকে তিনি সাজা দেবেন। পরবর্তী আয়াতসমূহে আল্লাহ তাআলা কিছু নিয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন; যাতে এমন মানুষেরা উপদেশ গ্রহণ করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৮
اَلَمۡ نَجۡعَلۡ لَّهٗ عَیۡنَیۡنِ ۙ﴿۸﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৮. আমরা কি তার জন্য সৃষ্টি করিনি দুচোখ?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৮। আমি কি তার জন্য সৃষ্টি করিনি চক্ষুযুগল? [1]
[1] যার দ্বারা সে দর্শন করে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ৯
وَ لِسَانًا وَّ شَفَتَیۡنِ ۙ﴿۹﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৯. আর জিহ্বা ও দুই ঠোঁট?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৯। আর জিহ্বা ও ওষ্ঠাধর? [1]
[1] জিহ্বা দ্বারা সে কথা বলে এবং নিজের মনের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে। আর ওষ্ঠাধর (দুই ঠোঁট) দ্বারা সে বলা এবং খাওয়ার কাজে সহযোগিতা নিয়ে থাকে। এ ছাড়া এগুলো তার চেহারা ও মুখমন্ডলের সৌন্দর্যের বিশেষ কারণও বটে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৯০ : ১০
وَ هَدَیۡنٰهُ النَّجۡدَیۡنِ ﴿ۚ۱۰﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১০. আর আমরা তাকে দেখিয়েছি(১) দুটি পথ।(২)
(১) অর্থাৎ ভাল ও মন্দ দুটি পথের দিশাই আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাকে দিয়েছেন। শুধুমাত্ৰ বুদ্ধি ও চিন্তার শক্তি দান করে তাকে নিজের পথ নিজে খুঁজে নেবার জন্য ছেড়ে দেননি। বরং তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। তার সামনে ভালো ও মন্দ এবং নেকী ও গোনাহের দু'টি পথ সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে তার মধ্য থেকে নিজ দায়িত্বে যে পথটি ইচ্ছা সে গ্রহণ করতে পারে। পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও এই একই কথা বলা হয়েছে, সেখানে এসেছে, “আমি মানুষকে একটি মিশ্রিত বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি, যাতে তার পরীক্ষা নেয়া যায় এবং এ উদ্দেশ্যে আমি তাকে শ্রবণ শক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী করেছি। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি, চাইলে সে শোকরকারী হতে পারে বা কুফরকারী।” [সূরা আল-ইনসান: ২–৩]
(২) نَجْدَيْنِ শব্দটি نَجْدٌ এর দ্বিবচন। এর শাব্দিক অর্থ ঊর্ধ্বগামী পথ। [ফাতহুল কাদীর] এখানে প্রকাশ্য পথ বোঝানো হয়েছে। এপথ দুটির একটি হচ্ছে সৌভাগ্য ও সাফল্যের পথ এবং অপরটি হচ্ছে অনিষ্ট ও ধ্বংসের পথ। এ পথ দু'টির একটি গেছে ওপরের দিকে। কিন্তু সেখানে যেতে হলে খুব কষ্ট ও পরিশ্রম করতে হয়। সে পথটি বড়ই দুর্গম। সে পথে যেতে হলে মানুষকে নিজের প্রবৃত্তি ও তার আকাংখা এবং শয়তানের প্ররোচনার সাথে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়। আর দ্বিতীয় পথটি বড়ই সহজ। এটি খাদের মধ্যে নেমে গেছে। এই পথ দিয়ে নীচের দিকে নেমে যাবার জন্য কোন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। বরং এ জন্য শুধুমাত্র নিজের প্রবৃত্তির বছাধনটা একটু আলগা করে দেয়াই যথেষ্ট। তারপর মানুষ আপনা আপনি গড়িয়ে যেতে থাকে। এখন এই যে ব্যক্তিকে আমি দু'টি পথই দেখিয়ে দিয়েছিলাম। সে ঐ দু'টি পথের মধ্য থেকে নীচের দিকে নেমে যাবার পথটি গ্রহণ করে নিয়েছে এবং ওপরের দিকে যে পথটি গিয়েছে সেটি পরিত্যাগ করেছে।
তাফসীরে জাকারিয়া১০। এবং আমি কি তাকে দুটি পথ দেখাই নি? [1]
[1] অর্থাৎ, ভাল ও মন্দ, ঈমান ও কুফর, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের উভয় প্রকার পথই দেখিয়েছি । যেমন, তিনি বলেন ‘‘আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।’’ (সূরা দাহার ৩ আয়াত)
نَجْد শব্দের অর্থ হল উঁচু জায়গা। এই জন্য কিছু সংখ্যক আলেমগণ এর অনুবাদ করেছেন, আমি মানুষকে (মায়ের) দুই স্তনের প্রতি পথনির্দেশ করেছি। অর্থাৎ, সে স্তন্যপান করার জগতে (শিশু অবস্থায়) সেখান হতে নিজের আহার অর্জন করুক। কিন্তু প্রথমত অর্থটাই অধিক শুদ্ধ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান