৯০ সূরাঃ আল-বালাদ | Al-Balad | سورة البلد - আয়াত নং - ১০ - মাক্কী
আর আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি। আল-বায়ান
আর আমি তাকে (পাপ ও পুণ্যের) দু’টো পথ দেখিয়েছি। তাইসিরুল
এবং আমি তাদেরকে দু’টি পথ দেখিয়েছি । মুজিবুর রহমান
And have shown him the two ways? Sahih International
১০. আর আমরা তাকে দেখিয়েছি(১) দুটি পথ।(২)
(১) অর্থাৎ ভাল ও মন্দ দুটি পথের দিশাই আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাকে দিয়েছেন। শুধুমাত্ৰ বুদ্ধি ও চিন্তার শক্তি দান করে তাকে নিজের পথ নিজে খুঁজে নেবার জন্য ছেড়ে দেননি। বরং তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। তার সামনে ভালো ও মন্দ এবং নেকী ও গোনাহের দু'টি পথ সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে তার মধ্য থেকে নিজ দায়িত্বে যে পথটি ইচ্ছা সে গ্রহণ করতে পারে। পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও এই একই কথা বলা হয়েছে, সেখানে এসেছে, “আমি মানুষকে একটি মিশ্রিত বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি, যাতে তার পরীক্ষা নেয়া যায় এবং এ উদ্দেশ্যে আমি তাকে শ্রবণ শক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী করেছি। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি, চাইলে সে শোকরকারী হতে পারে বা কুফরকারী।” [সূরা আল-ইনসান: ২–৩]
(২) نَجْدَيْنِ শব্দটি نَجْدٌ এর দ্বিবচন। এর শাব্দিক অর্থ ঊর্ধ্বগামী পথ। [ফাতহুল কাদীর] এখানে প্রকাশ্য পথ বোঝানো হয়েছে। এপথ দুটির একটি হচ্ছে সৌভাগ্য ও সাফল্যের পথ এবং অপরটি হচ্ছে অনিষ্ট ও ধ্বংসের পথ। এ পথ দু'টির একটি গেছে ওপরের দিকে। কিন্তু সেখানে যেতে হলে খুব কষ্ট ও পরিশ্রম করতে হয়। সে পথটি বড়ই দুর্গম। সে পথে যেতে হলে মানুষকে নিজের প্রবৃত্তি ও তার আকাংখা এবং শয়তানের প্ররোচনার সাথে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়। আর দ্বিতীয় পথটি বড়ই সহজ। এটি খাদের মধ্যে নেমে গেছে। এই পথ দিয়ে নীচের দিকে নেমে যাবার জন্য কোন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। বরং এ জন্য শুধুমাত্র নিজের প্রবৃত্তির বছাধনটা একটু আলগা করে দেয়াই যথেষ্ট। তারপর মানুষ আপনা আপনি গড়িয়ে যেতে থাকে। এখন এই যে ব্যক্তিকে আমি দু'টি পথই দেখিয়ে দিয়েছিলাম। সে ঐ দু'টি পথের মধ্য থেকে নীচের দিকে নেমে যাবার পথটি গ্রহণ করে নিয়েছে এবং ওপরের দিকে যে পথটি গিয়েছে সেটি পরিত্যাগ করেছে।
তাফসীরে জাকারিয়া১০। এবং আমি কি তাকে দুটি পথ দেখাই নি? [1]
[1] অর্থাৎ, ভাল ও মন্দ, ঈমান ও কুফর, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের উভয় প্রকার পথই দেখিয়েছি । যেমন, তিনি বলেন ‘‘আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হবে।’’ (সূরা দাহার ৩ আয়াত)
نَجْد শব্দের অর্থ হল উঁচু জায়গা। এই জন্য কিছু সংখ্যক আলেমগণ এর অনুবাদ করেছেন, আমি মানুষকে (মায়ের) দুই স্তনের প্রতি পথনির্দেশ করেছি। অর্থাৎ, সে স্তন্যপান করার জগতে (শিশু অবস্থায়) সেখান হতে নিজের আহার অর্জন করুক। কিন্তু প্রথমত অর্থটাই অধিক শুদ্ধ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান