তুমি তোমার সুমহান রবের নামের তাসবীহ পাঠ কর, আল-বায়ান
তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। তাইসিরুল
তুমি তোমার সুমহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। মুজিবুর রহমান
Exalt the name of your Lord, the Most High, Sahih International
১. আপনি আপনার সুমহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন(১),
(১) আল্লাহ তা'আলা বান্দাদেরকে তার তাসবীহ বা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করার নির্দেশ দিচ্ছেন। যে পবিত্ৰতা ঘোষণার মাধ্যমে আল্লাহর যিকির, ইবাদাত, তাঁর মাহাত্মের জন্য বিনয় ও দীন-হীনাতা প্ৰকাশ পায়। আর তাঁর তাসবীহ যেন তাঁর সত্তার মাহাত্মা উপযোগী হয়। যেন তাকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নামসমূহ দিয়েই সেগুলোর মহান অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখেই কেবল আহ্বান করা হয়। [সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া১। তুমি তোমার সুমহান প্রতিপালকের নামে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। [1]
[1] ঐ সব জিনিস থেকে পবিত্র যা তাঁর জন্য শোভনীয় বা উপযুক্ত নয়। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) এই সূরাটির প্রথম আয়াতের জওয়াবে ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’ বলতেন। (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ নামায অধ্যায়, নামাযে দু’আর পরিচ্ছেদ শায়খ আলবানী এটাকে সহীহ বলেছেন।)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযিনি সৃষ্টি করেন। অতঃপর সুসম করেন। আল-বায়ান
যিনি সৃষ্টি করেছেন অতঃপর করেছেন (দেহের প্রতিটি অঙ্গকে) সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাইসিরুল
যিনি সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর যথাযথভাবে সমন্বিত করেছেন, মুজিবুর রহমান
Who created and proportioned Sahih International
২. যিনি(১) সৃষ্টি করেন(২) অতঃপর সুঠাম করেন।(৩)
(১) এখানে মূলত: আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার কারণ ও হেতুসমূহ বর্ণনা করা হচ্ছে। এ আয়াত এবং এর পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে জগৎ সৃষ্টিতে আল্লাহর অপার রহস্য ও শক্তি সম্পর্কিত কতিপয় কর্মগত গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে।
(২) অর্থাৎ সৃষ্টি করেছেন। কোন কিছুকে নাস্তি থেকে আস্তিতে আনয়ন করেছেন। কোন সৃষ্টির এ কাজ করার সাধ্য নেই; একমাত্র আল্লাহ্ তা'আলার অপার কুদরতই কোন পূর্ব-নমুনা ব্যতিরেকে যখন ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা নাস্তি থেকে আস্তিতে আনয়ন করে।
(৩) অর্থ সামঞ্জস্যপূর্ণ, মজবুত ও সুন্দর করেছেন। [সা’দী] অর্থাৎ তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আর যে জিনিসটিই সৃষ্টি করেছেন তাকে সঠিক ও সুঠাম দেহসৌষ্ঠব দান করেছেন। তার মধ্যে ভারসাম্য ও শক্তির অনুপাত সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাকে এমন আকৃতি দান করেছেন যে, তার জন্য এর চেয়ে ভালো আকৃতির কল্পনাই করা যেতে পারে না। একথাটিকে অন্যত্র বলা হয়েছে, “তিনি প্রত্যেকটি জিনিসকে চমৎকার তৈরি করেছেন।” [সুরা আস-সাজদাহ: ৭]
তাফসীরে জাকারিয়া২। যিনি সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সুসমঞ্জস করেছেন। [1]
[1] এ ব্যাপারে দেখুন সূরা ইনফিত্বার ৭নং আয়াতের টীকা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর যিনি নিরূপণ করেন অতঃপর পথ নির্দেশ দেন। আল-বায়ান
যিনি সকল বস্তুকে পরিমাণ মত সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর (জীবনে চলার) পথনির্দেশ করেছেন। তাইসিরুল
এবং যিনি নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তারপর পথ দেখিয়েছেন, মুজিবুর রহমান
And who destined and [then] guided Sahih International
৩. আর যিনি নির্ধারণ করেন(১) অতঃপর পথনির্দেশ করেন(২),
(১) অর্থাৎ প্রতিটি বস্তুকে তাকদীর নির্ধারণ করেছেন। প্রতিটি জিনিস সে তাকদীর অনুসরণ করছে। [সা'দী]
(২) অর্থাৎ স্রষ্টা যে কাজের জন্যে যাকে সৃষ্টি করেছেন, তাকে সে কাজের পথনির্দেশও দিয়েছেন। সত্যিকারভাবে এ পথনির্দেশে আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টিই অন্তর্ভুক্ত আছে। কেননা, এক বিশেষ ধরনের বুদ্ধি ও চেতনা আল্লাহ তা'আলা সবাইকে দিয়েছেন, যদিও তা মানুষের বুদ্ধি ও চেতনা থেকে নিম্নস্তরের। অন্য আয়াতে আছেঃ (قَالَ رَبُّنَا الَّذِي أَعْطَىٰ كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَىٰ) প্রত্যেক বস্তুর জন্য তাকদীর নির্ধারণ করেছেন, তারপর পথনির্দেশ করেছেন।” [সূরা ত্বাহা: ৫০] এ হিসেবে আলোচ্য আয়াতের অর্থ, আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক বস্তুকে সৃষ্টি করে এর জন্য তাকদীর নির্ধারণ করেছেন। তারপর সে তাকদীর নির্ধারিত বিষয়ের দিকে মানুষকে পরিচালিত করছেন। মুজাহিদ বলেন, মানুষকে সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যের পথ দেখিয়েছেন। আর জীব-জন্তুকে তাদের চারণভূমির পথ দেখিয়েছেন। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৩। এবং যিনি তকদীর (নিয়তি) নির্ধারণ করেছেন। তারপর পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। [1]
[1] অর্থাৎ, নেকী এবং বদীর। অনুরূপ জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুর পথ তিনি দেখিয়েছেন। এই পথনির্দেশ পশু-পক্ষীকেও করা হয়েছে। قدَّر শব্দের অর্থ হল প্রত্যেক বস্তুর শ্রেণী ও তার প্রকারভেদ, গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে মানুষকেও তার প্রতি তিনি পথ প্রদর্শন করেছেন, যাতে মানুষ উপকৃত হতে পারে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর যিনি তৃণ-লতা বের করেন। আল-বায়ান
যিনি তৃণ ইত্যাদি বের করেছেন। তাইসিরুল
এবং যিনি তৃণাদী উৎপন্ন করেছেন, মুজিবুর রহমান
And who brings out the pasture Sahih International
৪. আর যিনি তৃণাদি উৎপন্ন করেন(১),
(১) তিনি চারণভূমির ব্যবস্থা করেছেন। যাবতীয় উদ্ভিদ ও ক্ষেত-খামার। [ইবন কাসীর] غُثَاءً শব্দের অর্থ খড়-কুটা, আবর্জনা; যা বন্যার পানির উপর ভাসমান থাকে। [ফাতহুল কাদীর] أَحْوَىٰ শব্দের অর্থ কৃষ্ণাভ গাঢ় সবুজ রং। [ফাতহুল কাদীর] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা উদ্ভিদ সম্পর্কিত স্বীয় কুদরত ও হেকমত বর্ণনা করেছেন। তিনি ভূমি থেকে সবুজ-শ্যামল ঘাস উৎপন্ন করেছেন, অতঃপর একে শুকিয়ে কাল রং-এ পরিণত করেছেন এবং সবুজতা বিলীন করে দিয়েছেন। এতে দুনিয়ার চাকচিক্য যে ক্ষণস্থায়ী সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন। [কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া৪। এবং যিনি (চারণ-ভূমির) তৃণাদি উদ্গত করেছেন। [1]
[1] যাতে চতুষ্পদ জন্তুরা চরে বেড়ায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারপর তা কালো খড়-কুটায় পরিণত করেন। আল-বায়ান
অতঃপর তাকে কাল আবর্জনায় পরিণত করেছেন। তাইসিরুল
পরে ওকে বিশুস্ক বিমলিন করেছেন, মুজিবুর রহমান
And [then] makes it black stubble. Sahih International
৫. পরে তা ধূসর আবর্জনায় পরিণত করেন।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৫। পরে ওকে শুষ্ক খড়-কুটায় পরিণত করেছেন। [1]
[1] ঘাস শুকিয়ে গেলে তাকে غُثاء বলা হয়। أحوَى শব্দের অর্থ হল কালো করে দিয়েছেন। অর্থাৎ, তাজা-সবুজ ঘাসকে শুকিয়ে কালো করে দিয়েছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআমি তোমাকে পড়িয়ে দেব অতঃপর তুমি ভুলবে না। আল-বায়ান
আমি তোমাকে পড়িয়ে দেব, যার ফলে তুমি ভুলে যাবে না। তাইসিরুল
অচিরেই আমি তোমাকে পাঠ করাব, ফলে তুমি বিস্মৃত হবেনা – মুজিবুর রহমান
We will make you recite, [O Muhammad], and you will not forget, Sahih International
৬. শীঘ্রই আমরা আপনাকে পাঠ করাব, ফলে আপনি ভুলবেন না(১),
(১) পূর্ববর্তী আয়াতসমূহে আল্লাহ্ তা'আলা মানুষের জন্য তাঁর যে সমস্ত দুনিয়াবী নি'আমত প্রদান করেছেন সেগুলোর কিছু বর্ণনার পর এখন কিছু দ্বীনী নেয়ামত বর্ণনা করছেন। তন্মধ্যে প্রথমেই হচ্ছে কুরআন। [সা’দী] এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সুসংবাদ জানানো হচ্ছে যে, আল্লাহ তাকে এমন জ্ঞান দান করবেন যে, তিনি কুরআনের কোন আয়াত বিস্মৃত হবেন না। আপনার কাছে কিতাবের যে ওহী আমরা পাঠিয়েছি আমরা সেটার হিফাযত করব, আপনার অন্তরে সেটা গেথে দেব, ফলে তা ভুলে যাবেন না। [ইবন কাসীর; সা'দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৬। অচিরেই আমি তোমাকে পাঠ করাব, ফলে তুমি ভুলবে না।[1]
[1] জিবরীল (আঃ) যখন অহী (আল্লাহর প্রত্যাদেশ) নিয়ে আসতেন, তখন তা রসূল (সাঃ) তাড়াতাড়ি পড়তে শুরু করতেন; যাতে করে ভুলে না যান। আল্লাহ তাআলা বললেন, এত তাড়াতাড়ি করার প্রয়োজন নেই। অবতীর্ণকৃত অহী তোমাকে পাঠ করাবার দায়িত্ব আমার। অর্থাৎ, তোমার মুখে তা সঞ্চালিত করব; ফলে তুমি তা ভুলবে না। তবে আল্লাহ যা চাইবেন, তা ভুলে যাবে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এইরূপ চাননি। এই জন্য তাঁর সমস্ত মুখস্থ ছিল। কেউ কেউ বলেন, এর অর্থ হল এই যে, যা আল্লাহ মনসূখ (রহিত) করতে চাইবেন, তা তোমাকে ভুলিয়ে দিবেন। (ফাতহুল ক্বাদীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআল্লাহ যা চান তা ছাড়া। নিশ্চয় তিনি জানেন, যা প্রকাশ্য এবং যা গোপন থাকে। আল-বায়ান
তবে ওটা বাদে যেটা আল্লাহ (রহিত করার) ইচ্ছে করবেন। তিনি জানেন যা প্রকাশ্য আর যা গোপন। তাইসিরুল
আল্লাহ যা ইচ্ছা করবেন তদ্ব্যতীত, নিশ্চয়ই তিনি প্রকাশ্য ও গুপ্ত বিষয় জ্ঞাত আছেন, মুজিবুর রহমান
Except what Allah should will. Indeed, He knows what is declared and what is hidden. Sahih International
৭. আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তা ছাড়া।(১) নিশ্চয় তিনি জানেন যা প্ৰকাশ্য ও যা গোপনীয়।
(১) এই বাক্যটির কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক. কুরআনের কিছু আয়াত রহিত করার এক সুবিদিত পদ্ধতি হচ্ছে প্রথম আদেশের বিপরীতে পরিষ্কার দ্বিতীয় আদেশ নাযিল করা। এর আরেকটি পদ্ধতি হলো সংশ্লিষ্ট আয়াতটিই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সকল মুসলিমের স্মৃতি থেকে মুছে দেয়া। এ সম্পর্কে এক আয়াতে আছে, (مَا نَنْسَخْ مِنْ آيَةٍ أَوْ نُنْسِهَا) অর্থাৎ “আমরা কোন আয়াত রহিত করি অথবা আপনার স্মৃতি থেকে উধাও করে দেই।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১০৬] তাই “আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া” বলে রহিত আয়াতগুলোর কথা বলা হয়েছে। দুই, অথবা আয়াতের উদ্দেশ্য, কখনো সাময়িকভাবে আপনার ভুলে যাওয়া এবং কোন আয়াত বা শব্দ আপনার কোন সময় ভুলে যাওয়া এই ওয়াদার ব্যতিক্রম। যে ব্যাপারে ওয়াদা করা হয়েছে তা হচ্ছে এই যে, আপনি স্থায়ীভাবে কুরআনের কোন শব্দ ভুলে যাবেন না।
হাদীসে আছে, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন একটি সূরা তেলাওয়াত করলেন এবং মাঝখান থেকে একটি আয়াত বাদ পড়ল। ওহী লেখক উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মনে করলেন যে, আয়াতটি বোধ হয় মনসুখ হয়ে গেছে। কিন্তু জিজ্ঞাসার জওয়াবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ মনসুখ হয়নি, আমিই ভুলক্রমে পাঠ করিনি। [মুসনাদে আহমাদ: ৩/৪০৭] অন্য হাদীসে এসেছে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সাহাবীকে কোন আয়াত পড়তে শোনে বললেন, আল্লাহ তাকে রহমত করুন, আমাকে এ আয়াতটি ভুলিয়ে দেয়া হয়েছিল এখন মনে পড়েছে। [মুসলিম: ৭৮৮] অতএব, উল্লিখিত ব্যতিক্রমের সারমর্ম এই যে, সাময়িকভাবে কোন আয়াত ভুলে যাওয়া অতঃপর তা স্মরণে আসা বর্ণিত প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী নয়। [দেখুন: কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৭। আল্লাহ যা ইচ্ছা করবেন তা ব্যতীত, নিশ্চয়ই তিনি ব্যক্ত ও গুপ্ত বিষয় পরিজ্ঞাত আছেন। [1]
[1] এ কথাটি ব্যাপক। ‘ব্যক্ত’ কুরআনের ঐ অংশকেও বলা যায়; যা নবী (সাঃ) মুখস্থ করে নেন। আর যা তাঁর অন্তর থেকে মুছে দেওয়া হয়, তা হল ‘গুপ্ত’ বিষয়। অনুরূপভাবে যা সশব্দে পড়া হয়, তা ‘ব্যক্ত’ এবং যা নিঃশব্দে পড়া হয়, তা ‘গুপ্ত’ এবং যে কাজ প্রকাশ্যে করা হয় তা ‘ব্যক্ত’ এবং যে কাজ গোপনে করা হয়, তা ‘গুপ্ত’ এ সকল বিষয়ের খবর আল্লাহ রাখেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি তোমাকে সহজ বিষয় সহজ করে দেব। আল-বায়ান
আমি তোমার জন্য সহজপথ (অনুসরণ করা) আরো সহজ করে দেব। তাইসিরুল
আমি তোমার জন্য কল্যাণের পথকে সহজ করে দিব। মুজিবুর রহমান
And We will ease you toward ease. Sahih International
৮. আর আমরা আপনার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ।(১)
(১) অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা আপনার জন্য সহজ সরল শরীআত প্ৰদান করবেন। যাতে কোন বক্রতা থাকবে না। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৮। আমি তোমার জন্য (কল্যাণের পথকে) সহজ করে দেব। [1]
[1] এ কথাটিও ব্যাপক। যেমন, আমি তোমার জন্য অহীকে সহজ করে দেব, যাতে তা মুখস্থ করা এবং তার উপর আমল করা সহজ হয়ে যায়। তোমাকে সেই পথ প্রদর্শন করব, যা হবে সরল। যে আমল জান্নাতে নিয়ে যাবে, আমি তোমার জন্য সেই আমল সহজ করে দেব। আমি তোমার জন্য ঐ সমস্ত কর্ম ও কথাকে সহজ করে দেব, যাতে মঙ্গল নিহিত আছে এবং আমি তোমার জন্য এমন শরীয়ত নির্ধারণ করব, যা সহজ, সরল এবং মধ্যপন্থী হবে; যার মধ্যে কোন প্রকার বক্রতা, কঠিনতা ও সংকীর্ণতা নেই।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর উপদেশ দাও যদি উপদেশ ফলপ্রসু হয়। আল-বায়ান
কাজেই তুমি উপদেশ দাও যদি উপদেশ উপকার দেয়। তাইসিরুল
অতএব উপদেশ যদি ফলপ্রসু হয় তাহলে উপদেশ প্রদান কর। মুজিবুর রহমান
So remind, if the reminder should benefit; Sahih International
৯. অতঃপর উপদেশ যদি ফলপ্রসূ হয় তবে উপদেশ দিন(১);
(১) অর্থাৎ যেখানে স্মরণ করিয়ে দিলে কাজে লাগে সেখানে স্মরণ করিয়ে দিবেন। এর দ্বারা জ্ঞান দেয়ার আদব ও নিয়ম নীতি বোঝা যায়। সুতরাং যারা জ্ঞান গ্ৰহণ করার উপযুক্ত নয়, তাদের কাছে সেটা না দেয়া। যেমন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তুমি যদি এমন কওমের কাছে কোন কথা বল যা তাদের বিবেকে ঢুকবে না, তাহলে সেটা তাদের কারও কারও জন্য বিপদের কারণ হবে। তারপর তিনি বললেন, মানুষ যা চিনে তা-ই শুধু তাদেরকে জানাও, তুমি কি চাও যে লোকেরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর মিথ্যারোপ করুক? [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৯। অতএব উপদেশ দাও; যদি উপদেশ ফলপ্রসূ হয়। [1]
[1] অর্থাৎ, সেখানে ওয়ায-নসীহত কর, যেখানে অনুমান হয় যে, তা উপকারী হবে। এই আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ ওয়ায-নসীহত এবং শিক্ষাদানের একটি নীতি ও আদর্শ বর্ণনা করেছেন। (ইবনে কাসীর)
ইমাম শওকানী (রঃ) এর নিকট এর অর্থ হল এই যে, ‘তুমি উপদেশ দাও; যদি উপদেশ ফলপ্রসূ হয় অথবা না হয়।’ কেননা, সতর্কীকরণ ও তবলীগ উভয় অবস্থাতেই তাঁর জন্য জরুরী ছিল। অর্থাৎ (শওকানীর মতে), أو لم تنفع বাক্য এখানে উহ্য আছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসে-ই উপদেশ গ্রহণ করে, যে ভয় করে । আল-বায়ান
যে ভয় করে সে উপদেশ গ্রহণ করবে। তাইসিরুল
যারা ভয় করে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে। মুজিবুর রহমান
He who fears [Allah] will be reminded. Sahih International
১০. যে ভয় করে সেই উপদেশ গ্ৰহণ করবে।(১)
(১) অর্থাৎ যে ব্যক্তির মনে আল্লাহর ভয় এবং তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে হবে এমন ধারণা কাজ করে সে অবশ্যই আপনার উপদেশ মনোযোগ সহকারে শুনবে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১০। যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে। [1]
[1] অর্থাৎ, তোমার উপদেশ নিশ্চয় ঐ সমস্ত লোকেরা গ্রহণ করবে, যাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে। আর তার মাধ্যমে তাদের মধ্যে আল্লাহ-ভীতি ও নিজেদের সংস্কার-প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পাবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান