১০ সূরাঃ ইউনুস | Yunus | سورة يونس - আয়াতঃ ৩৮
১০:৩৮ اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىهُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِسُوۡرَۃٍ مِّثۡلِهٖ وَ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۳۸﴾
ام یقولون افترىه قل فاتوا بسورۃ مثلهٖ و ادعوا من استطعتم من دون الله ان كنتم صدقین ﴿۳۸﴾

নাকি তারা বলে, ‘সে তা বানিয়েছে’? বল, ‘তবে তোমরা তার মত একটি সূরা (বানিয়ে) নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পারো ডাক, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’। আল-বায়ান

তারা কি এ কথা বলে যে, সে [অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.)] এটা রচনা করেছে? বল, তাহলে তোমরাও এর মত একটা সূরাহ (রচনা করে) নিয়ে এসো আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাকে পার তাকে ডেকে নাও যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক [যে মুহাম্মাদ (সাঃ)-ই তা রচনা করেছেন]। তাইসিরুল

তারা কি এরূপ বলে যে, এটা তার (নাবীর) স্বরচিত? তুমি বলে দাওঃ তাহলে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরা রচনা কর এবং গাইরুল্লাহ হতে যাকে ইচ্ছা ডেকে নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। মুজিবুর রহমান

Or do they say [about the Prophet], "He invented it?" Say, "Then bring forth a surah like it and call upon [for assistance] whomever you can besides Allah, if you should be truthful." Sahih International

৩৮. নাকি তারা বলে, তিনি এটা রচনা করেছেন? বলুন, তবে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরা নিয়ে আস(১) এবং আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য যাকে পার ডাক, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

(১) এটা আল-কুরআনের ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে তৃতীয় চ্যালেঞ্জ। [ইবন কাসীর] তারা যদি কুরআন সম্পর্কে সন্দিহান হয় তবে তারা যেন এর মত একটি সূরা নিয়ে আসে। এর পূর্বে কাফেরদেরকে কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছিল। [দেখুন, সূরা আল-ইসরাঃ ৮৮] তারপর তাদেরকে বলা হয়েছিল যে, কুরআনের মত কুরআন না আনতে সক্ষম হলে কুরআনের দশটি সূরা যেন নিয়ে আসে। [দেখুন, সূরা হুদঃ ১৩] কিন্তু তারা তাতেও অপারগ হয়। তখন তাদেরকে এ আয়াতে কুরআনের সূরাসমূহের একটি সূরা নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ করা হয় কিন্তু কাফের-মুশরিকগণ তাও আনতে সক্ষম হয়নি। আর তারা সেটা আনতে পারবেও না। [ইবন কাসীর] আল্লাহ বলেন, “অতএব যদি তোমরা তা করতে না পার আর কখনই তা করতে পারবে না” [সূরা আল-বাকারাহ: ২৪]

এ চ্যালেঞ্জ কুরআনের শুধু ভাষাশৈলীর উপর করা হয়নি। সাধারণভাবে লোকেরা এ চ্যালেঞ্জটিকে নিছক কুরআনের ভাষাশৈলী অলংকার ও সাহিত্য সুষমার দিক দিয়ে ছিল বলে মনে করে। কুরআন তার অনন্য ও অতুলনীয় হবার দাবীর ভিত্তি নিছক নিজের শাব্দিক সৌন্দর্য সুষমার ওপর প্রতিষ্ঠিত করেনি। নিঃসন্দেহে ভাষাশৈলীর দিক দিয়েও কুরআন নজিরবিহীন। কিন্তু মূলত যে জিনিসটির ভিত্তিতে বলা হয়েছে যে, কোন মানবিক মেধা ও প্রতিভা এহেন কিতাব রচনা করতে পারে না, সেটি হচ্ছে তার বিষয়বস্তু, অলংকারিত ও শিক্ষা। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৮) তারা কি বলে যে, ‘এটা তার (নবীর) স্বরচিত?’ তুমি বল, ‘তবে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরা আনয়ন কর এবং (এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য) আল্লাহ ব্যতীত যাকে ডাকতে পার ডেকে নাও; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’[1]

[1] এই সকল তথ্য ও প্রমাণাদির পরেও যদি তোমাদের দাবী এই হয় যে, এই কুরআন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর রচিত গ্রন্থ,তবে তিনিও তোমাদের মত একজন মানুষ, তোমাদের ভাষাও তাঁর মতই আরবী, তিনি তো একা, তোমরা যদি নিজেদের দাবীতে সত্যবাদী হও, তাহলে পৃথিবীর সকল সাহিত্যিক, ভাষাবিদ এবং শিক্ষিত জ্ঞানীদেরকে একত্রিত কর এবং এই কুরআনের সব থেকে ছোট সূরার মত একটি সূরা রচনা করে উপস্থাপন কর। কুরআন কারীমের এই চ্যালেঞ্জ আজও বিদ্যমান। এর উত্তর পাওয়া যায়নি। যাতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, এই কুরআন কোন মানুষের মেহনতের ফল নয়; বরং প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই বাণী, যা মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর প্রতি তিনি অবতীর্ণ করেছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান