৫৩৮৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৫৩৮৪-[৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: শীঘ্রই এমন ফিতনাহ দেখা দেবে, যখন বসা লোক দাঁড়িয়ে থাকা লোক অপেক্ষা উত্তম হবে। আর চলমান ব্যক্তি দ্রুতগামী অপেক্ষা উত্তম হবে। এমনকি যে ব্যক্তি উক্ত ফিতনার দিকে চক্ষু তুলে দেখবে, ফিতনাহ তাকে নিজের দিকে টেনে নিবে। অতএব যে ব্যক্তি তা হতে মুক্ত স্থান অথবা আশ্রয়স্থল পাবে, তা দ্বারা তারা নিজেকে রক্ষা করা উচিত। (বুখারী ও মুসলিম)

আর সহীহ মুসলিম-এর এক রিওয়ায়াতে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: এমন এক ফিতনাহ্ আগমন করবে তখন নিদ্রিত ব্যক্তি জাগ্রত ব্যক্তি হতে শ্রেয় হবে। আর জাগ্রত ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তি হতে শ্রেয় হবে এবং দাঁড়ানো ব্যক্তি দ্রুতগামী অপেক্ষা শ্রেয় হবে। অতএব যে ব্যক্তি তা হতে নিরাপদ স্থান অথবা আশ্রয়স্থল পায়, সে যেন অবশ্যই ঐ আশ্রয়স্থলে অবস্থান নেয়।

الفصل الاول

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَتَكُونُ فِتَنٌ الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيهَا خَيْرٌ من الْمَاشِي والماشي فِيهِ خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي مَنْ تَشَرَّفَ لَهَا تَسْتَشْرِفْهُ فَمن وجد ملْجأ أَو معَاذًا فليَعُذْ بِهِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: قَالَ: «تَكُونُ فِتْنَةٌ النَّائِمُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْيَقْظَانِ واليقظانُ خَيْرٌ مِنَ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي فَمن وجد ملْجأ أومعاذا فليستعذ بِهِ»

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3601) و مسلم (12 ۔ 10 / 2886)، (7247) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ستكون فتن القاعد فيها خير من القاىم والقاىم فيها خير من الماشي والماشي فيه خير من الساعي من تشرف لها تستشرفه فمن وجد ملجا او معاذا فليعذ به» . متفق عليه. وفي رواية لمسلم: قال: «تكون فتنة الناىم فيها خير من اليقظان واليقظان خير من القاىم والقاىم فيها خير من الساعي فمن وجد ملجا اومعاذا فليستعذ به» متفق علیہ ، رواہ البخاری (3601) و مسلم (12 ۔ 10 / 2886)، (7247) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা : আলোচ্য হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসীনে কিরাম উল্লেখ করেছেন যে, শেষ যুগে ফিতনাগুলো হবে অসংখ্য ও ধারাবাহিকভাবে আগত। ইমাম ইবনুত্ তীন (রহিমাহুল্লাহ) দাউদী হতে বর্ণনা করেন, উক্ত হাদীসে উল্লেখিত ফিতনাগুলোয় যারা সরাসরি আক্রান্ত হবে তাদের পরস্পরের অবস্থা হবে অপেক্ষাকৃত গুরুতর। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যারা এসব ফিতনায় সরাসরি অংশ নিবে। কেননা, তাদের মাধ্যমে ফিতনার প্রসার ঘটবে ও অন্যরা এতে আক্রান্ত হবে। এদের মধ্যে যারা এসব ফিতনায় সবচেয়ে কম আক্রান্ত হবে তারাই হবে ভালো মানুষ। অতএব শেষ যামানার ফিতনাহ্ ও বিশৃঙ্খলা থেকে যত বেশি দূরে থাকা সম্ভব ততই ঈমানদারদের জন্য লাভজনক ও কল্যাণকর। (তুহফাতুল আহওয়াযী)

ইমাম নববী (রহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, হাদীসের মূল ভাষ্য হচ্ছে, ফিতনার যুগে কোনভাবেই হানাহানিতে যোগ দেয়া যাবে না। উলামায়ে কিরাম ফিতনার যুগে হানাহানিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে মতানৈক্য করেছেন। কতিপয় সাহাবায়ি কিরামের মতে, ফিতনাহ বা বিশৃঙ্খলার সময় পারস্পরিক যুদ্ধে জড়ানো যাবে না। এমনকি কেউ যদি ঘরে প্রবেশ করেও কাউকে হত্যা করতে চায়। এমতাবস্থায় নিজেকে রক্ষার জন্য হলেও হানাহানিতে যুক্ত হওয়া যাবে না। আবূ বাকরাহ্ (রাঃ) এই অভিমত দিয়েছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার, ইমরান ইবনু হুসায়ন ও অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামের মতে, নিজেকে রক্ষা ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশে হানাহানিতে যুক্ত হওয়া যাবে না।
অধিকাংশ সাহাবায়ি কিরাম ও তাবিঈ এবং মুসলিম উলামায়ি কিরামের মতে, সূরাহ্ আল হুজুরাতের ৯ নং আয়াতের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমালঙ্নকারী ও বিদ্রোহীদের দমনে ফিতনার যুগে হকপন্থীদের সাহায্য করা ও তাদের পক্ষাবলম্বন করা ওয়াজিব। যেমন, আল্লাহ বলেন : “যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ করো।” এ মতটিই সহীহ। (তুহফাতুল আহওয়াযী)

ইমাম হাকিম (রহিমাহুল্লাহ) তদীয় জামি আস্ সগীরে খালিদ ইবনু ‘আরাফাহ্ হতে বর্ণনা করেন যে, শীঘ্রই অনেক ফিতনাহ্, দলাদলি ও মতবিরোধ দেখা দিবে, তুমি যদি পার, তবে নিহত হবে হত্যাকারী নয়। (জামি আস্ সগীর ২/২৮৮, হা. ৪৬৭৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)