পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ
২২৮০-[২০] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে কে সর্বশ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহর জিকিরকারী পুরুষ ও নারী। আবার তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের চেয়েও কি তারা মর্যাদাবান ও শ্রেষ্ঠ? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, সে যদি নিজের তরবারি দিয়ে কাফির ও মুশরিকদেরকে আঘাত করে, এমনকি তার তরবারি ভেঙে যায়, আর সে নিজেও হয়ে পড়ে রক্তাক্ত, তাহলেও তার থেকে আল্লাহর জিকিরকারী শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান। (আহমদ, তিরমিযী; তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ: أَيُّ الْعِبَادِ أَفْضَلُ وَأَرْفَعُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ قَالَ: «الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتُ» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمِنَ الْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟ قَالَ: «لَوْ ضَرَبَ بِسَيْفِهِ فِي الْكُفَّارِ وَالْمُشْرِكِينَ حَتَّى يَنْكَسِرَ وَيَخْتَضِبَ دَمًا فَإِنَّ الذَّاكِرَ لِلَّهِ أَفْضَلُ مِنْهُ دَرَجَة» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَقَالَ التِّرْمِذِيّ: هَذَا حَدِيث حسن غَرِيب
ব্যাখ্যা: (وَالذَّاكِرَاتُ) ইমাম শাওকানী (রহঃ) তার ‘তুহফাতুয্ যা-কিরীন’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, এখানে ও অন্যান্য অনেক হাদীসে মহিলাদেরকে পুরুষদের অনুসারিণী করে তাদের উল্লেখ বাদ দেয়া হয়েছে।
(وَأَرْفَعُ) এ অংশটি মুসনাদে আহমাদে এমনকি আত্ তিরমিযীতেও নেই, তবে এটি আছে জামি‘উল উসূল যা ‘আল্লামা আল্ জাযারী (রহঃ)-এর এবং ‘আল্লামা ইবনুল কইয়্যিম (রহঃ)-এর লেখা (الوابل الصيب) ‘‘আল্ ওয়াবিল আস্ সায়ব’’ নাম কিতাবদ্বয়ে আর তারা এ অংশটিকে ইমাম আত্ তিরমিযী’র দিকে সম্পৃক্ত করেছেন।
(الذَّاكِرُونَ اللّٰهَ كَثِيرًا) এর উদ্দেশ্য দু’রকম শ্রেণীর লোক হতে পারে।
১ম- যারা সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকেন এবং তার আনুগত্য করেন।
২য়- যারা সহীহ হাদীসে প্রমাণিত দৈনন্দিন জীবনের জিকির-আযকার আদায় করেন।
(وَالذَّاكِرَاتُ) ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘‘মিশকাতের কিছু কিছু পাণ্ডুলিপিতে এ অংশটি নেই।
আমি (‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী) বলবঃ অংশটি না থাকাই সঠিক, কারণ এটি ইমাম আহমাদের মুসনাদে, ইমাম আত্ তিরমিযী’র সুনান সহ কোন কিতাবেই উল্লেখ করা হয়নি। এমনটি ইমাম নাবাবী তার আল্ আযকার, ইমাম মুনযিরী তার ‘তারগীব’-এ, ইমাম জাযারী তার জামি‘উল উসূল, ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী তার আল জামি‘উস সগীর, ‘আল্লামা ইবনুল কইয়্যিম তার আল্ ওয়াবিল আস্ সায়ব, ‘আলী আল্ মুত্তাকী তার আল্ কানয-এ, আল্লামা শাওকানী তার ‘তুহফাতুয্ যাকিরীন’-এ উল্লেখ করেননি। মহিলারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের সাথে এমনিতেই সংযুক্ত থাকে যার কারণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তাদের উল্লেখ করেননি।
(قِيلَ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ) মুসনাদে আহমাদে قِيلَ -এর স্থানে قلت শব্দের ব্যবহার রয়েছে।
وَمِنَ الْغَازِىْ فِىْ سَبِيلِ اللّٰهِ؟ অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহর জিকিরকারীরা কি আল্লাহর পথে জিহাদে গাজী ব্যক্তির চেয়েও মর্যাদাসম্পন্ন?’’ এ কথাটি তারা কৌতুহলবশত বলেছেন।