২২৮১

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ

২২৮১-[২১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শয়তান আদম সন্তানের কলবের বা অন্তরের উপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফিল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াস্ওয়াসা দিতে থাকে। (বুখারী তা’লীক হিসেবে)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الشَّيْطَانُ جَاثِمٌ عَلَى قَلْبِ ابْنِ آدَمَ فَإِذَا ذَكَرَ اللَّهَ خَنَسَ وَإِذا غفَلَ وسوس» . رَوَاهُ البُخَارِيّ تَعْلِيقا

وعن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «الشيطان جاثم على قلب ابن ادم فاذا ذكر الله خنس واذا غفل وسوس» . رواه البخاري تعليقا

ব্যাখ্যা: (الشَّيْطَانُ جَاثِمٌ) جَاثِمٌ শব্দটির অর্থ হলঃ উড়ে এসে বসা, যেমনটি পাখি বা অন্যান্য প্রাণী বসে থাকে। যখন বসা বা স্বস্তি নেয়া আবশ্যক হয়ে পড়ে তখন তারা জমিনে বা গাছের ডালে বসে পড়ে।

(خَنَسَ) শব্দটি باب ضرب অথবা نصر থেকে ব্যবহৃত হতে পারে এর অর্থ হলো (انقبض الشيطان) অর্থাৎ- শয়তান তখন নিজেকে গুটিয়ে নেয় কুমন্ত্রণা দেয়া থেকে বিরত রাখে। এ বিশেষ গুণটি শয়তানের বেশী বেশী থাকার কারণে মহান আল্লাহ সূরা আন্ নাস-এ তাকে الخناس নামে অভিহিত করেছেন। ‘আল্লামা আল্ জাযারী (রহঃ) বলেন, الخناس শব্দের অর্থ হলো التأخر والانقباض তথা সরে পড়া, কেটে পড়া, বিরত থাকা।

(وَسْوَسَ) হাদীসের এ অংশটি থেকে বুঝা যায় অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কুমন্ত্রণা দেয়ার স্থান কিন্তু মস্তিষ্কে আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে ব্যস্ত রাখতে পারলে সেখানে আর শয়তান কুমন্ত্রণা দিতে পারে না।

মুসনাদে আহমাদ ও আত্ তিরমিযীতে হাদীসটির শব্দ ভিন্ন আছে। সেখানে আছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি তোমাদেরকে আদেশ করছি আল্লাহর জিকির করতে কারণ আল্লাহর জিকিরকারীর দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে শত্রু ধাওয়া করেছে এক পর্যায়ে সে একটি প্রাচীরের নিকট গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছে, ঠিক এ রকমই বান্দা নিজেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচাতে পারে না তবে কেবলমাত্র আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে। ‘আল্লামা ইবনুম কইয়্যিম (রহঃ) আরো বলেন, যদি যিকিরের পরেও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে না পারে তাহলে কমপক্ষে এ জিকির তার জন্য আলো হিসেবে কাজ করবে যখন সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে এবং যদি সর্বদা আল্লাহর জিকিরে নিজেকে মশগুল রাখে তাহলে এটা তাকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করবে। কারণ শয়তান সর্বদা ওঁৎ পেতে বসে থাকে যখনই বান্দা আল্লাহর জিকির হতে বিমুখ হয় তখন সে বান্দার মনে কুমন্ত্রণা দেয় আর যখন আল্লাহর জিকিরে মশগুল হয় তখন শয়তান ভেগে যায়, কাচুমাচু হয়ে ছোট চড়ুই পাখি অথবা মাছি সদৃশ হয়ে যায়। এজন্যই وسوسة তথা কুমন্ত্রণার অপর নাম الخناس


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৯: দু‘আ (كتاب الدعوات)