১৬৩১

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট যা বলতে হয়

১৬৩১-[১৬] ’আবদুর রহমান ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, (আমার পিতা) কা’ব-এর মৃত্যু আসন্ন হলে ইবনু মা’রূর-এর কন্যা উম্মু বিশর (রাঃ)তার কাছে এলেন এবং বলতে লাগলেন, হে আবূ ’আবদুর রহমান! (কা’ব-এর ডাক নাম) আপনি মৃত্যুবরণ করার পর (আলামে বারযাখে) অমুক ব্যক্তির সাথে দেখা হলে তাকে আমাদের সালাম বলবেন। এ কথা শুনে কা’ব বললেন, হে উম্মু বিশর! আল্লাহ তোমাকে মাফ করুন। ওখানে আমার সবচেয়ে বেশী ব্যস্ততা থাকবে। তখন উম্মু বিশর (রাঃ)বললেন, হে আবূ ’আবদুর রহমান! আপনি কি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেননি? ’আলামে বারযাখে’ মু’মিনদের রূহ সবুজ পাখির ক্বালবে থেকে জান্নাতের গাছ হতে ফল-ফলাদি খেতে থাকবে। কা’ব বললেন, হ্যাঁ, আমি শুনেছি। উম্মু বিশর (রাঃ)বললেন, এটাই হলো (তাই আপনি এ মর্যাদা পাবেন বলে আশা করা যায়)। (ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী- কিতাবুল বা’সি ওয়ান্ নুশূর)[1]

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: لَمَّا حَضَرَتْ كَعْبًا الْوَفَاةُ أَتَتْهُ أُمُّ بِشْرٍ بِنْتُ الْبَرَاءِ بْنِ مَعْرُورٍ فَقَالَتْ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنْ لَقِيتَ فُلَانًا فَاقْرَأْ عَلَيْهِ مِنِّي السَّلَامَ. فَقَالَ: غَفَرَ اللَّهُ لَكِ يَا أُمَّ بِشْرٍ نَحْنُ أَشْغَلُ مِنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَمَا سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول: «إِنَّ أَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِينَ فِي طَيْرٍ خُضْرٍ تَعْلُقُ بِشَجَرِ الْجَنَّةِ؟» قَالَ: بَلَى. قَالَتْ: فَهُوَ ذَاكَ. رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي كِتَابِ الْبَعْثِ والنشور

وعن عبد الرحمن بن كعب عن ابيه قال: لما حضرت كعبا الوفاة اتته ام بشر بنت البراء بن معرور فقالت: يا ابا عبد الرحمن ان لقيت فلانا فاقرا عليه مني السلام. فقال: غفر الله لك يا ام بشر نحن اشغل من ذلك فقالت: يا ابا عبد الرحمن اما سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «ان ارواح المومنين في طير خضر تعلق بشجر الجنة؟» قال: بلى. قالت: فهو ذاك. رواه ابن ماجه والبيهقي في كتاب البعث والنشور

ব্যাখ্যা: (إِنْ لَقِيتَ) তুমি যদি সাক্ষাৎ কর উমুকের সাথে তথা মৃত্যুর পরে তার রূহু এর সাথে। ত্ববারানী বর্ণনায় এসেছে, যদি আমার পিতার সাথে সাক্ষাৎ কর আমার পক্ষ হতে সালাম দিবে। কারো মতে তার ছেলে উদ্দেশ্য মোবাশ্বের যেমন আহমাদ-এর বর্ণনা আর ইবনু আবিদ দুনিয়ায় হাদীসে এসেছে তাতে তার নাম বাকর ।

আবূ লাবিয়্যাহ্ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন বাকর বিন বারা বিন মা‘রূর মারা গেলেন তার মা তখন খুব কষ্ট পেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! বানী সালামার যখন কেউ মারা যাবে সে কি মৃত্যুকে চিনতে পারবে তাহলে আমি পিতাকে সালাম পাঠাবো। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ ঐ সত্তার শপথ যার হাতে আমার জীবন রয়েছে, অবশ্যই তারা চিনবে বা নিশ্চয় চিনে যেমনভাবে পাখি গাছসমূহের মাথা চিনে। আর যখনই কোন বানী সালামাহ্ গোত্রের লোক মৃত্যুর সম্মুখীন হয় বাকর এর মা আসে এবং হে উমুক তোমার ওপর আমার সালাম সেও বলে তোমারও ওপর সালাম, অতঃপর বাকর এর মা বলে বাকরকে আমার সালাম দিবে।

(إِنَّ أَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِينَ) নিশ্চয় মু’মিনের রূহসমূহ হাদীসের এ সাধারণ বাক্যের প্রমাণ করে প্রত্যেক মু’মিন শাহীদ হোক বা না হোক জান্নাতে তারা শাহীদ হিসেবে বিবেচিত হবে যদি জান্নাতে যেতে তাদেরকে গুনাহ ও ঋণ বাধা না দেয় আর আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে সাক্ষাৎ, ক্ষমা ও রহমাত নিয়ে। এ হাদীসটি এবং সামনে আগত হাদীস এটাই প্রমাণ করে তাতে শাহাদাতকে খাস করা হয়নি এ মতে ইবনু ক্বইয়্যিম ও ইবনে কাসীর গেছেন।

কারও মতে শুধুমাত্র শাহীদ মু’মিন উদ্দেশ্য যেমন আহমাদ-এর বর্ণনা (أرواح الشهداء) শাহীদের রূহসমূহ আর এ মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন কুরতুবী ও ইবনু ‘আবদুল বার। তারা বলেন, উল্লেখিত সম্মানের বিষয়টি শাহীদদের সাথে খাস অন্য কারও সাথে নয় আর কুরআন সুন্নাহ এটাই প্রমাণ করে আর এ সংক্রান্ত সাধারণ বর্ণনাগুলোকে খাসকেই বুঝায়।

মু’মিনের রূহ সবুজ পাখীর মধ্যে হবে ত্ববারানীর বর্ণনায় এসেছে (إِنَّ أَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِينَ فِي طَيْرٍ خُضْرٍ) মু’মিনে রূহ সবুজ পাখীর ঝোলায় বা পেটে হবে। হায়সামী বলেন যে, এটা রূহের জন্য আবদ্ধ উদ্দেশ্য না বরং সবুজ পাখীর পেটের মধ্যে রাখার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশের ব্যবস্থা করেছেন যা প্রশস্ত শূন্যে অর্জিত হয়।

অথবা রূহের জন্য পাখীকে বাহনরূপে করে জান্নাতে আনন্দ উপভোগ করার ব্যবস্থা করা বা পাখী হল রূহের জন্য হাওদা স্বরূপ বসা ব্যক্তির জন্য।

কারও মতে রূহসমূহকে পাখীর আকৃতিতে করা হয় তথা রূহ স্বয়ং আল্লাহর নির্দেশে পাখির আকৃতি ধারণ করে যেমন মালাক (ফেরেশতা) মানুষের আকৃতি ধারণ করে। সুয়ূতী আবূ দাঊদ-এর টীকায় বলেন, যখন আমরা রূহের পাখি আকৃতি ধারণ করা সাব্যস্ত করব তখন তা শুধুমাত্র পাখির আকৃতির হওয়ার ক্ষমতা বুঝায় না পাখি সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন হওয়া বুঝায়, কেননা মানুষের আকৃতিই সবচেয়ে উত্তম আকৃতি।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز)