পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান
৮৫-[৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার অবস্থান জান্নাতে কিংবা জাহান্নামে লিখে রাখেননি। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! তাহলে আমরা কি আমাদের তাক্বদীরের লেখার উপর নির্ভর করে আ’মাল ছেড়ে দিব না? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (না, বরং) আ’মাল করে যেতে থাক। কেননা প্রত্যেক ব্যক্তিকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, সে কাজ তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি সৌভাগ্যবান তাকে আল্লাহ সৌভাগ্যের কাজ করার জন্য সহজ ব্যবস্থা করে দিবেন। আর সে ব্যক্তি দুর্ভাগা হবে যার জন্য দুর্ভাগ্যের কাজ সহজ করে দেয়া হবে। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (কুরআনের এ আয়াতটি) পাঠ করলেনঃ ’’যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে (সময় ও অর্থ) ব্যয় করেছে, আল্লাহকে ভয় করেছে, হক কথাকে (দীনকে) সমর্থন জানিয়েছে’’- (সূরাহ্ আল্ লায়ল ৫-৬ নং আয়াতের শেষ পর্যন্ত)। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الْإِيْمَانِ بِالْقَدْرِ
عَن عَليّ رَضِي الله عَنهُ قَالَ كُنَّا فِي جَنَازَة فِي بَقِيع الْغَرْقَد فَأَتَانَا النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقعدَ وقعدنا حوله وَمَعَهُ مخصرة فَنَكس فَجعل ينكت بمخصرته ثمَّ قَالَ مَا مِنْكُم من أحد مَا من نفس منفوسة إِلَّا كتب مَكَانهَا من الْجنَّة وَالنَّار وَإِلَّا قد كتب شقية أَو سعيدة فَقَالَ رجل يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدع الْعَمَل فَمن كَانَ منا من أهل السَّعَادَة فسيصير إِلَى عمل أهل السَّعَادَة وَأما من كَانَ منا من أهل الشقاوة فسيصير إِلَى عمل أهل الشقاوة قَالَ أما أهل السَّعَادَة فييسرون لعمل السَّعَادَة وَأما أهل الشقاوة فييسرون لِعَمَلِ الشَّقَاوَةِ ثُمَّ قَرَأَ (فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى وَصدق بِالْحُسْنَى)
الْآيَة
Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 1
‘Ali reported God’s messenger as saying, “The place which everyone of you will occupy in hell or in paradise has been recorded.” When his hearers asked him whether they should not trust simply in what had been recorded for them and abandon doing good deeds, he replied, “Go on doing them, for everyone is helped to do that for which he was created. Those who are among the number of the blessed will be helped to do appropriate deeds, and those who are among the number of the miserable will be helped to do appropriate deeds.” Then he recited, “As for him who gives, shows piety, and considers what is best to be true, We will help him to prosperity.”
(Bukhari and Muslim.)
ব্যাখ্যা: (أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلى كِتَابِنَا) এই বাক্য দ্বারা বুঝা যায় যে, আমাদের জন্য তাক্বদীরে যা নির্ধারিত রয়েছে তার উপরই নির্ভর করবো কি-না এবং আ‘মাল বর্জন করবো কি-না, অর্থাৎ- আ‘মালের প্রচেষ্টা ত্যাগ করবো কি-না। কারণ, যখন আমাদের জান্নাতী বা জাহান্নামী হওয়াটা পূর্ব নির্ধারিত তখন ‘আমলের প্রতিযোগিতা করেই বা কি লাভ? কেননা আল্লাহর ফায়সালা তো কখনও পরিবর্তিত হওয়ার নয় এবং তার নির্ধারিত বিষয় কখনও রদ হওয়ার নয়।
জেনে রাখা উচিত যে, যাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য জান্নাতের আ‘মালটাই অধিক সহজ হবে। আর এই সহজতাই তার জান্নাতী হওয়ার আলামত। পক্ষান্তরে যার জন্য জান্নাতী আ‘মালটা সহজ নয়। সে জান্নাতী নয় বরং জাহান্নামের অধিবাসী।
নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সকল কর্ম পরিচালনা করেন এবং তা একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্তও করে।
যার জন্য জান্নাত নির্ধারিত তার জন্য জান্নাতী আ‘মালটাও তো নির্ধারিত এবং সেই কৃতকর্মই তাঁর জন্য উপযোগী হবে এবং সে কর্মের উপরই তাকে উৎসাহ এবং ধমকের মাধ্যমে উজ্জ্বীবিত করা হয়। আর যার জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাঁর জন্য মন্দটাই নির্ধারিত। এমনকি সে প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং তার মাওলার আদেশ বর্জন করে।