৮১

পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

৮১-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (আলমে আরওয়াহ্ বা রুহ জগতে) আদম ও মূসা (আঃ) পরস্পর তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হলেন। এ তর্কে আদম (আঃ) মূসার উপর জয়ী হলেন। মূসা (আঃ) বললেন, আপনি তো সে আদম, যাঁকে আল্লাহ (বিনা পিতা-মাতায়) তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনার মধ্যে তাঁর রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। মালায়িকার দ্বারা আপনাকে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করিয়েছেন এবং আপনাকে তাঁর চিরস্থায়ী জান্নাতে স্থান করে দিয়েছিলেন। অতঃপর আপনি আপনার স্বীয় ত্রুটির কারণে মানবজাতিকে জমিনে নামিয়ে দিয়েছেন। আদম (আঃ) (প্রত্যুত্তরে) বললেন, তুমি তো সে মূসা যাঁকে আল্লাহ তা’আলা নুবূওয়্যাতের পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। তোমাকে তাওরাত দান করেছেন, যাতে সমস্ত বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। অধিকন্তু তিনি তোমাকে গোপন কথা দ্বারাও নৈকট্য দান করেছেন। আল্লাহ আমার সৃষ্টির কত বছর পূর্বে তাওরাত লিখে রেখেছিলেন তুমি কি জান? মূসা (আঃ) বললেন, চল্লিশ বছর পূর্বে। তখন আদম (আঃ) বললেন, তুমি কি তাওরাতে (এ শব্দগুলো লিখিত) পাওনি যে, ’’আদম তাঁর প্রতিপালকের নাফরমানী করেছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে?’’ (সূরাহ্ ত্ব-হা- ২০: ১২১)। মূসা (আঃ) (উত্তর) দিলেন, হাঁ, পেয়েছি। তখন আদম (আঃ) বললেন, তারপর তুমি আমাকে আমার ’আমলের জন্য তিরস্কার করছ কেন, যা আমার সৃষ্টিরও চল্লিশ বছর পূর্বে আল্লাহ আমার জন্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সুতরাং আদম (আঃ) মূসা (আঃ)-এর ওপর জয়ী হলেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِيْمَانِ بِالْقَدْرِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى عَلَيْهِمَا السَّلَام عِنْدَ رَبِّهِمَا فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى قَالَ مُوسَى أَنْتَ آدَمُ الَّذِي خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلَائِكَتَهُ وَأَسْكَنَكَ فِي جَنَّتِهِ ثُمَّ أَهَبَطْتَ النَّاسَ بِخَطِيئَتِكَ إِلَى الأَرْض فَقَالَ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى الَّذِي اصْطَفَاكَ اللَّهُ بِرِسَالَتِهِ وَبِكَلَامِهِ وَأَعْطَاكَ الْأَلْوَاحَ فِيهَا تِبْيَانُ كُلِّ شَيْءٍ وَقَرَّبَكَ نَجِيًّا فَبِكَمْ وَجَدَتِ اللَّهِ كَتَبَ التَّوْرَاةَ قَبْلَ أَنْ أُخْلَقَ قَالَ مُوسَى بِأَرْبَعِينَ عَامًا قَالَ آدَمُ فَهَلْ وَجَدْتَ فِيهَا (وَعَصَى آدَمُ ربه فغوى)
قَالَ نَعَمْ قَالَ أَفَتَلُومُنِي عَلَى أَنْ عَمِلْتُ عَمَلًا كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيَّ أَنْ أَعْمَلَهُ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَنِي بِأَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى» . رَوَاهُ مُسلم

عن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «احتج ادم وموسى عليهما السلام عند ربهما فحج ادم موسى قال موسى انت ادم الذي خلقك الله بيده ونفخ فيك من روحه واسجد لك ملاىكته واسكنك في جنته ثم اهبطت الناس بخطيىتك الى الارض فقال ادم انت موسى الذي اصطفاك الله برسالته وبكلامه واعطاك الالواح فيها تبيان كل شيء وقربك نجيا فبكم وجدت الله كتب التوراة قبل ان اخلق قال موسى باربعين عاما قال ادم فهل وجدت فيها (وعصى ادم ربه فغوى) قال نعم قال افتلومني على ان عملت عملا كتبه الله علي ان اعمله قبل ان يخلقني باربعين سنة قال رسول الله صلى الله عليه وسلم فحج ادم موسى» . رواه مسلم

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 1


Abu Huraira reported that God’s messenger told of Adam and Moses holding a disputation in their Lord’s presence and of Adam getting the better of Moses in argument. Moses said, “You are Adam whom God created with His hand, into whom He breathed of His spirit, to whom He made the angels do obeisance, and whom He caused to dwell in His garden; then because of your sin you caused mankind to come down to the earth.” Adam replied, “And you are Moses whom God chose to deliver His messages and to address, to whom He gave the tablets on which everything was explained, and whom He brought near as a confidant. How long before I was created did you find that God has written the Torah?”* Moses said, “Forty years.” Adam asked, “Did you find in it, ‘And Adam disobeyed his Lord and erred’?”** On being told that he did, he said, “Do you then blame me for doing a deed which God had decreed that I should do forty years before He created me?” God’s messenger said, “So Adam got the better of Moses in argument.”

Muslim transmitted it.

* At-Taurat, a general name for the first five books of the Old Testament.
** These words are in Quran, xx, 121.

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা আমার অস্তিত্বের আগেই ফায়সালা করে রেখেছেন যে, তা অবশ্যই ঘটবে। অতএব এটা কি সম্ভব যে আল্লাহর সিদ্ধান্তে যা আছে আমার দ্বারা তার বিপরীত কিছু ঘটবে? অতএব তুমি কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার পূর্ব জ্ঞান সম্পর্কে গাফিল থেকে অর্জনকে উল্লেখ কর যা মূলত উপকরণ আর আসল বস্তুকে ভুলে যাও যা হলো তাক্বদীর? অথচ তুমি তো সে সব নির্বাচিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত যারা আল্লাহর রহস্য সম্পর্কে অবহিত। তাছাড়া তাক্বদীরকে দলীল হিসেবে পেশ করা দু’ভাবে হতে পারে।

(১) গুনাহের কাজে দুঃসাহস দেখানো এবং নিজের প্রতি কোন দোষোরোপকে প্রতিহত করা এবং গুনাহের কাজে কাউকে উৎসাহ প্রদান। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এটি বেহায়াপনা এবং আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অপরাধীর নির্লজ্জতার প্রমাণ। যা যুক্তিগত ও শারী‘আতগত কোন দিক থেকেই বৈধ নয়।

(২) মনকে সান্ত্বনা দেয়া এবং গুনাহের কারণে মনে যে অশান্তি ও অস্থিরতা দেখা দেয় তা প্রতিহত করাই তাক্বদীর সম্পর্কিত বিষয়ের শিক্ষা এটা শারী‘আতের দৃষ্টি এবং যৌক্তিক দৃষ্টিতে কোন খারাপ বিষয় নয়। অতএব এ ধরনের দলীল দেয়া যেতে পারে। আর আদম (আঃ) কর্তৃক তাক্বদীরকে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করা এই প্রকারের ছিল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان)