পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ولقد آتيناك سبعا من المثاني والقرآن العظيم “আমি তো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃপুন আবৃত্ত হয় এবং দিয়েছি মহা কুরআন।
৪৩৪৩। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবূ সাইদ ইবনু মুয়াল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পাশ দিয়ে গেলেন, তখন আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। তিনি আমাকে ডাক দিলেন, তখন আমি সালাত শেষ না করে আসিনি। এরপর আমি আসলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, আমার কাছে আসতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিল? আমি বললাম, আমি সালাত আদায় করছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি একথা বলেননি, “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং রাসুলের ডাকে সাড়া দাও”? তারপর তিনি বললেন, আমি মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগেই কি তোমাকে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরাটি শিখিয়ে দিবনা? তারপর যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হতে লাগলেন , আমি তাঁকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, সে সূরাটি হল, “আল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন”। এটি হল[১] পুনরাবৃত্ত সাতটি আয়াত এবং মহা কুরআন[২] যা আমাকে দান করা হয়েছে।
[২] সুরা ফাতিহাকে মহা কুরআন বলা হয়েছে। কারন কুরআনের সকল বিষয়বস্তুর মূলকথা এর মধ্যে রয়েছে।
باب قوله ولقد آتيناك سبعا من المثاني والقرآن العظيم
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، قَالَ مَرَّ بِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أُصَلِّي فَدَعَانِي فَلَمْ آتِهِ حَتَّى صَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُ فَقَالَ " مَا مَنَعَكَ أَنْ تَأْتِيَ ". فَقُلْتُ كُنْتُ أُصَلِّي. فَقَالَ " أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ) ثُمَّ قَالَ أَلاَ أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ " فَذَهَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ فَذَكَّرْتُهُ فَقَالَ "(الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ الَّذِي أُوتِيتُهُ ".
Narrated Abu Sa`id Al-Mualla:
While I was praying, the Prophet (ﷺ) passed by and called me, but I did not go to him till I had finished my prayer. When I went to him, he said, "What prevented you from coming?" I said, "I was praying." He said, "Didn't Allah say" "O you who believes Give your response to Allah (by obeying Him) and to His Apostle." (8.24) Then he added, "Shall I tell you the most superior Sura in the Qur'an before I go out of the mosque?" When the Prophet (ﷺ) intended to go out (of the Mosque), I reminded him and he said, "That is: "Al hamdu-li l-lahi Rabbil-`alamin (Surat-al-fatiha)' which is the seven oft repeated verses (Al-Mathani) and the Grand Qur'an which has been given to me."
পরিচ্ছেদঃ ২৪০৩. সূরা ফাতিহার ফযীলত
৪৬৪০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ ইবনু মু’আল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালাত (নামায/নামাজ)-রত ছিলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকলেন; কিন্তু আমি তাঁর ডাকে সাড়া দিলাম না। পরে আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি সালাত (নামায/নামাজ)-রত ছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি, “হে মু’মিনগণ, আল্লাহ ও রাসূল যখন তোমাদেরকে আহবান করেন তখন আল্লাহ ও রাসূলের আহবানে সাড়া দাও”। তারপর তিনি বললেন, মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বে আমি কি তোমাকে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা শিক্ষা দেব না? তখণ তিনি আমার হাত ধরলেন। যখন আমরা মসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করলাম তখন আমি বললাম, ইয়া, রাসূলাল্লাহ! আপনি তো বলেছেন মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বে আমাকে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরার কথা বলবেন। তিনি বললেন, তা হলঃ “আল হামদুলিল্লাহ রাব্বিল আলামীন”। এটা বারবার পাঠিত সাতটি আয়াত (সাবআ মাছানী) এবং কুরআন আজীম যা আমাকে দেয়া হয়েছে।
باب فَضْلِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي فَدَعَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أُجِبْهُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ أُصَلِّي. قَالَ " أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ (اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ) ثُمَّ قَالَ أَلاَ أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ". فَأَخَذَ بِيَدِي فَلَمَّا أَرَدْنَا أَنْ نَخْرُجَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّكَ قُلْتَ لأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ. قَالَ "(الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ الَّذِي أُوتِيتُهُ ".
Narrated Abu Sa`id Al-Mu'alla:
While I was praying, the Prophet (ﷺ) called me but I did not respond to his call. Later I said, "O Allah's Apostle! I was praying." He said, "Didn't Allah say: 'O you who believe! Give your response to Allah (by obeying Him) and to His Apostle when he calls you'?" (8.24) He then said, "Shall I not teach you the most superior Surah in the Qur'an?" He said, '(It is), 'Praise be to Allah, the Lord of the worlds. ' (i.e., Surat Al-Fatiha) which consists of seven repeatedly recited Verses and the Magnificent Qur'an which was given to me."
পরিচ্ছেদঃ ৩৫৬. সূরা ফাতিহা সম্পর্কে।
১৪৫৮. উবায়দুল্লাহ ইব্ন মুআয (রহঃ) ..... আবু সাঈদ ইবনুল মুআল্লা (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদা তিনি নামাযে রত থাকাবস্থায় নবী করীম তাঁর পাশ দিয়ে গমনকালে তাঁকে ডাকেন। রাবী বলেন, আমি নামায সমাপন্তে তাঁর খিদমতে হাযির হই। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, আমার ডাকে সাড়া দিতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছে? আমি বলি, আমি নামাযে রত ছিলাম। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলা কি ইরশাদ করেন নাই, হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল যখন তোমাদেরকে আহবান করেন, তখন তোমরা তার জবাব প্রদান করবে, কেননা তিনি তোমাদেরকে সত্যের প্রতি উদ্ধুদ্ধ করেন? অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি আজ মসজিদ হতে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কুরআনের একটি সর্বোৎকৃষ্ট সূরা শিক্ষা দিব। আমি বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার মূল্যবান কথাটি বর্ণে বর্ণে সংরক্ষিত করব, যা আপনি ইরশাদ করবেন। তিনি বলেনঃ আলহামদু লিল্লাহে রব্বিল আলামীন সূরা যা প্রদান করা হয়েছে; এটা আস্-সাব্উ আল-মাছানী এবং আল্-কুরআনুল আজীম। (বুখারী, নাসাঈ, ইবন মাজা)।
باب فَاتِحَةِ الْكِتَابِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِهِ وَهُوَ يُصَلِّي فَدَعَاهُ قَالَ فَصَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ قَالَ فَقَالَ " مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيبَنِي " . قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي . قَالَ " أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ ) لأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ أَوْ فِي الْقُرْآنِ " . شَكَّ خَالِدٌ " قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَوْلَكَ . قَالَ " ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ) وَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي الَّتِي أُوتِيتُ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ " .
Abu Sa'id b. al-Mu'alla said that when he was praying the Prophet (ﷺ) passed by him and he called him. He said:
I prayed ant then I came to him. He asked: What prevented you from answering me ? He replied: I was praying. He said: Has not Allah said: "O you who believe, respond to Allah and the Apostle when he calls you to that which gives you life ? (8:24) Let me teach you the greatest surah from the Qur'an or in the Qur'an (the narrator Khalid doubted) before I leave the mosque. I said: (I shall memorize) your saying. He said: It is: "Praise be to Allah, the Lord of the Universe" which is the seven oft-repeated verses, and the mighty Qur'an.
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/ মসজিদের নিকট দিয়ে গমন করার নামায।
৭৩৩। মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আবূল হাকাম (রহঃ) ... আবূ সাঈদ ইবনুল মুআল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় আমরা ভোরে বাজারের দিকে যেতাম। তখন আমরা মসজিদের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় সালাত আদায় করতাম।
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْحَكَمِ بْنِ أَعْيَنَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ ابْنِ أَبِي هِلاَلٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَرْوَانُ بْنُ عُثْمَانَ، أَنَّ عُبَيْدَ بْنَ حُنَيْنٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، قَالَ كُنَّا نَغْدُو إِلَى السُّوقِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَمُرُّ عَلَى الْمَسْجِدِ فَنُصَلِّي فِيهِ .
It was narrated that Abu Sa'eed bin Al-Mu'alla said:
"We used to go to the marketplace in the morning at the time of the Messenger of Allah (ﷺ), and we would pass through the Masjid and pray there."
পরিচ্ছেদঃ ২৬/ "আপনাকে সাব'আ মাসানি ও কুরআন আজিম দিয়েছি"- এর ব্যাখ্যা।
৯১৬। ইসমাঈল ইবনু মাসউদ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ ইবনু মুআল্লা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রহঃ) তার কাছ দিয়ে যাওয়ার কালে তাকে ডাকলেন, তিনি তখন সালাত আদায় করছিলেন। তিনি বলেন আমি সালাত শেষ করে তাঁর কাছে আসলে তিনি বললেন, আমার আহবানে সাড়া দিতে তোমাকে কিসে নিষেধ করল? তিনি বললেন, আমি সালাত আদায় করছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি, হে মুমিনগণ! রাসুল যখন তোমাদের এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে যা তোমাদের প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসুলের আহবানে সাড়া দিবে। (৮ঃ ২৪)।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর আমি কি তোমাকে সর্বোৎকৃষ্ট সূরা শিক্ষা দিব না? তিনি বললেন, তারপর তিনি বের হতে গেলে আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার কথা? তিনি বললেনঃ আল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা, ঐ সাত আয়াত যা বারবার পড়া হয়ে থাকে, যা আমাকে দান করা হয়েছে এবং মহান কুরআন।
أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مَسْعُودٍ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِهِ وَهُوَ يُصَلِّي فَدَعَاهُ - قَالَ - فَصَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ فَقَالَ " مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيبَنِي " قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي . قَالَ " أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ) أَلاَ أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ " . قَالَ فَذَهَبَ لِيَخْرُجَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَوْلَكَ . قَالَ " الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي الَّذِي أُوتِيتُ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ " .
It was narrated from Abu Sa'eed bin Al-Mu'alla that:
The Prophet (ﷺ) passed by him when he was praying, and called him. He said: "I finished praying, then I came to him, and he said: 'What kept you from answering me?' He said: 'I was praying.' He said: 'Does not Allah say: O you who believe! Answer Allah (by obeying Him) and (His) Messenger when he calls you to that which will give you life? Shall I not teach you the greatest surah before I leave the masjid?' Then he went to leave, and I said: 'O Messenger of Allah, what about what you said?' He said: "All praise and thanks be to Allah, Lord of all that exists. These are the seven oft-recited that I have been given, and the Grand Quran.'"
পরিচ্ছেদঃ ৬৫/১/১. সূরাতুল ফাতিহা (ফাতিহাতুল কিতাব) প্রসঙ্গে।
(الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ) اسْمَانِ مِنْ الرَّحْمَةِ الرَّحِيْمُ وَالرَّاحِمُ بِمَعْنًى وَاحِدٍ كَالْعَلِيْمِ وَالْعَالِمِ.
‘‘রহমান ও রহীম’’ শব্দদ্বয় ‘রহমত’ শব্দ থেকে নিষ্পন্ন এবং রহীম ও র-হিম দু’টো শব্দই একই অর্ধবোধক যেমন ‘আলীম ও আ-লিম।
(1) سورة الفاتحة
সূরাহ (১) : ফাতিহা*
وَسُمِّيَةْ أُمَّ الْكِةَابِ أَنَّهُ يُبْدَأُ بِكِةَابَةِهَا فِي الْمَصَاحِفِ وَيُبْدَأُ بِقِرَاءَةِهَا فِي الصَّلَاة.
وَ(الدِّيْنُ) الْجَزَاءُ فِي الْخَيْرِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ (بِالدِّيْنِ) بِالْحِسَابِ (مَدِيْنِيْنَ) مُحَاسَبِيْنَ.
সূরাহ ফাতিহাকে উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল) হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে এজন্য যে, সূরাহ ফাতিহা লেখা দ্বারাই কুরআন গ্রন্থাকারে লেখা শুরু হয়েছে।
আর সূরাহ ফাতিহা পাঠের মাধ্যমে সালাতও আরম্ভ করা হয়। ‘‘দ্বীন’’ অর্থ -ভাল ও মন্দের প্রতিফল। যেমন বলা হয়ে থাকে وَالشَّرِّ كَمَا تَدِيْنُ تُدَانُ ‘‘যেমন কর্ম তেমন ফল’’। আর মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بِالدِّيْنِ হিসাব-নিকাশ। مَدِيْنِيْنَ যার হিসাব নেয়া হবে।
৪৪৭৪. আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে নাববীতে সালাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকেন। কিন্তু ডাকে আমি সাড়া দেইনি। পরে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি সালাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ কি বলেননি যে, ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রাসূলের ডাকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দেন- (সূরাহ আনফাল ৮/২৪)। তারপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই তোমাকে আমি কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব। তারপর তিনি আমার হাত ধরেন। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন আমি তাঁকে বললাম, আপনি কি বলেননি যে আমাকে কুরআনের অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিবেন? তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ -সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল আমাকেই দেয়া হয়েছে। [৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪১১৯)
وكان ذلك قبل الهجرة واخرج ابو بكر بن الانباري في المصاحف عن عبادة قال : فاتحة الكتاب نزلت المكة فهذا جملة ما استدل به من قال انها نزلت بمكة : واستدل من قال انها نزلت بالمدينة بما اخرجه ابن أبي شيبة في المصنف وأبو سعيد ابن الْأعرابي في معجمه والطبراني في الْأوسط من طرق مجاهد عن أبي هريرة رن ابليس حين انزلت فاتحة الكتاب وانزلت بالمدينت واخرج ابن أبي شيبت في المصنف وعبد بن حميد وابن المنذر وأبو نعيم في الحليت وغيرهم من طرق عن مجاهد قال : نزلت فاتحت الكتاب بالمدينت وقيل إنها نزلت مرتين مرت بمكت ومرت بالمدينت جمعًا بين هذه الروايات ٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍٍ
প্রকাশ থাকে যে, ইমাম ইবনু কাসীর তাঁর বিখ্যাত তাফসীর ইবনু কাসীর ১ম খন্ড, ৮ম পৃষ্ঠায়ও সূরা ফাতিহা দু’বার নাযিল হওয়ার কথা সমর্থন করে ভিন্ন আসমাউর রিজাল সম্বলিত এক শক্তিশালী তথ্য উপস্থাপন করেছেনঃ
وهي مكية : قال ابن عباس (رض) وقتادة وأبو العالية وقيل مدنية قاله أبو هريرة (رض) ومجاهد وعطاء بن يسار والزهري ويقال نزلت مرتين : مرة بمكة ومرة بالمدينة والأول اشبه لقوله تعالى : وَلَقَدْ آتَيْنَكَ سَبْعًا مِنَ الْمَثَانِيْ والله تعالى اعلم منها
উল্লেখ্য, সূরায়ে ফাতিহা দু’ দু’বার নাযিল হওয়ার কারণে সূরাখানির গুরুত্ব, মহত্ব, আবশ্যকতা ও প্রয়োজনীয়তা অন্যান্য সূরা হতে এক স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করেছে, যা খুব সহজেই অনুমেয় বটে। এতদ্ব্যতীত উক্ত সূরার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে স্বয়ং নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ سورة ما انزل في التوراة ولا في الانجيل ولا في الفرقان مثلها
অর্থাৎ এটা এমন একটি সূরা যা তাওরাত, ইঞ্জিল ও ফুরকানেও নাযিল করা হয়নি। অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেই বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন উক্ত সূরাখানি প্রদান করা হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদীর ১ম খন্ড, ১৫ পৃষ্ঠা)
এখানে একটি লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, উক্ত সূরাখানির স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের আর একটি দিক এই যে, আলোচ্য সূরাখানির গুরুত্ব মানব জীবনের সব দিকে এতই বেশী পরিব্যপ্ত যে, স্থান বিশেষ ব্যাখ্যায় সম্মানিত তাফসীরকারগণ আলোচ্য সূরাখানির প্রায় ৪২টি নাম দিয়েছেন। যে নামগুলো তাফসীর ইবনু কাসীর, ইবনু জারীর, রুহুল মায়ানী, তাফসীর কবীর, তাফসীর খাযিন, তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর, তাফসীরে কুরতুবী সহ নির্ভরযোগ্য তাফসীরাতের কিতাবসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে এতদ সমূদয় হতে মাত্র কয়েকটি নাম চয়ন করা হলো। যথাক্রমেঃ (১) سورة مفتاح القرآن কুরআনের কুঞ্জিকা, (২) سورة أم القرآن কুরআনের মা বা আসল, (৩) سورة الدعاء দু‘আর সূরা, (৪) سورة الشفاءরোগ মুক্তির সূরা, (৫) سورة الحمد প্রশংসার সূরা, (৬) أساس القرآن কুরআনের ভিত্তি, (৭) سورة الرحمة রাহমাতের সূরা, (৮) سورة البركة বারকাতের সূরা, (৯) سورة النعمة নি‘আমাতের সূরা, (১০) سورة العبادة ‘ইবাদাতের সূরা, (১১) سورة الهداية হিদায়াত প্রাপ্তির সূরা, (১২) سورة الإسةقامة দৃঢ়তার সূরা, (১৩) سورة الإسةعانة সাহায্য প্রার্থনার সূরা, (১৪) سورة الكافية অত্যধিক ও বিপুলতা দানকারী সূরা, (১৫) سورة الوافية পূর্ণত্ব প্রাপ্ত সূরা, (১৬) سورة الكنـز খণির সূরা (জ্ঞানের খনি, রাহমাত, বারাকাত, নি‘আমাত ও যাবতীয় সাফল্যের খণি বলে এ সূরাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে), (১৭) سورة الشكر শুকর করার সূরা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সূরা (১৮) سورة الصبر সবরের উৎসাহ দানকারী সূরা, (১৯) سورة التكرار বার বার পঠিতব্য সূরা, (২০) سورة التعلق مع الله আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক স্থাপনের সূরা, (২১) سورة الصراط المستقيم সরল সঠিক পথ লাভের সূরা, (২২) سورة الربوبية প্রভুত্ব সনাক্ত করণের সূরা, (২৩) سورة الوحدانية আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদের প্রতি স্বীকৃতি প্রকাশের সূরা, (২৪) سورة الاجةناب الغضب والضلالة আল্লাহর গযব ও গোমরাহী হতে আত্মরক্ষা করার সূরা, (২৫) سورة الصلاة সালাতে একান্তই পঠিতব্য সূরা।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ নামকরণ সালাত আদায়ে একান্তই পঠিতব্য সূরা নামকরণ থেকেও মনে হয়, উক্ত সূরা পাঠ ব্যতীত সালাত পূর্ণ হয় না। ইমাম মুক্তাদী সকলের জন্যই উক্ত সূরা পাঠ করা ওয়াজিব বটে। এ বিষয়ে চার মাযহাবের নিকট গ্রহণযোগ্য তাফসীরের কিতাব ইবনু কাসীর ১ম খন্ড ১১ পৃষ্ঠার যা বিবৃত হয়েছে তা সত্যিই প্রণিধানযোগ্য।
هل ةجب قرأة الفاةحة على المأموم ؟ فيه ثلاثة أقوال للعلماء أحدها أنه ةجب عليه قرأةها كما ةجب على امامه لعموم الْأحاديث المةقدمة-
প্রকাশ থাকে যে, উলামায়ে কিরামদের ৩টি قول এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী (أرجح)সিদ্ধান্ত যা তা-ই প্রথম সিদ্ধান্ত বলে ইবনু কাসীর (রহ.) স্বীয় তাফসীরে উদ্ধৃত করেছেন। অতঃপর দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.)-এর থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যেমন বলা হয়েছে,
والثاني لا تجب على المأموم قرأة بالكلية للفاتحة ولا غيرها ولا في صلاة الجهرية ولا في صلاة السرية لـما رواه الإمام أحمد بن حنبل (رح) في سنده عن جابر بن عبد الله عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال من كان له إمام فقرأة الإمام له قرأة ولكن في اسناده ضعيف ورواه مالك (رح) عن وهب ابن كسان عن جابر من كلامه وقد رواي هذا الحديث من طرق ولا يصح منها شيء عن النبي صلى الله عليه وسلم
অর্থাৎ দ্বিতীয় এই যে, সূরায়ে ফাতিহার পাঠ মুক্তাদীর উপর ওয়াজিব হবে না বা অন্য কিছু পাঠ করাও ওয়াজিব হবে না, তা জাহরী (প্রকাশ্য) ক্বিরাআতেই হোক, বা গোপন (سري) ক্বিরাআতেই হোক, যা আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.) স্বীয় কিতাব মুসনাদে আহমাদে রিওয়ায়াতে করেছেন জাবির বিন আবদুল্লাহ হতে, আর তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের ইক্তিদায় আছে, ইমামের ক্বিরাআতই তার ক্বিরাআত বলে গণ্য হবে। এখানে ইমাম ইবনু কাসীর (রহ.) বলেছেন, উক্ত রিওয়ায়াতের সনদ যঈফ। ইমাম মালিক (রহ.) উক্ত হাদীস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে, জাবির (রাযি.) উক্ত বাক্য দ্বারা নিজের মত পোষণ করেছেন, এ বাক্যটি রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী বা নির্দেশ এ কথা মোটেই সহীহ নয়।
والثالث أنه ةجب القرأة على الـماموم في السرية لـما ةقدم ولايحب ذلك في الجهرية-
তৃতীয় মত এই যে, সিররী (চুপি চুপি) সালাতে ফাতিহা পড়া ওয়াজিব হবে, প্রকাশ্য সালাতে ওয়াজিব হবে না।
সূরায়ে ফাতিহার বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীসটি আমাদের যাবতীয় তর্কের মীমাংসা করে দিয়েছে যা আবূ দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযীর ক্বিরাআত অধ্যায়ে নির্ভরযোগ্য রিওয়ায়াতে দেখা যায় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফাজরের সালাতের ক্বিরাআত আদায় করছেন, পেছনে সহাবায়ে কিরামদের অনেকেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহিত সমস্ত ক্বিরাআত পাঠ করছিলেন। অতঃপর সালাত শেষে রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ
لا تفعلو إلَّا بأم القرأن فإنه لا صلاة لـمن لـم يقرأبها-
তোমরা সূরায়ে ফাতিহা ব্যতীত আর কোন সূরা পড়বে না। কেননা যে তা পড়ে না তার সালাত হয় না। এখানে ফাজরের ক্বিরাআত উচ্চ আওয়াজে পড়া হয়েছিল, এখানে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত পাওয়া গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহাবায়ে কিরাম, অতঃপর ইমাম হাসান বাসরী, ইমাম জুহরী, ইমাম আওজা‘ঈ, ইমাম ইবরাহীম নাখ‘ঈ, ইমাম মালিক, ইমাম আবদুল্লাহ বিন আল মুবারক, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম নাসায়ী, ইবনু হাজার আসক্বালানী, হাফিয আস সাখাবী, ইমাম শাফি‘ঈ (রহ.), ইমাম নাবাবী, ইমাম শওকানী, হাফিয ইবনু কাসীর, ইমাম গাযযালী, বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহিমাহুমুল্লাহ আজমা‘ঈন) প্রমুখাত মনীষী সহ হিজাজ, নজদ, ‘আসির, ইয়ামান, সিরিয়া, মিশর, মরক্কো, আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মাক্কাহ ও মাদীনাহর লক্ষ লক্ষ উলামায়ে কিরাম শতাব্দীর পর শতাব্দী এমন কি আজ পর্যন্ত ইমামের পিছনে সর্বাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করে এসেছেন এবং বর্তমানেও পাঠ করে থাকেন, উপরে যেসব মনীষীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের বদৌলতেই রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসশাস্ত্র, পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে অদ্যাবধি টিকে আছে। তাঁদের প্রত্যেকেই ইমাম মুক্তাদী উভয়ের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ অত্যাবশ্যক বলে মনে করেন, তাই আমরাও অবশ্য পঠিতব্য বলে মনে করছি। ইমামের পিছনে ফাতিহা পাঠকারীদেরকে যদি গোমরাহ মনে করা হয়, তবে নাউযুবিল্লাহ, উল্লেখিত ইসলামের মহামনীষীদেরকেও তো এই দৃষ্টিতে তারা প্রকারান্তরে গোমরাহ বলেই মনে করছে। তাঁদের রিওয়ায়াতকে অমান্য করে, উক্ত রিওয়ায়াত পালনকারীদের বিভ্রান্ত ও গোমরাহ বলেই মনে করে কেবল উক্ত মনীষীদের নামের শেষে (রহ.) বলে ভক্তি জাহির করা কি স্ববিরোধিতা নয়? অন্য কারো ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা, ইজতিহাদ মানতে গিয়ে যেন রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এবং তাঁর রেখে যাওয়া সহীহ হাদীসকে অগ্রাহ্য করা না হয়, সে দিকে আমাদের সকলের যত্নবান হওয়া আবশ্যক।
بَاب مَا جَاءَ فِيْ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُعَلَّى قَالَ كُنْتُ أُصَلِّيْ فِي الْمَسْجِدِ فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أُجِبْهُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُنْتُ أُصَلِّيْ فَقَالَ أَلَمْ يَقُلْ اللهُ (اسْتَجِيْبُوْا لِلهِ وَلِلرَّسُوْلِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيْكُمْ) ثُمَّ قَالَ لِيْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ السُّوَرِ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِيْ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ قُلْتُ لَهُ أَلَمْ تَقُلْ لَأُعَلِّمَنَّكَ سُوْرَةً هِيَ أَعْظَمُ سُوْرَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَالَ (الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ)هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيْمُ الَّذِيْ أُوْتِيْتُهُ
Narrated Abu Sa`id bin Al-Mu'alla:
While I was praying in the Mosque, Allah's Messenger (ﷺ) called me but I did not respond to him. Later I said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! I was praying." He said, "Didn't Allah say'--"Give your response to Allah (by obeying Him) and to His Apostle when he calls you." (8.24) He then said to me, "I will teach you a Sura which is the greatest Sura in the Qur'an, before you leave the Mosque." Then he got hold of my hand, and when he intended to leave (the Mosque), I said to him, "Didn't you say to me, 'I will teach you a Sura which is the greatest Sura in the Qur'an?' He said, "Al-Hamdu-Li l-lah Rabbi-l-`alamin (i.e. Praise be to Allah, the Lord of the worlds) which is Al-Sab'a Al-Mathani (i.e. seven repeatedly recited Verses) and the Grand Qur'an which has been given to me."
পরিচ্ছেদঃ ১২. সুরা ফাতিহার ফযীলত
৩৪১০. আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা আল আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (আমি একদা মসজিদে নাববীতে সালাত আদায় করছিলাম,) এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পাশ দিয়ে গমণ করেন। তিনি বললেন, “আল্লাহ কি বলেননি যে, “ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাড়া দেবে আল্লাহ্ ও রাসূলের ডাকে, যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দেন।” (সূরাহ আনফালঃ ২৪)?” তারপর তিনি আমাকে বললেন, “আমি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই আমি কি তোমাকে কুরআনের এক অতি মহান সূরাহ্ শিক্ষা দিব না?। এরপর যখন তিনি মাসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করেন তখন তিনি বললেন, الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ অর্থ: “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক।” (সুরা ফাতিহাহ: ১) এটা বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এবং মহান কুরআন যা কেবল তোমাদেরকেই দেয়া হয়েছে।”[1]
তাখরীজ: বুখারী, তাফসীর নং ৪৪৭৪;
আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি মুসনাদুল মুাউসিলী নং ৬৮৩৭; সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৭৭৭ তে।
এছাড়াও, নাসাঈ, ফাযাইলুল কুরআন নং ৩৫; তাহাবী, মুশকিলীল আছার ২/৭৭; আলিমুদ্দীন সাখাবী, জামালুল কুররা ১/১১৪।
باب فَضْلِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ الزَّهْرَانِيُّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى الْأَنْصَارِيِّ قَالَ مَرَّ بِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَلَمْ يَقُلْ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ قَالَ أَلَا أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنْ الْمَسْجِدِ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ قَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ وَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ الَّذِي أُوتِيتُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৩৫০. সূরাহ আল-ফাতিহা সম্পর্কে
১৪৫৮। আবূ সাঈদ ইবনুল মু‘আল্লা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা তিনি সালাতে রত থাকাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ডাকলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি সালাত আদায় শেষে তাঁর নিকট এলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমার ডাকে সাড়া দিতে কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছে? তিনি বললেন, আমি সালাতে রত ছিলাম। তিনি বললেনঃ মহান আল্লাহ কি বলেননিঃ ‘‘হে মুমিনগণ! যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে। (সূরাহ আল-আনফাল : ২৪) আমি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কুরআনের অত্যধিক মর্যাদা সম্পন্ন একটি সূরাহ শিক্ষা দিবো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার কথাটি স্মরণ রাখবো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ‘‘আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল ‘আলামীন’’, এটি হচ্ছে সাত আয়াতবিশিষ্ট সূরাহ। আমাকে এটি এবং কুরআনুল ‘আযীম প্রদান করা হয়েছে।[1]
সহীহ : বুখারী।
باب فَاتِحَةِ الْكِتَابِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدِ بْنِ الْمُعَلَّى، أَنَّ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم مَرَّ بِهِ وَهُوَ يُصَلِّي فَدَعَاهُ قَالَ : فَصَلَّيْتُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ قَالَ : فَقَالَ " مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيبَنِي". قَالَ : كُنْتُ أُصَلِّي . قَالَ " أَلَمْ يَقُلِ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا للهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ) لأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ أَوْ فِي الْقُرْآنِ". شَكَّ خَالِدٌ "قَبْلَ أَنْ أَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ". قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ! قَوْلَكَ . قَالَ " (الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) وَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي الَّتِي أُوتِيتُ وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ " .
- صحيح :خ
Abu Sa'id b. al-Mu'alla said that when he was praying the Prophet (ﷺ) passed by him and he called him. He said:
I prayed ant then I came to him. He asked: What prevented you from answering me ? He replied: I was praying. He said: Has not Allah said: "O you who believe, respond to Allah and the Apostle when he calls you to that which gives you life ? (8:24) Let me teach you the greatest surah from the Qur'an or in the Qur'an (the narrator Khalid doubted) before I leave the mosque. I said: (I shall memorize) your saying. He said: It is: "Praise be to Allah, the Lord of the Universe" which is the seven oft-repeated verses, and the mighty Qur'an.