৫৩৯৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৫৩৯৭-[১৯] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর পিছনে একটি গাধার উপরে আরোহী ছিলাম। যখন আমরা মদীনার গ্রামাঞ্চল অতিক্রম করে বাহিরে গেলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ যার! তখন তোমার কি অবস্থা হবে যখন মদীনায় এমন দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে যে, ক্ষুধার তাড়নায় তুমি নিজ বিছানা হতে উঠে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না, এমনকি ক্ষুধা তোমাকে পেরেশানী করে ফেলবে। আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি জানেন। তিনি (সা.) বললেন, হে আবূ যার! তখন তুমি আত্মসংযম করবে (হারাম কিংবা সন্দেহযুক্ত মাল ভক্ষণ করো না)। তিনি (সা.) পুনরায় বললেন, হে আবূ যর! তখন তোমার অবস্থা কিরূপ হবে যখন মদীনায় এমন মহামারি দেখা দেবে যে, একটি ঘর একটি গোলামের মূল্যের সমপরিমাণে পৌছবে, এমনকি একটি কবরের স্থান একটি গোলামের বিনিময়ে বিক্রয় হবে। আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক জানেন। তিনি (সা.) বললেন, হে আবূ যার! তখন তোমার অবস্থা কি হবে যখন মদীনায় এমন এক হত্যাযজ্ঞের সূচনা হবে যার রক্ত ’আজারু যায়ত নামক স্থানকে ডুবিয়ে ফেলবে। আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক ভালো জানেন। তিনি (সা.) বললেন, তখন তুমি তার কাছেই চলে যাবে যার সাথে তুমি সম্পর্কিত (নিজের পরিবার অথবা নিজ ইমামের নিকট)। আমি বললাম, তবে কি আমি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হব? তিনি (সা.) বললেন, যদি তুমি এরূপ কর তাহলে তুমিও সে দলের সাথে শামিল হয়ে যাবে। আমি বললাম, তাহলে আমি কি করব? হে আল্লাহর রসল। তখন তিনি (সা.) বললেন, যদি তুমি তলোয়ারের চাকচিক্যকে ভয় কর (তলোয়ারের সম্মুখে ভয় পাও), তাহলে পরিহিত কাপড়ের একাংশ স্বীয় মুখের উপরে স্থাপন করবে, যাতে সে তোমার ও নিজের পাপ বহন করে। (আবূ দাউদ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ

وَعَن أبي ذَر قَالَ: كُنْتُ رَدِيفًا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا علىحمار فَلَمَّا جَاوَزْنَا بُيُوتَ الْمَدِينَةِ قَالَ: «كَيْفَ بِكَ يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ جُوعٌ تَقُومُ عَنْ فِرَاشِكَ وَلَا تَبْلُغُ مَسْجِدَكَ حَتَّى يُجْهِدَكَ الْجُوعُ؟» قَالَ: قُلْتُ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «تَعَفَّفْ يَا أَبَا ذَرٍّ» . قَالَ: «كَيْفَ بِكَ يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ مَوْتٌ يَبْلُغُ الْبَيْتَ الْعَبْدُ حَتَّى إِنَّهُ يُبَاعُ الْقَبْرُ بِالْعَبْدِ؟» . قَالَ: قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «تَصْبِرُ يَا أَبَا ذَرٍّ» . قَالَ: «كَيْفَ بِكَ يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ قَتْلٌ تَغْمُرُ الدِّمَاءُ أَحْجَارَ الزَّيْتِ؟» قَالَ: قُلْتُ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «تَأْتِي مَنْ أَنْتَ مِنْهُ» . قَالَ: قُلْتُ: وَأَلْبَسُ السِّلَاحَ؟ قَالَ: «شَارَكْتَ الْقَوْمَ إِذًا» . قُلْتُ: فَكَيْفَ أَصْنَعُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «إِنْ خَشِيتَ أَنْ يَبْهَرَكَ شُعَاعُ السَّيْفِ فَأَلْقِ نَاحِيَةَ ثَوْبِكَ عَلَى وَجْهِكَ لِيَبُوءَ بإِثمك وإِثمه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد حسن ، رواہ ابوداؤد (4261) ۔ (صَحِيح)

ব্যাখ্যা : আলোচ্য হাদীসে প্রিয় নবী (সা.) আবূ যার (রাঃ)-কে চরম ফিতনার সময় নিজেকে শংকামুক্ত রাখার জন্য হানাহানিতে লিপ্ত হতে কঠোরভাবে বারণ করেছেন। এমনকি কেউ যদি কাউকে তলোয়ার দিয়ে হত্যা করতে উদ্যত হয় তাকে প্রতিরোধ করতেও নিষেধ করেছেন। এমতাবস্থায় নিহত হলেও যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া যাবে না। এ সময় কেউ যদি কোন মু'মিনকে হত্যা করতে উদ্যত হয় প্রতিরোধ করা যাবে না। নিহত হলে আদম আলাইহিস সালাম-এর পুত্র হাবিলের মতো নিজেকে মৃত্যুর জন্য সমর্পণ করতে হবে।

ইমাম নববী (রহিমাহুল্লাহ)-এর মতে তলোয়ার বা ধারালো অস্ত্র ভোঁতা করার মর্ম হচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও হানাহানিতে শরীক হওয়ার পথরুদ্ধ করতে হবে। সে সময় মৃত্যুকে বরণ করার মাধ্যমে ধৈর্যধারণ করতে হবে। কেননা, বিশৃঙ্খলার মুহূর্তে আন্দোলনে শরীক হওয়ার চাইতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করাই উত্তম। আন্দোলনে শরীক হলে ফিতনাহ্ আরো বৃদ্ধি পাবে। (ইবনু মাজাহ হা. ৩৯৫৭, আবূ দাউদ হা. ৪৩৩৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ