১০১৪

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্

আস্ সাহু (সালাতে) ভুলে যাওয়া

সালাতে ভুল হলে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার বিধান সর্ম্পকে বিদ্বানগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে।

শাফি’ঈদের মতে সকল প্রকার ভুলের জন্য সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা সুন্নাত।

মালিকীদের মতে ভুলের কারণে সালাতে কমতি হলে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা ওয়াজিব। তবে বৃদ্ধি হলে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা ওয়াজিব নয়।

হানাবেলাদের মতে ভুলের কারণে ওয়াজিব ছুটে গেলে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা ওয়াজিব। সালাতে যে সমস্ত দু’আ বা তাসবীহ সুন্নাত তাতে ভুল হলে সিজদা্ করা ওয়াজিব নয়। অনুরূপভাবে ভুলের কারণে সালাতে কোন বৃদ্ধি হলে অথবা ইচ্ছাকৃত যে কথা বললে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বাতিল হয়ে যায় এমন কোন কথা ভুলবশতঃ বলে ফেললে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা ওয়াজিব। তবে সালাতের কোন রুকন ছুটে গেলে সাহু সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) যথেষ্ট নয় বরং ঐ রুকন আদায় করে সিজদা্ করতে হবে।

হানাফীদের মতে সকল ভুলের কারণে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করা ওয়াজিব।


১০১৪-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের যে কোন ব্যক্তি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দাঁড়ালে তার নিকটে শায়ত্বন (শয়তান) আসে। সে তাকে সন্দেহ-সংশয়ে ফেলে দেয়, এতে সে স্মরণ রাখতে পারে না কত রাক্’আত সালাত সে আদায় করছে। তাই তোমাদের কোন ব্যক্তি এ অবস্থাপ্রাপ্ত হলে সে যেন (শেষ বৈঠকে) বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ السَّهْوِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِن أحدكُم إِذا قَامَ يُصَلِّي جَاءَهُ الشَّيْطَان فَلبس عَلَيْهِ حَتَّى لايدري كَمْ صَلَّى؟ فَإِذَا وَجَدَ ذَلِكَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْجُدْ سجدين وَهُوَ جَالس»

ব্যাখ্যা: (جَاءَهُ الشَّيْطَان) ‘‘তার নিকট শায়ত্বন (শয়তান) আসে’’ অর্থাৎ সালাতের জন্য বিশিষ্ট শায়ত্বন (শয়তান) যার নাম খিনযাব সে আগমন করে সালাতে সন্দেহ সৃষ্টি করার উদ্দেশে।

‘‘সে যেন বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা্ করে’’ আবূ দাঊদের বর্ণনায় ‘সালাম ফেরানোর পূর্বে’ অংশটুকু অতিরিক্ত আছে। ইবনু মাজাহ্-তে ও যুহরী সূত্রে ইবনু ইসহাক কর্তৃক বর্ণনায় এ অতিরিক্ত অংশ রয়েছে। আবূ দাঊদ এ অতিরিক্ত অংশকে ত্রুটিযুক্ত বলে অবিহিত করেছেন। কেননা যুহরী থেকে বর্ণনাকারী হাফিযগণ যেমনঃ ইবনু ‘উয়াইনাহ্ মা‘মার লায়স ও মালিক প্রভৃতি রাবীগণ এ অতিরিক্ত অংশ বর্ণনা করেননি।

তবে দারাকুত্বনীতে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত আছে, ‘‘সালামের পূর্বে বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে’’ এর সানাদ সূত্র শক্তিশালী।

আবূ দাঊদে যুহরীর ভ্রাতুষ্পুত্র থেকে তার চাচা যুহরী থেকেও বর্ণিত আছে সালামের পূর্বে বসা অবস্থায় সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। ইবনু ইসহাক্ব থেকেও যুহরী সূত্রে আবূ দাঊদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। আল আলায়ী বলেনঃ এই অতিরিক্ত অংশটির সকল সূত্র একত্র করলে তা অবশ্যই হাসানের মর্যাদার কম নয়। অতএব আবূ দাঊদ এই অতিরিক্ত অংশকে ত্রুটিযুক্ত বললেও আল ‘আলায়ী এ অংশটিকে দলীলযোগ্য বলে ব্যক্ত করেছেন। আর এটিই সঠিক। কেননা এটি সিকাহ রাবী কর্তৃক বর্ধিত অংশ যা অন্য সিকাহ রাবীর বর্ণনার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। তাই এ অংশটি গ্রহণযোগ্য। তবে হ্যাঁ আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও বায়হাক্বীতে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা‘ফার থেকে মারফূ‘ রূপে বর্ণিত ‘যে ব্যক্তি সালাতে সন্দেহে নিপতিত হয় সে যেন সালামের পরে দু’টি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) দেয়’। তাই বলা যায় বিষয়টির ক্ষেত্রে সংকীর্ণতা নেই। সালামের আগে ও সালামের পরে উভয় পদ্ধতিতেই সাহু সিজদা্ দেয়া যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ