১০১৫

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্

১০১৫-[২] ’আত্বা বিন ইয়াসার (রহঃ) আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন সালাতের মধ্যে সন্দেহ করে যে, সে কতটুকু সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছে? তিন রাক্’আত না চার রাক্’আত, তাহলে সে যেন সন্দেহ দূর করে। যে সংখ্যার উপর তার দৃঢ়তা সৃষ্টি হয় তার ওপর নির্ভর করবে। তারপর সালাতের সালাম ফিরানোর পূর্বে দু’টো সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। যদি সে পাঁচ রাক্’আত সালাত আদায় করে থাকে তাহলে এ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) এ সালাতকে জোড় সংখ্যায় (ছয় রাক্’আতে) পরিণত করবে। যদি সে পুরো চার রাক্’আত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু’ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) শায়ত্বন (শয়তান) কে লাঞ্ছনাকারী গণ্য হবে। (মুসলিম; ইমাম মালিক এ হাদীসটিকে ’আত্বা হতে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। তার বর্ণনায় এ শব্দগুলো আছে যে, সালাত আদায়কারী এ দু’ সিজদা্ দিয়ে পাঁচ রাক্’আতকে জোড় সংখ্যা বানাবে।)[1]

بَابُ السَّهْوِ

وَعَن عَطاء بن يسَار وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلَاثًا أم أَرْبعا فليطرح الشَّك وليبن عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلَاتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لِأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
وَرَوَاهُ مَالِكٌ عَنْ عَطَاءٍ مُرْسَلًا. وَفِي رِوَايَتِهِ: «شَفَعَهَا بِهَاتَيْنِ السَّجْدَتَيْنِ»

وعن عطاء بن يسار وعن ابي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اذا شك احدكم في صلاته فلم يدر كم صلى ثلاثا ام اربعا فليطرح الشك وليبن على ما استيقن ثم يسجد سجدتين قبل ان يسلم فان كان صلى خمسا شفعن له صلاته وان كان صلى اتماما لاربع كانتا ترغيما للشيطان» . رواه مسلم ورواه مالك عن عطاء مرسلا. وفي روايته: «شفعها بهاتين السجدتين»

ব্যাখ্যা: ‘যখন তোমাদের কারো সালাতে সন্দেহ হয়’ জেনে রাখা ভাল যে, ফিক্বাহদের মতে কোন কিছু সংঘটিত হওয়া বা না হওয়া উভয় ব্যাপারে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তাকে ‘শাক্ক’ (সন্দেহ) বলে। আর উসূলবিদদের মতে কোন কিছু সংঘটিত হওয়া বা না হওয়ার ক্ষেত্রে উভয়টি যদি সমান সন্দেহ হয় তাকে ‘শাক্ক’ বলে। পক্ষান্তরে উভয় ক্ষেত্রের কোন একটির প্রতি যদি মাত্রা বৃদ্ধি পায় তাকে ‘যান্ন’ বলে। আর যে দিকের মাত্রা কম থাকে তাকে ‘ওয়াহাম’ বলে। ইমাম আবূ হানীফার মতে ‘শাক্ক’ অর্থ সন্দেহের মাত্রা কোন দিকে বৃদ্ধি না পাওয়া (فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ) শাক্ক পরিত্যাগ করবে, অর্থাৎ যে কাজটি হওয়া সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে কাজের সে অংশটি পরিত্যাগ করবে যেমন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) তিন রাক্‘আত হয়েছে এক্ষেত্রে সন্দেহ চতুর্থ রাক্‘আত নিয়ে, অতএব চতুর্থ রাক্‘আত হয়নি ধরে নিয়ে তৃতীয় রাক্‘আতের উপর ভিত্তি করে বাকী সালাত সম্পন্ন করবে। হাদীসে বর্ণিত ‘ইয়াকীনের উপর ভিত্তি করবে’ এর উদ্দেশ্য এটাই।

(قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ) ‘সালামের পূর্বে’ এ অংশটুকু তাদের দলীল যারা বলেন যে, সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) সাহু সালাতের পূর্বে করতে হবে।

(شَفَعْنَ لَه صَلَاتَه) মুসল্লীর সালাতকে জোড় বানিয়ে দিবে। সিন্দী বলেনঃ সাহু সিজদা্ দু’টি ৬ষ্ঠ রাক্‘আতের সমুতুল্য হবে। অর্থাৎ পাঁচ রাক্‘আত সালাত আদায় করার পর সাহু সিজদা্ দ্বারা তার সালাত ছয় রাক্‘আতে পরিণত হবে। ফলে তার সালাত জোড় সালাত হবে বিজোড় হবে না। আর এ দু’ রাক্‘আত নফল সালাত বলে গণ্য হবে।

(كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ) প্রকৃতপক্ষে যদি তার সালাত চার রাক্‘আত হয়ে থাকে তবে তার সাহু সিজদা্ শায়ত্বনের (শয়তানের) লজ্জার কারণ হবে। অর্থাৎ শায়ত্বন (শয়তান) মুসল্লীর হৃদয়ে খটকা সৃষ্টি করে সালাত বিনষ্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ মুসল্লীর জন্য পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সে উক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে তার সালাত বিনষ্ট হতে মুক্ত করল। আর যে সিজদা্ না করায় শায়ত্বন অভিশপ্ত হয়েছিল তা পালন করে আদম সন্তান তার সালাত পূর্ণ করল। আর এটাই হল শায়ত্বনের (শয়তানের) লজ্জিত হওয়ার কারণ।

(شَفَعَهَا بِهَاتَيْنِ السَّجْدَتَيْنِ) বিজোড় সালাতকে এ দু’ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) দ্বারা জোড় বানিয়ে নিলো। অর্থাৎ ইয়াকীনের উপর ভিত্তি করে সালাত আদায়ের কারণে যদি তার সালাত পাঁচ রাক্‘আত হয়ে থাকে তাহলে এ সাহু সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) দু’টো তার সালাতকে ছয় রাক্‘আতে পরিণত করে তা জোড় সালাতে পরিণত করলো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)