পরিচ্ছেদঃ ৫. হাদীসের সনদ বর্ণনা করা দীনের অন্তর্ভুক্ত, নির্ভরযোগ্য বর্ণনা ছাড়া রিওয়ায়াত গ্রহণ করা উচিত নয়; বর্ণনাকারীদের দোষ-ত্রটি তুলে ধরা শুধু জায়িয নয়, বরং ওয়াজিব; ওটা গীবাত নয়- যা শরীআতের দৃষ্টিতে হারাম; ক্ষতিকারক জিনিসগুলো দূর করে শারীআতের বিধানসমূহ নিখুঁত ও ত্রুটিমুক্ত করা অতীব প্রয়োজন।

(.../...) ’আমর ইবনু ’আলী ও হাসান আল হুলওয়ানী (রহঃ) আফফান ইবনু মুসলিম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা ইসমাঈল ইবনু উলাইয়্যার নিকট বসা ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি অন্য আর এক ব্যক্তি থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করলো। তখন আমি বললাম, "সে ব্যক্তি হাদীস বর্ণনার উপযুক্ত নয়।” আফফান বলেন, আমার কথা শুনে ঐ ব্যক্তি বললো, তুমি তো তার গীবত করলে। ইসমাঈল বললেন, না, সে তার গীবাত করেনি, বরং সে যে হাদীস বর্ণনা করার উপযুক্ত নয়, সে সত্যটিকে উদঘাটন করছে। (হাদীসের ইমামদের দোষ বর্ণনা গীবাতের অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং ফাতাওয়া ও সিদ্ধান্ত দেয়ার নামান্তর।)


(.../...) আবূ জাফার আদ দারিমী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, বিশর ইবনু উমার বলেন, আমি মালিক ইবনু আনাসকে সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহমান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। মালিক ইবনু আনাস বললেন, সে হাদীস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আমি তাকে তাওয়ামার আযাদকৃত গোলাম সালিহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, সেও নির্ভরযোগ্য নয়। আমি তাকে আবুল হুওয়াইরিস সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, সেও নির্ভরযোগ্য রাবী নয়। তারপর আমি তাকে শু’বার ব্যাপারে জানতে চাইলাম, যার থেকে ইবনু আবু যিব হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, তিনিও নির্ভরযোগ্য নয়। এরপর আমি তাঁকে হারাম ইবনু উসমান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, সেও নির্ভরযোগ্য নয়। তারপর আমি মালিক ইবনু আনাস এর নিকট উক্ত পাঁচ ব্যক্তির ব্যাপারে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, এদের সবাই হাদীস রিওয়ায়াতে নির্ভরযোগ্য নয়। পরিশেষে আমি তাকে আর একজনের ব্যাপারে জানতে তিনি বললেন, যার নাম এখন আমার মনে নেই। তার ব্যাপারে তিনি বললেন, তার কোন হাদীস তুমি আমার কিতাবগুলোতে দেখেছে কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, যদি সে হাদীস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য হতো তাহলে তুমি অবশ্যই আমার কিতাবের মাঝে তার নামের উল্লেখ পেতে (কাজে সেও নির্ভরযোগ্য নয়)।


(.../...) ফাযল ইবনু সাহল থেকে বর্ণিত যে, ইবনু আবূ যি’ব শুরাহবীল ইবনু সা’দ থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। অথচ শুরাহবীল ছিল অভিযুক্ত। (তিনি সত্যবাদী ছিলেন, তবে বৃদ্ধ বয়সে স্মরণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন)


(.../...) মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কাহযাযা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ ইসহাক তালাকানীকে বলতে শুনেছি যে, ইবনু মুবারককে বলতে শুনেছি, যদি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করা এবং ’আবদুল্লাহ ইবনু মুহারর-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার মধ্যে ইখতিয়ার দেয়া হত তাহলে প্রথমে আমি তার সাথে সাক্ষাৎ করে পরে জান্নাতে প্রবেশ করতাম। পরে যখন আমি তাকে দেখলাম, তখন উটের গোবরও (বিষ্ঠা) আমার কাছে তার চেয়ে উৎকৃষ্ট মনে হলো।


(.../...) ফাযল ইবনু সাহল থেকে বর্ণিত আছে যে, ওয়ালীদ ইবনু সালিহ আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন। উবাইদুল্লাহ ইবনু আমর বলেছেন যে, যায়দ, অর্থাৎ ইবনু আবূ উনাইসাহ বলেন, তোমরা আমার ভাই (ইয়াহইয়া) থেকে হাদীস গ্রহণ করো না।


(.../...) আহমাদ ইবনু ইবরাহীম দাওরাকী থেকে বর্ণিত। ’আবদুস সালাম আল ওয়াবিসী বলেছেন, ’আবদুল্লাহ ইবনু জাফার আর রাককী (রহঃ) উবাইদুল্লাহ ইবনু আমর থেকে রিওয়ায়াত করেন যে, ইয়াহইয়া ইবনু উনাইসাহ মিথ্যাবাদী ছিলেন।


(.../...) আহমাদ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) হাম্মাদ ইবনু যায়দ থেকে বর্ণনা করেন যে, আইয়ুবের নিকট ফারকাদ সম্পর্কে আলোচনা হলো। তিনি বললেন, ফারকাদ হাদীস বর্ণনার যোগ্য নয়।


(.../...) আবদুর রহমান ইবনু বিশর আল আব্‌দী (রহঃ) বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল কাত্তান (রহঃ) এর কাছে মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দ ইবনু উমায়র লাইসীর উল্লেখ করলে, তিনি তাকে অত্যন্ত য’ঈফ (দুর্বল) বলে মন্তব্য করেছেন। এ সময় কেউ ইয়াহইয়াকে জিজ্ঞেস করলো, সে কি ইয়াকুব ইবনু আতা থেকেও য’ঈফ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর তিনি বললেন, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমায়র থেকে হাদীস বর্ণনা করা কারে জন্য সমীচীন নয়।

باب فِي أَنَّ الإِسْنَادَ مِنَ الدِّينِ وَأَنَّ الرِّوَايَةَ لَا تَكُونُ إِلَّا عَنْ الثِّقَاتِ وَأَنَّ جَرْحَ الرُّوَاةِ بِمَا هُوَ فِيهِمْ جَائِزٌ بَلْ وَاجِبٌ وَأَنَّهُ لَيْسَ مِنْ الْغِيبَةِ الْمُحَرَّمَةِ بَلْ مِنْ الذَّبِّ عَنْ الشَّرِيعَةِ الْمُكَرَّمَةِ

حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، وَحَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ عَفَّانَ بْنِ مُسْلِمٍ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ إِسْمَاعِيلَ ابْنِ عُلَيَّةَ فَحَدَّثَ رَجُلٌ، عَنْ رَجُلٍ، فَقُلْتُ إِنَّ هَذَا لَيْسَ بِثَبْتٍ ‏.‏ قَالَ فَقَالَ الرَّجُلُ اغْتَبْتَهُ ‏.‏ قَالَ إِسْمَاعِيلُ مَا اغْتَابَهُ ‏.‏ وَلَكِنَّهُ حَكَمَ أَنَّهُ لَيْسَ بِثَبْتٍ ‏.‏ وَحَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ سَأَلْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الَّذِي، يَرْوِي عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، فَقَالَ لَيْسَ بِثِقَةٍ ‏.‏ وَسَأَلْتُهُ عَنْ صَالِحٍ، مَوْلَى التَّوْأَمَةِ فَقَالَ لَيْسَ بِثِقَةٍ ‏.‏ وَسَأَلْتُهُ عَنْ أَبِي الْحُوَيْرِثِ فَقَالَ لَيْسَ بِثِقَةٍ ‏.‏ وَسَأَلْتُهُ عَنْ شُعْبَةَ الَّذِي رَوَى عَنْهُ ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ فَقَالَ لَيْسَ بِثِقَةٍ ‏.‏ وَسَأَلْتُهُ عَنْ حَرَامِ بْنِ عُثْمَانَ فَقَالَ لَيْسَ بِثِقَةٍ ‏.‏ وَسَأَلْتُ مَالِكًا عَنْ هَؤُلاَءِ الْخَمْسَةِ فَقَالَ لَيْسُوا بِثِقَةٍ فِي حَدِيثِهِمْ ‏.‏ وَسَأَلْتُهُ عَنْ رَجُلٍ آخَرَ نَسِيتُ اسْمَهُ فَقَالَ هَلْ رَأَيْتَهُ فِي كُتُبِي قُلْتُ لاَ ‏.‏ قَالَ لَوْ كَانَ ثِقَةً لَرَأَيْتَهُ فِي كُتُبِي ‏.‏ وَحَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ، حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ شُرَحْبِيلَ بْنِ سَعْدٍ، وَكَانَ، مُتَّهَمًا ‏.‏ وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُهْزَاذَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ الطَّالَقَانِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ ابْنَ الْمُبَارَكِ، يَقُولُ لَوْ خُيِّرْتُ بَيْنَ أَنْ أَدْخُلَ الْجَنَّةَ وَبَيْنَ أَنْ أَلْقَى عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مُحَرَّرٍ لاَخْتَرْتُ أَنْ أَلْقَاهُ ثُمَّ أَدْخُلَ الْجَنَّةَ فَلَمَّا رَأَيْتُهُ كَانَتْ بَعْرَةٌ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْهُ ‏.‏ وَحَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ، حَدَّثَنَا وَلِيدُ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو قَالَ زَيْدٌ يَعْنِي ابْنَ أَبِي أُنَيْسَةَ لاَ تَأْخُذُوا عَنْ أَخِي، ‏.‏ حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ السَّلاَمِ الْوَابِصِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الرَّقِّيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ كَانَ يَحْيَى بْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ كَذَّابًا ‏.‏ حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ ذُكِرَ فَرْقَدٌ عِنْدَ أَيُّوبَ فَقَالَ إِنَّ فَرْقَدًا لَيْسَ صَاحِبَ حَدِيثٍ ‏.‏ وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ بِشْرٍ الْعَبْدِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ الْقَطَّانَ، ذُكِرَ عِنْدَهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ اللَّيْثِيُّ فَضَعَّفَهُ جِدًّا ‏.‏ فَقِيلَ لِيَحْيَى أَضْعَفُ مِنْ يَعْقُوبَ بْنِ عَطَاءٍ قَالَ نَعَمْ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ مَا كُنْتُ أُرَى أَنَّ أَحَدًا يَرْوِي عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ ‏.‏

Chapter: That Which is Related to the Statements ‘The Chain of Narration is from the Religion’; ‘Transmissions are not Taken Except from Trustworthy Narrators’; and ‘Criticism of the Narrators With What is Permissible Regarding Them, Even Obligatory and That It is not the Prohibited Kind of Backbiting, Rather it is the Defense of the Noble Sharī’ah’


Amr bin Alī and Hasan al-Hulwānī narrated to me, both of them on authority of Affān bin Muslim, he said: ‘We were near Ismā’īl bin Ulayyah, and a man narrated on authority of another man, so I said: ‘Indeed this is not reliable (Thabt)’. So the man said: ‘Are you backbiting him?’ Ismā’īl said: ‘He is not backbiting him; rather he is judging him unreliable’. Abū Ja’far ad-Dārimī narrated to us, Bishr bin Umar narrated to us, he said: ‘I asked Mālik bin Anas about Muhammad bin Abd ar-Rahman who transmits on authority of Sa’īd bin al-Musayyib, so he said: ‘He is not trustworthy ‘. I asked him about Sālih, a freed slave of at-Taw’amah, then he said: ‘He is not trustworthy’. I asked him about Abūl-Huwayrith , and he said: ‘He is not trustworthy’. I asked him about Shu’bah on whose authority Ibn Abī Dhi’b transmitted, and he said: ‘He is not trustworthy’. I asked him about Harām bin Uthmān , and he said ‘He is not trustworthy’. I asked Mālik about these five and he said: ‘They are not trustworthy in terms of their Ḥadīth’. I asked him about another man whose name I forget just now, and he said: ‘Did you see him in my book?’ I said: ‘No’. [Then] he said: ‘If he was trustworthy you would see him in my book’. Al-Faḍl bin Sahl narrated to me, he said: ‘Yahyā bin Ma’īn narrated to me, Hajjāj narrated to us, Ibn Abī Dhi’b narrated to us on authority of Shurahbīl bin Sa’d , and he was imputed [with lying regarding Ḥadīth near the end of his life]’. Muhammad bin Abd Allah bin Quhzādh narrated to me, he said, I heard Abū Ishāq at-Tālqānī saying, I heard Ibn al-Mubārak saying: ‘If I had to choose between entering Paradise and meeting Abd Allah bin Muharrar, I would have chosen to meet him, then enter Paradise. Then when I saw him, dung was more preferred to me than him’. Al-Faḍl bin Sahl narrated to me, Walīd bin Sālih narrated to us, he said, Ubayd Allah bin Amr said, Zayd- meaning Ibn Abī Unaysah – said: ‘Do not take [Ḥadīth] from my brother ’. Ahmad bin Ibrāhīm ad-Dawraqī narrated to me, he said, Abd us-Salām al-Wābisī narrated to me, he said, Abd Allah bin Ja’far ar-Raqqī narrated to me, on authority of Ubayd Allah bin Amr, he said: ‘Yahyā bin Abī Unaysah was a liar’. Ahmad bin Ibrāhīm narrated to me, he said, Sulaymān bin Harb narrated to me, on authority of Hammād bin Zayd, he said, Farqad was mentioned near Ayyūb, so he said: ‘Indeed Farqad is not a companion of Ḥadīth’. Abd ur-Rahman bin Bishr al-Abdī narrated to me, he said, I heard Muhammad bin Abd Allah bin Ubayd bin Umayr al-Laythī was mentioned near Yahyā bin Sa’īd al-Qattān, so he weakened him severely. Then it was said to Yahyā: ‘More weak than Ya’qūb bin Atā ’?’ He said: ‘Yes’. Then he said: ‘I did not see anyone transmitting on authority of Muhammad bin Abd Allah bin Ubayd bin Umayr’.