পরিচ্ছেদঃ ৬. নামায হইতে নিদ্রায় থাকা
রেওয়ায়ত ২৫. সাঈদ ইবন মুসায়্যাব (রহঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বর হইতে প্রত্যাবর্তন করার সময় রাত্রিবেলা পথ চলিলেন; যখন রাত্রির শেষ সময় হইল তিনি (নিদ্রার জন্য) অবতরণ করিলেন এবং বিলাল (রাঃ)-কে বলিলেনঃ তুমি প্রত্যুষের প্রতি লক্ষ রাখ (ভোর হইলে আমাদিগকে জাগাইয়া দিবে)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাহার সাহাবীগণ ঘুমাইয়া পড়িলেন। বিলাল (রাঃ) যথাসাধ্য লক্ষ রাখিতে লাগিলেন। অতঃপর উটের হাওদার সাথে ঠেস দিয়া ভোরের আলোর উদয়ের স্থানকে সম্মুখে রাখিয়া বসিলেন। হঠাৎ তাহার উপর নিদ্রা ভর করিল। এই অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল এবং কাফিলার অন্য কেউ জাগ্রত হইলেন না যতক্ষণ না সূর্যকিরণ তাহাদের উপর পতিত হইল।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘাবড়াইলেন; তারপর বলিলেনঃ বিলাল! ইহা কি? বিলাল বলিলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনাকে যিনি ঘুম পাড়াইয়াছেন তিনি আমাকেও ঘুম পাড়াইয়াছেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ তোমরা উট চালিত কর (এবং স্থানান্তরিত হও)। তাহারা উটগুলিকে উঠাইলেন এবং কিছুদূর চলিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে নির্দেশ দিলেন (ইকামত বলার জন্য)। তিনি ইকামত বলিলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে ফজরের নামায পড়াইলেন। নামায সমাপ্ত করার পর তিনি বলিলেনঃ যে নামাযকে ভুলিয়া যায় (অর্থাৎ নামায হইতে গাফিল হয় নিদ্রা অথবা ভুলের দরুন) নামাযের কথা স্মরণ হইলে পর সে উহা পড়িয়া নিবে। কারণ আল্লাহ্ তাআলা বলিয়াছেনঃ (أَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي) “আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।”
بَاب النَّوْمِ عَنْ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنِي يَحْيَى، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ خَيْبَرَ أَسْرَى حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلاَلٍ " اكْلأْلَنَا الصُّبْحَ " . وَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ وَكَلأَ بِلاَلٌ مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ اسْتَنَدَ إِلَى رَاحِلَتِهِ وَهُوَ مُقَابِلُ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ بِلاَلٌ وَلاَ أَحَدٌ مِنَ الرَّكْبِ حَتَّى ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَفَزِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ بِلاَلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اقْتَادُوا " . فَبَعَثُوا رَوَاحِلَهُمْ وَاقْتَادُوا شَيْئًا ثُمَّ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِلاَلاً فَأَقَامَ الصَّلاَةَ فَصَلَّى بِهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصُّبْحَ ثُمَّ قَالَ حِينَ قَضَى الصَّلاَةَ " مَنْ نَسِيَ الصَّلاَةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ (أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي ) " .
Yahya related to me from Malik from Ibn Shihab from Said ibn al- Musayyab that the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, travelled by night on the way back from Khaybar.Towards the end of the night he stopped for a rest and told Bilal to stay awake to keep watch for the subh prayer. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, and his companions slept. Bilal stayed on guard as long as was decreed for him and then he leant against his riding camel facing the direction of the dawn and sleep overcame him and neither he nor the Messenger of Allah nor any of the party woke up until the sun's rays had struck them. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, was alarmed. Bilal excused himself, saying, "Messenger of Allah! The One who took your self was the One who took myself. "The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, ordered the party to move on and so they roused thei r mounts and rode on a short distance. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, ordered Bilal to give the iqama and then led them in the subh prayer. When he had finished he said, "Anyone who forgets a prayer should pray it when he remembers. Allah theBlessed and Exalted says in His book, 'Establish the prayer to remember Me.'"
পরিচ্ছেদঃ ৬. নামায হইতে নিদ্রায় থাকা
রেওয়ায়ত ২৬. যায়দ ইবন আসলাম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, মক্কার পথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার বিশ্রাম গ্রহণের জন্য) রাত্রিতে অবতরণ করিলেন এবং বিলালকে নামাযের জন্য জাগাইয়া দেওয়ার দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। তারপর বিলাল ঘুমাইলেন এবং অন্য সকলেও ঘুমাইলেন। এমন কি তাহারা জাগিলেন সূর্য ওঠার পর। হতচকিত অবস্থায় দলের লোকজন জাগ্রত হইলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে সওয়ার হওয়ার এবং সেই উপত্যকা হইতে বাহিরে চলিয়া যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। আর তিনি বলিলেনঃ এই উপত্যকায় অবশ্যই শয়তান রহিয়াছে। তারপর তাহারা সওয়ার হইলেন এবং সেই উপত্যক হইতে বাহির হইয়া গেলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে অবতরণ এবং ওযু করার নির্দেশ দিলেন। আর বিলালকে নামাযের জন্য আযান অথবা ইকামত বলার হুকুম করিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনকে নামায পড়াইলেন। তারপর তাঁহাদের দিকে মুখ ফিরাইলেন এবং তাঁহাদের ঘাবড়ানোর অবস্থা অনুধাবন করিলেন।
তখন তিনি বলিলেনঃ হে লোকসমাজ! আল্লাহ আমাদের আত্মাসমূহকে কাবু করিয়াছিলেন, আর তিনি যদি ইচ্ছা করিতেন এই সময় ব্যতীত ভিন্ন সময়ে আত্মাসমূহকে আমাদের নিকট ফেরত দিতে পারিতেন। যদি তোমাদের কেউ নামায হইতে ঘুমাইয়া পড় অথবা উহাকে ভুলিয়া যাও, অতঃপর হঠাৎ নামাযের কথা স্মরণ হয়, তবে সেই নামাযকে উহার নির্ধারিত সময়ে যেইরূপে পড়িতে সেইভাবে পড়িবে। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর (রাঃ)-এর দিকে দৃষ্টি করিলেন। তারপর বলিলেনঃ বিলাল যখন দাঁড়াইয়া নামায পড়িতেছিল তখন তাহার কাছে শয়তান আসিল এবং তাহাকে ঠেস দেওয়াইয়া বসাইল এবং শিশুকে যেভাবে (থাপি দিয়া) শান্ত করা হয় ও ঘুম পাড়ানো হয় সেইভাবে তাহার সঙ্গে বারবার করিতে থাকিল। এমন কি (শেষ পর্যন্ত) বিলাল ঘুমাইয়া পড়িল।
তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে আহবান করিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর (রাঃ)-কে যেরূপ বলিয়াছিলেন বিলালও অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করিলেন। ইহা শুনিয়া আবু বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূল।
بَاب النَّوْمِ عَنْ الصَّلَاةِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّهُ قَالَ عَرَّسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً بِطَرِيقِ مَكَّةَ وَوَكَّلَ بِلاَلاً أَنْ يُوقِظَهُمْ لِلصَّلاَةِ فَرَقَدَ بِلاَلٌ وَرَقَدُوا حَتَّى اسْتَيْقَظُوا وَقَدْ طَلَعَتْ عَلَيْهِمُ الشَّمْسُ فَاسْتَيْقَظَ الْقَوْمُ وَقَدْ فَزِعُوا فَأَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَرْكَبُوا حَتَّى يَخْرُجُوا مِنْ ذَلِكَ الْوَادِي وَقَالَ " إِنَّ هَذَا وَادٍ بِهِ شَيْطَانٌ " . فَرَكِبُوا حَتَّى خَرَجُوا مِنْ ذَلِكَ الْوَادِي ثُمَّ أَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَنْزِلُوا وَأَنْ يَتَوَضَّئُوا وَأَمَرَ بِلاَلاً أَنْ يُنَادِيَ بِالصَّلاَةِ أَوْ يُقِيمَ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّاسِ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَيْهِمْ وَقَدْ رَأَى مِنْ فَزَعِهِمْ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ قَبَضَ أَرْوَاحَنَا وَلَوْ شَاءَ لَرَدَّهَا إِلَيْنَا فِي حِينٍ غَيْرِ هَذَا فَإِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ نَسِيَهَا ثُمَّ فَزِعَ إِلَيْهَا فَلْيُصَلِّهَا كَمَا كَانَ يُصَلِّيهَا فِي وَقْتِهَا " . ثُمَّ الْتَفَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ " إِنَّ الشَّيْطَانَ أَتَى بِلاَلاً وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي فَأَضْجَعَهُ فَلَمْ يَزَلْ يُهَدِّئُهُ كَمَا يُهَدَّأُ الصَّبِيُّ حَتَّى نَامَ " . ثُمَّ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِلاَلاً فَأَخْبَرَ بِلاَلٌ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ الَّذِي أَخْبَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا بَكْرٍ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ .
Yahya related to me from Malik that Zayd ibn Aslam said, "The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, stopped for a rest one night on the way to Makka and appointed Bilal to wake them up for the prayer. Bilal slept and everyone else slept and none of them woke up until the sun had risen. When they did wake up they were all alarmed. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, ordered them to ride out of the valley, saying that there was a shaytan in it. So they rode out of the valley and the Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, ordered them to dismount and do wudu and he told Bilal either to call the prayer or to give the iqama. The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, then led them in the prayer. Noticing their uneasiness, he went to them and said, 'O people! Allah seized our spirits (arwah) and if He had wished He would have returned them to us at a time other than this. So if you sleep through the time for a prayer or forget it and then are anxious about it, pray it as if you were praying it in its time.' The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, turned to Abu Bakr and said, 'Shaytan came to Bilal when he was standing in prayer and made him lie down and lulled him to sleep like a small boy.' The Messenger of Allah, may Allah bless him and grant him peace, then called Bilal and told him the same as he had told Abu Bakr. Abu Bakr declared, 'I bear witness that you are the Messenger of Allah.' "