পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৩৮) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আরাফাতে ভাষণ দিচ্ছিলেন। অতঃপর যখন সূর্য পাহাড়ের মাথায় এসে অস্তের কাছাকাছি হল, তখন তিনি বললেন,
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَمْ يَبْقَ مِنْ دُنْيَاكُمْ فِيمَا مَضَى مِنْهَا إِلَّا كَمَا بَقِيَ مِنْ يَوْمِكُمْ هٰذَا فِيمَا مَضَى مِنْهُ
হে লোক সকল! দুনিয়ার সময় যতটুকু পার হয়ে গেছে, তার মোকাবেলায় কেবল ততটুকু অবশিষ্ট আছে, তোমাদের আজকের দিনের সময় পার হওয়ার মোকাবেলায় যতটুকু অবশিষ্ট আছে।
-
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৩৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন আছে! ততক্ষণ পর্যন্ত দুনিয়া বিনাশ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন ব্যক্তি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে উক্ত কবরের উপর গড়াগড়ি দেবে আর বলবে, ’হায়! হায়! যদি আমি এই কবরবাসীর স্থানে হতাম!’ এরূপ উক্তি সে দ্বীন রক্ষার মানসে বলবে না। বরং তা বলবে পার্থিব বালা-মুসীবতে অতিষ্ঠ হওয়ার কারণে।
وَعَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتّٰـى يَمُرَّ الرَّجُلُ عَلَى القَبْرِ فَيَتَمَرَّغَ عَلَيْهِ وَيَقُولُ : يَالَيْتَنِي كُنْتُ مَكَانَ صَاحِبِ هٰذَا القَبْرِ وَلَيْسَ بِهِ الدِّينُ مَا بِهِ إِلاَّ البَلاَءُ
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪০) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ততদিন পর্যন্ত মহাপ্রলয় সংঘটিত হবে না, যতদিন পর্যন্ত ফুরাত নদী (তার গর্ভস্থ) একটি সোনার পাহাড় বের না ক’রে দেবে; যা নিয়ে যুদ্ধ চলবে। তাতে নিরানব্বই শতাংশ মানুষ নিহত হবে! তাদের প্রত্যেকেই বলবে যে, ’সম্ভবতঃ আমি বেঁচে যাব।
অন্য এক বর্ণনায় আছে, অদূর ভবিষ্যতে ফুরাত নদী তার গর্ভস্থ স্বর্ণের খনি বের ক’রে দেবে। সুতরাং সে সময় যে সেখানে উপস্থিত হবে, সে যেন তা থেকে কিছুই গ্রহণ না করে।
وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتّٰـى يَحْسِرَ الفُرَاتُ عَنْ جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ يُقْتَتَلُ عَلَيْهِ فَيُقْتَلُ مِنْ كُلِّ مِئَةٍ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ فَيَقُولُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْهُمْ : لَعَلِّي أَنْ أَكُونَ أَنَا أَنْجُو وَفي رواية يُوشِكُ أَنْ يَحْسِرَ الفُرَاتُ عَنْ كَنْزٍ مِنْ ذَهَبٍ فَمَنْ حَضَرَهُ فَلاَ يَأخُذْ مِنْهُ شَيْئاً متفق عليه
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪১) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মদীনার অবস্থা উত্তম থাকা সত্ত্বেও তার অধিবাসীরা মদীনা ত্যাগ করে চলে যাবে। (সে সময়) সেখানে কেবল বন্য হিংস্র পশু-পক্ষীতে ভরে যাবে। সব শেষে যাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হবে, তারা মুযাইনাহ গোত্রীয় দু’জন রাখাল, যারা নিজেদের ছাগলের পাল হাঁকাতে হাঁকাতে মদীনা অভিমুখে নিয়ে যাবে। তারা মদীনাকে হিংস্র জীব-জন্তুতে ঠাসা অবস্থায় পাবে। তারপর যখন তারা (মদীনার উপকণ্ঠে অবস্থিত) ’সানিয়্যাতুল্ অদা’ নামক স্থানে পৌঁছবে, তখন তারা মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যাবে।
وَعَنْهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ يَتْرُكُونَ المَدِينَةَ عَلَى خَيْرِ مَا كَانَتْ لاَ يَغْشَاهَا إِلاَّ العَوَافِي يُرِيدُ ـ عَوَافِي السِّبَاعِ وَالطَّيرِ ـ وَآخِرُ مَنْ يُحْشَرُ رَاعِيَانِ مِنْ مُزَيْنَةَ يُرِيدَانِ المَدِينَةَ يَنْعِقَانِ بِغَنَمِهِمَا فَيَجِدَانِهَا وُحُوشاً حَتّٰـى إِذَا بَلَغَا ثَنِيَّةَ الوَدَاعِ خَرَّا عَلَى وُجُوهِهمَا متفق عليه
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪২) মিরদাস আসলামী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সৎ লোকেরা একের পর এক (ক্রমান্বয়ে) মৃত্যুবরণ করবে। আর অবশিষ্ট লোকেরা নিকৃষ্ট মানের যব অথবা খেজুরের মত পড়ে থাকবে। আল্লাহ তাআলা এদের প্রতি আদৌ ভ্রূক্ষেপ করবেন না।
وَعَنْ مِردَاسٍ الأَسلَمِيِّ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ يَذْهَبُ الصَّالِحُونَ الأَوَّلُ فَالأَوَّلُ وَيَبْقَى حُثَالَةٌ كَحُثَالَةِ الشَّعِيرِ أَوِ التَّمْرِ لاَ يُبَالِيهُمُ اللهُ بَالَةً رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৩) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শেষ যুগে তোমাদের একজন খলীফা হবে, যে দু’ হাতে করে ধন-সম্পদ দান করবে এবং গুনবেও না।
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ يَكُونُ خَلِيفَةٌ مِنْ خُلَفَائِكُمْ فِي آخِرِ الزَّمَانِ يَحْثُو المَالَ وَلاَ يَعُدُّهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৪) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লোকেদের উপর এমন একটি সময় অবশ্যই আসবে, যখন মানুষ সোনার যাকাত নিয়ে ঘোরাঘুরি করবে; কিন্তু সে এমন কাউকে পাবে না যে, তার নিকট হতে তা গ্রহণ করবে। আর দেখা যাবে যে, পুরুষের সংখ্যা কম ও মহিলার সংখ্যা বেশী হওয়ার দরুন একটি পুরুষের দায়িত্বে চল্লিশজন মহিলা হবে, যারা তার আশ্রিতা হয়ে থাকবে। (বুখারী ১৪১৪, মুসলিম ২৩৮৫)
وَعَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ لَيَأتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَطُوفُ الرَّجُلُ فِيهِ بِالصَّدَقَةِ مِنَ الذَّهَبِ فَلاَ يَجِدُ أَحَداً يَأخُذُهَا مِنهُ وَيُرَى الرَّجُلُ الوَاحِدُ يَتْبَعُهُ أَرْبَعُونَ امْرَأَةً يَلُذْنَ بِهِ مِنْ قِلَّةِ الرِّجَالِ وَكَثْرَةِ النِّسَاءِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৫) একদা আমর বিন আস (রাঃ) এর সামনে মুস্তাওরিদ কুবরাশী বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ’’কিয়ামত সংঘটিত হবার সময় রোমান (ইউরোপীয়) দের সংখ্যা বেশী হবে।’’ আমর (রাঃ) মুস্তাওরিদকে বললেন, ’কী বলছেন খেয়াল ক’রে দেখুন!’ তিনি বললেন, ’আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, তা বলতে আমার বাধা কিসের?’ তখন আমর (রাঃ) বললেন, ’যদি তা সত্য হয়, তাহলে তা রোমানদের ৪টি স্বভাব-গুণের কারণে হবে। প্রথমতঃ ফিতনার সময়ে সকল মানুষের চেয়ে ওরাই বেশী সহ্যশীল। দ্বিতীয়তঃ বিপদের পর ওরাই অধিক শীঘ্র নিজেদেরকে সামলে নিতে পারে। (আর এইভাবে ৪টি স্বভাব তিনি উল্লেখ করলেন এবং আরো একটি অধিক বললেন।)
قَالَ الْمُسْتَوْرِدُ الْقُرَشِىُّ عِنْدَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ تَقُومُ السَّاعَةُ وَالرُّومُ أَكْثَرُ النَّاسِ فَقَالَ لَهُ عَمْرٌو أَبْصِرْ مَا تَقُولُ قَالَ أَقُولُ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ لَئِنْ قُلْتَ ذٰلِكَ إِنَّ فِيهِمْ لَخِصَالاً أَرْبَعًا إِنَّهُمْ لأَحْلَمُ النَّاسِ عِنْدَ فِتْنَةٍ وَأَسْرَعُهُمْ إِفَاقَةً بَعْدَ مُصِيبَةٍ
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যাঁর হাতে আমার জীবন আছে সেই সত্তার কসম! অবশ্যই এমন এক দিন আসবে, যেদিন তোমাদের মধ্যে ঈসা ইবনে মারয়্যাম একজন ন্যায়পরায়ণ শাসকরূপে অবতরণ করবেন, ক্রুশ ভেঙ্গে চুরমার করবেন, শূকর নিধন করবেন, জিযিয়া কর বাতিল করবেন, মাল-সম্পদ এত বেশী হবে যে, (দান বা সাদকা) গ্রহণ করার মত লোক থাকবে না। সেই সময় একটি সিজদাহ্ দুনিয়া এবং তার মধ্যে যা কিছু রয়েছে তার থেকেও উত্তম হবে। (অর্থাৎ, কিয়ামত নিকটে জানার কারণে ইবাদত মানুষের কাছে অতি প্রিয় হবে।) এ হাদীস বর্ণনার পর আবু হুরাইরাহ (রাঃ) বললেন, তোমরা ইচ্ছা করলে, ক্বুরআন কারীমের এ আয়াত পাঠ করতে পার,(وَإِنْ مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ إِلاَّ لَيُؤْمِنَنَّ بِهِ قَبْلَ مَوْتِهِ) অর্থাৎ, আহলে কিতাবদের মধ্যে প্রত্যেকে নিজ মৃত্যুর পূর্বে অবশ্যই তাঁর প্রতি ঈমান আনবে। (বুখারীঃ কিতাবুল আম্বিয়া, ৩৪৪৮, সূরা নিসা-৪ : ১৫৯)
عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمْ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا عَدْلًا فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعَ الْجِزْيَةَ وَيَفِيضَ الْمَالُ حَتّٰـى لَا يَقْبَلَهُ أَحَدٌ حَتّٰـى تَكُونَ السَّجْدَةُ الْوَاحِدَةُ خَيْرًا مِنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ثُمَّ يَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ وَإِنْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ إِلَّا لَيُؤْمِنَنَّ بِهِ قَبْلَ مَوْتِهِ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكُونُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৭)হুযাইফা বিন য়্যামান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না দুনিয়ার ব্যাপারে সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি হবে অপদার্থ ব্যক্তি।
عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتّٰـى يَكُونَ أَسْعَدَ النَّاسِ بِالدُّنْيَا لُكَعُ بْنُ لُكَعٍ
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মসজিদে) লোকেদের নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ইতোমধ্যে এক বেদুঈন এসে প্রশ্ন করল, ’কিয়ামত কখন হবে?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্ণপাত না ক’রে আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বলল যে, ’তার কথা তিনি শুনেছেন এবং তার কথা তিনি অপছন্দ করেছেন।’ কেউ কেউ বলল, ’বরং তিনি শুনতে পাননি।’ অতঃপর তিনি যখন কথা শেষ করলেন, তখন বললেন, কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, ’ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই যে, আমি।’ তিনি বললেন, যখন আমানত নষ্ট করা হবে, তখন তুমি কিয়ামতের প্রতীক্ষা করো। সে বলল, ’কিভাবে আমানত বিনষ্ট হবে?’ তিনি বললেন, ’’অনুপযুক্ত লোকের প্রতি যখন নেতৃত্ব সমর্পণ করা হবে, তখন তুমি কিয়ামতের প্রতীক্ষা করো।
وَعَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ : بَيْنَمَا النَّبِيُّ ﷺ فِي مَجْلِسٍ يُحَدِّثُ القَومَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ : مَتَى السَّاعَةُ ؟ فَمَضَى رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُحَدِّثُ فَقَالَ بَعْضُ القَومِ : سَمِعَ مَا قَالَ فَكَرِهَ مَا قَالَ وَقَالَ بَعْضُهُمْ : بَلْ لَمْ يَسْمَعْ حَتّٰـى إِذَا قَضَى حَدِيثَهُ قَالَ : أَيْنَ السَّائِلُ عَنِ السَّاعَةِ ؟ قَالَ : هَا أَنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ إِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ قَالَ : كَيفَ إِضَاعَتُهَا ؟ قَالَ إِذَا وُسِّدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৪৯) হুযাইফা ইবনে আসীদ আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা (দ্বীনী) আলোচনা করছিলাম। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কী নিয়ে আলোচনা করছ? জবাবে তাঁরা বললেন, ’আমরা কিয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত কায়েম হবে না যতক্ষণ না তোমরা দশটি বিশেষ নিদর্শন দেখবে। অতঃপর তিনি ধোঁয়া, দাজ্জাল, (বিশেষ) জন্তু, পশ্চিম দিগন্ত হতে সূর্য উদিত হওয়া, মারইয়াম তনয় ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ, ইয়াজূজ মা’জূজ এবং তিনবার ভূমি ধসে যাওয়া তথা পূর্ব প্রান্তে ভূমি ধস, পশ্চিম প্রান্তে ভূমি ধস এবং আরব উপদ্বীপে ভূমি ধসের কথা উল্লেখ করলেন। সর্বশেষে ইয়ামান থেকে একটি অগ্নি প্রকাশিত হবে, যা মানুষকে হাঁকিয়ে হাশর প্রান্তরের দিকে নিয়ে যাবে।
عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ الْغِفَارِىِّ قَالَ اطَّلَعَ النَّبِىُّ ﷺ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ فَقَالَ مَا تَذَاكَرُونَ قَالُوا نَذْكُرُ السَّاعَةَ قَالَ إِنَّهَا لَنْ تَقُومَ حَتّٰـى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَ الدُّخَانَ وَالدَّجَّالَ وَالدَّابَّةَ وَطُلُوعَ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَنُزُولَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ﷺ وَيَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَثَلاَثَةَ خُسُوفٍ خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَآخِرُ ذٰلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَى مَحْشَرِهِمْ
পরিচ্ছেদঃ কিয়ামতের কতিপয় লক্ষণ
(৩৮৫০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (কিয়ামতের পূর্বে) শিঙ্গায় দু’বার ফুৎকার দেওয়ার মধ্যবর্তী ব্যবধান হবে চল্লিশ। লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ’হে আবূ হুরাইরা! চল্লিশ দিন?’ তিনি বললেন, ’উঁহুঁ।’ তারা প্রশ্ন করল, ’তবে কি চল্লিশ বছর?’ তিনি বললেন, ’উঁহুঁ।’ তারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করল, ’তাহলে কি চল্লিশ মাস?’ তিনি বললেন, ’উঁহুঁ।’ মেরুদণ্ডের নিম্নভাগের অস্থি ব্যতীত মানবদেহের সমস্ত হাড় পচে যাবে। তারপর উক্ত অস্থি থেকে মানুষকে পুনর্গঠিত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, যার ফলে শাক-সবজি গজিয়ে উঠার মত মানুষ গজিয়ে উঠবে।
وَعَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ بَيْنَ النَّفْخَتَيْنِ أَرْبَعُونَ قَالُوا : يَا أَبَا هُرَيرَةَ أَرْبَعُونَ يَوْماً ؟ قالَ : أبَيْتُ قَالُوا : أَرْبَعُونَ سَنَةً ؟ قَالَ : أبَيْتُ قَالُوا : أَرْبَعُونَ شَهْراً ؟ قَالَ : أَبَيْتُ وَيَبْلَى كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الإِنْسَانٍ إِلاَّ عَجْبَ الذَّنَبِ، فِيهِ يُرَكَّبُ الخَلْقُ ثُمَّ يُنَزِّلُ اللهُ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَيَنْبُتُونَ كَمَا يَنْبُتُ البَقْلُ متفق عليه