পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৪) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় (নামাযের) রুকূ ও সিজদাতে এই তাসবীহটি অধিক মাত্রায় পড়তেন, ’সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা অবিহামদিক, আল্লাহুম্মাগফিরলী।’ অর্থাৎ, হে আমাদের প্রভু আল্লাহ! তোমার প্রশংসা সহকারে তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা কর।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ ﷺ يُكْثِرُ أَنْ يَّقُوْلَ فِيْ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّنَا وَبِـحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِـيْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৫)উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় (নামাযের) রুকু ও সিজদাতে পড়তেন, ’সুব্বূহুন ক্বুদ্দূসুন রাব্বুল মালা-ইকাতি অররূহ।’ অর্থাৎ, অতি নিরঞ্জন, অসীম পবিত্র ফিরিশতামণ্ডলী ও জিবরীল (আঃ)-এর প্রভু (আল্লাহ)।
وَعَنهُا : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ يَقُولُ فِيْ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ سبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوْحِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রুকুতে তোমরা রবের বড়াই বর্ণনা কর (অর্থাৎ, ’সুবহানা রাব্বিয়্যাল আযীম’ পড়)। আর সিজদায় দু’আ করতে সচেষ্ট হও। কারণ, তোমাদের জন্য সে দু’আ কবূল হওয়ার উপযুক্ত।
وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ فَأَمَّا الرُّكُوعُ فَعَظِّمُوا فِيهِ الرَّبَّ - عَزَّ وَجَلَّ - وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي الدُّعَاءِ فَقَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বান্দা স্বীয় প্রভুর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয় তখন, যখন সে সাজদার অবস্থায় হয়। সুতরাং (ঐ সময়) তোমরা বেশি মাত্রায় দু’আ কর।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ أَقْرَبُ مَا يَكُوْنُ العَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৮) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদা করার সময় এই দু’আ পড়তেন, ’আল্লা-হুম্মাগফিরলী যামবী কুল্লাহ, দিক্ক্বাহু অজিল্লাহ, অআউওয়ালাহু অ আ-খিরাহ, অ আলা-নিয়্যাতাহু অসিররাহ।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমার কম ও বেশী, পূর্বের ও পরের, প্রকাশিত ও গুপ্ত সকল প্রকার পাপকে মাফ করে দাও।
وَعَنهُ : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ يَقُوْلُ فِيْ سُجُوْدِهِ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذَنْبِيْ كُلَّهُ : دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلَانِيَتَهُ وَسِرَّهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৪৯) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (বিছানায়) নিখোঁজ পেলাম। কাজেই আমি হাতড়াতে হাতড়াতে তাকে রুকু বা সিজদার অবস্থায় পেলাম। তিনি তাতে পড়ছিলেন, ’সুবহানাকা অবিহামদিকা লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা।’ অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি তাঁর নামাযের স্থানে (সিজদায়) ছিলেন। তাঁর দু’টি পায়ের চেটোয় আমার হাত পড়ল। তাঁর পায়ের পাতা দুটো খাড়া ছিল এবং তিনি এই দু’আ পড়ছিলেন, ’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিরিযা-কা মিন সাখাত্বিক, অবিমুআফা-তিকা মিন উক্বূবাতিক, অ আঊযু বিকা মিনকা লা উহস্বী সানা-আন আলাইকা আনতা কামা আসনাইতা আলা নাফসিক্।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার সন্তুষ্টির অসীলায় তোমার ক্রোধ থেকে, তোমার ক্ষমাশীলতার অসীলায় তোমার শাস্তি থেকে এবং তোমার সত্তার অসীলায় তোমার আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার উপর তোমার প্রশংসা গুনে শেষ করতে পারি না, যেমন তুমি নিজের প্রশংসা নিজে করেছ।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ : افْتَقَدْتُ النَّبيَّ ﷺ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَتَحَسَّسْتُ فَإِذَا هُوَ رَاكِعٌ أَوْ سَاجِدٌ يَقُولُ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ أَنتَ
وَفِي رِوَايَةٍ : فَوَقَعَتْ يَدِيْ عَلَى بَطْنِ قَدَمَيْهِ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ وَهُمَا مَنْصُوبَتَانِ وَهُوَ يَقُولُ اَللّٰهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ، لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫০) সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযসমূহের শেষাংশে এই দু’আ পড়ে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন, ’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল বুখলি অ আঊযু বিকা মিনাল জুবনি অ আঊযু বিকা মিন আন উরাদ্দা ইলা আরযালিল উমুরি অ আঊযু বিকা মিন ফিতনাতিদ্দুনয়্যা অ আঊযু বিকা মিন ফিতনাতিল ক্বাবর।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট কার্পণ্য ও ভীরুতা থেকে পানাহ চাচ্ছি, স্থবিরতার বয়সে কবলিত হওয়া থেকে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি আর দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের ফিতনা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।
وَعَنْ سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ يَتَعَوَّذُ دُبُرَ الصَّلَواتِ بِهؤُلاَءِ الكَلِمَاتِ اَللّٰهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الجُبْنِ وَالبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ العُمُرِ وَأعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ القَبْرِ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫১) মুআয (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত ধরে বললেন, হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ’’হে মুআয! আমি তোমাকে অসিয়ত করছি যে, তুমি প্রত্যেক নামাযের শেষাংশে এ দু’আটি পড়া অবশ্যই ত্যাগ করবে না,
’আল্লা-হুম্মা আইন্নী আলা যিকরিকা অশুকরিকা অহুসনি ইবা-দাতিক।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকর (স্মরণ), শোকর (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য দান কর।
وَعَنْ مُعَاذٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ أَخَذَ بِيَدِهِ وَقَالَ يَا مُعَاذُ وَاللهِ إنِّي لأُحِبُّكَ فَقَالَ أُوصِيكَ يَا مُعَاذُ لاَ تَدَعَنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَة تَقُولُ : اَللّٰهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ رواه أَبُو داود بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যখন তোমাদের কেউ (নামাযের মধ্যে) তাশাহহুদ (অর্থাৎ, আত্-তাহিয়্যাত) পড়বে, তখন সে এ চারটি জিনিস হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে; বলবে,
’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন আযা-বি জাহান্নাম, অমিন আযা-বিল ক্বাবর, অমিন ফিতনাতিল মাহয়্যা অলমামা-ত, অমিন শাররি ফিতনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-ল।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি জাহান্নাম ও কবরের আযাব থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং কানা দাজ্জালের ফিতনার অনিষ্ট থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا تَشَهَّدَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْتَعِذْ بِاللهِ مِنْ أَرْبَعٍ يَقُولُ : اَللّٰهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ القَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ المَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ المَسِيحِ الدَّجَّالِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৩) আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামাযের জন্য দণ্ডায়মান হতেন, তখন তাশাহহুদ ও সালাম ফিরার মধ্যখানে শেষ বেলায় অর্থাৎ সালাম ফিরবার আগে) এই দু’আ পড়তেন, আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা-ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু অমা আসরারতু অমা আ’লানতু অমা আসরাফতু অমা আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী, আন্তাল মুক্বাদ্দিমু অ আন্তাল মুআখখিরু লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মার্জনা কর, যে অপরাধ আমি পূর্বে করেছি এবং যা পরে করেছি, যা গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি, যা অতিরিক্ত করেছি এবং যা তুমি আমার চাইতে অধিক জান। তুমি আদি, তুমিই অন্ত। তুমি ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই।
وَعَنْ عَليٍّ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ يَكُونُ مِنْ آخِرِ مَا يَقُولُ بَيْنَ التَّشَهُّدِ وَالتَّسْلِيمِ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ المُؤَخِّرُ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ أَنْتَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৪) সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামায থেকে সালাম ফিরার পর ঘুরে বসতেন, তখন তিনবার ’ইস্তিগফার’ (ক্ষমা প্রার্থনা) করতেন আর পড়তেন, ’আল্লাহুম্মা আন্তাস সালামু অমিনকাস সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল-জালালি অল-ইকরাম। অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি শান্তিময়, তোমার নিকট থেকেই শান্তি আসে। তুমি বরকতময় হে মহিমান্বিত ও মহানুভব।
এ হাদীসটির অন্যতম বর্ণনাকারী আওযায়ী (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হল, ’ইস্তিগফার’ কীভাবে হবে? উত্তরে তিনি বললেন, বলবে, ’আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।’ (অর্থাৎ, আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।)
وَعَنْ ثَوبَانَ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا انْصَرَفَ مِنْ صَلاَتِهِ اسْتَغْفَرَ ثَلاثَاً وَقَالَ اَللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ قِيلَ لِلأَوْزَاعِيِّ وَهُوَ أَحَدُ رُوَاةِ الحَدِيثِ : كَيْفَ الاِسْتِغْفَارُ ؟ قَالَ : يَقُولُ : أَسْتَغْفِرُ الله أَسْتَغْفِرُ الله رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৫) মুগীরাহ বিন শু’বাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামাযান্তে সালাম ফিরতেন, তখন এই দু’আ পড়তেনঃ
’লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লা-হুম্মা লা মা-নিয়া লিমা আ’ত্বাইতা, অলা মু’ত্বিয়া লিমা মানা’তা অলা য়্যানফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ্।’
অর্থাৎ, এক অদ্বিতীয় আল্লাহ ব্যতীত আর কোন সত্য উপাস্য নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। (বিশাল) রাজ্যের তিনিই সার্বভৌম অধিপতি। তাঁরই যাবতীয় স্ত্ততিমালা এবং সমস্ত বস্তুর উপর তিনি ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা রোধ করার এবং যা রোধ কর তা দান করার সাধ্য কারো নেই। আর ধনবানের ধন তোমার আযাব থেকে মুক্তি পেতে কোন উপকারে আসবে না।
وَعَنِ المُغِيرَةِ بنِ شُعبَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ كَانَ إِذَا فَرَغَ مِنَ الصَّلاَةِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اَللّٰهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الجَدِّ مِنْكَ الجَدُّ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৬) আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি প্রতিটি নামাযের পশ্চাতে যখন সালাম ফিরতেন, তখন এই দু’আটি পড়তেন,
’লা- ইলাহা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। লা হাউলা অলা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অলা না’বুদু ইল্লা ইয়্যা-হু লাহুন্নি’মাতু অলাহুল ফাযলু অলাহুস সানা-উল হাসান, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিস্বীনা লাহুদ্দীনা অলাউ কারিহাল কা-ফিরূন।’
অর্থাৎ, এক অদ্বিতীয় আল্লাহ ব্যতীত আর কোন সত্য উপাস্য নেই। তাঁর কোন শরীক নেই। (বিশাল) রাজ্যের তিনিই সার্বভৌম অধিপতি। তাঁরই যাবতীয় স্ত্ততিমালা এবং সমস্ত বস্তুর উপর তিনি ক্ষমতাবান। আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার (নড়া-সরার) শক্তি নেই। আল্লাহ ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই। তাঁর ছাড়া আমরা আর কারো ইবাদত করিনা, তাঁরই যাবতীয় সম্পদ, তাঁরই যাবতীয় অনুগ্রহ, এবং তাঁরই যাবতীয় সুপ্রশংসা, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আমরা বিশুদ্ধ চিত্তে তাঁরই উপাসনা করি, যদিও কাফেরদল তা অপছন্দ করে।
ইবনে যুবাইর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দু’আটি প্রত্যেক নামাযের পর পড়তেন।
وَعَنْ عَبدِ الله بنِ الزُّبَيْرِ رَضِيَ الله تَعَالٰـى عَنهُمَا أَنَّه كَانَ يَقُولُ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ حِيْنَ يُسَلِّمُ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَـهُ لَـهُ المُلْكُ وَلَـهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إيَّاهُ لَـهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الحَسَنُ لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الكَافِرُونَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ : وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُهَلِّلُ بِهِنَّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা গরীব মুহাজির (সাহাবাগণ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো উঁচু উঁচু মর্যাদা ও চিরস্থায়ী সম্পদের অধিকারী হয়ে গেল। তারা নামায পড়ছে, যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে, যেমন আমরা রাখছি। কিন্তু তাদের উদ্বৃত্ত মাল আছে, ফলে তারা হজ্জ করছে, উমরাহ করছে, জিহাদ করছে ও সাদকাহ করছে, (আর আমরা করতে পারছি না)।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন জিনিস শিখিয়ে দেব না, যার দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের মর্যাদা লাভ করবে, তোমাদের পরবর্তীদের থেকে অগ্রবর্তী থাকবে এবং তোমাদের মত কাজ যে করবে, সে ছাড়া অন্য কেউ তোমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠতর হতে পারবে না? তাঁরা বললেন, ’অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল! (আমাদেরকে তা শিখিয়ে দিন।)’ তিনি বললেন, প্রত্যেক (ফরয) নামাযের পরে ৩৩ বার তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করবে।
আবূ হুরাইরা থেকে বর্ণনাকারী আবূ সালেহ বলেন, ’কিভাবে পাঠ করতে হবে, তা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ’সুবহানাল্লাহ’, ’আল্লাহু আকবার’ ও ’আল-হামদু লিল্লাহ’ বলবে। যেন প্রত্যেকটি বাক্য ৩৩ বার ক’রে হয়। (বুখারী ৮৪৩, মুসলিম ১৩৭৫)
মুসলিমের বর্ণনায় এ কথা বাড়তি আছে যে, অতঃপর গরীব মুহাজিরগণ পুনরায় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ’আমরা যে আমল করছি, সে আমল আমাদের ধনী ভায়েরা শোনার পর তারাও আমল শুরু ক’রে দিয়েছে? (এখন তো তারা আবার আমাদের চেয়ে অগ্রবর্তী হয়ে যাবে।)’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ হল আল্লাহর অনুগ্রহ; তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ فُقَراءَ المُهَاجِرِينَ أَتَوْا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَقَالُوا : ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثورِ بِالدَّرَجَاتِ العُلَى وَالنَّعِيمِ المُقِيمِ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَلَهُمْ فَضْلٌ مِنْ أَمْوَالٍ يَحُجُّونَ وَيَعْتَمِرُونَ وَيُجَاهِدُونَ وَيَتَصَدَّقُونَ فَقَالَ أَلاَ أُعَلِّمُكُمْ شَيْئاً تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ وَلاَ يَكُونُ أَحَدٌ أَفْضَلَ مِنْكُمْ إِلاَّ مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ؟ قَالُوا : بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ تُسَبِّحُونَ وَتَحْمَدُونَ وَتُكَبِّرُونَ خَلْفَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاثاً وَثَلاثِينَ قَالَ أَبُو صَالِحٍ الرَّاوِي عَن أَبِي هُرَيرَةَ لَمَّا سُئِلَ عَنْ كَيْفِيَّةِ ذِكْرِهِنَّ قَالَ يَقُول : سُبْحَان اللهِ وَالحَمْدُ للهِ واللهُ أكْبَرُ حَتّٰـى يَكُونَ مِنهُنَّ كُلُّهُنَّ ثَلاثاً وَثَلاثِينَ متفقٌ عَلَيْهِ
وَزَادَ مُسلِمٌ فِي رِوَايَتِهِ : فَرَجَعَ فُقَرَاءُ المُهَاجِرِينَ إِلٰـى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقَالُوا : سَمِعَ إِخْوَانُنَا أَهْلُ الأَمْوَالِ بِمَا فَعَلْنَا فَفَعَلُوا مِثْلَهُ ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ذٰلِكَ فَضْلُ الله يُؤتِيهِ مَنْ يَشَاءُ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৮) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরয) নামায বাদ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ ও ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং একশত পূর্ণ করতে ’লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকালাহু লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর’ পড়বে, তার গুনাহসমূহ মাফ ক’রে দেওয়া হবে; যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়।
وَعَنهُ عَن رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثاً وَثَلاَثِينَ وحَمِدَ اللهَ ثَلاثاً وَثَلاَثِينَ وَكَبَّرَ الله ثَلاَثاً وَثَلاَثِينَ وَقَالَ تَمَامَ المِئَةِ : لَا إِلٰـهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ البَحْرِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ভিতরে, শেষাংশে ও পরের যিকর ও দু‘আ
(৩৭৫৯) কা’ব ইবনে উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নামাযান্তে কিছু বাক্য রয়েছে বা কিছু কর্ম রয়েছে, সেগুলি যে পড়বে বা (পাঠ) করবে, সে আদৌ ব্যর্থ হবে না। তা হচ্ছে প্রত্যেক ফরয নামায বাদ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া।
وَعَنْ كَعْبِ بنِ عُجْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ قَالَ مُعَقِّبَاتٌ لاَ يَخِيبُ قَائِلُهُنَّ أَوْ فَاعِلُهُنَّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ مَكْتُوبَةٍ: ثَلاَثٌ وَثَلاَثُونَ تَسْبِيحَةً وَثَلاَثٌ وثَلاَثُونَ تَحْمِيدَةً وَأَرْبَعٌ وَثَلاَثُونَ تَكْبِيرَةً رواه مسلم