পরিচ্ছেদঃ শরীয়তের নির্দেশাবলী লংঘন করতে দেখলে ক্রোধান্বিত হওয়া এবং আল্লাহর দ্বীনের সংরক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতার বিবরণ
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَنْ يُّعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ عِنْدَ رَبِّهِ
অর্থাৎ, কেউ আল্লাহর নিষিদ্ধ (স্থান বা) বিধানসমূহের সম্মান করলে তার প্রতিপালকের নিকট তার জন্য এটাই উত্তম। (সূরা হাজ্জ্ব ৩০)
তিনি অন্য জায়গায় বলেন,
إِنْ تَنْصُرُوْا اللهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ
অর্থাৎ, যদি তোমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্য কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন, এবং তোমাদের পা দৃঢ়-প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। (সূরা মুহাম্মাদ ৭)
(৩৫৮১) আবূ মাসঊদ উক্বাহ ইবনে আমর বাদরী (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ’অমুক ব্যক্তি লম্বা নামায পড়ায়, তার জন্য আমি ফজরের নামায থেকে পিছনে থাকি।’ অতঃপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন ভাষণে সেদিনকার থেকে বেশী রাগান্বিত হতে দেখিনি। তিনি বললেন, হে লোক সকল! তোমাদের মধ্যে কিছু লোক লোকদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ লোকদের ইমামতি করবে, সে যেন সংক্ষেপে নামায পড়ায়। কারণ তার পিছনে বৃদ্ধ, শিশু এবং এমনও লোক রয়েছে যার কোন প্রয়োজন আছে।
وَعَن أَبي مَسعُودٍ عُقْبَةَ بنِ عَمْرٍو البَدْرِي قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ﷺ فَقَالَ : إنِّي لأَتَأخَّرُ عَنْ صَلاةِ الصُّبْحِ مِنْ أَجْلِ فُلَانٍ مِمَّا يُطِيْلُ بِنَا فَمَا رَأيْتُ النَّبيَّ ﷺ غَضِبَ فِيْ مَوْعِظَةٍ قَطُّ أشَدَّ مِمَّا غَضِبَ يَوْمَئذٍ ؛ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ فَأيُّكُمْ أمَّ النَّاسَ فَلْيُوجِزْ ؛ فَإنَّ مِنْ وَرَائِهِ الكَبِيرَ وَالصَّغِيرَ وَذَا الحَاجَةِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ শরীয়তের নির্দেশাবলী লংঘন করতে দেখলে ক্রোধান্বিত হওয়া এবং আল্লাহর দ্বীনের সংরক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতার বিবরণ
(৩৫৮২) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক সফর থেকে (বাড়ী) ফিরলেন। সে সময় আমি ঘরের সামনে তাকে একটি পর্দা ঝুলিয়ে রেখেছিলাম, যাতে অনেক ছবি ছিল। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখলেন তখন ছিঁড়ে ফেলে দিলেন। (রাগে) তাঁর চেহারা (লাল)বর্ণ হয়ে গেল। অতঃপর তিনি বললেন, হে আয়েশা! কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সর্বাধিক কঠিন শাস্তি তাদের হবে, যারা আল্লাহর সৃষ্ট জীবের মত আকৃতি (অঙ্কন বা নির্মাণ) করে।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَت : قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مِنْ سَفرٍ وَقَدْ سَتَرْتُ سَهْوَةً لِي بِقِرَامٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ، فَلَمَّا رَآهُ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ هَتَكَهُ وَتَلَوَّنَ وَجهُهُ وَقَالَ يَا عَائِشَةَ أشَدُّ النَّاسِ عَذَاباً عِنْدَ اللهِ يَوْمَ القيَامَةِ الَّذِينَ يُضَاهُونَ بخَلْقِ اللهِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ শরীয়তের নির্দেশাবলী লংঘন করতে দেখলে ক্রোধান্বিত হওয়া এবং আল্লাহর দ্বীনের সংরক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতার বিবরণ
(৩৫৮৩) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকেই বর্ণিত, যে মাখযূমী মহিলাটি চুরি করেছিল তার ব্যাপারটি কুরায়েশদেরকে চিন্তাম্বিত করে তুলেছিল। সুতরাং তারা বলল, ’এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় উসামাহ বিন যায়দ (রাঃ) ছাড়া আর কে সাহস করতে পারবে?’ ফলে উসামাহ (রাঃ) তাঁর সাথে কথা বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর নির্ধারিত দণ্ডবিধির ব্যাপারে তুমি সুপারিশ করছ? অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন এবং ভাষণ দিলেন। তাতে তিনি বললেন, ’’তোমাদের পূর্বেকার লোকেরা এ জন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি চুরি করলে তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন তাদের মধ্যে কোন দুর্বল ব্যক্তি চুরি করত, তখন তারা তাকে শাস্তি প্রদান করত। আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাতেমা চুরি করত, তাহলে আমি তারও হাত কেটে দিতাম।
وَعَنهُا : أَنَّ قُرَيْشًا أهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرأَةِ الْمَخزُوْمِيَّةِ الَّتِيْ سَرَقَتْ فَقَالُوا : مَنْ يُّكَلِّمُ فِيْهَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ ؟ فَقَالُوا : مَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بنُ زَيْدٍ حِبُّ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ ؟ فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ تَعَالٰـى ثُمَّ قامَ فَاخْتَطَبَ ثُمَّ قَالَ إنَّمَا أهْلَك مَنْ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أقامُوا عَلَيْهِ الحَدَّ وَايْمُ الله لَوْ أَنَّ فَاطمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعتُ يَدَهَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ শরীয়তের নির্দেশাবলী লংঘন করতে দেখলে ক্রোধান্বিত হওয়া এবং আল্লাহর দ্বীনের সংরক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতার বিবরণ
(৩৫৮৪) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলার (দিকের দেওয়ালে) থুথু দেখতে পেলেন এটা তাঁর প্রতি খুব ভারী মনে হল; এমনকি তাঁর চেহারায় সে চিহ্ন দেখা গেল। ফলে দাঁড়ালেন এবং তিনি তা নিজ হাত দ্বারা ঘষে তুলে ফেললেন। তারপর বললেন, তোমাদের কেউ যখন নামাযে দাঁড়ায়, তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে কানে কানে (ফিসফিস ক’রে কথা) বলে। আর তার প্রতিপালক তার ও কেবলার মধ্যস্থলে থাকেন। সুতরাং তোমাদের কেউ যেন কেবলার দিকে থুথু না ফেলে; বরং তার বামে অথবা পদতলে ফেলে। অতঃপর তিনি তাঁর চাদরের এক প্রান্ত ধরে তাতে থুথু নিক্ষেপ করলেন। তারপর তিনি তার এক অংশকে আর এক অংশের সাথে রগড়ে দিয়ে বললেন, কিংবা এইরূপ করে। (বুখারী ৪০৫, মুসলিম ৭৭০৫)
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ رَأى نُخَامَةً فِي الْقِبْلَةِ فَشَقَّ ذٰلِكَ عَلَيْهِ حَتّٰـى رُؤِيَ في وَجْهِهِ ؛ فَقَامَ فَحَكَّهُ بِيَدِهِ فَقَالَ إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي صَلاَتِهِ فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ وَإنَّ رَبَّهُ بَيْنَهُ وَبيْنَ القِبلَةِ فَلاَ يَبْزُقَنَّ أحَدُكُمْ قِبَلَ الْقِبْلَةِ وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمِهِ ثُمَّ أخَذَ طَرَفَ رِدَائِهِ فَبَصَقَ فِيهِ ثُمَّ رَدَّ بَعْضَهُ عَلَى بَعْضٍ فَقَالَ أَوْ يَفْعَلُ هٰكَذَا متفقٌ عَلَيْهِ