পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
সাদা রঙের কাপড় উত্তম। আর লাল, সবুজ ও কালো রঙের কাপড় বৈধ। আর রেশমী বস্ত্র ছাড়া সুতি, উল, পশম ও লোম ইত্যাদির কাপড় পরিধান করা জায়েয।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
يَا بَنِيْ آدَمَ قَدْ أنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاساً يُوَارِيْ سَوْآتِكُمْ وَرِيْشاً وَلِبَاسُ التَّقْوٰى ذٰلِكَ خَيْرٌ
অর্থাৎ, হে বনী আদম! (হে মানবজাতি) তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশভূষার জন্য আমি তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ অবতীর্ণ করেছি। আর সংযমশীলতার পরিচ্ছদই সর্বোৎকৃষ্ট। (সূরা আ’রাফ ২৬)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন,
وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيْلَ تَقِيْكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيْلَ تَقِيكُمْ بَأسَكُمْ
অর্থাৎ, তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন পরিধেয় বস্ত্রের; যা তোমাদেরকে তাপ হতে রক্ষা করে এবং তিনি ব্যবস্থা করেছেন তোমাদের জন্য বর্মের, ওটা তোমাদের যুদ্ধে রক্ষা করে। (সূরা নাহল ৮১)
(৩৩১৩) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের সাদা রঙের কাপড় পরিধান কর। কেননা, তা তোমাদের সর্বোত্তম কাপড়। আর ওতেই তোমাদের মৃত ব্যক্তিদেরকে কাফন দাও।
وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ اِلْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمْ البَيَاضَ فَإنَّهَا مِنْ خَيْرِ ثِيَابِكُمْ وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ رواه أَبُو داود والترمذي وقال : حديث حسن صحيح
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৪) সামুরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সাদা রঙের কাপড় পরিধান কর। কেননা, তা সবচেয়ে পবিত্র ও উৎকৃষ্ট। আর ওতেই তোমাদের মৃতদেরকে কাফন দাও।
وَعَن سَمُرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اِلْبَسُوا البَيَاضَ فَإنَّهَا أَطْهَرُ وَأطْيَبُ وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ رواه النسائي والحاكم وقال حديث صحيح
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৫) বারা’ ইবনে আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যম আকৃতির লম্বা ছিলেন। আমি তাঁকে লাল পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। আমি তাঁর চাইতে অধিক সুন্দর আর কাউকে দেখিনি।’
وَعَنِ الْبَرَاءِ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَرْبُوعاً وَلَقَدْ رَأيْتُهُ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مَا رَأيْتُ شَيْئاً قَطُّ أحْسَنَ مِنْهُ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৬) আবূ জুহাইফাহ অহাব ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মক্কায় দেখলাম, যখন তিনি আবত্বাহ নামক স্থানে চর্মনির্মিত লাল রঙের শিবিরে অবস্থান করছিলেন। বিলাল তাঁর ওযূর পানি নিয়ে বাইরে বের হলেন। কিছু লোক (বরকত হাসিল করার জন্য) উক্ত পানির ছিটা পেল আর কিছু সংখ্যক লোক পানি পেল। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাল রঙের জোড়া বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় বাইরে এলেন। যেন আমি তাঁর দুই পায়ের গোছার শুভ্রতা প্রত্যক্ষ করছি। অতঃপর তিনি ওযূ করলেন এবং বিলাল আযান দিলেন। আমি তাঁর এদিক ওদিক মুখ ফিরানো লক্ষ্য করছিলাম। তিনি ডানে ও বামে মুখ ফিরিয়ে ’হাইয়্যা আলাস স্বালাহ’, ’হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলছিলেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একটি বর্শা (সুতরাহ স্বরূপ) পুঁতে দেওয়া হল। তারপর তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন এবং নামায পড়ালেন। তাঁর (সুতরার) সামনে দিয়ে কুকুর ও গাধা অতিক্রম করছিল। সেগুলোকে বাধা দেওয়া হচ্ছিল না।
وَعَنْ أَبِي جُحَيفَةَ وَهْبِ بنِ عَبدِ اللهِ قَالَ : رَأيتُ النبيَّ ﷺ بِمكّةَ وَهُوَ بِالأَبْطَحِ في قُبَّةٍ لَهُ حَمْرَاءَ مِنْ أَدَمٍ فَخَرَجَ بِلاَلٌ بِوَضُوئِهِ فَمِنْ نَاضِحٍ وَنَائِلٍ فَخَرَجَ النَّبِيُّ ﷺ وَعَلَيهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ كَأنِّي أنْظُرُ إِلَى بَيَاضِ سَاقَيْهِ فَتَوَضّأ وَأذَّنَ بِلاَلٌ فَجَعَلْتُ أتَتَبَّعُ فَاهُ هَاهُنَا وَهَاهُنَا يَقُولُ يَمِيناً وَشِمَالاً : حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَيَّ عَلَى الفَلاَحِ ثُمَّ رُكِزَتْ لَهُ عَنَزَةٌ فَتَقَدَّمَ فَصَلَّى يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الْكَلْبُ وَالْحِمَارُ لاَ يُمْنَعُ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৭) আবূ রিমসা রিফাআহ তাইমী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরনে দুটো সবুজ রঙের চাদর দেখেছি।’
وَعَنْ أَبِي رِمْثَةَ رِفَاعَةَ التَّيْمِيِّ قَالَ : رَأَيتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَعَلَيهِ بردَانِ أَخْضَرَانِ رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৮) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা-বিজয়ের দিন (সেখানে) কাল রঙের পাগড়ী পরে প্রবেশ করেছিলেন।
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ دَخَلَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاء رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩১৯) আবূ সাঈদ আমর ইবনে হুরাইস হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কাল রঙের পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখছি, তিনি তাঁর পাগড়ীর দুই প্রান্ত দুই কাঁধের মাঝখানে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।’ (মুসলিম ৩৩৭৮)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাল রঙের পাগড়ী মাথায় বেঁধে লোকেদের মাঝে খুতবা দিচ্ছিলেন।’ (মুসলিম ৩৩৭৭)
وَعَن أَبي سَعِيدٍ عَمرِو بنِ حُرَيْثٍ قَالَ : كَأنِّي أنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ وَعَلَيهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ قَدْ أرْخَى طَرَفَيْهَا بَيْنَ كَتِفَيْهِ رواه مسلم
وفي روايةٍ لَهُ : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ خَطَبَ النَّاسَ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩২০)আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তিনটি সাদা সুতি বস্ত্রে কাফন দেওয়া হয়েছে যেগুলি ইয়ামানের ’সাহুল’ নামক স্থানে প্রস্তুত করা হয়েছিল। ওগুলির মধ্যে কামীস (জামা) ছিল না। আর পাগড়ীও ছিল না।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : كُفِّنَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِي ثَلاَثَةِ أثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ مِنْ كُرْسُفٍ لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩২১) উক্ত রাবী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সকালে বের হলেন, তখন তাঁর দেহে পালানের ছবি ছাপা কাল লোমের চাদর ছিল।’ (মুসলিম ৫৫৬৬)
وَعَنهُا، قَالَتْ: خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ذَاتَ غَدَاةٍ، وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مُرَحَّلٌ مِنْ شَعرٍ أسْوَدَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ লেবাস-পোশাক
(৩৩২২) মুগীরাহ ইবনে শু’বা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সফরে আমি রাতের বেলায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ’’তোমার কাছে পানি আছে কি?’’ আমি বললাম, ’জী হ্যাঁ।’ সুতরাং তিনি স্বীয় বাহন থেকে নামলেন এবং চলতে লাগলেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত রাতের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তারপর যখন ফিরে এলেন, তখন আমি পাত্র থেকে (পানি) ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর মুখমণ্ডল ধুলেন। তাঁর পরনে ছিল পশমী জুববা। তিনি তা হতে তাঁর হাত দু’টিকে বের করতে সক্ষম হলেন না। পরিশেষে তিনি জুববার নিচের দিক দিয়ে হাত বের করলেন। অতঃপর তিনি তাঁর হাত দু’টি ধুলেন ও মাথা মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজা খুলে নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালাম। তিনি বললেন, ছেড়ে দাও। কেননা, আমি ওগুলো পবিত্র (ওযূ) অবস্থায় পায়ে দিয়েছি। অতঃপর তিনি তার উপর মাসাহ করলেন। (বুখারী ৫৭৯৯, মুসলিম ৬৫২-৬৫৪)
অপর বর্ণনায় আছে, তাঁর দেহে ছিল শামী জুব্বা; যার হাতা দু’টি টাইট ছিল।
অন্য বর্ণনায় আছে, এ ঘটনাটি ছিল তাবূক যুদ্ধের সফরে।
وَعَنِ المُغِيرَةِ بنِ شُعْبَةَ قَالَ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي مَسِيرٍ فَقَالَ لِي أمَعَكَ مَاءٌ قُلتُ : نَعَمْ فَنَزَلَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَمَشَى حَتّٰـى تَوَارَى فِي سَوَادِ اللَّيْلِ ثُمَّ جَاءَ فَأفْرَغْتُ عَلَيْهِ مِنَ الإدَاوَةِ فَغَسَلَ وَجْهَهُ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُخْرِجَ ذِرَاعَيْهِ مِنْهَا حَتّٰـى أخْرَجَهُمَا مِنْ أسْفَلِ الْجُبَّةِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِرَأسِهِ ثُمَّ أهْوَيْتُ لأَنْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَإنِّي أَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ وَمَسحَ عَلَيْهِمَا متفقٌ عَلَيْهِ
وفي رواية : وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَامِيَّةٌ ضَيِّقَةُ الكُمَّيْنِ
وفي رواية : أنَّ هذِهِ القَضِيَّةَ كَانَتْ في غَزْوَةِ تَبُوكَ