পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتًا غَيْرَ بُيُوْتِكُمْ حَتّٰـى تَسْتَأْنِسُوْا وَتُسَلِّمُوْا عَلٰـى اَهْلِهَا
অর্থাৎ, হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে ও তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না। (সূরা নূর ২৭)
তিনি আরো বলেন,
وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ مِنْكُمُ الْـحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوْا كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ
অর্থাৎ, তোমাদের শিশুরা বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন তাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের মত (সর্বদা) অনুমতি প্রার্থনা করে। (সূরা নূর ৫৯)
(৩০৭৫) আবূ মূসা আশ্আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অনুমতি তিনবার নেওয়া চাই। যদি তোমাকে অনুমতি দেয় (তাহলে ভিতরে প্রবেশ করবে) নচেৎ ফিরে যাবে।
عَنِ أَبِـيْ مُوسَى الْأَشعَرِي قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ الاِسْتِئْذَانُ ثَلاَثٌ فَإنْ أُذِنَ لَكَ وَإِلاَّ فَارْجِعْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৭৬) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দৃষ্টির কারণেই তো (প্রবেশ) অনুমতির বিধান করা হয়েছে। (অর্থাৎ, দৃষ্টি থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে ঐ নির্দেশ।)
وَعَنِ سَهْلِ بنِ سَعدٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إنَّمَا جُعِلَ الْاِسْتِئْذَانُ مِنْ أجْلِ الْبَصَرِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৭৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের গৃহে তাদের অনুমতি না নিয়ে উঁকি মেরে দেখে সে ব্যক্তির চোখে (ঢিল ছুঁড়ে) তাকে কানা করে দেওয়া তাদের জন্য বৈধ হয়ে যায়।
عَنِ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ مَنِ اطَّلَعَ فِى بَيْتِ قَوْمٍ بِغَيْرِ إِذْنِهِمْ فَقَدْ حَلَّ لَهُمْ أَنْ يَفْقَئُوا عَيْنَهُ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৭৮) আবূ হুরাইরা কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন গোষ্ঠীর গৃহে তাদের বিনা অনুমতিতে উঁকি মারে এবং তারা (দেখতে পেয়ে) তার চক্ষু ফুটিয়ে দেয়, তবে তাতে কোন (দণ্ডনীয়) রক্তপণ (দিয়াত) বা অনুরূপ বদলা (কিসাস) নেই।
عَن أَبِـيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ مَنْ اطَّلَعَ فِي بَيْتِ قَوْمٍ بِغَيْرِ إِذْنِهِمْ فَفَقَئُوا عَيْنَهُ فَلَا دِيَةَ لَهُ وَلَا قِصَاصَ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৭৯) ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করে, যা সে দেখেনি সে ব্যক্তিকে (কিয়ামতের দিন) দু’টি যবের মাঝে জোড়া লাগাতে বাধ্য করা হবে। অথচ সে কখনই তা পারবে না। (যার ফলে তাকে আযাব ভোগ করতে হবে।)
যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের কথা কান পেতে শুনবে অথচ তারা তা অপছন্দ করে সে ব্যক্তির উভয় কানে কিয়ামতের দিন গলিত সীসা ঢালা হবে।
আর যে ব্যক্তি কোন ছবি (বা মূর্তি) তৈরী করবে (কিয়ামতে) তাকে আযাব দেওয়া হবে অথবা ঐ ছবি (বা মূর্তি) তে রূহ ফুঁকতে বাধ্য করা হবে অথচ সে তাতে কখনই সক্ষম হবে না।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ تَحَلَّمَ بِحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أَنْ يَعْقِدَ بَيْنَ شَعِيرَتَيْنِ وَلَنْ يَفْعَلَ وَمَنْ اسْتَمَعَ إِلَى حَدِيثِ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ أَوْ يَفِرُّونَ مِنْهُ صُبَّ فِي أُذُنِهِ الْآنُكُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ صَوَّرَ صُورَةً عُذِّبَ وَكُلِّفَ أَنْ يَنْفُخَ فِيهَا وَلَيْسَ بِنَافِخٍ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮০) রিবয়ী ইবনে হিরাশ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন বনু আমেরের একটা লোক আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, সে একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (প্রবেশ) অনুমতি চাইল। তখন তিনি বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। সুতরাং সে নিবেদন করল, ’আমি কি প্রবেশ করব?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় খাদেমকে বললেন, ’বাইরে গিয়ে এই লোকটিকে অনুমতি গ্রহণের পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং তাকে বল, তুমি বল ’আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করব?’ সুতরাং লোকটা ঐ কথা শুনতে পেয়ে বলল, ’আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করব?’ অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং সে প্রবেশ করল।
وَعَنْ رِبْعِيِّ بنِ حِرَاشٍ قَالَ : حَدَّثَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَامِرٍ أنَّهُ اسْتَأذَنَ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ وَهُوَ فِي بَيتٍ، فَقَالَ : أَأَلِجُ ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لِخَادِمِهِ أُخْرُجْ إِلَى هٰذَا فَعَلِّمْهُ الاِسْتِئذَانَ فَقُلْ لَهُ : قُلِ : السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَأَدْخُلُ ؟ فَسَمِعَهُ الرَّجُلُ فَقَالَ : السَّلامُ عَلَيْكُمْ أَأَدْخُلُ ؟ فَأذِنَ لَهُ النَّبِيُّ ﷺ فَدَخَلَ رواه أَبُو داود بإسناد صحيح
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮১) কিলদাহ ইবনে হাম্বাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তাঁর কাছে বিনা সালামে প্রবেশ করলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ফিরে যাও এবং বল, ’আসসালামু আলাইকুম, আমি ভিতরে আসব কি?
عَن كِلْدَةَ بْنِ الْـحَنْبَلِ قَالَ : أتَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ وَلَمْ أُسَلِّمْ فَقَالَ النَّبِـيُّ ﷺارْجِعْ فَقُلْ: اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَأَدْخُلُ ؟ رواه أَبُو داود والترمذي وقَالَ حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮২) আনাস (রাঃ) হতে মি’রাজ সম্পর্কিত তাঁর (সুদীর্ঘ) প্রসিদ্ধ হাদীস বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’অতঃপর জিবরীল (আঃ) আমাকে সঙ্গে নিয়ে নিকটবর্তী (প্রথম) আসমানে চড়লেন এবং তার (দরজা) খোলার আবেদন করলেন। তখন জিজ্ঞাসা করা হল, ’আপনি কে?’ জিবরীল বললেন, ’জিবরীল।’ জিজ্ঞাসা করা হল, ’আপনার সাথে কে?’ তিনি বললেন, ’মুহাম্মাদ।’ (এভাবে) তৃতীয়, চতুর্থ তথা বাকি সব আসমানে প্রত্যেক প্রবেশ-দ্বারে জিজ্ঞাসা করা হল ’আপনি কে?’ আর জিবরীল উত্তর দিলেন, ’জিবরীল।’
وَعَنْ أَنَسٍ فِي حَدِيثِهِ الْمَشْهُوْرِ فيِ الْإِسْرَاءِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثُمَّ صَعَدَ بِي جِبْرِيلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَاسْتَفْتَحَ فَقِيلَ : مَنْ هٰذَا ؟ قَالَ : جِبْرِيلُ، قِيلَ : وَمَنْ مَعَكَ ؟ قَالَ : مُحَمَّدٌ ثُمَّ صَعَدَ إِلَى السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ فَاسْتَفْتَحَ قِيلَ : مَنْ هٰذَا ؟ قَالَ : جِبْرِيل قِيلَ : وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ : مُحَمَّدٌ وَالثَّالِثَةِ وَالرَّابِعَةِ وَسَائِرِهنَّ وَيُقَالَ فِي بَابِ كُلِّ سَمَاءٍ : مَنْ هٰذَا ؟ فَيَقُولُ : جِبْرِيْلُ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮৩) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন এক রাতে আমি বের হলাম। হঠাৎ (দেখলাম,) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাই পায়ে হেঁটে চলেছেন। আমি চাঁদের ছায়াতে চলতে লাগলাম। তিনি (পিছনে) ফিরে তাকালে আমাকে দেখে ফেললেন এবং বললেন, ’’কে তুমি?’’ আমি বললাম, ’আবূ যার।’
وَعَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ قَالَ : خَرَجْتُ لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِيْ فَإذَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَمْشِي وَحْدَهُ، فَجَعَلْتُ أمْشِي فِي ظلِّ القَمَرِ، فَالْتَفَتَ فَرَآنِي فَقَالَ مَنْ هٰذَا ؟ فَقُلْتُ : أَبُو ذَرٍّ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮৪) উম্মে হানী (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হলাম, তখন তিনি গোসল করছিলেন। আর (তাঁর মেয়ে) ফাতেমা তাঁকে কাপড় দিয়ে আড়াল করছিলেন। সুতরাং তিনি বললেন, কে তুমি? আমি বললাম, ’আমি উম্মে হানী।’
وَعَنْ أُمِّ هَانِئٍ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : أَتَيتُ النَّبيَّ ﷺ وَهُوَ يَغْتَسِلُ وَفَاطِمَةُ تَسْتُرُهُ فَقَالَ مَنْ هذِهِ فَقُلتُ : أَنَا أُمُّ هَانِئٍ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮৫) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে দরজায় করাঘাত করলাম। তিনি বললেন, ’’কে?’’ আমি বললাম, ’আমি।’ তিনি বললেন, আমি, আমি। যেন তিনি কথাটিকে অপছন্দ করলেন।
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ : أتَيْتُ النَّبيَّ ﷺ فَدَقَقْتُ البَابَ فَقَالَ مَنْ هٰذَا ؟ فَقُلتُ : أَنَا فَقَالَ أنَا أنَا كَأنَّهُ كَرِهَهَا متفقٌ عَلَيْهِ