পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
মহান আল্লাহ বলেছেন,
قُلْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوا مِنْ أبْصَارِهِمْ
অর্থাৎ, বিশ্বাসীদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে। (সূরা নূর ৩০)
তিনি আরো বলেছেন,
إنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ والْفُؤادَ كُلُّ أُولئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُوْلًا
অর্থাৎ, নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। (সূরা বনী ইসরাঈল ৩৬)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
يَعْلَمُ خَائِنةَ الأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُوْرُ
অর্থাৎ, চক্ষুর চোরা চাহনি ও অন্তরে যা গোপন আছে সে সম্বন্ধে তিনি অবহিত। (সূরা মু’মিন ১৯)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,
إنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ
অর্থাৎ, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সময়ের প্রতীক্ষায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। (সূরা ফাজর ১৪)
(২৩৪৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আদম সন্তানের জন্য ব্যভিচারের অংশ লিখে দিয়েছেন; যা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চক্ষুদ্বয়ের ব্যভিচার (সকাম অবৈধ) দর্শন। কর্ণদ্বয়ের ব্যভিচার (অবৈধ যৌনকথা) শ্রবণ, জিভের ব্যভিচার (সকাম অবৈধ) কথন, হাতের ব্যভিচার (সকাম অবৈধ) ধারণ এবং পায়ের ব্যভিচার (সকাম অবৈধ পথে) গমন। আর হৃদয় কামনা ও বাসনা করে এবং জননেন্দ্রিয় তা সত্য বা মিথ্যায় পরিণত করে।
وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ كُتِبَ عَلَى ابْن آدَمَ نَصِيبُهُ مِنَ الزِّنَا مُدْرِكُ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ : العَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ وَالأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الاسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الكَلاَمُ وَاليَدُ زِنَاهَا البَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الخُطَا وَالقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الفَرْجُ أَوْ يُكَذِّبُهُ متفق عَلَيْهِ هَذَا لفظ مسلمٍ ورواية البخاري مختصرَةٌ
পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
(২৩৪৪) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। লোকেরা বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! ওখানে আমাদের বসা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। আমরা (ওখানে) বসে বাক্যালাপ করি।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমরা রাস্তায় বসা ছাড়া থাকতে না পার, তাহলে রাস্তার হক আদায় কর। তারা নিবেদন করল, ’হে আল্লাহর রসূল! রাস্তার হক কী?’ তিনি বললেন, দৃষ্টি অবনত রাখা, (অপরকে) কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা, সালামের জবাব দেওয়া এবং ভাল কাজের আদেশ দেওয়া ও মন্দ কাজে বাধা প্রদান করা। (বুখারী ৬২২৯, মুসলিম ৫৬৮৫)
وَعَنْ أَبِـيْ سَعِيدٍ الخُدرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالجُلُوسَ فِي الطُّرُقَاتِ قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ مَا لَنَا مِنْ مَجَالِسِنَا بُدٌّ نَتَحَدَّثُ فِيهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَإذَا أَبَيْتُمْ إِلاَّ المَجْلِسَ فَأَعْطُوا الطَّرِيقَ حَقَّهُ قَالُوا : وَمَا حَقُّ الطَّريقِ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ قَالَ غَضُّ البَصَرِ وَكَفُّ الأَذَى وَرَدُّ السَّلاَمِ وَالأَمرُ بِالمَعْرُوفِ وَالنَّهيُ عَنِ المُنْكَرِ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
(২৩৪৫) আবূ ত্বালহা যায়েদ ইবনে সাহল (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা ঘরের বাইরে অবস্থিত প্রাঙ্গনে বসে কথাবার্তায় রত ছিলাম। ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সেখানে) এসে আমাদের নিকট দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা রাস্তায় বৈঠক করছ? তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। আমরা নিবেদন করলাম, ’আমরা তো এখানে এমন উদ্দেশ্যে বসেছি, যাতে (শরীয়তের দৃষ্টিতে) কোন আপত্তি নেই। আমরা এখানে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করা ও কথাবার্তা বলার জন্য বসেছি।’ তিনি বললেন, যদি রাস্তায় বসা ত্যাগ না কর, তাহলে তার হক আদায় কর। আর তা হল, দৃষ্টি সংযত রাখা, সালামের উত্তর দেওয়া এবং সুন্দরভাবে কথাবার্তা বলা।
وَعَنْ أَبي طَلحَة زَيدِ بنِ سَهلٍ قَالَ : كُنَّا قُعُوداً بِالأَفْنِيَةِ نَتَحَدَّثُ فِيهَا فَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَقَامَ عَلَيْنَا فَقَالَ مَا لَكُمْ وَلِمَجَالسِ الصُّعُدَاتِ ؟ اِجْتَنِبُوا مَجَالِسَ الصُّعُدَاتِ فَقُلْنَا : إِنَّمَا قَعَدْنَا لِغَيْرِ مَا بَأسٍ قَعَدْنَا نَتَذَاكَرُ وَنَتَحَدَّثُ قَالَ إِمَّا لاَ فَأَدُّوا حَقَّهَا : غَضُّ البَصَرِ وَرَدُّ السَّلاَمِ وَحُسْنُ الكَلاَمِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
(২৩৪৬) জারীর বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আচমকা দৃষ্টি সম্পর্কে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে আদেশ করলেন, যেন আমি আমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিই।
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ عَنْ نَظَرِ الْفُجَاءَةِ فَأَمَرَنِى أَنْ أَصْرِفَ بَصَرِى رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
(২৩৪৭) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলীকে বলেছেন, হে আলী! একবার নজর পড়ে গেলে আর দ্বিতীয়বার তাকিয়ে দেখো না। প্রথমবারের (অনিচ্ছাকৃত) নজর তোমার জন্য বৈধ। কিন্তু দ্বিতীয়বারের নজর বৈধ নয়।
عَنِ بُرَيْدَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لِعَلِىٍّ يَا عَلِىُّ لاَ تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ
পরিচ্ছেদঃ বেগানা নারী তথা কোন সুদর্শন বালকের দিকে শরয়ী প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম
(২৩৪৮) আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’কোন পুরুষ অন্য পুরুষের গুপ্তাঙ্গের দিকে যেন না তাকায়। কোন নারী অন্য নারীর গুপ্তস্থানের দিকে যেন না তাকায়। কোন পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে একই কাপড়ে যেন (উলঙ্গ) শয়ন না করে। (অনুরূপভাবে) কোন নারী, অন্য নারীর সাথে একই কাপড়ে যেন (উলঙ্গ) শয়ন না করে।
وَعَنْ أَبِـيْ سَعِيدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لاَ يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ وَلاَ المَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ المَرْأَةِ وَلاَ يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ، وَلاَ تُفْضِي المَرْأةُ إِلَى المَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ الواحِدِ رواه مسلم