পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

যারা কাঁকর, যবদানা ইত্যাদি মেরে (ফালনামা খুলে বা হাত চালিয়ে বা হস্তরেখা পড়ে অথবা রাশি গণনা করে) ভাগ্য-ভবিষ্যৎ তথা অজানা ও গায়েবী বিষয়ের খবর বলে, তাদের নিকট এসে ঐ শ্রেণীর কিছু জিজ্ঞাসা করা বৈধ নয়।


(২০৫১)আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ’’ওরা অপদার্থ।’’ (অর্থাৎ ওদের কথার কোন মূল্য নেই)। তারা নিবেদন করল, ’হে আল্লাহর রসূল! ওরা তো কখনো কখনো আমাদেরকে কোন জিনিস সম্পর্কে বলে, আর তা সত্য ঘটে যায়।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’এই সত্য কথাটি জ্বিন (ফিরিশতার নিকট থেকে) ছোঁ মেরে নিয়ে তার ভক্তের কানে পৌঁছে দেয়। তারপর সে ঐ (একটি সত্য) কথার সাথে একশ’টি মিথ্যা মিশিয়ে দেয়।’’ (বুখারী ৬২১৩, ৭৫৬১, মুসলিম ৫৯৫৩)

বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আছে, যা আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, ’’ফিরিশতাবর্গ আল্লাহর বিধানসমূহ নিয়ে মেঘমালার অভ্যন্তরে অবতরণ করেন এবং সে সব কথাবার্তা আলোচনা করেন, যার সিদ্ধান্ত আসমানে হয়েছে। সুতরাং শয়তান অতি সংগোপনে লুকিয়ে তা শুনে ফেলে এবং ভবিষ্যৎ-বক্তা গণকদের মনে প্রক্ষিপ্ত করে। তারপর তার সাথে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে একশত মিথ্যা মিশ্রণ করে তা প্রচার করে।’’ (বুখারী ৩২১০, ৩২৮৮)

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ : سَأَلَ رَسُولَ اللهِ ﷺ أُنَاسٌ عَنِ الكُهَّانِ، فَقَالَ لَيْسُوا بِشَيءٍ فَقَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهُمْ يُحَدِّثُونَا أَحْيَاناً بِشَيءٍ، فَيَكُونُ حَقّاً ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺتِلْكَ الكَلِمَةُ مِنَ الحَقِّ يَخْطَفُهَا الجِنِّيُّ فَيَقُرُّهَا فِي أُذُنِ وَلِيِّهِ، فَيَخْلِطُونَ مَعَهَا مئَةَ كَذْبَةٍ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
وَفِي رِوَايَةٍ لِلبُخَارِيِّ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا : أَنَّها سَمِعَتْ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ إِنَّ المَلائِكَةَ تَنْزِلُ فِي العَنَانِ وَهُوَ السَّحَابُ فَتَذْكُرُ الأَمْرَ قُضِيَ فِي السَّماءِ فَيَسْتَرِقُ الشَّيْطَانُ السَّمْعَ فَيَسْمَعُهُ فَيُوحِيهِ إلَى الكُهَّانِ فَيَكْذِبُونَ مَعَهَا مِئَةَ كَذْبَةٍ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِهِمْ

عن عاىشة رضي الله عنها قالت : سال رسول الله ﷺ اناس عن الكهان، فقال ليسوا بشيء فقالوا : يا رسول الله انهم يحدثونا احيانا بشيء، فيكون حقا ؟ فقال رسول الله ﷺتلك الكلمة من الحق يخطفها الجني فيقرها في اذن وليه، فيخلطون معها مىة كذبة متفق عليه وفي رواية للبخاري عن عاىشة رضي الله عنها : انها سمعت رسول الله ﷺ يقول ان الملاىكة تنزل في العنان وهو السحاب فتذكر الامر قضي في السماء فيسترق الشيطان السمع فيسمعه فيوحيه الى الكهان فيكذبون معها مىة كذبة من عند انفسهم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫২) স্বাফিয়্যাহ বিনতে আবূ উবাইদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন স্ত্রী (হাফসাহ রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’যে ব্যক্তি গণকের নিকট এসে কোন (গায়বী) বিষয়ে প্রশ্ন করে, তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করা হয় না।’

وَعَنْ صَفِيَّةَ بِنتِ أَبِي عُبَيدٍ عَن بَعضِ أَزوَاجِ النَّبِيِّ ﷺ وَرَضِيَ اللهُ عَنهَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ أَتَى عَرَّافاً فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ لَيلَة رواه مسلم

وعن صفية بنت ابي عبيد عن بعض ازواج النبي ﷺ ورضي الله عنها عن النبي ﷺ قال من اتى عرافا فساله عن شيء لم تقبل له صلاة اربعين ليلة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন গণক বা জ্যোতিষীর নিকট উপস্থিত হয়ে সে যা বলে তা সত্য মনে (বিশ্বাস) করল, সে ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ (কুরআনের) প্রতি কুফরী করল।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَالْحَسَنِ عَن النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ أَتَى كَاهِنًا أَوْ عَرَّافًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ ﷺ

عن ابي هريرة والحسن عن النبي ﷺ قال من اتى كاهنا او عرافا فصدقه بما يقول فقد كفر بما انزل على محمد ﷺ

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৪) আবূ হুরাইরা কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মাসিকাবস্থায় স্ত্রী-সহবাস করে অথবা স্ত্রীর পায়খানা-দ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোন গণকের নিকট আসে এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যা কিছু অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা থেকে সম্পর্কহীন হয়ে যায়।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ أَتَى حَائِضًا أَوْ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا أَوْ كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ فَقَدْ بَرِئَ مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ عَلَى مُحَمَّدٍ عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلَامُ

عن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال من اتى حاىضا او امراة في دبرها او كاهنا فصدقه فقد برى مما انزل الله على محمد عليه الصلاة والسلام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৫) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’যে ব্যক্তি কিছু পরিমাণ জ্যোতিষ-বিদ্যা শিখলো, সে ব্যক্তি আসলে যাদু-বিদ্যার একটি অংশ শিখলো। আর এইভাবে যত বেশী সে জ্যোতিষ-বিদ্যা শিখবে আসলে তত বেশীই সে যাদু-বিদ্যা শিখবে। (আর এ কথা বিদিত যে, যাদু শিক্ষা করা হল ইসলাম ও ঈমান-বিনাশী আমল।)

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنِ اقْتَبَسَ عِلْماً مِنَ النُّجُومِ، اقْتَبَسَ شُعْبَةً مِنَ السِّحْرِ زَادَ مَا زَادَ رواه أبو داود بإسناد صحيح

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال : قال رسول الله ﷺ من اقتبس علما من النجوم، اقتبس شعبة من السحر زاد ما زاد رواه ابو داود باسناد صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৬) মুআবিয়াহ ইবনে হাকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি জাহেলী যুগের অত্যন্ত নিকটবর্তী (অর্থাৎ আমি অল্পদিন হল অন্ধযুগ থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছি) এবং বর্তমানে আল্লাহ আমাকে ইসলামে দীক্ষেত করেছেন। আমাদের কিছু লোক গণকদের নিকট (ভাগ্য-ভবিষ্যৎ জানতে) যায়।’ তিনি বললেন, ’’তুমি তাদের কাছে যেও না।’’ আমি বললাম, ’আমাদের কিছু লোক অশুভ লক্ষণ মেনে চলে।’ তিনি বললেন, ’’এ এমন জিনিস, যা তারা নিজেদের অন্তরে অনুভব করে। সুতরাং এ (সব ধারণা) যেন তাদেরকে (বাঞ্ছিত কর্মে) বাধা না দেয়।’’ আমি নিবেদন করলাম, ’আমাদের মধ্যে কিছু লোক দাগ টেনে শুভাশুভ নিরূপণ করে।’ তিনি বললেন, ’’(প্রাচীনযুগে) এক পয়গম্বর দাগ টানতেন। সুতরাং যার দাগ টানার পদ্ধতি উক্ত পয়গম্বরের পদ্ধতি অনুসারে হবে, তা সঠিক বলে বিবেচিত হবে (নচেৎ না)।

وَعَنْ مُعاوِيَةَ بنِ الحَكَمِ قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي حَدِيثُ عَهْدٍ بِالجَاهِليَّةِ وَقَدْ جَاءَ اللهُ تَعَالَى بِالإِسْلاَمِ وَإِنَّ مِنَّا رِجَالاً يَأتُونَ الكُهَّانَ؟ قَالَ فَلاَ تَأتِهِمْ قُلْتُ : وَمِنَّا رِجَالٌ يَتَطَيَّرُونَ؟ قَالَ ذٰلِكَ شَيْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلاَ يَصُدُّهُمْ قُلْتُ : وَمِنَّا رِجَالٌ يَخُطُّونَ؟ قَالَ كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَاكَ رواه مسلم

وعن معاوية بن الحكم قال : قلت : يا رسول الله اني حديث عهد بالجاهلية وقد جاء الله تعالى بالاسلام وان منا رجالا ياتون الكهان؟ قال فلا تاتهم قلت : ومنا رجال يتطيرون؟ قال ذلك شيء يجدونه في صدورهم فلا يصدهم قلت : ومنا رجال يخطون؟ قال كان نبي من الانبياء يخط فمن وافق خطه فذاك رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৭) আবূ মাসঊদ বাদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিতোষিক গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।(অর্থাৎ, কুকুর বিক্রি করে, নিজের দাসীকে বেশ্যার কাজে এবং দাসকে গণকের কাজে খাটিয়ে অর্থ উপার্জন করতে নিষেধ করেছেন।)

وَعَنْ أَبِي مَسعُودٍ البَدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ نَهَى عَنْ ثَمَنِ الكَلْبِ وَمَهْرِ البَغِيِّ وَحُلْوَانِ الكَاهِنِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

وعن ابي مسعود البدري ان رسول الله ﷺ نهى عن ثمن الكلب ومهر البغي وحلوان الكاهن متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী

পরিচ্ছেদঃ গণক, জ্যোতিষী ইত্যাদি ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন নিষেধ

(২০৫৮) ইমরান বিন হুস্বাইন (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্তু, ব্যক্তি কর্ম বা কালকে) অশুভ লক্ষণ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ দেখা (পরীক্ষা) করা হয়, যে ব্যক্তি (ভাগ্য) গণনা করে অথবা যার জন্য (ভাগ্য) গণনা করা হয়। আর যে ব্যক্তি যাদু করে অথবা যার জন্য (বা আদেশে) যাদু করা হয়।

عَنْ عِمْرَانَ بن حُصَيْنٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ وَلا تُطُيِّرَ لَهُ، وَلا تَكَهَّنَ وَلا تُكُهِّنَ لَهُ أَوْ سَحَرَ أَوْ سُحِرَ لَهُ

عن عمران بن حصين قال قال رسول الله ﷺ ليس منا من تطير ولا تطير له، ولا تكهن ولا تكهن له او سحر او سحر له

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে