পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থাৎ, তোমার অনুসারী বিশ্বাসীদের প্রতি তুমি সদয় হও। (সূরা শুআরা ২১৫)
তিনি অন্য জায়গায় বলেন,
إنَّ اللهَ يَأمُرُ بِالْعَدْلِ وَالإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎকার্য ও সীমালংঘন করা হতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন; যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। (সূরা নাহল ৯০)
(১৮১০) ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল। সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল। অতএব সে তার দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের দায়িত্বশীলা। কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল। সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ : الإمَامُ رَاعٍ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ وَالرَّجُلُ رَاعٍ في أهلِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ وَالمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ في بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا وَالخَادِمُ رَاعٍ في مال سيِّدِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১১) আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক রক্ষককে তার রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে এবং প্রত্যেক তত্ত্বাবধায়ক ও অভিভাবককে তার তত্ত্বাবধান ও অভিভাবকত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন। যথার্থই কি তারা তাদের কর্তব্য পালন করেছে, অথবা অবহেলা হেতু তা বিনষ্ট করেছে?
عن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ سَائِلٌ كُلَّ رَاعٍ عَمَّا اسْتَرْعَاهُ، حَفِظَ ذَلِكَ أَمْ ضَيَّعَ، حَتَّى يَسْأَلَ الرَّجُلَ عَنْ أَهْلِ بَيْتِهِ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১২) আবূ য়্যা’লা মা’ক্বিল ইবনে য়্যাসার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ’’কোন বান্দাকে আল্লাহ কোন প্রজার উপর শাসক বানালে, যেদিন সে মরবে সেদিন যদি সে প্রজার প্রতি ধোঁকাবাজি ক’রে মরে, তাহলে আল্লাহ তার প্রতি জান্নাত হারাম ক’রে দেবেন।’’ (বুখারী ৭১৫১, মুসলিম ৩৮০, ৪৮৩৪)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’অতঃপর সে (শাসক) তার হিতাকাঙ্ক্ষীতার সাথে তাদের অধিকারসমূহ রক্ষা করল না, সে জান্নাতের সুগন্ধটুকুও পাবে না।’’ (বুখারী ৭১৫০)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’যে কোন আমীর মুসলিমদের দেখাশুনার দায়িত্ব নিল, অতঃপর সে তাদের (সমস্যা দূর করার) চেষ্টা করল না এবং তাদের হিতাকাঙ্ক্ষী হল না, সে তাদের সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’’ (মুসলিম ৩৮৩, ৪৮৩৬)
وَعَن أَبي يَعلَى مَعْقِل بنِ يَسارٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُمَا مِنْ عَبْدٍ يَستَرْعِيهِ اللهُ رَعِيَّةً يَمُوتُ يَوْمَ يَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لِرَعِيَّتِهِ إِلاَّ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الجَنَّة متفقٌ عليه
وَفِيْ رِوَايَةٍفَلَمْ يَحُطْهَا بِنُصْحِهِ لَمْ يَجِدْ رَائِحَةَ الجَنَّة
وَفِيْ رِوَايَةٍ لِمُسلِمٍ مَا مِنْ أميرٍ يَلِي أُمُورَ المُسْلِمينَ ثُمَّ لاَ يَجْهَدُ لَهُمْ وَيَنْصَحُ لَهُمْ إِلاَّ لَمْ يَدْخُلْ مَعَهُمُ الْجَنَّةَ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৩) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার এই ঘরে বলতে শুনেছি, হে আল্লাহ! যে কেউ আমার উম্মতের কোন কাজের কিছু দায়িত্ব নিয়ে তাদেরকে কষ্টে ফেলবে, তুমি তাকে কষ্টে ফেলো। আর যে কেউ আমার উম্মতের কোন কাজের কিছু দায়িত্ব নিয়ে তাদের সাথে নম্রতা করবে, তুমি তার সাথে নম্রতা করো।
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُا قَالَتْ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ فِي بَيْتِي هَذَااللَّهُمَّ مَنْ وَلِيَ مِنْ أمْرِ أُمَّتِي شَيْئاً فَشَقَّ عَلَيْهِمْ فَاشْقُقْ عَلَيْهِ وَمَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئاً فَرَفَقَ بِهِمْ فَارفُقْ بِهِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বানী ইস্রাঈলদের (দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের কাজ) পরিচালনা করতেন নবীগণ। যখনই কোন নবী মারা যেতেন, তখনই অন্য আর এক নবী তাঁর প্রতিনিধি হতেন। (জেনে রাখ) আমার পর কোন নবী নেই, বরং আমার পর অধিক সংখ্যায় খলীফা হবে।’’ সাহাবীগণ বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদেরকে কী নির্দেশ দিচ্ছেন?’ তিনি বললেন, যার নিকট প্রথমে বায়আত করবে, তা পালন করবে। তারপর যার নিকট বায়আত করবে, তা পালন করবে। অতঃপর তাদের অধিকার আদায় করবে এবং তোমাদের অধিকার আল্লাহর কাছে চেয়ে নেবে। কারণ, মহান আল্লাহ তাদেরকে প্রজাপালনের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ كَانَتْ بَنُو إسرَائِيلَ تَسُوسُهُم الأَنبِيَاء كُلَّمَا هَلَكَ نَبِيٌّ خَلَفَهُ نَبيٌّ، وَإنَّهُ لاَ نَبِيَّ بَعْدِي وَسَيكُونُ بَعْدِي خُلفَاءُ فَيَكثُرُونَ قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ فَمَا تَأْمُرُنَا ؟ قَالَ أَوْفُوا بِبَيْعَةِ الأَوَّلِ فَالأَوَّلِ ثُمَّ أَعْطُوهُمْ حَقَّهُمْ وَاسْأَلُوا اللهَ الَّذِي لَكُمْ فَإنَّ اللهَ سَائِلُهُمْ عَمَّا اسْتَرْعَاهُمْ متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৫) আয়েয ইবনে আমর (রাঃ) উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদের নিকট গেলেন। অতঃপর তিনি তাকে বললেন, ’হে বৎস! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ’’নিশ্চয় নিকৃষ্টতম শাসক সে, যে প্রজাদের ব্যাপারে কঠোরত।’’ সুতরাং তুমি তাদের দলভুক্ত হওয়া থেকে দূরে থাকো।’ (আহমাদ ২০৯১৩, বুখারী, মুসলিম ৪৮৩৮)
وَعَن عَائِذِ بنِ عَمرٍو أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُبَيْدِ اللهِ بنِ زِيَادٍ فَقَالَ لَهُ : أيْ بُنَيَّ إنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُإنَّ شَرَّ الرِّعَاءِ الحُطَمَةُ فإيَاكَ أن تَكُونَ مِنْهُمْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৬) আবূ মারয়্যাম আযদী (রাঃ) মুআবিয়াহ (রাঃ) কে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ মুসলমিদের কোন (রাজ) কার্যে নিযুক্ত করলেন, অতঃপর সে তাদের অভাব-অভিযোগ, প্রয়োজন ও অনটন থেকে অদৃশ্য থাকল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ সে ব্যক্তির অভাব-অভিযোগ, প্রয়োজন ও অনটন থেকে অদৃশ্য থাকবেন। (তা পূরণ করবেন না।)
وَعَن أَبي مَريَمَ الأَزدِيِّ أنّه قَالَ لِمُعَاوِيَةَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُمَنْ وَلاَّهُ اللهُ شَيْئاً مِنْ أُمُورِ المُسْلِمِينَ فَاحْتَجَبَ دُونَ حَاجَتِهِمْ وَخَلَّتِهِمْ وَفَقْرِهِمْ احْتَجَبَ اللهُ دُونَ حَاجَتِهِ وَخَلَّتِهِ وَفَقْرِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِفَجَعَلَ مُعَاوِيَةُ رَجُلاً عَلَى حَوَائِجِ النَّاسِ رواه أَبُو داود والترمذي
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’চার ব্যক্তিকে আল্লাহ ঘৃণা করেন; অত্যধিক কসম খেয়ে পণ্য বিক্রয়কারী ব্যবসায়ী, অহংকারী গরীব, ব্যভিচারী বৃদ্ধ এবং অত্যাচারী রাজা (শাসক)।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ أَرْبَعَةٌ يَبْغُضُهُمْ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ الْبَيَّاعُ الْحَلَّافُ وَالْفَقِيرُ الْمُخْتَالُ وَالشَّيْخُ الزَّانِي وَالْإِمَامُ الْجَائِرُ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৮) আবূ উমামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের দুই শ্রেণীর লোক আমার সুপারিশ লাভ করতে পারবে না; (বিবেকহীন) অত্যাচারী রাষ্ট্রনেতা এবং প্রত্যেক সত্যত্যাগী অতিরঞ্জনকারী।
عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ صِنْفَانِ مِنْ أُمَّتِي لَنْ تَنَالَهُمَا شَفَاعَتِي: إِمَامٌ ظَلُومٌ وَكُلُّ غَالٍ مَارِقٍ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮১৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে কোন দশ ব্যক্তির আমীরকে কিয়ামতের দিন বেড়ি পরানো অবস্থায় উপস্থিত করা হবে। পরিশেষে হয় তাকে তার (কৃত) ন্যায়পরায়ণতা বেড়ি-মুক্ত করবে, নচেৎ তার (কৃত) অত্যাচারিতা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ نَعَمْ قَالَ مَا مِنْ أَمِيرِ عَشَرَةٍ إِلَّا يُؤْتَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَغْلُولًا لَا يَفُكُّهُ إِلَّا الْعَدْلُ أَوْ يُوبِقُهُ الْجَوْرُ
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮২০) জাবের (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা’ব বিন উজরাহকে বললেন, ’’আল্লাহ তোমাকে নির্বোধ (আমীর) দের শাসনকাল থেকে আশ্রয় দিন।’’ কা’ব বললেন, ’নির্বোধ (আমীর) দের শাসনকাল কি?’ তিনি বললেন, ’’আমার পরবর্তীকালে এক শ্রেণীর আমীর হবে; যারা আমার আদর্শে আদর্শবান হবে না এবং আমার তরীকাও অবলম্বন করবে না। সুতরাং যারা (তাদের দ্বারে দ্বারস্থ হয়ে) তাদের মিথ্যাবাদিতা সত্ত্বেও তাদেরকে সত্যবাদী মনে করবে এবং অত্যাচারে (ফতোয়া ইত্যাদি দ্বারা) তাদেরকে সহযোগিতা করবে তারা আমার দলভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের দলভুক্ত নই। তারা আমার ’হওয’ (কাওসারের) পানি পান করার জন্য উপস্থিত হতে পারবে না।
আর যারা তাদের মিথ্যাবাদিতায় তাদেরকে সত্যবাদী জানবে না এবং অত্যাচারে তাদেরকে সহযোগিতা করবে না তারা আমার দলভুক্ত, আমিও তাদের দলভুক্ত এবং আমার ’হওয’ (কাওসারের) পানি পান করার জন্য উপস্থিত হতে পারবে।
হে কা’ব বিন উজরাহ! সিয়াম হল ঢাল স্বরূপ, সদকাহ (দান-খয়রাত) পাপ মোচন করে এবং নামায হল (আল্লাহর) নৈকট্যদাতা অথবা তোমার (ঈমানের) দলীল।
হে কা’ব বিন উজরাহ! সে মাংস (দেহ) জান্নাতে প্রবেশ করবে না; যা হারাম খাদ্যে প্রতিপালিত হয়েছে। তার জন্য তো দোযখই উপযুক্ত।
হে কা’ব বিন উজরাহ! মানুষের প্রাত্যহিক কর্মপ্রচেষ্টা দুই ধরনের হয়ে থাকে; কিছু মানুষ তো নিজেদেরকে (সৎকর্মের মাধ্যমে) ক্রয় করে (দোযখ থেকে) মুক্ত করে নেয়। আর কিছু মানুষ (অসৎকর্মের মাধ্যমে) নিজেদেরকে বিক্রয় করে ধ্বংস করে দেয়।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ لِكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ أَعَاذَكَ اللهُ مِنْ إِمَارَةِ السُّفَهَاءِ قَالَ وَمَا إِمَارَةُ السُّفَهَاءِ قَالَ أُمَرَاءُ يَكُونُونَ بَعْدِي لَا يَقْتَدُونَ بِهَدْيِي وَلَا يَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِي فَمَنْ صَدَّقَهُمْ بِكَذِبِهِمْ وَأَعَانَهُمْ عَلَى ظُلْمِهِمْ فَأُولَئِكَ لَيْسُوا مِنِّي وَلَسْتُ مِنْهُمْ وَلَا يَرِدُوا عَلَيَّ حَوْضِي وَمَنْ لَمْ يُصَدِّقْهُمْ بِكَذِبِهِمْ وَلَمْ يُعِنْهُمْ عَلَى ظُلْمِهِمْ فَأُولَئِكَ مِنِّي وَأَنَا مِنْهُمْ وَسَيَرِدُوا عَلَيَّ حَوْضِي يَا كَعْبُ بْنَ عُجْرَةَ الصَّوْمُ جُنَّةٌ وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ وَالصَّلَاةُ قُرْبَانٌ أَوْ قَالَ بُرْهَانٌ يَا كَعْبُ بْنَ عُجْرَةَ إِنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ لَحْمٌ نَبَتَ مِنْ سُحْتٍ النَّارُ أَوْلَى بِهِ يَا كَعْبُ بْنَ عُجْرَةَ النَّاسُ غَادِيَانِ فَمُبْتَاعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا وَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُوبِقُهَا
পরিচ্ছেদঃ প্রজাদের সাথে শাসকদের কোমল ব্যবহার করা, তাদের মঙ্গল কামনা করা, তাদের প্রতি স্নেহপরবশ হওয়ার আদেশ এবং প্রজাদেরকে ধোঁকা দেওয়া, তাদের প্রতি কঠোর হওয়া, তাদের স্বার্থ উপেক্ষা করা, তাদের ও তাদের প্রয়োজন সম্বন্ধে উদাসীন হওয়া নিষিদ্ধ।
(১৮২১) মদীনার এক ব্যক্তি হতে বর্ণিত, একদা মুআবিয়া (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) কে এই আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখলেন যে, ’আমার জন্য একটি চিঠি লিখুন এবং তাতে আপনি আমাকে কিছু অসিয়ত করুন (মন্ত্রণা ও উপদেশ দেন)। আর বেশী ভার দেবেন না।’ সুতরাং আয়েশা (রাঃ) হযরত মুআবিয়া (রাঃ) কে চিঠিতে লিখলেন যে, ’সালামুন আলাইক। অতঃপর আমি আপনাকে জানাই যে, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ’’যে ব্যক্তি লোকেদেরকে অসন্তুষ্ট করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, সে ব্যক্তির জন্য লোকেদের কষ্টদানে আল্লাহই যথেষ্ট হন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে লোকেদের সন্তুষ্টি খোঁজে সে ব্যক্তিকে আল্লাহ লোকেদের প্রতিই সোপর্দ করে দেন।’’ অসসালামু আলাইক্।’ (তিরমিযী ২৪১৪, সিলসিলাহ সহীহাহ ২৩১১)
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’’যে ব্যক্তি লোকেদেরকে অসন্তুষ্ট করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, সে ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হন এবং লোকদেরকেও তার প্রতি সন্তুষ্ট করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে লোকদেরকে সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, সে ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এবং লোকদেরকেও তার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দেন।’’ (ইবনে হিব্বান ২৭৬ প্রমুখ)
عَنْ رَجُلٍ مِنْ اهْلِ الْمَدِينَةِ قَالَ : كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى عَائِشَةَ أم الْمُؤْمِنِينَ رَضيَ اللهُ عَنْهَا انِ اكْتُبِي إِلَيَّ كِتَابًا تُوصِينِي فِيهِ وَلا تُكْثِرِي عَلَيَّ فَكَتَبَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا إِلَى مُعَاوِيَةَ : سَلامٌ عَلَيْكَ امَّا بَعْدُ : فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ اللهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كافَاهُ اللهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللهِ وَكَلَهُ اللهُ إِلَى النَّاس وَالسَّلامُ عَلَيْكَ