পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاعْبُدُوا اللهَ وَلا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ

অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও কোন কিছুকে তাঁর অংশী করো না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার কর। (সূরা নিসা ৩৬) তিনি আরো বলেন,

وَاتَّقُوا اللهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَام

অর্থাৎ, সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট চাওয়া এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। (সূরা নিসা ১)

তিনি অন্যত্র বলেন,

وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ

অর্থাৎ, আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আদেশ করেছেন যারা তা অক্ষুন্ন রাখে। (সূরা রা’দ ২১)

وَالَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللهِ مِنْ بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ أُولَئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ

অর্থাৎ, যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য আছে অভিসম্পাত এবং তাদের জন্য আছে মন্দ আবাস। (সূরা রা’দ ২৫)


(১৭৩১) আবূ আইয়ূব খালেদ ইবনে যায়েদ আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে এমন আমল বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সাথে কাউকে অংশীদার করবে না, নামায প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত দেবে এবং রক্ত সম্পর্ক বজায় রাখবে।’’ (শব্দাবলী মুসলিমের ১১৫)

عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ فَقَالَ الْقَوْمُ مَا لَهُ مَا لَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ أَرَبٌ مَا لَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ تَعْبُدُ اللهَ لَا تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصِلُ الرَّحِمَ

বুখারীতে আছে, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, ’আমাকে এমন এক আমলের সন্ধান দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।’ লোকেরা বলল, ’আরে, কী হল ওর কী হল?’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’ওর কোন প্রয়োজন আছে।’’ (অতঃপর ঐ লোকটির উদ্দেশ্যে বললেন,) ’’তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তাঁর সাথে কাউকেও শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে আর আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখবে।’’ (বুখারী ১৩৯৬, ৫৯৮৩)

عَن أَبي أَيُّوبٍ خَالِدِ بنِ زَيدٍ الأَنصَارِي أنَّ رَجُلاً قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ أخْبِرْني بِعَمَلٍ يُدْخِلُني الجَنَّةَ وَيُبَاعِدُني مِنَ النَّارِ فَقَالَ النَّبيُّ ﷺ تَعْبُدُ الله وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيئاً وَتُقِيمُ الصَّلاةَ وتُؤتِي الزَّكَاةَ وتَصِلُ الرَّحمَ متفقٌ عليه

عن ابي ايوب خالد بن زيد الانصاري ان رجلا قال : يا رسول الله اخبرني بعمل يدخلني الجنة ويباعدني من النار فقال النبي ﷺ تعبد الله ولا تشرك به شيىا وتقيم الصلاة وتوتي الزكاة وتصل الرحم متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩২) কাতাদাহ (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত, খাসআম গোত্রের এক ব্যক্তি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। তখন তিনি তাঁর কিছু সঙ্গী-সাথীর সাথে ছিলেন। আমি বললাম, আপনিই কি মনে করেন, আপনি রাসূলুল্লাহ?’ তিনি বললেন, ’’হ্যাঁ।’’ আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! কোন্ আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা।’’ আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! তারপর কী?’ তিনি বললেন, ’’তারপর আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা।’ আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! তারপর কী?’ তিনি বললেন, ’’তারপর ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা দান করা।’’

আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! কোন্ আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণ্য?’ তিনি বললেন, ’’আল্লাহর সঙ্গে শির্ক করা।’’ আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! তারপর কী?’ তিনি বললেন, ’’তারপর আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা।’’ আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! তারপর কী?’ তিনি বললেন, ’’তারপর মন্দ কাজের আদেশ ও ভালো কাজে বাধা দান করা।

عَنْ قَتَادَةَ عَنْ رَجُلٍ مِنْ خَثْعَمَ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِهِ قَالَ: قُلْتُ: أَنْتَ الَّذِي تَزْعُمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ؟ قَالَ: إِيمَانٌ بِاللَّهِ. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ثُمَّ مَهْ؟ قَالَ: ثُمَّ صِلَةُ الرَّحِمِ. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَبْغَضُ إِلَى اللَّهِ؟ قَالَ: الْإِشْرَاكُ بِاللَّهِ. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ثُمَّ مَهْ؟ قَالَ: ثُمَّ قَطِيعَةُ الرَّحِمِ. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ثُمَّ مَهْ؟ قَالَ: ثُمَّ الْأَمْرُ بِالْمُنْكَرِ وَالنَّهْيِ عَنِ الْمَعْرُوفِ

عن قتادة عن رجل من خثعم قال: اتيت النبي صلى الله عليه وسلم وهو في نفر من اصحابه قال: قلت: انت الذي تزعم انك رسول الله؟ قال: نعم. قال: قلت: يا رسول الله اي الاعمال احب الى الله؟ قال: ايمان بالله. قال: قلت: يا رسول الله ثم مه؟ قال: ثم صلة الرحم. قال: قلت: يا رسول الله اي الاعمال ابغض الى الله؟ قال: الاشراك بالله. قال: قلت: يا رسول الله ثم مه؟ قال: ثم قطيعة الرحم. قال: قلت: يا رسول الله ثم مه؟ قال: ثم الامر بالمنكر والنهي عن المعروف

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কাতাদাহ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৩) আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, হে লোক সকল! তোমরা সালাম প্রচার কর, (ক্ষুধার্তকে) অন্নদান কর, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং লোকে যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা নামায পড়। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلاَمٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُيَا أيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ وَأطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصِلُوا الأرْحَامَ وَصَلُّوا والنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ بِسَلاَمرواه الترمذي وقال حديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ

وعن عبد الله بن سلام قال : سمعت رسول الله ﷺ يقوليا ايها الناس افشوا السلام واطعموا الطعام وصلوا الارحام وصلوا والناس نيام تدخلوا الجنة بسلامرواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহেমানের খাতির করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখে। এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে, নচেৎ চুপ থাকে।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ باللهِ وَاليَومِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ باللهِ وَاليَومِ الآخِرِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْراً أَوْ لِيَصْمُتْ متفقٌ عليه

عن ابي هريرة رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال من كان يومن بالله واليوم الاخر فليكرم ضيفه، ومن كان يومن بالله واليوم الاخر فليصل رحمه ومن كان يومن بالله واليوم الاخر فليقل خيرا او ليصمت متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৫) উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’আল্লাহ সকল কিছুকে সৃষ্টি করলেন। অতঃপর যখন তিনি সৃষ্টি কাজ শেষ করলেন, তখন আত্মীয়তার সম্পর্ক উঠে বলল, ’(আমার এই দণ্ডায়মান হওয়াটা) আপনার নিকট বিচ্ছিন্নতা থেকে আশ্রয়প্রার্থীর দণ্ডায়মান হওয়া।’ তিনি (আল্লাহ) বললেন, ’হ্যাঁ তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তোমার সাথে যে সুসম্পর্ক রাখবে, আমিও তার সাথে সুসম্পর্ক রাখব। আর যে তোমার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ সে (রক্ত সম্পর্ক) বলল, ’অবশ্যই।’ আল্লাহ বললেন, ’তাহলে এ মর্যাদা তোমাকে দেওয়া হল।’’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তোমরা চাইলে (এ আয়াতটি) পড়ে নাও; ’ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। ওরা তো তারা, যাদেরকে আল্লাহ অভিশপ্ত ক’রে বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন করেন।’’ (সূরা মুহাম্মাদ ২২-২৩) (বুখারী ৪৮৩০, ৫৯৮৭, ৭৫০২, মুসলিম ৬৬৮২) বুখারীর ৫৯৮৮ অন্য বর্ণনায় ভিন্ন শব্দ বর্ণিত হয়েছে।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إنَّ اللهَ تَعَالَى خَلَقَ الخَلْقَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْهُمْ قَامَتِ الرَّحِمُ، فَقَالَتْ : هَذَا مَقَامُ العَائِذِ بِكَ مِنَ القَطِيعةِ قَالَ : نَعَمْ أمَا تَرْضَيْنَ أنْ أصِلَ مَنْ وَصَلَكِ وَأقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ ؟ قَالَتْ : بَلَى قَالَ : فَذَلِكَ لَكِ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اقْرَؤُوا إنْ شِئْتمْ فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ
وَفِيْ رِوَايَةٍ للبخاري : فَقَالَ الله تَعَالَىمَنْ وَصَلَكِ وَصَلْتُهُ وَمَنْ قَطَعَكِ قَطَعْتُهُ

وعنه قال : قال رسول الله ﷺ ان الله تعالى خلق الخلق حتى اذا فرغ منهم قامت الرحم، فقالت : هذا مقام العاىذ بك من القطيعة قال : نعم اما ترضين ان اصل من وصلك واقطع من قطعك ؟ قالت : بلى قال : فذلك لك ثم قال رسول الله ﷺ اقرووا ان شىتم فهل عسيتم ان توليتم ان تفسدوا في الارض وتقطعوا ارحامكم اولىك الذين لعنهم الله فاصمهم واعمى ابصارهم وفي رواية للبخاري : فقال الله تعالىمن وصلك وصلته ومن قطعك قطعته

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৬) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জ্ঞাতিবন্ধন আরশে ঝুলন্ত আছে এবং সে বলছে, ’যে আমাকে অবিচ্ছিন্ন রাখবে, আল্লাহ তাঁর সম্পর্ক তার সাথে অবিচ্ছিন্ন রাখবেন। আর যে আমাকে বিচ্ছিন্ন করবে, আল্লাহ তাঁর সম্পর্ক তার সাথে বিচ্ছিন্ন করবেন।

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الرَّحِمُ مُعَلَّقَةٌ بِالعَرْشِ تَقُولُ : مَنْ وَصَلَنِي وَصَلَهُ اللهُ وَمَنْ قَطَعَنِي قَطَعَهُ اللهُ متفقٌ عليه

وعن عاىشة قالت : قال رسول الله ﷺ الرحم معلقة بالعرش تقول : من وصلني وصله الله ومن قطعني قطعه الله متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমার কিছু আত্মীয় আছে, আমি তাদের সাথে আত্মীয়তা বজায় রাখি, আর তারা ছিন্ন করে। আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করি, আর তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। তারা কষ্ট দিলে আমি সহ্য করি, আর তারা আমার সাথে মূর্খের আচরণ করে।’ তিনি বললেন, ’’যদি তা-ই হয়, তাহলে তুমি যেন তাদের মুখে গরম ছাই নিক্ষেপ করছ (অর্থাৎ, এ কাজে তারা গোনাহগার হয়।) এবং তোমার সাথে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্যকারী থাকবে; যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এর উপর অনড় থাকবে।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلاً قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ إنّ لِي قَرَابةً أصِلُهُمْ وَيَقْطَعُوني وَأُحْسِنُ إلَيْهِمْ وَيُسِيئُونَ إلَيَّ وَأحْلَمُ عَنْهُمْ وَيَجْهَلُونَ عَلَيَّ فَقَالَ لَئِنْ كُنْتَ كَمَا قُلْتَ فَكأنَّمَا تُسِفُّهُمْ الْمَلَّ وَلاَ يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذلِكَ رواه مسلم

وعن ابي هريرة ان رجلا قال : يا رسول الله ان لي قرابة اصلهم ويقطعوني واحسن اليهم ويسيىون الي واحلم عنهم ويجهلون علي فقال لىن كنت كما قلت فكانما تسفهم المل ولا يزال معك من الله ظهير عليهم ما دمت على ذلك رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৮) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সেই ব্যক্তি সম্পর্ক বজায়কারী নয়, যে সম্পর্ক বজায় করার বিনিময়ে বজায় করে। বরং প্রকৃত সম্পর্ক বজায়কারী হল সেই ব্যক্তি, যে কেউ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সে তা কায়েম করে।

وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَيْسَ الوَاصِلُ بِالمُكَافِئ وَلكِنَّ الوَاصِلَ الَّذِي إِذَا قَطَعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا رواه البخاري

وعن عبد الله بن عمرو عن النبي ﷺ قال ليس الواصل بالمكافى ولكن الواصل الذي اذا قطعت رحمه وصلها رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৩৯) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেছেন, ’তোমাদের কেউ যেন পরানুগামী (ইয়েস-ম্যান) না হয়।’ লোকেরা বলল, ’পরানুগামিতা কী?’ তিনি বললেন, ’এই বলা যে, আমি লোকেদের অনুগামী। তারা সৎ হলে, আমিও সৎ আর তারা পথভ্রষ্ট হলে আমিও পথভ্রষ্ট। বরং প্রত্যেকের মনকে প্রস্তুত রাখা উচিত যে, লোকে কাফের হলে, সে কাফের হবে না।

قَالَ عَبْدُ اللهِ لا يَكُونُ أَحَدُكُمْ إِمَّعَةً قَالُوا: وَمَا الإِمَّعَةُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ؟ قَالَ يَقُولُ: إِنَّمَا أَنَا مَعَ النَّاسِ إِنِ اهْتَدَوا اهْتَدَيْتُ وَإنْ ضَلُّوا ضَلَلْتُ أَلا لَيُوَطِّنُ أَحَدُكُمْ نَفْسَهُ عَلَى إِنْ كَفَرَ النَّاسُ أَنْ لا يَكْفُرَ

قال عبد الله لا يكون احدكم امعة قالوا: وما الامعة يا ابا عبد الرحمن؟ قال يقول: انما انا مع الناس ان اهتدوا اهتديت وان ضلوا ضللت الا ليوطن احدكم نفسه على ان كفر الناس ان لا يكفر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪০) উক্ববাহ বিন আমের (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমার সঙ্গে যে আত্মীয়তা ছিন্ন করেছে, তুমি তার সাথে তা বজায় কর, তোমাকে যে বঞ্চিত করেছে, তুমি তাকে প্রদান কর এবং যে তোমার প্রতি অন্যায়াচরণ করেছে, তুমি তাকে ক্ষমা ক’রে দাও।

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ صِلْ مَنْ قَطَعَكَ وَأَعْطِ مَنْ حَرَمَكَ وَاعْفُ عَمَّنْ ظَلَمَكَ

عن عقبة بن عامر قال قال رسول الله ﷺ صل من قطعك واعط من حرمك واعف عمن ظلمك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪১) আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি তার সাথে সুসম্পর্ক জুড়ে চল যে তোমার সাথে তা নষ্ট করতে চায়, তার প্রতি সদ্ব্যবহার কর যে তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং হক কথা বল; যদিও তা নিজের বিরুদ্ধে হয়।

عن علي قَالَ قَالَ رسول الله ﷺ صِلْ مَنْ قَطَعَكَ وَأَحْسِنْ إلَى مَنْ أَسَاءَ إلَيْكَ وَقُلِ الحَقَّ وَلَوْ عَلَى نَفْسِكَ

عن علي قال قال رسول الله ﷺ صل من قطعك واحسن الى من اساء اليك وقل الحق ولو على نفسك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪২) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি চায় যে, তার রুযী (জীবিকা) প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বৃদ্ধি হোক, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখে।

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ مَن أحَبَّ أنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ ويُنْسأَ لَهُ فِي أثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن انس ان رسول الله ﷺ قال من احب ان يبسط له في رزقه وينسا له في اثره، فليصل رحمه متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৩) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা, সুন্দর চরিত্র অবলম্বন করা এবং প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার রাখায় দেশ আবাদ থাকে এবং আয়ু বৃদ্ধি পায়।

وعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صِلَةُ الرَّحِمِ وَحُسْنُ الخُلُقِ وَحُسْنُ الْجِوَارِ يُعَمِّرْنَ الدِّيَارَ وَيَزِدْنَ فِي الأَعْمَارِ

وعن عاىشة ان النبي صلى الله عليه وسلم قال صلة الرحم وحسن الخلق وحسن الجوار يعمرن الديار ويزدن في الاعمار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৪) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন গোপনে দান প্রতিপালকের ক্রোধ দূরীভূত করে, জ্ঞাতি-বন্ধন অক্ষুন্ন রাখে, আয়ু বৃদ্ধি করে। আর পুণ্যকর্ম সর্বপ্রকার কুমরণ থেকে রক্ষা করে।

عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الخُدْرِي : عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال صَدَقَةُ السِّرِّ تُطْفِىءُ غَضَبَ الرَّبِّ وَصِلَةُ الرَّحِمِ تَزِيدُ فِي الْعُمُرِ وَفِعْلُ المَعْرُوفِ يَقِي مَصَارِعَ السُّوءِ

عن ابي سعيد الخدري : عن النبي صلى الله عليه وسلم قال صدقة السر تطفىء غضب الرب وصلة الرحم تزيد في العمر وفعل المعروف يقي مصارع السوء

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৫) আমর বিন সাহল (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আত্মীয়তার সুসম্পর্ক বজায় রাখাতে সম্পদ বৃদ্ধি হয়, পরিজনের মধ্যে সম্প্রীতি থাকে এবং আয়ুষ্কাল বেড়ে যায়।

عَنْ عَمْرِو بْنِ سَهْلٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ صِلَةُ الْقَرَابَةِ مَثْرَاةٌ فِي الْمَالِ مَحَبَّةٌ فِي الأَهْلِ مَنْسَأَةٌ فِي الأَجَلِ

عن عمرو بن سهل قال: سمعت رسول الله ﷺ يقول صلة القرابة مثراة في المال محبة في الاهل منساة في الاجل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৬) আনাস বিন মালিক (রাঃ) ও সুওয়াইদ বিন আমের আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক আর্দ্র রাখ; যদিও তা সালাম দিয়ে হয়।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَسُوَيْدِ بْنِ عَامِرِ الأنصاري رَضِيَ اللهُ عَنْهُما قالا: قال رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بلوا أرحامكم ولو بالسلام

عن انس بن مالك وسويد بن عامر الانصاري رضي الله عنهما قالا: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بلوا ارحامكم ولو بالسلام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৭) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, মদীনার আনসারীগণের মধ্যে আবূ তালহা (রাঃ) সবচেয়ে অধিক খেজুর বাগানের মালিক ছিলেন। মসজিদে নববীর নিকটবর্তী বায়রুহা নামক বাগানটি তাঁর কাছে অধিক প্রিয় ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাগানে প্রবেশ ক’রে সুপেয় পানি পান করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল; যার অর্থ, ’’তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর পথে ব্যয় করেছ।’’ (আলে ইমরান ৯২) তখন আবূ তালহা (রাঃ) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গিয়ে বললেন, ’ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহ আপনার উপর (আয়াত) অবতীর্ণ ক’রে বলেছেন, ’’তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর পথে ব্যয় করেছ।’’ আর বায়রুহা বাগানটি আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। এটি আল্লাহর নামে সদকাহ করা হল। আমি এর কল্যাণ কামনা করি এবং তা আল্লাহর নিকট আমার জন্য জমা হয়ে থাকবে। কাজেই আপনি যাকে দান করা ভাল মনে করেন, তাকে দান ক’রে দিন।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’আরে! এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ। এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ। তুমি যা বলেছ, তা শুনেছি। আমি মনে করি, তুমি তোমার আপন-জনদের মধ্যে তা বন্টন করে দাও।’’ আবূ তালহা (রাঃ) বললেন, ’ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তাই করব।’ তারপর তিনি তাঁর আত্মীয়-স্বজন, আপন চাচার বংশধরদের মধ্যে তা বন্টন ক’রে দিলেন। (বুখারী ১৪৬১, মুসলিম ২৩৬২)

عَن أَنَسٍ قَالَ : كَانَ أَبُو طَلْحَةَ أكْثَرَ الأنْصَار بالمَدِينَةِ مَالاً مِنْ نَخْل وَكَانَ أَحَبُّ أمْوالِهِ إِلَيْه بَيْرُحَاء وَكَانتْ مُسْتَقْبلَةَ المَسْجِدِ وَكَانَ رَسُول الله ﷺ يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيهَا طَيِّب قَالَ أنَسٌ : فَلَمَّا نَزَلَتْ هذِهِ الآيةُ: لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ قام أَبُو طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ الله ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ إنَّ الله تَعَالَى أنْزَلَ عَلَيْكَ لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ وَإنَّ أَحَبَّ مَالِي إِلَيَّ بَيْرُحَاءُ وَإنَّهَا صَدَقَةٌ للهِ تَعَالَى أرْجُو بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ الله تَعَالَى فَضَعْهَا يَا رَسُولَ اللهِ حَيْثُ أرَاكَ الله فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ بَخ ذلِكَ مَالٌ رَابحٌ ذلِكَ مَالٌ رَابحٌ وقَدْ سَمِعْتُ مَا قُلْتَ وَإنِّي أرَى أنْ تَجْعَلَهَا في الأقْرَبينَ فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ : أفْعَلُ يَا رَسُولَ اللهِ فَقَسَّمَهَا أَبُو طَلْحَةَ في أقَارِبِهِ وبَنِي عَمِّهِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

عن انس قال : كان ابو طلحة اكثر الانصار بالمدينة مالا من نخل وكان احب امواله اليه بيرحاء وكانت مستقبلة المسجد وكان رسول الله ﷺ يدخلها ويشرب من ماء فيها طيب قال انس : فلما نزلت هذه الاية: لن تنالوا البر حتى تنفقوا مما تحبون قام ابو طلحة الى رسول الله ﷺ فقال : يا رسول الله ان الله تعالى انزل عليك لن تنالوا البر حتى تنفقوا مما تحبون وان احب مالي الي بيرحاء وانها صدقة لله تعالى ارجو برها وذخرها عند الله تعالى فضعها يا رسول الله حيث اراك الله فقال رسول الله ﷺ بخ ذلك مال رابح ذلك مال رابح وقد سمعت ما قلت واني ارى ان تجعلها في الاقربين فقال ابو طلحة : افعل يا رسول الله فقسمها ابو طلحة في اقاربه وبني عمه متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৮) উম্মুল মু’মেনীন মায়মূনাহ বিনতে হারেস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি তাঁর একটি ক্রীতদাসীকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুমতি না নিয়েই মুক্ত করলেন। অতঃপর যখন ঐ দিন এসে পৌঁছল, যেদিন তাঁর কাছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যাওয়ার পালা, তখন মায়মূনাহ বললেন, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি যে আমার ক্রীতদাসীকে মুক্ত করে দিয়েছি, আপনি কি তা বুঝতে পেরেছেন?’ তিনি বললেন, তুমি কি (সত্যই) এ কাজ করেছ? মায়মূনা বললেন, ’জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, তুমি যদি ক্রীতদাসীটিকে তোমার মামাদেরকে দিতে, তাহলে তুমি বেশী সওয়াব পেতে।

وَعَن أُمِّ الْمُؤمِنِينَ مَيمُونَةَ بِنتِ الحَارِثِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُا: أنَّهَا أعْتَقَتْ وَلِيدَةً وَلَمْ تَستَأذِنِ النَّبيَّ ﷺ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُهَا الَّذِي يَدُورُ عَلَيْهَا فِيهِ، قَالَتْ: أشَعَرْتَ يَا رَسُولَ اللهِ، أنِّي أعتَقْتُ وَلِيدَتِي؟ قَالَ أَوَ فَعَلْتِ؟ قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ أما إنَّكِ لَوْ أعْطَيْتِهَا أخْوَالَكِ كَانَ أعْظَمَ لأِجْرِكِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ام المومنين ميمونة بنت الحارث رضي الله عنها: انها اعتقت وليدة ولم تستاذن النبي ﷺ فلما كان يومها الذي يدور عليها فيه، قالت: اشعرت يا رسول الله، اني اعتقت وليدتي؟ قال او فعلت؟ قالت: نعم قال اما انك لو اعطيتها اخوالك كان اعظم لاجرك متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মাইমূনাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৪৯) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) এর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’হে মহিলাগণ! তোমরা সাদকাহ কর; যদিও তোমাদের অলংকার থেকে হয়।’’ যায়নাব (রাঃ) বলেন, সুতরাং আমি (আমার স্বামী) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) এর নিকট এসে বললাম, ’আপনি গরীব মানুষ, আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাদকাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব আপনি তাঁর নিকট গিয়ে এ কথা জেনে আসুন যে, (আমি যে, আপনার উপর ও আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত এতীমদের উপর খরচ করি তা) আমার পক্ষ থেকে সাদকাহ হিসাবে যথেষ্ট হবে কি? নাকি আপনাদেরকে বাদ দিয়ে আমি অন্যকে দান করব?’ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বললেন, ’বরং তুমিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জেনে এসো।’ সুতরাং আমি তাঁর নিকট গেলাম। দেখলাম, তাঁর দরজায় আরও একজন আনসারী মহিলা দাঁড়িয়ে আছে, তার প্রয়োজনও আমার প্রয়োজনের অনুরূপ।

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভাবগম্ভীরতা দান করা হয়েছিল। (তাঁকে সকলেই ভয় করত।) ইতোমধ্যে বিলাল (রাঃ) কে আমাদের পাশ দিয়ে যেতে দেখে বললাম, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে বলুন, ’দরজার কাছে দু’জন মহিলা আপনাকে জিজ্ঞাসা করছে যে, তারা যদি নিজ স্বামী ও তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত এতীমদের উপর খরচ করে, তাহলে তা সাদকাহ হিসাবে যথেষ্ট হবে কি? আর আমরা কে, সে কথা জানাবেন না।’ তিনি প্রবেশ ক’রে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তারা কে?’’ বিলাল (রাঃ) বললেন, ’এক আনসারী মহিলা ও যায়নাব।’ তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ যায়নাব? বিলাল (রাঃ) উত্তর দিলেন, ’আব্দুল্লাহর স্ত্রী।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাদের জন্য দু’টি সওয়াব রয়েছে, আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখার সওয়াব এবং সাদকাহ করার সওয়াব।

وَعَن زَينَبَ الثَّقَفِيَّةِ امرَأَةِ عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَعَنهَا قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ تَصَدَّقْنَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ قَالَتْ : فَرَجَعْتُ إِلَى عَبدِ اللهِ بنِ مَسعُودٍ فَقُلتُ لَهُ : إنَّكَ رَجُلٌ خَفِيفُ ذَاتِ اليَدِ وَإنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَدْ أمَرَنَا بِالصَّدَقَةِ فَأْتِهِ فَاسأَلهُ فإنْ كَانَ ذلِكَ يْجُزِئُُ عَنِّي وَإلاَّ صَرَفْتُهَا إِلَى غَيْرِكُمْ فَقَالَ عَبدُ اللهِ : بَلِ ائْتِيهِ أنتِ فانْطَلَقتُ فَإذَا امْرأةٌ مِنَ الأنْصارِ بِبَابِ رسولِ اللهِ ﷺ حَاجَتي حَاجَتُها وَكَانَ رَسُولُ الله ﷺ قَدْ أُلْقِيَتْ عَلَيهِ المَهَابَةُ فَخَرجَ عَلَيْنَا بِلاَلٌ فَقُلْنَا لَهُ : ائْتِ رَسُولَ اللهِ ﷺ فَأخْبِرْهُ أنَّ امْرَأتَيْنِ بِالبَابِ تَسألانِكَ : أُتُجْزِئُ الصَّدَقَةُ عَنْهُمَا عَلَى أزْواجِهمَا وَعَلَى أيْتَامٍ في حُجُورِهِما ؟ وَلاَ تُخْبِرْهُ مَنْ نَحْنُ فَدَخلَ بِلاَلٌ عَلَى رَسُولِ الله ﷺ فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ هُمَا ؟ قَالَ : امْرَأةٌ مِنَ الأنْصَارِ وَزَيْنَبُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أيُّ الزَّيَانِبِ هِيَ ؟ قَالَ : امْرَأةُ عَبدِ الله فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَهُمَا أجْرَانِ : أجْرُ القَرَابَةِ وَأجْرُ الصَّدَقَةِ متفقٌ عليه

وعن زينب الثقفية امراة عبد الله بن مسعود رضي الله عنه وعنها قالت : قال رسول الله ﷺ تصدقن يا معشر النساء ولو من حليكن قالت : فرجعت الى عبد الله بن مسعود فقلت له : انك رجل خفيف ذات اليد وان رسول الله ﷺ قد امرنا بالصدقة فاته فاساله فان كان ذلك يجزى عني والا صرفتها الى غيركم فقال عبد الله : بل اىتيه انت فانطلقت فاذا امراة من الانصار بباب رسول الله ﷺ حاجتي حاجتها وكان رسول الله ﷺ قد القيت عليه المهابة فخرج علينا بلال فقلنا له : اىت رسول الله ﷺ فاخبره ان امراتين بالباب تسالانك : اتجزى الصدقة عنهما على ازواجهما وعلى ايتام في حجورهما ؟ ولا تخبره من نحن فدخل بلال على رسول الله ﷺ فساله فقال له رسول الله ﷺ من هما ؟ قال : امراة من الانصار وزينب فقال رسول الله ﷺ اي الزيانب هي ؟ قال : امراة عبد الله فقال رسول الله ﷺ لهما اجران : اجر القرابة واجر الصدقة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ যায়নাব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার

পরিচ্ছেদঃ আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব

(১৭৫০) সালমান ইবনে আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’...মিসকীনকে সাদকাহ করলে সাদকাহ (করার সওয়াব) হয়। আর আত্মীয়কে সাদকাহ করলে দু’টি সওয়াব হয়ঃ সাদকাহ করার ও আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখার।’’

وَعَن سَلمَانَ بنِ عَامِرٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الصَّدَقَةُ عَلَى المِسْكِينِ صَدَقةٌ وعَلَى ذِي الرَّحِمِ ثِنْتَانِ : صَدَقَةٌ وَصِلَةٌرواه الترمذي وَقالَ حديث حسن

وعن سلمان بن عامر عن النبي ﷺ قال الصدقة على المسكين صدقة وعلى ذي الرحم ثنتان : صدقة وصلةرواه الترمذي وقال حديث حسن

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৭/ হক ও অধিকার
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »