পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪২) আব্দুল্লাহ বিন যায়দ (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরবের মরণ! আরবের মরণ! আমি তোমাদের উপর আমার সবচেয়ে অধিক যে জিনিসের ভয় হয়, তা হল ব্যভিচার ও গুপ্ত কুপ্রবৃত্তি।
وعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زيد رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ يَا نَعَايَا الْعَرَبِ يَا نَعَايَا الْعَرَبِ إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الزنا، وَالشَّهْوَةُ الْخَفِيَّةُ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৩) আবূ বারযাহ আসলামী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য যে সকল জিনিস ভয় করি, তার মধ্যে অন্যতম হল তোমাদের উদর ও যৌন-সংক্রান্ত ভ্রষ্টকারী কুপ্রবৃত্তি এবং ভ্রষ্টকারী ফিতনা।
عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ مِمَّا أَخْشَى عَلَيْكُمْ شَهَوَاتِ الْغَيِّ فِي بُطُونِكُمْ وَفُرُوجِكُمْ وَمُضِلَّاتِ الْفِتَنِ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আদম সন্তানের ব্যভিচারের অংশ লিখে দিয়েছেন, যা সে অবশ্যই পেয়ে থাকবে। সুতরাং চক্ষুর ব্যভিচার দর্শন, জিহ্বার ব্যভিচার হল কথন, মন আশা ও কামনা করে এবং জননেন্দ্রিয় তা সত্যায়ন অথবা মিথ্যায়ন করে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَى أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ فَزِنَى الْعَيْنَيْنِ النَّظَرُ وَزِنَى اللِّسَانِ النُّطْقُ وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِى وَالْفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ أَوْ يُكَذِّبُهُ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৫) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যভিচারী যখন ব্যভিচার করে, তখন মু’মিন থাকা অবস্থায় সে ব্যভিচার করতে পারে না। কোন চোর যখন চুরি করে, তখন মু’মিন থাকা অবস্থায় সে চুরি করতে পারে না এবং কোন মদ্যপায়ী যখন মদ্যপান করে, তখন মু’মিন থাকা অবস্থায় সে মদ্যপান করতে পারে না।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لاَ يَزْنِى الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৬) সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (অঙ্গ জিভ) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (অঙ্গ গুপ্তাঙ্গ) সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব।
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الجَنَّةَ متفق عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তার দুই চোয়ালের মধ্যস্থিত অঙ্গ (জিহ্বা) ও দু’পায়ের মাঝখানের অঙ্গ (লজ্জাস্থান)এর ক্ষতি থেকে মুক্ত রাখবেন, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَقَاهُ اللهُ شَرَّ مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَشَرَّ مَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ دَخَلَ الجَنَّةَ رواه الترمذي وقَالَ حديث حسن
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৮) আবু হুরাইরা (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন যেদিন তাঁর (ঐ) ছায়া ভিন্ন অন্য কোন ছায়া থাকবে না; তন্মধ্যে— একজন সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্তা সুন্দরী (ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে) আহ্বান করে কিন্তু সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ مَنصَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ : إنِّي أخَافُ الله متفقٌ عليه
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৪৯) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের পূর্বে (বনী ইসরাঈলের যুগে) তিন ব্যক্তি একদা সফরে বের হল। চলতে চলতে রাত এসে গেল। সুতরাং তারা রাত কাটানোর জন্য একটি পর্বত-গুহায় প্রবেশ করল। অল্পক্ষণ পরেই একটা বড় পাথর উপর থেকে গড়িয়ে নীচে এসে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। এ দেখে তারা বলল যে, ’এহেন বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে এই যে, তোমরা তোমাদের নেক আমলসমূহকে অসীলা বানিয়ে আল্লাহর কাছে দু’আ কর।’ সুতরাং তারা স্ব স্ব আমলের অসীলায় (আল্লাহর কাছে) দু’আ করতে লাগল।
তাদের মধ্যে একজন বলল, হে আল্লাহ! আমার ছিল এক চাচাতো বোন। সে ছিল আমার নিকট সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়া। একদিন আমি তার সাথে ব্যভিচার করতে চাইলে সে সম্মত হল না। অতঃপর এক বছর দুর্ভিক্ষে দেখা দিলে বাধ্য হয়ে সে আমার নিকট এল। আমি তাকে একশত বিশ দীনার এই শর্তে দিলাম যে, সে আমাকে তার দেহ সমর্পণ করে দেবে। একদা সে তাই করল। অতঃপর যখন আমি তাকে আমার আয়ত্তে পেলাম (অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, অতঃপর আমি যখন তার দুই পায়ের ফাঁকে বসলাম) তখন সে আমাকে বলল, ’আল্লাহকে ভয় কর। আর অবৈধভাবে তুমি আমার কৌমার্য নষ্ট করে দিও না।’ এই কথা শুনামাত্র আমি তার সাথে যৌন-মিলন করতে দ্বিধাবোধ করলাম। আমি তাকে ছেড়ে সরে গেলাম অথচ সে আমার নিকট একান্ত প্রিয়পাত্রী ছিল। আর যে স্বর্ণমুদ্রা আমি তাকে প্রদান করেছিলাম তাও ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ গো! যদি তুমি জান যে, আমি একাজ কেবলমাত্র তোমার সন্তুষ্টিলাভের আশায় করেছি তাহলে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা হতে আমাদেরকে রক্ষা কর। এরপর পাথরটি (একটু) সরে গেল।---’’
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما قَالَ : سمعتُ رسولَ الله ﷺ يقول انطَلَقَ ثَلاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتَّى آوَاهُمُ المَبيتُ إِلى غَارٍ فَدَخلُوهُ، فانْحَدرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الجَبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ الغَارَ فَقَالُوا : إِنَّهُ لاَ يُنْجِيكُمْ مِنْ هذِهِ الصَّخْرَةِ إِلاَّ أنْ تَدْعُوا اللهَ بصَالِحِ أعْمَالِكُمْ قَالَ رجلٌ مِنْهُمْ : اللَّهُمَّ إنَّهُ كانَتْ لِيَ ابْنَةُ عَمّ كَانَتْ أَحَبَّ النّاسِ إليَّ - وَفِيْ رِوَايَةٍ : كُنْتُ أُحِبُّها كأَشَدِّ مَا يُحِبُّ الرِّجَالُ النساءَ - فأَرَدْتُهَا عَلَى نَفْسِهَا فامْتَنَعَتْ منِّي حَتَّى أَلَمَّتْ بها سَنَةٌ مِنَ السِّنِينَ فَجَاءتْنِي فَأَعْطَيْتُهَا عِشْرِينَ وَمئةَ دينَارٍ عَلَى أنْ تُخَلِّيَ بَيْني وَبَيْنَ نَفْسِهَا فَفعَلَتْ حَتَّى إِذَا قَدَرْتُ عَلَيْهَا - وَفِيْ رِوَايَةٍ : فَلَمَّا قَعَدْتُ بَينَ رِجْلَيْهَا قَالَتْ : اتَّقِ اللهَ وَلاَ تَفُضَّ الخَاتَمَ إلاّ بِحَقِّهِ، فَانصَرَفْتُ عَنْهَا وَهيَ أَحَبُّ النَّاسِ إليَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الَّذِي أعْطَيتُها اللَّهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغاءَ وَجْهِكَ فافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فيهِ فانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ غَيْرَ أَنَّهُمْ لا يَسْتَطِيعُونَ الخُرُوجَ مِنْهَا
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫০) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন ব্যক্তি ছাড়া ’আল্লাহ ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল’ এ কথায় সাক্ষ্যদাতা কোন মুসলিমের খুন (কারো জন্য) বৈধ নয়; বিবাহিত ব্যভিচারী, খুনের বদলে হত্যাযোগ্য খুনী এবং দ্বীন ও জামাআত ত্যাগী।
عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنِّى رَسُولُ اللهِ إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ الثَّيِّبُ الزَّانِ وَالنَّفْسُ بِالنَّفْسِ وَالتَّارِكُ لِدِينِهِ الْمُفَارِقُ لِلْجَمَاعَةِ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫১) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি (অথবা এক ব্যক্তি) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, ’আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় পাপ কী?’ উত্তরে তিনি বললেন, এই যে, তুমি তাঁর কোন শরীক নির্ধারণ কর—অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।’’ আমি বললাম, ’এটা তো বিরাট! অতঃপর কোন্ পাপ?’ তিনি বললেন, এই যে, তোমার সাথে খাবে—এই ভয়ে তোমার নিজ সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, ’অতঃপর কোন পাপ?’ তিনি বললেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে তোমার ব্যভিচার করা। আর এ ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে,
وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا - يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا
অর্থাৎ, (আল্লাহর বান্দারা) আল্লাহর সঙ্গে কোন উপাস্যকে অংশী করে না, আল্লাহ যাকে যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে হত্যা নিষেধ করেছেন তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা এ সব করে তারা শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন ওদের আযাব বর্ধিত করা হবে এবং সেখানে তারা হীন অবস্থায় স্থায়ী হবে। (সূরা ফুরকান ৬৮-৬৯)
عن عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ أَىُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ؟ قَالَ أَنْ تَدْعُوَ لِلهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قَالَ ثُمَّ أَىٌّ قَالَ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ مَخَافَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قَالَ ثُمَّ أَىٌّ قَالَ أَنْ تُزَانِىَ حَلِيلَةَ جَارِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَهَا وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِى حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫২) সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত, নিবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক স্বপ্নের বর্ণনায় বলেন, ’—সুতরাং আমরা চলতে লাগলাম এবং (তন্দুর) চুলার মত একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। সেখানে শোরগোল ও নানা শব্দ ছিল। আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ রয়েছে। আর নীচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে, তখনই তারা উচ্চরবে চিৎকার ক’রে উঠছে। আমি বললাম, ’এরা কারা?’ ফিরিশতারা আমাকে বললেন, ’চলুন, চলুন।’ অতঃপর তাঁরা বললেন, ’যে সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা (তন্দুর) চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে, তারা হল ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর দল।
-
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫৩) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখনই কোন জাতি তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, তখনই তাদের মাঝে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যখনই কোন জাতির মাঝে অশ্লীলতা আত্মপ্রকাশ করে, তখনই সে জাতির জন্য আল্লাহ মৃত্যুকে আধিপত্য প্রদান করেন। (তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেড়ে যায়।) আর যখনই কোন জাতি যাকাৎ-দানে বিরত হয়, তখনই তাদের জন্য (আকাশের) বৃষ্টি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
عَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا نَقَضَ قَوْمٌ الْعَهْدَ قَطُّ إِلاَّ كَانَ الْقَتْلُ بَيْنَهُمْ وَلاَ ظَهَرَتِ الْفَاحِشَةُ فِى قَوْمٍ قَطُّ إِلاَّ سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمُ الْمَوْتَ وَلاَ مَنَعَ قَوْمٌ الزَّكَاةَ إِلاَّ حَبَسَ اللهُ عَنْهُمُ الْقَطْرَ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫৪) আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রীতদাসী ব্যভিচার করলে এবং তা প্রমাণিত হলে তাকে কশাঘাতের দণ্ড দেবে এবং ভৎর্সনা করবে না। দ্বিতীয়বার ব্যভিচার করলে তাকে অনুরূপ দণ্ড দেবে এবং ভৎর্সনা করবে না। তৃতীয়বার ব্যভিচার করলে একটি চুলের রশির বিনিময়েও তাকে বিক্রয় করে দেবে।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَة قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ إِذَا زَنَتْ أَمَةُ أَحَدِكُمْ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَجْلِدْهَا الْحَدَّ وَلاَ يُثَرِّبْ عَلَيْهَا ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَلْيَجْلِدْهَا الْحَدَّ وَلاَ يُثَرِّبْ عَلَيْهَا ثُمَّ إِنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَبِعْهَا وَلَوْ بِحَبْلٍ مِنْ شَعَرٍ
পরিচ্ছেদঃ ব্যভিচার
(১৬৫৫) আবূ উমামা (রাঃ) বলেন, একদা এক যুবক আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, ’হে আল্লাহ রসূল! আপনি আমাকে ব্যভিচার করার অনুমতি দিন!’
এ কথা শুনে লোকেরা তাকে ধমক দিয়ে বলল, ’থামো, থামো! (এ কী বলছ তুমি?)’
কিন্তু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ’’আমার কাছে এসো।’’
সে তাঁর কাছে এসে বসলে তিনি তাঁকে বললেন, ’’তুমি কি নিজ মায়ের জন্য তা পছন্দ কর?’’
সে বলল, ’না, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন।’
তিনি বললেন, ’’তাহলে লোকেরাও তো তাদের মায়েদের জন্য তা পছন্দ করে না।’’
অতঃপর তিনি বললেন, ’’তাহলে তুমি কি তোমার মেয়ের জন্য তা পছন্দ কর?’’
সে বলল, ’না, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন।’
তিনি বললেন, ’’তাহলে লোকেরাও তো তাদের মেয়েদের জন্য তা পছন্দ করে না।’’
অতঃপর তিনি বললেন, ’’তাহলে তুমি কি তোমার বোনের জন্য তা পছন্দ কর?’’
সে বলল, ’না, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন।’
তিনি বললেন, ’’তাহলে লোকেরাও তো তাদের বোনেদের জন্য তা পছন্দ করে না।’’
অতঃপর তিনি বললেন, ’’তাহলে তুমি কি তোমার ফুফুর জন্য তা পছন্দ কর?’’
সে বলল, ’না, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন।’
তিনি বললেন, ’’তাহলে লোকেরাও তো তাদের ফুফুদের জন্য তা পছন্দ করে না।’’
অতঃপর তিনি বললেন, ’’তাহলে তুমি কি তোমার খালার জন্য তা পছন্দ কর?’’
সে বলল, ’না, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন।’
তিনি বললেন, ’’তাহলে লোকেরাও তো তাদের খালাদের জন্য তা পছন্দ করে না।’’
অতঃপর তিনি তার বুকে হাত রাখলেন এবং তার জন্য দু’আ ক’রে বললেন, হে আল্লাহ! তুমি ওর গোনাহ মাফ করে দাও, ওর হৃদয়কে পবিত্র করে দাও এবং ওকে ব্যভিচার থেকে রক্ষা কর।
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর সেই যুবক আর ব্যভিচারের দিকে ভ্রূক্ষেপও করেনি।
عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ قَالَ إِنَّ فَتًى شَابًّا أَتَى النَّبِيَّ ﷺ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ ائْذَنْ لِي بِالزِّنَا فَأَقْبَلَ الْقَوْمُ عَلَيْهِ فَزَجَرُوهُ قَالُوا مَهْ مَهْ فَقَالَ ادْنُهْ فَدَنَا مِنْهُ قَرِيبًا قَالَ فَجَلَسَ قَالَ أَتُحِبُّهُ لِأُمِّكَ قَالَ لَا وَاللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ وَلَا النَّاسُ يُحِبُّونَهُ لِأُمَّهَاتِهِمْ قَالَ أَفَتُحِبُّهُ لِابْنَتِكَ قَالَ لَا وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ وَلَا النَّاسُ يُحِبُّونَهُ لِبَنَاتِهِمْ قَالَ أَفَتُحِبُّهُ لِأُخْتِكَ قَالَ لَا وَاللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ وَلَا النَّاسُ يُحِبُّونَهُ لِأَخَوَاتِهِمْ قَالَ أَفَتُحِبُّهُ لِعَمَّتِكَ قَالَ لَا وَاللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ وَلَا النَّاسُ يُحِبُّونَهُ لِعَمَّاتِهِمْ قَالَ أَفَتُحِبُّهُ لِخَالَتِكَ قَالَ لَا وَاللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ قَالَ وَلَا النَّاسُ يُحِبُّونَهُ لِخَالَاتِهِمْ قَالَ فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهِ وَقَالَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ ذَنْبَهُ وَطَهِّرْ قَلْبَهُ وَحَصِّنْ فَرْجَهُ فَلَمْ يَكُنْ بَعْدُ ذَلِكَ الْفَتَى يَلْتَفِتُ إِلَى شَيْءٍ