পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ إِلَى قَوْله تَعَالَى: مَا يُريدُ اللهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ وَلكِنْ يُريدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর এবং তোমাদের মাথা মাসাহ কর এবং পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত কর। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তাহলে বিশেষভাবে (গোসল করে) পবিত্র হও। যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা হতে আগমন করে, অথবা তোমরা স্ত্রী-সহবাস কর এবং পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর; তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাসাহ কর। আল্লাহ তোমাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট দিতে চান না, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সূরা মায়েদাহ ৬ )
(৫৫৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয় আমার উম্মতকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় ডাকা হবে, যে সময় তাদের ওযূর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে তার চমক বাড়াতে চায়, সে যেন তা করে। (অর্থাৎ সে যেন তার ওযূর সীমার অতিরিক্ত অংশও ধুয়ে ফেলে।)
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إِنَّ أُمَّتِي يُدْعَوْنَ يَوْمَ القِيَامَةِ غُرّاًً مُحَجَّلِينَ مِنْ آثَارِ الوُضُوءِ فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أنْ يُطِيلَ غُرَّتَهُ فَلْيَفْعَلْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৪) আবু হাযেম বলেন, আবু হুরাইরা (রাঃ) যখন নামাযের জন্য ওযু করছিলেন, তখন আমি তাঁর পশ্চাতে ছিলাম। দেখলাম, হাতকে লম্বা করে ধুচ্ছিলেন, এমন কি বগল পর্যন্ত হাত ফিরাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, হে আবু হুরাইরা! এ আবার কোন ওযু? তিনি বললেন, হে ফররুখের বংশধর! তোমরা এখানে রয়েছ? যদি আমি জানতাম যে, তোমরা এখানে রয়েছ তাহলে এ ওযু করতাম না। আমি আমার বন্ধু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ওযুর পানি যদ্দূর পৌঁছবে তদ্দূর মুমিনের অঙ্গে অলংকার (জ্যোতি) শোভমান হবে।
عَن أَبِى حَازِمٍ قَالَ كُنْتُ خَلْفَ أَبِى هُرَيْرَةَ وَهُوَ يَتَوَضَّأُ لِلصَّلاَةِ فَكَانَ يَمُدُّ يَدَهُ حَتَّى تَبْلُغَ إِبْطَهُ فَقُلْتُ لَهُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ مَا هَذَا الْوُضُوءُ فَقَالَ يَا بَنِى فَرُّوخَ أَنْتُمْ هَا هُنَا لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكُمْ هَا هُنَا مَا تَوَضَّأْتُ هَذَا الْوُضُوءَ سَمِعْتُ خَلِيلِى ﷺ يَقُولُ تَبْلُغُ الْحِلْيَةُ مِنَ الْمُؤْمِنِ حَيْثُ يَبْلُغُ الْوَضُوءُ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৫) উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করবে, তার পাপসমূহ তার দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে। এমনকি তার নখগুলোর নিচে থেকেও (পাপ) বেরিয়ে যাবে।
وَعَن عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَن تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الوُضُوءَ خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُج مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِهِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৬) উক্ত রাবী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার এই ওযূর মত ওযূ করতে দেখলাম। অতঃপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি এরূপ ওযূ করবে, তার পূর্বকৃত পাপরাশি মাফ করা হবে এবং তার নামায ও মসজিদের দিকে চলার সওয়াব অতিরিক্ত হবে।
وَعَنْهُ قَالَ : رَأيتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ تَوَضَّأَ مِثْلَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأ هكَذَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَكَانَتْ صَلاَتُهُ وَمَشْيُهُ إِلَى المَسْجدِ نَافِلَةً رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৭) উসমান (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে কোন ব্যক্তি যখনই সুন্দরভাবে ওযু করে নামায পড়ে, তখনই তার ঐ ওযুর সময় থেকে দ্বিতীয় নামায পড়া পর্যন্ত মধ্যবর্তীকালীন সময়ের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
عثمان رضي الله عَنه قَالَ سمعت رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ يقول مَا مِنِ امْرِىءٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يُصَلِّي الصَّلاَةَ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الصَّلاَةِ الأُخْرَى حَتَّى يُصَلِّيَهَا
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুসলিম কিংবা মু’মিন বান্দাহ যখন ওযূ করবে এবং যখন সে নিজ মুখমণ্ডল ধৌত করবে, তখন তার মুখমণ্ডল হতে সেই গোনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যাবে, যে সব গোনাহ তার দু’টি চোখ দিয়ে দেখার ফলে সংঘটিত হয়েছিল। (অনুরূপভাবে) যখন সে নিজ হাত দু’টি ধোবে, তখন তা হতে সে সব পাপ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে নির্গত হয়ে যাবে, যে সব পাপ তার দুই হাত দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। এবং যখন সে নিজ পা দু’টি ধৌত করবে, তখন তার পা দু’টি হতে সে সমস্ত পাপরাশি পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যাবে, যেগুলি তার দু’টি পায়ে চলার ফলে সংঘটিত হয়েছিল। শেষ অবধি সে (ক্ষুদ্র) পাপরাশি হতে পাক-পবিত্র হয়ে বেরিয়ে আসবে।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا تَوَضَّأ العَبْدُ المُسْلِمُ أَو المُؤْمِنُ فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ المَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ فَإذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ المَاءِ أَو مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ فَإذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلاَهُ مَعَ المَاءِ أَو مَعَ آخِرِ قَطْرِ المَاءِ حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيَّاً مِنَ الذُّنُوبِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৫৯) উক্ত রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার) কবরস্থানে এসে (কবরবাসীদের সম্বোধন করে) বললেন, হে (পরকালের) ঘরবাসী মু’মিনগণ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষণ হোক। যদি আল্লাহ চান তো আমরাও তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। আমার বাসনা যে, যদি আমরা আমাদের ভাইদেরকে দেখতে পেতাম। সাহাবীগণ নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন, তোমরা তো আমার সহচরবৃন্দ। আমার ভাই তারা, যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি।
সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনো পর্যন্ত আগমন করেনি, তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, আচ্ছা বল, যদি খাঁটি কাল রঙের ঘোড়ার দলে, কোন লোকের কপাল ও পা সাদা দাগবিশিষ্ট ঘোড়া থাকে, তাহলে সে তার ঘোড়া চিনতে পারবে না কি? তাঁরা বললেন, অবশ্যই পারবে, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তারা এই অবস্থায় (হাশরের মাঠে) আগমন করবে যে, ওযূ করার দরুন তাদের হাত-পা চমকাতে থাকবে। আর আমি হওযে কাউসার-এ তাদের অগ্রগামী ব্যবস্থাপক হব। (অর্থাৎ, তাদের আগেই আমি সেখানে পৌঁছে যাব।)
وَعَنْهُ : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ أَتَى المَقبَرَةَ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَومٍ مُؤْمِنِينَ وَإنَّا إنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ وَدِدْتُ أنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوانَنَا قَالُوْا : أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ قَالَ أنْتُمْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأتُوا بَعْدُ قَالُوْا : كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ فَقَالَ أَرَأيْتَ لَوْ أنَّ رَجُلاً لَهُ خَيلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَيْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ ؟ قَالُوْا : بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فإِنَّهُمْ يَأتُونَ غُرّاً مُحَجَّلينَ مِنَ الوُضُوءِ وَأنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الحَوْضِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬০) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা সমবেত সহচরদের উদ্দেশ্যে) বললেন, তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলব না কি, যার দ্বারা আল্লাহ গোনাহসমূহকে মোচন করে দেবেন এবং (জান্নাতে) তার দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? তাঁরা বললেন, ’অবশ্যই, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, (তা হচ্ছে) কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, অধিক মাত্রায় মসজিদে গমন করা এবং এক ওয়াক্তের নামায আদায় করে পরবর্তী ওয়াক্তের নামাযের জন্য অপেক্ষা করা। আর এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ। এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ।
وَعَنْهُ : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ أَلاَ أَدُّلُكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ ؟ قَالُوْا : بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ إِسْبَاغُ الوُضُوءِ عَلَى المَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الخُطَا إِلَى المَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬১) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার ওযূ নষ্ট হয়ে গেছে, তার পুনরায় ওযূ না করা পর্যন্ত নামায কবুল হবে না।
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لَا يَقْبَلُ اللهُ صَلَاةَ أَحَدِكُمْ إِذَا أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬২) সাওবান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা (প্রত্যেক বিষয়ে) কর্তব্যনিষ্ঠ রহ; আর তাতে কখনই সক্ষম হবে না। জেনে রেখো, তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল নামায। আর মুমিন ব্যতীত কেউই ওযুর হিফাযত করবে না।
عَن ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ اسْتَقِيمُوا وَلَنْ تُحْصُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ خَيرَ أَعْمَالِكُمُ الصَّلاةُ وَلا يُحَافِظُ عَلَى الْوُضُوءِ إِلا مُؤْمِنٌ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৩) আবূ মালিক আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (বাহ্যিক) পবিত্রতা অর্জন করা হল অর্ধেক ঈমান।
وَعَنْ أَبيْ مالك الأشعري قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺالطُّهُورُ شَطْرُ الإيمَانِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে তার উভয় পায়ের গোড়ালী (ভালোরূপে) ধৌত করেনি। এর ফলে তিনি বললেন, (ঐ) গোড়ালীগুলির জন্য জাহান্নামের দুর্ভোগ।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ رَأَى رَجُلاً لَمْ يَغْسِلْ عَقِبَيْهِ فَقَالَ وَيْلٌ لِلأَعْقَابِ مِنَ النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৫) উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পরিপূর্ণরূপে ওযূ করে যে ব্যক্তি এই দু’আ বলবে, ’আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ।’ অর্থাৎ, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত দূত (রসূল)। তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম ৫৭৬, আবু দাঊদ ১৬৯, ইবনে মাজাহ ৪৭০)
ইমাম তিরমিযী (উক্ত দু’আর শেষে) এ শব্দগুলি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, ’আল্লা-হুম্মাজ্আলনী মিনাত্তাওয়া-বীনা অজ্আলনী মিনাল মুতাত্বাহহিরীন।’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর। (তিরমিযী ৫৫, সহীহ, তামামুল মিন্নাহ)
وَعَن عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ – أَوْ فَيُسْبِغُ – الوُضُوءَ ثُمَّ يَقُوْلُ : أَشهَدُ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ رواه مسلم وزاد الترمذي اَللّٰهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ المُتَطَهِّرِينَ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৬) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল বলেছেন, ’’...আর যে ব্যক্তি ওযুর পর (নিম্নের যিকর) বলে, তার জন্য তা এক শুভ্র পত্রে লিপিবদ্ধ করা হয়। অতঃপর তা সীল করে দেওয়া হয়, যা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত নষ্ট করা হয় না।
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ
’’সুবহানাকাল্লা-হুম্মা অবিহামদিকা, আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, আস্তাগফিরকা অ আতূবু ইলাইক্।’’
অর্থাৎ, তোমার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি হে আল্লাহ! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমিই একমাত্র সত্য উপাস্য। আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন (তওবা) করছি।
عَنْ أَبيْ سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ فَقَالَ : سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ كُتِبَ فِي رَقٍّ ثَُم طُبِعَ بِطَابَعٍ فَلَمْ يُكْسَرْ إِلَى يَوْمِ ألْقِيَامَةِ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৭) আব্দুল্লাহ বিন বুরাইদাহ (রহঃ) নিজ পিতার নিকট হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, একদা প্রভাতকালে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে ডেকে বললেন, হে বিলাল! কী এমন কাজ করে তুমি জান্নাতে আমার আগে চলে গেলে? আমি গত রাত্রে (স্বপ্নে) জান্নাতে প্রবেশ করলে তোমার (জুতার) শব্দ আমার সামনে থেকে শুনতে পেলাম! বিলাল বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি যখনই আযান দিয়েছি, তখনই দুই রাকআত নামায পড়েছি। আর যখনই আমি অপবিত্র হয়েছি, তখনই আমি সাথে সাথে ওযু করে নিয়েছি। এ শুনে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই কাজের জন্যই। (জান্নাতে আমার আগে আগে তোমার শব্দ শুনলাম।)
عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبيْ هِ قَالَ: أَصْبَحَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فَدَعَا بِلَالًافَقَالَ: «يَا بِلَالُ بِمَ سَبَقْتَنِي إِلَى الْجَنَّةِ ؟ إِنِّي دَخَلْتُ الْبَارِحَةَ الْجَنَّةَ فَسَمِعْتُ خَشْخَشَتَكَ أَمَامِي» فَقَالَ بِلَالٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَذْنَبْتُ قَطُّ إِلَّا صَلَّيْتُ رَكْعَتَيْنِ وَمَا أَصَابَنِي حَدَثٌ قَطُّ إِلَّا تَوَضَّأْتُ عَندَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بِهَذَا»
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৮) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা ফজরের নামাযের সময় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে বললেন, হে বিলাল! তুমি ইসলামে তোমার নিকট সবচেয়ে বেশি আশাব্যঞ্জক উপকারী যে কাজ করেছ, তা আমাকে বল। কারণ আমি জান্নাতে আমার আগে আগে তোমার (জুতার) শব্দ শুনতে পেলাম! বিলাল বললেন, আমি ইসলামে আমার নিকট সবচেয়ে বেশি আশাব্যঞ্জক উপকারী এ ছাড়া অন্য কাজ করিনি যে, আমি দিবারাত্রে যখনই পরিপূর্ণ পবিত্র হয়েছি, তখনই সেই পবিত্রতা দ্বারা আল্লাহর লিখিত তাকদীর অনুযায়ী নামায পড়েছি।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لِبِلاَلٍ عَندَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ يَا بِلاَلُ حَدِّثْنِى بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ عَندَكَ فِى الإِسْلاَمِ مَنْفَعَةً فَإِنِّى سَمِعْتُ اللَّيْلَةَ خَشْفَ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَىَّ فِى الْجَنَّةِ قَالَ بِلاَلٌ: مَا عَمِلْتُ عَمَلاً فِى الإِسْلاَمِ أَرْجَى عَندِى مَنْفَعَةً مِنْ أَنِّى لاَ أَتَطَهَّرُ طُهُورًا تَامًّا فِى سَاعَةٍ مِنْ لَيْلٍ وَلاَ نَهَارٍ إِلاَّ صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كَتَبَ اللهُ لِى أَنْ أُصَلِّىَ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৬৯) উক্ববাহ বিন আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন ব্যক্তি যখনই সুন্দরভাবে ওযু করে সবিনয়ে একাগ্রতার সাথে (কায়মনোবাক্যে) দুই রাকআত নামায পড়ে তখনই তার জন্য জান্নাত অবধার্য হয়ে যায়।
عَن عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ مُقْبِلٌ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلاَّ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ
পরিচ্ছেদঃ ওযূর ফযীলত
(৫৭০) যায়দ বিন খালেদ জুহানী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযু করে, কোন ভুল না করে (একাগ্রচিত্তে) দুই রাকআত নামায পড়ে, সেই ব্যক্তির পূর্বেকার সমূদয় গোনাহ মাফ হয়ে যায়।
عَن زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِىِّ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لاَ يَسْهُو فِيهِمَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ