পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৪) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি একদা (সওয়ারীর উপর) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে (বসে) ছিলাম। তিনি বললেন, ওহে কিশোর! আমি তোমাকে কয়েকটি (গুরুত্বপূর্ণ কথা শিক্ষা দেব (তুমি সেগুলো স্মরণ রেখো)। তুমি আল্লাহর (বিধানসমূহের) রক্ষণাবেক্ষণ কর (তাহলে) আল্লাহও তোমার রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহর (অধিকারসমূহ) স্মরণ রাখো, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সম্মুখে পাবে। যখন তুমি চাইবে, তখন আল্লাহর কাছেই চাও। আর যখন তুমি সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর।

আর এ কথা জেনে রাখ যে, যদি সমস্ত উম্মত তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। আর তারা যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। কলমসমূহ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং খাতাসমূহ (ভাগ্যলিপি) শুকিয়ে গেছে।

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كُنتُ خَلفَ النَّبيّ ﷺ يَوماً فَقَالَ يَا غُلامُ إنِّي أعلّمُكَ كَلِمَاتٍ : احْفَظِ اللهَ يَحْفَظْكَ احْفَظِ اللهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ إِذَا سَألْتَ فَاسأَلِ الله وإِذَا اسْتَعَنتَ فَاسْتَعَن باللهِ وَاعْلَمْ : أنَّ الأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إلاَّ بِشَيءٍ قَدْ كَتَبهُ اللهُ لَكَ وَإِن اجتَمَعُوا عَلَى أنْ يَضُرُّوكَ بِشَيءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إلاَّ بِشَيءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللهُ عَلَيْكَ رُفِعَتِ الأَقْلاَمُ وَجَفَّتِ الصُّحفُ رواه الترمذي وَ قَالَ حديث حسن صحيح
وفي رواية غيرِ الترمذي احْفَظِ الله تَجِدْهُ أَمَامَكَ تَعرَّفْ إِلَى اللهِ في الرَّخَاءِ يَعْرِفكَ في الشِّدَّةِ وَاعْلَمْ : أنَّ مَا أَخْطَأكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبكَ وَمَا أصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَاعْلَمْ : أنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ وَأَنَّ الفَرَجَ مَعَ الكَرْبِ وَأَنَّ مَعَ العُسْرِ يُسْراً

عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : كنت خلف النبي ﷺ يوما فقال يا غلام اني اعلمك كلمات : احفظ الله يحفظك احفظ الله تجده تجاهك اذا سالت فاسال الله واذا استعنت فاستعن بالله واعلم : ان الامة لو اجتمعت على ان ينفعوك بشيء لم ينفعوك الا بشيء قد كتبه الله لك وان اجتمعوا على ان يضروك بشيء لم يضروك الا بشيء قد كتبه الله عليك رفعت الاقلام وجفت الصحف رواه الترمذي و قال حديث حسن صحيح وفي رواية غير الترمذي احفظ الله تجده امامك تعرف الى الله في الرخاء يعرفك في الشدة واعلم : ان ما اخطاك لم يكن ليصيبك وما اصابك لم يكن ليخطىك واعلم : ان النصر مع الصبر وان الفرج مع الكرب وان مع العسر يسرا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৫) ইরবায বিন সারিয়াহ সুলামী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি আল্লাহর নিকট তাঁর লওহে মাহফূযে লিখিত তখনও সর্বশেষ নবী, যখন আদম কাদা অবস্থায় পড়ে ছিলেন। আর এর তাৎপর্য এই যে, (আমার নবুঅতের প্রথম বিকাশ ঘটে) আমার পিতা ইব্রাহীমের দু’আ, ঈসার তাঁর কওমকে দেওয়া সুসংবাদ এবং আমার আম্মার দেখা সেই স্বপ্নের মাধ্যমে, যাতে তিনি তাঁর নিকট থেকে এমন জ্যোতি বের হতে দেখেন যা, শামদেশের অট্টালিকাসমূহকে আলোকিত করেছিল।

عَنِ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ السُّلَمِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنِّي عَبْدُ اللهِ فِي أُمِّ الْكِتَابِ لَخَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ آدَمَ لَمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ وَسَأُنَبِّئُكُمْ بِتَأْوِيلِ ذَلِكَ دَعْوَةِ أَبِي إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةِ عِيسَى قَوْمَهُ وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ أَنَّهُ خَرَجَ مِنْهَا نُورٌ أَضَاءَتْ لَهُ قُصُورُ الشَّامِ

عن العرباض بن سارية السلمي قال قال رسول الله ﷺ اني عبد الله في ام الكتاب لخاتم النبيين وان ادم لمنجدل في طينته وسانبىكم بتاويل ذلك دعوة ابي ابراهيم وبشارة عيسى قومه ورويا امي التي رات انه خرج منها نور اضاءت له قصور الشام

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৬) আত্বা (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী উবাদাহ বিন স্বামেতের ছেলে অলীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা করলাম, ’মৃত্যুর সময় আপনার আববার অসিয়ত কী ছিল?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’আমাকে আমার আব্বা ডেকে বললেন, বেটা! তুমি আল্লাহকে ভয় কর। আর জেনে রেখো, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর ভয় রাখতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতি এবং তকদীরের ভালো-মন্দ সব কিছুর প্রতি ঈমান এনেছ। এ ঈমান ছাড়া মারা গেলে তুমি জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বপ্রথম যা সৃষ্টি করেন, তা হল কলম। অতঃপর তাকে বলেন, ’লিখো’। কলম বলল, ’হে আমার প্রতিপালক! আমি কী লিখব?’ তিনি বললেন, ’তাকদীর এবং অনন্তকাল ধরে যা ঘটবে তা লিখো।

قَالَ عَطَاءٌ فَلَقِيتُ الْوَلِيدَ بْنَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ صَاحِبِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلْتُهُ مَا كَانَ وَصِيَّةُ أَبِيكَ عَندَ الْمَوْتِ قَالَ دَعَانِى أَبِى فَقَالَ لِى يَا بُنَىَّ اتَّقِ اللهَ وَاعْلَمْ أَنَّكَ لَنْ تَتَّقِىَ اللهَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِاللهِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ كُلِّهِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ فَإِنْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا دَخَلْتَ النَّارَ إِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللهُ الْقَلَمَ فَقَالَ اكْتُبْ فَقَالَ مَا أَكْتُبُ قَالَ اكْتُبِ الْقَدَرَ مَا كَانَ وَمَا هُوَ كَائِنٌ إِلَى الأَبَدِ

قال عطاء فلقيت الوليد بن عبادة بن الصامت صاحب رسول الله صلى الله عليه وسلم فسالته ما كان وصية ابيك عند الموت قال دعانى ابى فقال لى يا بنى اتق الله واعلم انك لن تتقى الله حتى تومن بالله وتومن بالقدر كله خيره وشره فان مت على غير هذا دخلت النار انى سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان اول ما خلق الله القلم فقال اكتب فقال ما اكتب قال اكتب القدر ما كان وما هو كاىن الى الابد

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৭) উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বপ্রথম যা সৃষ্টি করেন, তা হল কলম। অতঃপর তাকে বলেন, ’লিখো’। কলম বলল, ’হে আমার প্রতিপালক! আমি কী লিখব?’ তিনি বললেন, ’কিয়ামত কায়েম হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক জিনিসের (ঘটিতব্য) তাকদীর লিখো।

عَن عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللهُ الْقَلَمَ فَقَالَ لَهُ اكْتُبْ قَالَ رَبِّ وَمَاذَا أَكْتُبُ قَالَ اكْتُبْ مَقَادِيرَ كُلِّ شَىْءٍ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ

عن عبادة بن الصامت قال قال رسول الله ﷺ ان اول ما خلق الله القلم فقال له اكتب قال رب وماذا اكتب قال اكتب مقادير كل شىء حتى تقوم الساعة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৮) ইমরান বিন হুস্বাইন (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ছিলেন, আর তিনি ছাড়া কেউ ছিল না। তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। তিনি ’লাওহে-মাহফূয’-এ সব কিছু (ঘটিতব্য) লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর তিনি আকাশ-পৃথিবী সৃষ্টি করেন।

عَن عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ كَانَ اللهُ وَلَمْ يَكُنْ شَيْءٌ غَيْرُهُ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَيْءٍ وَخَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ

عن عمران بن حصين رضي الله عنهما قال قال النبي ﷺ كان الله ولم يكن شيء غيره وكان عرشه على الماء وكتب في الذكر كل شيء وخلق السموات والارض

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১১৯) ইমরান বিন হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনি ছিলেন, আর কেউ ছিল না। তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। অতঃপর তিনি আকাশ-পৃথিবী সৃষ্টি করেন এবং প্রত্যেক বিষয় লাওহে মাহফূযে লিপিবদ্ধ করেন।

وَعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ كَانَ اللهُ وَلَمْ يَكُنْ شَيْءٌ قَبْلَهُ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ ثُمَّ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَيْءٍ

وعنه قال قال رسول الله ﷺ كان الله ولم يكن شيء قبله وكان عرشه على الماء ثم خلق السموات والارض وكتب في الذكر كل شيء

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২০) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (মাতৃগর্ভে ভ্রূণ) বীর্য আকারে যখন বিয়াল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়, তখন আল্লাহ তার প্রতি একটি ফিরিশতা প্রেরণ করেন। অতঃপর তিনি তার রূপদান করেন, তার শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, চর্ম, মাংস ও অস্থি সৃষ্টি করেন। অতঃপর তিনি বলেন, ’হে প্রতিপালক! পুরুষ, নাকি স্ত্রী?’ সুতরাং তোমার প্রতিপালক যা চান, ফায়সালা করেন এবং ফিরিশতা লিপিবদ্ধ করেন---।

عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِذَا مَرَّ بِالنُّطْفَةِ ثِنْتَانِ وَأَرْبَعُونَ لَيْلَةً بَعَثَ اللهُ إِلَيْهَا مَلَكًا فَصَوَّرَهَا وَخَلَقَ سَمْعَهَا وَبَصَرَهَا وَجِلْدَهَا وَلَحْمَهَا وَعِظَامَهَا ثُمَّ قَالَ يَا رَبِّ أَذَكَرٌ أَمْ أُنْثَى فَيَقْضِى رَبُّكَ مَا شَاءَ وَيَكْتُبُ الْمَلَكُ

عن ابن مسعود قال قال رسول الله ﷺ اذا مر بالنطفة ثنتان واربعون ليلة بعث الله اليها ملكا فصورها وخلق سمعها وبصرها وجلدها ولحمها وعظامها ثم قال يا رب اذكر ام انثى فيقضى ربك ما شاء ويكتب الملك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২১) আনাস বিন মালিক (রাঃ) কর্তৃক মারফূ’ সূত্রে বর্ণিত, (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ আযযা অজাল্ল গর্ভাশয়ে একজন ফিরিশতা নিয়োগ করেন। অতঃপর তিনি বলেন, ’হে প্রতিপালক! বীর্য। হে প্রতিপালক! রক্তপিণ্ড। হে প্রতিপালক! মাংসখণ্ড।’ অতঃপর আল্লাহ যখন তার সৃষ্টির ফায়সালা করেন, তখন তিনি (ফিরিশতা) বলেন, ’হে প্রতিপালক! পুরুষ, নাকি স্ত্রী? দুর্ভাগ্যবান, নাকি সৌভাগ্যবান? রুযী কী? বয়স কত?’ সুতরাং তা তার মায়ের পেটে (থাকা অবস্থায়) লেখা হয়।

عَن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَرَفَعَ الْحَدِيثَ أَنَّهُ قَالَ إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ وَكَّلَ بِالرَّحِمِ مَلَكًا فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ نُطْفَةٌ أَىْ رَبِّ عَلَقَةٌ أَىْ رَبِّ مُضْغَةٌ فَإِذَا أَرَادَ اللهُ أَنْ يَقْضِىَ خَلْقًا قَالَ قَالَ الْمَلَكُ أَىْ رَبِّ ذَكَرٌ أَوْ أُنْثَى شَقِىٌّ أَوْ سَعِيدٌ فَمَا الرِّزْقُ فَمَا الأَجَلُ فَيُكْتَبُ كَذَلِكَ فِى بَطْنِ أُمِّهِ

عن انس بن مالك ورفع الحديث انه قال ان الله عز وجل قد وكل بالرحم ملكا فيقول اى رب نطفة اى رب علقة اى رب مضغة فاذا اراد الله ان يقضى خلقا قال قال الملك اى رب ذكر او انثى شقى او سعيد فما الرزق فما الاجل فيكتب كذلك فى بطن امه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২২) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ যখন কোন (মানব) প্রাণ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন, তখন মাতৃগর্ভে নিযুক্ত ফিরিশতা আরজ করেন, ’হে প্রভু! পুরুষ, না স্ত্রী?’ সুতরাং আল্লাহ নিজ ফায়সালা বহাল করেন। অতঃপর বলেন, ’হে প্রভু! দুর্ভাগ্যবান, না সৌভাগ্যবান?’ সুতরাং আল্লাহ নিজ ফায়সালা বহাল করেন। অতঃপর তার দুই চোখের মাঝখানে তা লিখে দেন, যার সে সম্মুখীন হবে; এমনকি সেই মুসীবতও লিখে দেওয়া হয়, যা তাকে ক্লিষ্ট করবে।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِذَا أَرَادَ اللهُ أَنْ يَخْلُقَ النُّطْفَةَ خَلْقًا قَالَ مَلِكُ الأَرْحَامِ مَعْرضًا أَيْ رَبِّ أَشَقِيُّ أَمْ سَعِيدٌ؟ أَذَكَرٌ أَمْ أُنْثَى أَىْ رَبِّ أحمرُ أمْ أسْودُ فَيَقْضِىْ الله أَمْرَهُ ثُمَّ يَكْتُبُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ مَا هُوَ لاقٍ من خيرٍ أو شرٍّ حَتَّى النَّكْبَة يَنْكِبُهَا

عن عبد الله بن عمر قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم اذا اراد الله ان يخلق النطفة خلقا قال ملك الارحام معرضا اي رب اشقي ام سعيد؟ اذكر ام انثى اى رب احمر ام اسود فيقضى الله امره ثم يكتب بين عينيه ما هو لاق من خير او شر حتى النكبة ينكبها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৩) আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কাজ করে যাও। যেহেতু যাকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য তা সহজ করে দেওয়া হবে।

عَنْ عَلِىٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ

عن على قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اعملوا فكل ميسر لما خلق له

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৪) আবুদ দারদা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের একটি প্রকৃতত্ব আছে। আর কোন বান্দা ঈমানের প্রকৃতত্বে ততক্ষণ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না, যতক্ষণ না সে এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী হয় যে, যে মুসীবতে সে আক্রান্ত হয়েছে তা তার উপর আসারই ছিলো। আর যা তার উপর আসেনি তা আসারই ছিলো না।

عَنْ أَبيْ الدَّرْدَاءِ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لِكُلِّ شَيْءٍ حَقِيقَةٌ وَمَا بَلَغَ عَبْدٌ حَقِيقَةَ الْإِيمَانِ حَتَّى يَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَهُ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَهُ وَمَا أَخْطَأَهُ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَهُ

عن ابي الدرداء عن النبي ﷺ قال لكل شيء حقيقة وما بلغ عبد حقيقة الايمان حتى يعلم ان ما اصابه لم يكن ليخطىه وما اخطاه لم يكن ليصيبه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৫) আবূ উমামাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির নিকট হতে আল্লাহ ফরয, নফল কিছুই গ্রহণ করবেন না; পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, দান করে প্রচারকারী এবং তাকদীর অস্বীকারকারী ব্যক্তি।

عَن أَبِى أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ثَلَاثةٌ لَا يَقْبَلُ اللهُ لَهُمْ صَرْفًا وَلَا عَدْلًا : عَاقٌّ وَمَنَّانٌ وَمُكَذِّبٌ بِالْقَدَرِ

عن ابى امامة قال قال رسول الله ثلاثة لا يقبل الله لهم صرفا ولا عدلا : عاق ومنان ومكذب بالقدر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৬) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক উম্মতের মাঝে মজুস (অগ্নিপূজক সম্প্রদায়) আছে। আর আমার উম্মতের মজুস তারা, যারা বলে, তাকদীর বলে কিছু নেই। ওরা যদি রোগাক্রান্ত হয় তাহলে ওদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করো না এবং ওরা মরলে ওদের জানাযায় অংশ গ্রহণ করো না।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لِكُلِّ أُمَّةٍ مَجُوسٌ ومَجُوسُ أُمَّتِي الَّذِينَ يَقُولُونَ لَا قَدَرَ إِنْ مَرِضُوا فَلَا تَعُودُوهُمْ وَإِنْ مَاتُوا فَلَا تَشْهَدُوهُمْ

عن عبد الله بن عمر ان رسول الله ﷺ قال لكل امة مجوس ومجوس امتي الذين يقولون لا قدر ان مرضوا فلا تعودوهم وان ماتوا فلا تشهدوهم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবল মু’মিন আল্লাহর নিকট দুর্বল মু’মিন অপেক্ষা প্রিয়তর ও ভালো। অবশ্য উভয়ের মাঝেই কল্যাণ রয়েছে। তোমার যাতে উপকার আছে তাতে তুমি যত্নবান হও। আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর, আর অক্ষম হয়ে বসে পড়ো না। কোন মসীবত এলে এ কথা বলো না যে, ’(হায়) যদি আমি এরূপ করতাম, তাহলে এরূপ হতো। (বা যদি আমি এরূপ না করতাম, তাহলে এরূপ হতো না।)’ বরং বলো, ’আল্লাহ তকদীরে লিখেছিলেন। তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন।’ (আর তিনি যা করেন, তা বান্দার মঙ্গলের জন্যই করেন; যদিও তুমি তা বুঝতে না পার।) পক্ষান্তরে ’যদি-যদি না’ (বলে আক্ষেপ) করায় শয়তানের কর্মদ্বার খুলে যায়।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الْمُؤْمِنُ الْقَوِىُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِى كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعَن بِاللهِ وَلاَ تَعْجِزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَىْءٌ فَلاَ تَقُلْ لَوْ أَنِّى فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ

عن ابى هريرة قال قال رسول الله ﷺ المومن القوى خير واحب الى الله من المومن الضعيف وفى كل خير احرص على ما ينفعك واستعن بالله ولا تعجز وان اصابك شىء فلا تقل لو انى فعلت كان كذا وكذا ولكن قل قدر الله وما شاء فعل فان لو تفتح عمل الشيطان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা আদম ও মূসা আপোসে তর্কাতর্কি করলেন; মূসা বললেন, আপনি পাপ করে আমাদেরকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে বের করে এনেছেন। আদম বললেন, মূসা! তুমি তো নবী ছিলে। তোমাকে আল্লাহ তওরাত দিয়েছিলেন, যে তওরাত আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করার চল্লিশ বছর পূর্বে লিখেছেন, তাতে কি পেয়েছ যে, ’আদম অবাধ্য হয়ে ভ্রষ্ট হয়ে গেল?’ মূসা বললেন, হ্যাঁ। আদম বললেন, তাহলে সেই ভুলের জন্য আমাকে কেন ভৎর্সনা কর, যা আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করার চল্লিশ বছর আগেই লিখে দিয়েছেন? সুতরাং মূসা এ তর্কে হেরে গেলেন।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ عَندَ رَبِّهِمَا فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى قَالَ مُوسَى أَنْتَ آدَمُ الَّذِى خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلاَئِكَتَهُ وَأَسْكَنَكَ فِى جَنَّتِهِ ثُمَّ أَهْبَطْتَ النَّاسَ بِخَطِيئَتِكَ إِلَى الأَرْضِ فَقَالَ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى الَّذِى اصْطَفَاكَ اللهُ بِرِسَالَتِهِ وَبِكَلاَمِهِ وَأَعْطَاكَ الأَلْوَاحَ فِيهَا تِبْيَانُ كُلِّ شَىْءٍ وَقَرَّبَكَ نَجِيًّا فَبِكَمْ وَجَدْتَ اللهَ كَتَبَ التَّوْرَاةَ قَبْلَ أَنْ أُخْلَقَ قَالَ مُوسَى بِأَرْبَعِينَ عَامًا قَالَ آدَمُ فَهَلْ وَجَدْتَ فِيهَا (وَعَصَى آدَمُ رَبَّهُ فَغَوَى) قَالَ نَعَمْ قَالَ أَفَتَلُومُنِى عَلَى أَنْ عَمِلْتُ عَمَلاً كَتَبَهُ اللهُ عَلَىَّ أَنْ أَعْمَلَهُ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَنِى بِأَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى

عن ابى هريرة قال قال رسول الله ﷺ احتج ادم وموسى عليهما السلام عند ربهما فحج ادم موسى قال موسى انت ادم الذى خلقك الله بيده ونفخ فيك من روحه واسجد لك ملاىكته واسكنك فى جنته ثم اهبطت الناس بخطيىتك الى الارض فقال ادم انت موسى الذى اصطفاك الله برسالته وبكلامه واعطاك الالواح فيها تبيان كل شىء وقربك نجيا فبكم وجدت الله كتب التوراة قبل ان اخلق قال موسى باربعين عاما قال ادم فهل وجدت فيها (وعصى ادم ربه فغوى) قال نعم قال افتلومنى على ان عملت عملا كتبه الله على ان اعمله قبل ان يخلقنى باربعين سنة قال رسول الله ﷺ فحج ادم موسى

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১২৯) যায়দ বিন সাবেত (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি যদি আল্লাহর পথে ওহুদ পাহাড় সামান সোনা ব্যয় কর, তবে তা আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণ করবেন না, যতক্ষণ না তুমি ভাগ্যের উপর ঈমান আনবে। আর জেনে রাখ যে, যা তোমাকে পৌঁছবে, তাতে ভুল হবে না। আর যা তোমার ব্যাপারে ভুলে যাওয়া হয়েছে (অর্থাৎ, যে সুখ-দুঃখ তোমার ভাগ্যে নেই) তা তোমাকে পৌঁছবে না। এর বিপরীত বিশ্বাসের উপর তোমার মৃত্যু হলে, তুমি অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

عَن زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قال قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَلَوْ أَنْفَقْتَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فِى سَبِيلِ اللهِ مَا قَبِلَهُ اللهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَلَوْ مُتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا لَدَخَلْتَ النَّارَ

عن زيد بن ثابت قال قال رسول الله ﷺ ولو انفقت مثل احد ذهبا فى سبيل الله ما قبله الله منك حتى تومن بالقدر وتعلم ان ما اصابك لم يكن ليخطىك وان ما اخطاك لم يكن ليصيبك ولو مت على غير هذا لدخلت النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ তকদীরের প্রতি ঈমান

(১৩০) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়ার দিকে যাত্রা করলেন। অতঃপর যখন তিনি ’সার্গ্’ (সউদিয়া ও সিরিয়ার সীমান্ত) এলাকায় গেলেন, তখন তাঁর সাথে সৈন্যবাহিনীর প্রধানগণ—আবূ উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ ও তাঁর সাথীগণ—সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা তাঁকে জানান যে, সিরিয়া এলাকায় (প্লেগ) মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন উমার আমাকে বললেন, আমার কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে যাঁরা হিজরত করেছিলেন সেই মুহাজিরদেরকে ডেকে আনো। আমি তাঁদেরকে ডেকে আনলাম।

উমার (রাঃ) তাঁদেরকে সিরিয়ায় প্রাদুর্ভূত মহামারীর কথা জানিয়ে তাঁদের কাছে সুপরামর্শ চাইলেন। তখন তাঁদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হল। কেউ বললেন, আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বের হয়েছেন। তাই তা থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা পছন্দ করি না। আবার কেউ কেউ বললেন, আপনার সাথে রয়েছেন অবশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ। কাজেই আমাদের কাছে ভাল মনে হয় না যে, আপনি তাঁদেরকে এই মহামারীর মধ্যে ঠেলে দেবেন।

উমার (রাঃ) বললেন, তোমরা আমার নিকট থেকে উঠে যাও। তারপর তিনি বললেন, আমার নিকট আনসারদেরকে ডেকে আনো। সুতরাং আমি তাঁদেরকে ডেকে আনলাম এবং তিনি তাঁদের কাছে পরামর্শ চাইলেন। কিন্তু তাঁরাও মুহাজিরদের পথ অবলম্বন করলেন এবং তাঁদের মতই তাঁরাও মতভেদ করলেন। সুতরাং উমার (রাঃ) বললেন, তোমরা আমার নিকট থেকে উঠে যাও।

তারপর আমাকে বললেন, এখানে যে সকল বয়োজ্যেষ্ঠ কুরাইশী আছেন, যাঁরা মক্কা বিজয়ের বছর হিজরত করেছিলেন তাঁদেরকে ডেকে আনো। আমি তাঁদেরকে ডেকে আনলাম। তখন তাঁরা পরস্পরে কোন মতবিরোধ করলেন না। তাঁরা বললেন, আমাদের রায় হল, আপনি লোকজনকে নিয়ে ফিরে যান এবং তাদেরকে এই মহামারীর কবলে ঠেলে দেবেন না। তখন উমার (রাঃ) লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আমি ভোরে সওয়ারীর পিঠে (ফিরে যাওয়ার জন্য) আরোহণ করব। অতএব তোমরাও তাই কর।

আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ (রাঃ) বললেন, আপনি কি আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর থেকে পলায়ন করার জন্য ফিরে যাচ্ছেন? উমার (রাঃ) বললেন, হে আবূ উবাইদাহ! যদি তুমি ছাড়া অন্য কেউ কথাটি বলত। আসলে উমার তাঁর বিরোধিতা করতে অপছন্দ করতেন। বললেন, হ্যাঁ। আমরা আল্লাহর তাকদীর থেকে আল্লাহর তকদীরের দিকেই ফিরে যাচ্ছি। তুমি বল তো, তুমি কিছু উটকে যদি এমন কোন উপত্যকায় দিয়ে এস, যেখানে আছে দু’টি প্রান্ত। তার মধ্যে একটি হল সবুজ-শ্যামল, আর অন্যটি হল বৃক্ষহীন। এবার ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, যদি তুমি সবুজ প্রান্তে চরাও, তাহলে তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরাবে। আর যদি তুমি বৃক্ষহীন প্রান্তে চরাও তাহলেও তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরাবে?

বর্ণনাকারী [ইবনে আব্বাস (রাঃ)] বলেন, এমন সময় আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) এলেন। তিনি এতক্ষণ যাবৎ তাঁর কোন প্রয়োজনে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, এ ব্যাপারে আমার নিকট একটি তথ্য আছে, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা যখন কোন এলাকায় (প্লেগের) প্রাদুর্ভাবের কথা শুনবে, তখন সেখানে যেও না। আর যদি এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব নেমে আসে আর তোমরা সেখানে থাক, তাহলে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেও না। সুতরাং (এ হাদীস শুনে) উমার (রাঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং (মদীনা) ফিরে গেলেন।

عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ خَرَجَ إِلَى الشَّامِ حَتَّى إِذَا كَانَ بِسَرْغَ لَقِيَهُ أَهْلُ الأَجْنَادِ أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ وَأَصْحَابُهُ فَأَخْبَرُوهُ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِالشَّامِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ عُمَرُ ادْعُ لِىَ الْمُهَاجِرِينَ الأَوَّلِينَ فَدَعَوْتُهُمْ فَاسْتَشَارَهُمْ وَأَخْبَرَهُمْ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِالشَّامِ فَاخْتَلَفُوا فَقَالَ بَعْضُهُمْ قَدْ خَرَجْتَ لأَمْرٍ وَلاَ نَرَى أَنْ تَرْجِعَ عَنهُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ مَعَكَ بَقِيَّةُ النَّاسِ وَأَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَلاَ نَرَى أَنْ تُقْدِمَهُمْ عَلَى هَذَا الْوَبَاءِ فَقَالَ ارْتَفِعُوا عَنى ثُمَّ قَالَ ادْعُ لِىَ الأَنْصَارَ فَدَعَوْتُهُمْ لَهُ فَاسْتَشَارَهُمْ فَسَلَكُوا سَبِيلَ الْمُهَاجِرِينَ وَاخْتَلَفُوا كَاخْتِلاَفِهِمْ فَقَالَ ارْتَفِعُوا عَنى ثُمَّ قَالَ ادْعُ لِى مَنْ كَانَ هَا هُنَا مِنْ مَشْيَخَةِ قُرَيْشٍ مِنْ مُهَاجِرَةِ الْفَتْحِ فَدَعَوْتُهُمْ فَلَمْ يَخْتَلِفْ عَلَيْهِ رَجُلاَنِ فَقَالُوْا نَرَى أَنْ تَرْجِعَ بِالنَّاسِ وَلاَ تُقْدِمْهُمْ عَلَى هَذَا الْوَبَاءِ فَنَادَى عُمَرُ فِى النَّاسِ إِنِّى مُصْبِحٌ عَلَى ظَهْرٍ فَأَصْبِحُوا عَلَيْهِ فَقَالَ أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ أَفِرَارًا مِنْ قَدَرِ اللهِ فَقَالَ عُمَرُ لَوْ غَيْرُكَ قَالَهَا يَا أَبَا عُبَيْدَةَ - وَكَانَ عُمَرُ يَكْرَهُ خِلاَفَهُ - نَعَمْ نَفِرُّ مِنْ قَدَرِ اللهِ إِلَى قَدَرِ اللهِ أَرَأَيْتَ لَوْ كَانَتْ لَكَ إِبِلٌ فَهَبَطْتَ وَادِيًا لَهُ عِدْوَتَانِ إِحْدَاهُمَا خَصْبَةٌ وَالأُخْرَى جَدْبَةٌ أَلَيْسَ إِنْ رَعَيْتَ الْخَصْبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ وَإِنْ رَعَيْتَ الْجَدْبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ قَالَ فَجَاءَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَكَانَ مُتَغَيِّبًا فِى بَعْضِ حَاجَتِهِ فَقَالَ إِنَّ عَندِى مِنْ هَذَا عِلْمًا سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ إِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ قَالَ فَحَمِدَ اللهَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ ثُمَّ انْصَرَفَ

عن عبد الله بن عباس ان عمر بن الخطاب خرج الى الشام حتى اذا كان بسرغ لقيه اهل الاجناد ابو عبيدة بن الجراح واصحابه فاخبروه ان الوباء قد وقع بالشام قال ابن عباس فقال عمر ادع لى المهاجرين الاولين فدعوتهم فاستشارهم واخبرهم ان الوباء قد وقع بالشام فاختلفوا فقال بعضهم قد خرجت لامر ولا نرى ان ترجع عنه وقال بعضهم معك بقية الناس واصحاب رسول الله ﷺ ولا نرى ان تقدمهم على هذا الوباء فقال ارتفعوا عنى ثم قال ادع لى الانصار فدعوتهم له فاستشارهم فسلكوا سبيل المهاجرين واختلفوا كاختلافهم فقال ارتفعوا عنى ثم قال ادع لى من كان ها هنا من مشيخة قريش من مهاجرة الفتح فدعوتهم فلم يختلف عليه رجلان فقالوا نرى ان ترجع بالناس ولا تقدمهم على هذا الوباء فنادى عمر فى الناس انى مصبح على ظهر فاصبحوا عليه فقال ابو عبيدة بن الجراح افرارا من قدر الله فقال عمر لو غيرك قالها يا ابا عبيدة - وكان عمر يكره خلافه - نعم نفر من قدر الله الى قدر الله ارايت لو كانت لك ابل فهبطت واديا له عدوتان احداهما خصبة والاخرى جدبة اليس ان رعيت الخصبة رعيتها بقدر الله وان رعيت الجدبة رعيتها بقدر الله قال فجاء عبد الرحمن بن عوف وكان متغيبا فى بعض حاجته فقال ان عندى من هذا علما سمعت رسول الله ﷺ يقول اذا سمعتم به بارض فلا تقدموا عليه واذا وقع بارض وانتم بها فلا تخرجوا فرارا منه قال فحمد الله عمر بن الخطاب ثم انصرف

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে