পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের নামের তালিকা ইমাম বুখারীর আল জামি’-তে যেভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
(১) নবী মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ আল হাশিমী (সা.) (২) আবদুল্লাহ ইবনু উসমান আবূ বকর সিদ্দীক্ব আল কুরাশী, (৩) উমার ইবনুল খত্তাব আল ’আদাভী, (৪) উসমান ইবনু ’আফফান; নবী (সা.) তাঁকে তাঁর অসুস্থ কন্যা রুক্বাইয়্যাহ্ [উসমান (রাঃ)-এর স্ত্রী]-এর দেখাশুনার জন্য মদীনায় রেখে গিয়েছিলেন, কিন্তু [বদর] যুদ্ধলব্ধ মালের অংশ তাকেও দিয়েছিলেন, (৫) আলী ইবনু আবূ ত্বালিব আল হাশিমী, (৬) ইয়াস ইবনু বুকায়র, (৭) বিলাল ইবনু রবাহ আবূ বা সিদ্দীক (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম, (৮) হামযাহ্ ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিব আল হাশিমী, (৯) হাত্বিব ইবনু আবূ বালতা’আহ- কুরায়শদের মিত্র, (১০) আবূ হুযায়ফাহ্ ইবনু ’উতবাহ্ ইবনু রবী’আহ্ আল কুরাশী, (১১) হারিসাহ্ ইবনুর রবী’ আল আনসারী- ইনি হারিসাহ্ ইবনু সুরাকাহ্ নামেও পরিচতি, তিনি বদর যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, তিনি এ যুদ্ধে পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন; (১২) খুবায়ব ইবনু ’আদী আল আনসারী, (১৩) খুনায়স ইবনু হুযাফাহ আস্ সাহমী, (১৪) রিফা’আহ্ ইবনু রাফি আল আনসারী, (১৫) রিফা’আহ্ ইবনু ’আবদুল মুনযির- আবূ লুবাবাহ্ আল আনসারী নামেও পরিচিত, (১৬) যুবায়র ইবনুল আওয়াম আল কুরাশী, (১৭) যায়দ ইবনু সাল আবূ ত্বলহাহ্ আল আনসারী, (১৮) আবূ যায়দ আল আনসারী, (১৯) সা’দ ইবনু মালিক আয যুহরী, (২০) সা’দ ইবনু খাওলাহ্ আল কুরাশী, (২১) সা’ঈদ ইবনু যায়দ ইবনু ’আমর ইবনু নুফায়ল আল কুরাশী, (২২) সাহল ইবনু হুনায়ফ আল আনসারী, (২৩) যুহায়র ইবনু রাফি আল আনসারী, (২৪) তাঁর ভাই, (২৫) ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ আল হুযালী, (২৬) আবদুর রহমান ইবনু আওফ আয যুহরী, (২৭) ’উবায়দাহ্ ইবনুল হারিস আল কুরাশী, (২৮) ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত আল আনসারী, (২৯) আমর ইবনু আওফ- হালীফ বানী আমির ইবনু লুআয়ঈ-এর মিত্র, (৩০). ’উকবাহ্ ইবনু আমর আল আনসারী, (৩১) আমির ইবনু রবী’আহ আল ’আনাযী, (৩২) ’আসিম ইবনু সাবিত আল আনসারী, (৩৩) ’উওয়াইম ইবনু সা’ইদাহ্ আল আনসারী, (৩৪) ’ইতবান ইবনু মালিক আল আনসারী, (৩৫) কুদামাহ্ ইবনু মা’উন, (৩৬) কতাদাহ্ ইবনুন নু’মান আল আনসালী, (৩৭) মু’আয ইবনু আমর ইবনু জামূহ, (৩৮) মু’আব্বি ইবনু ’আফরা’, (৩৯) তাঁর ভাই, (৪০) মালিক ইবনু রবী’আহ্ আবূ উসায়দ আল আনসারী, (৪১) মিসত্বাহ ইবনু উসাসাহ্ ইবনু আব্বাদ ইবনুল মুত্তালিব ইবনু ’আব্দ মানাফ, (৪২) মুরারাহ্ ইবনু রবী’ আল আনসারী, (৪৩) মান ইবনু ’আদী আল আনসারী, (৪৪) মিকদাদ ইবনু ’আমর আল কিনদী- বান্ যুহরাহ্-এর মিত্র, (৪৫) হিলাল ইবনু উমাইয়্যাহ্ আল আনসারী।
৬২৬৬-[৭১] ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ইয়ামান দেশ হতে এক লোক তোমাদের কাছে আসবে। তার নাম হবে ’ওয়াইস’। একজন মাতা ছাড়া ইয়ামান দেশে তাঁর আর কোন নিকটতম আত্মীয়স্বজন থাকবে না। তার দেহে শ্বেত-রোগ থাকবে। এর জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দু’আ করেছিলেন। ফলে এক দিরহাম অথবা এক দীনার পরিমাণ জায়গা ছাড়া আল্লাহর তা’আলা তাঁর সেই রোগটি দূর করে দিয়েছেন। অতএব তোমাদের যে কেউ তাঁর সাক্ষাৎ পাবে, সে যেন নিজের ক্ষমার জন্য তাঁর দ্বারা দু’আ করায়।
অপর বর্ণনায় আছে, ’উমার (রাঃ) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, তাবিঈদের মধ্যে সর্বোত্তম একজন রয়েছেন, এবং তাঁর শরীরে শ্বেত দাগ থাকবে। অতএব তোমরা নিজেদের মাগফিরাতের দু’আর জন্য তার কাছে অনুরোধ করবে। (মুসলিম)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
عَن عمر بن الْخطاب أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا يَأْتِيكُمْ مِنَ الْيَمَنِ يُقَالُ لَهُ: أُوَيْسٌ لَا يَدَعُ بِالْيَمَنِ غَيْرَ أُمٍّ لَهُ قَدْ كَانَ بِهِ بَيَاضٌ فَدَعَا اللَّهَ فَأَذْهَبَهُ إِلَّا مَوْضِعَ الدِّينَارِ أَوِ الدِّرْهَمِ فَمَنْ لَقِيَهُ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُولُ: إِنَّ خَيْرَ التَّابِعِينَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: أُويس وَله والدةٌ وَكَانَ بِهِ بَيَاض فَمُرُوهُ فليستغفر لكم . رَوَاهُ مُسلم
رواہ مسلم (223 / 2542)، (6490) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: এ উওয়াইস (রহিমাহুল্লাহ)-এর ঘটনায় রাসূল (সা.) -এর স্পষ্ট মু'জিযাহ্ রয়েছে। তিনি হলেন উওয়াইস ইবনু ‘আমির যেমনটি ইমাম মুসলিম এখানে বর্ণনা করেন। এটাই প্রসিদ্ধ মত।
ইবনু মাকূলা বলেন, তাকে উওয়াইস ইবনু আমর বলা হয়। তারা বলেন, তার উপনাম আবূ ‘আমর। কেউ বলেন, তিনি সিফফীন যুদ্ধে নিহত হন। তিনি (قَرَنىْ) গোত্রের দিক নিসবত করে (القَرَنِى) (করানী) নামে খ্যাত। এটা মুরাদ গোত্রের শাখা গোত্র। তিনি ছিলেন করান ইবনু রাযমান ইবনু নাজিয়া ইবনু মুরাদ।
কালবী বলেন, মুরাদ-এর নাম ছিল জাবির ইবনু মালিক ইবনু আদাদ ইবনু সহাব ইবনু ইয়ারুব ইবনু যায়দ ইবনু কাহলান ইবনু সাব্বাদ। তিনি মুরাদ গোত্রের উপগোত্র হওয়ায় আমরা এ বংশ-পরম্পরা তুলে ধরলাম। এদিকেই তাকে সম্বন্ধ করা হয়, যা সঠিক। এতে কোন দ্বিমত নেই।
জাওহারীর সিহাহ গ্রন্থে উল্লেখ হয়েছে, তিনি নাজদবাসীর ইহরাম বাঁধার জন্য নির্দিষ্ট মীকাত কারণে মানাযিল পর্বতের সাথে সম্বন্ধযুক্ত। এটা গুরুতর ভুল। এ সতর্কতা আগেই দেয়া হয়েছে যাতে তা নিয়ে ধোঁকায় না পড়ে। তাকে মানুষের মধ্যে তুচ্ছ জ্ঞান করা হত। এটাই প্রমাণ যে, তার প্রকৃত অবস্থা গোপন ছিল। তার মাঝেও আল্লাহর মধ্যকার রহস্য গোপন ছিল। এটা কোন কিছুতেই প্রকাশিত হয়নি। যা অভিজ্ঞদের নীতি ও ওয়ালীদের বৈশিষ্ট্য।
(لَقِيَهُ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ) অন্য বর্ণনায় রয়েছে, (قال بعمرإن استطعت ان يستغفر لك فافعل) যদি সক্ষম হও যে, সে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাহলে করো। এটা উওয়াইস (রহিমাহুল্লাহ) এর স্পষ্ট কৃতিত্ব। এতে সকর্মশীল ব্যক্তির নিকট থেকে দু'আ ও ক্ষমা চাওয়ার বৈধতা রয়েছে, যদি প্রার্থী তার থেকে শ্রেষ্ঠ হয়। (ان خير التابعين ر جل يقال له أويس) দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, তিনি শ্রেষ্ঠ তাবিঈ।
কখনো বলা হয়, আহমাদ ইবনু হাম্বাল। অপর ব্যক্তি বলেন, সা'ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব শ্রেষ্ঠ তাবি'ঈ। এর উত্তর হলো তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সা'ঈদ-এর শারঈ জ্ঞান যেমন তাফসীর হাদীস, ফিকহ ইত্যাদিতে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার। আল্লাহ তা'আলার নিকট মর্যাদায় নয়। আর এ কথায় সুস্পষ্ট মু'জিযাহ্ রয়েছে। (শারহুন নাবাবী হা, ২২৩-২৫৪২)
উওয়াইস তাবিঈ ছিলেন, সাহাবী নয়। যদিও তিনি নবী (সা.)-এর সময় মওজুদ ছিলেন কিন্তু মায়ের খিদমাতের কারণে এতটুকু সুযোগ পাননি যে, নবী (সা.) -এর দরবারে হাজির হবেন। এতে সাহাবীর চাইতে তাবিঈর মর্যাদা বেশি হবে তা নয়। কারণ স্বয়ং নবী (সা.) নিজের জন্য মানুষের নিকট দু'আ চাইতেন।
উপরন্তু পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে আযানের সময় সমস্ত উম্মতের নিকট থেকে স্বীয় মাকামে মাহমুদ হাসিলের জন্য দু'আ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৯০)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
৬২৬৭-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বললেন: ইয়ামানবাসীগণ (স্বেচ্ছায়) তোমাদের কাছে এসেছেন। তাদের অন্তর খুবই নরম এবং অত্যধিক কোমল। ঈমান ইয়ামানবাসীদের মাঝে এবং কৌশল (বুদ্ধিমত্তা) ও ইয়ামানবাসীদের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। আর গর্বঅহমিকা রয়েছে উটের রাখালের কাছে, অপরদিকে স্বস্তি ও শান্তি বিদ্যমান রয়েছে বকরি পালকদের মাঝে। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَاكُم أهلُ الْيمن هم أَرقُّ أفئدَةً وَأَلْيَنُ قُلُوبًا الْإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلَاءُ فِي أَصْحَابِ الْإِبِلِ وَالسَّكِينَةُ وَالْوَقَارُ فِي أهل الْغنم» . مُتَّفق عَلَيْهِ
متفق علیہ ، رواہ البخاری (4388) و مسلم (86 ۔ 84 / 52)، (184 و 186) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: (الإمان يمان و الفقه يمان والحكمة يمانية) সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় রয়েছে, হাফিয তাঁর ‘ফাতহ’ গ্রন্থে বলেন, স্পষ্টভাবে ঈমানকে ইয়ামানের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে কারণ (يمان) মূলত (يمنى) ছিল। জাওহারী ও অপর ব্যক্তি বিশিষ্ট নাহুবিদ সিবওয়াইহ থেকে বর্ণনা করে বলেন: তিনি সুর করে গাইতেন (يَمَانِيًّا يَظَلُّ يَشُدُّ كِيرًا و ينفخ دائما لهب الشواط) “ইয়ামানীরা হাঁপরকে শক্তিশালী করতে থাকে এবং সদা অগ্নিশিখায় ফুঁক দেয়"। এর মমার্থ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেন, তার তাৎপর্য হলো ঈমানকে মক্কার দিকে নিসবত করে বলার কারণ হলো এর সূচনা মক্কাহ থেকে। আর মদীনাহ হিসেবে মক্কাহ ডানে। কেউ বলেন, ঈমানকে মক্কাহ্-মদীনার সাথে সম্বন্ধ করা হয়েছে। আর এ দুটো শামের ডানদিকে পড়ে এর ভিত্তি হলো এ কথা রসূলের মুখনিঃসৃত বাণী যা তিনি তাবূকে অবস্থানকালে বলেছিলেন। কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আনসারগণ। তাদের সৃষ্টি হয়েছে ইয়ামান থেকে। ঈমানকে তাদের প্রতি সম্বন্ধ করা হয়েছে। এর কারণ হলো যে অভ্রান্ত ধর্ম নিয়ে রাসূল (সা.) আগমন করেছে সে ধর্মের মূলে ছিলে তারা। এসব বর্ণনা করেছেন আবূ উবায়দাহ তার গরীব হাদীসে। তার সমর্থনে ইবনুস সলাহ বলেন, পূর্বের বক্তব্যকে বাহ্যিক অর্থে প্রয়োগ করতে কোন বাধা নেই।
সহীহুল বুখারী (হা. ৩৪৯৯)-তে রয়েছে, ইয়ামানের নাম রাখার কারণ হলো তা কা'বার ডানদিকে এবং শাম কাবার বামদিকে অবস্থিত। প্রাচ্যবাসীদের মধ্যে ইয়ামানীদের অগ্রাধিকার দেয়ার কারণ হলো মুসলিমদেরকে বড় কষ্ট দেয়া ব্যতীত তারা ঈমানের নিকটে বশ্যতা স্বীকার করেছে। যেমনটি প্রাচ্যবাসীরা ও অন্যান্যরা ছিল না। ইয়ামানের লোকেরা এ কথাকে হাকীকী অর্থে ব্যবহার করে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য তৎকালীন থাকা মু'মিন ব্যক্তিবর্গরা। সব যুগের ইয়ামানী ব্যক্তি নয়। কারণ হাদীসের শব্দ তা দাবী করে না।
তিনি আরো বলেন, (الفقه) হলো দীনের বুঝ। (حكمة) থেকে উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর পরিচিতির সাথে যুক্ত ‘ইলম। (الفتح)-এর বক্তব্য এখানে সমাপ্ত।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) মুসলিমের শারাহ-এর মধ্যে ইবনু সলাহ থেকে বর্ণনা করে বলেন, (الحكمة)-এর বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম অর্থ বর্ণনা করেন। তন্মধ্যে তিনি বলেন, (الحكمة) বলা হয় এমন জ্ঞানকে যা মহান আল্লাহর পরিচিতির সাথে সংযুক্ত হুকুম আহকাম দ্বার বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, দূরদর্শিতা বাস্তবায়ন, অন্তর পরিশুদ্ধকরণ, হককে কার্যকরণ ও তার প্রতি আমল করা, বাতিল ও প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার সাথে সম্পৃক্ত। এসব গুণ যার রয়েছে তাকে (الحكمة) বলা হয়। আবূ বাকর ইবনুদ দারীদ বলেন, যেসব শব্দ তোমাকে নাসীহত করে, সতর্ক করে, ভালো কিছুর প্রতি আহ্বান করে ও মন্দ বিষয় থেকে নিষেধ করে সেটাই (حكمة) এবং (حكم) যেমন রাসূল (সা.)-এর বাণী (أن من الشعر حكمة)। কোন বর্ণনায় রয়েছে, (حكما)। (তুহফাতুল আহওয়াযী –এ্যাপ, হা. ৩৯৩৫)
এ হাদীস দ্বারা ইয়ামানবাসীদের বড় মর্যাদা প্রকাশিত হয়। রাসূল (সা.) সত্যই বলেছেন, যে কারণে ইয়ামানে সর্বদা বড় বড় বিজ্ঞ দুনিয়াবিমুখ আলিম জন্মেছে। এখনো এর ব্যতিক্রম নয়।
(الْفَخْرُ وَالْخُيَلَاءُ) নবী (সা.) -এর সময়ে ‘আরবে দুটি শ্রেণি ছিল। তাই তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেন যে, উটওয়ালার বদ-মেজাজের অধিকারী এবং বকরির রাখালরা সাদাসিধে। এটা সাহচর্যের প্রভাবে হয়ে থাকে। কারণ অধিকাংশ উটই দুষ্ট প্রকৃতির হয় এবং বকরি হয় নিরীহ প্রকৃতির। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৯১)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
৬২৬৮-[৩] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কুফরের উৎপত্তি হবে পূর্বদিক হতে। গর্ব-অহমিকা রয়েছে পশমি তাঁবুর অধিবাসী ঘোড়া ও উট চালকদের মাঝে। আর শান্তি রয়েছে বকরি চালকদের মাঝে। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَأَسُ الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلَاءُ فِي أَهْلِ الْخَيْلِ وَالْإِبِلِ وَالْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ» مُتَّفق عَلَيْهِ
متفق علیہ ، رواہ البخاری (3301) و مسلم (85 / 52)، (185) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: (رَأَسُ الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ) কুশমীহানী-এর বর্ণনায় রয়েছে, (فَدَّادُونَ) কফ বর্ণে যের ও ‘বা বর্ণে যবর সহকারে অর্থাৎ সে দিক থেকে। এতে অগ্নিপূজকদের অধিক কুফরীর লক্ষণ রয়েছে। কারণ ‘আরবের পারস্যবাসী ও তাদের অনুসারীরা মদীনার পূর্বদিকে অবস্থান করছে। তারা অত্যন্ত কঠোর, অহংকারী ও স্বেচ্ছাচারী। এখানেই শেষ নয়, এমনকি তাদের সম্রাট রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চিঠি টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলেছিল। ফিতনাসমূহ পূর্বদিক থেকে অব্যাহতভাবে বের হয়েছে।
(الْفَدَّادِينَ) খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর অর্থ চাষের যন্ত্র বা লাঙ্গলের ফলা। প্রথম মতে, (فَدَّدُونَ) হলো (فَدَّانٍ) এর বহুবচন। (فَدَّانٍ) বলা হয়, যে ব্যক্তি তার উট, ঘোড়া বা চাষে ইত্যাদির জন্য আওয়াজকে উঁচু করে। (فَدِيدُ) হলে কঠিন আওয়াজ। আখফাশ (রহিমাহুল্লাহ) দুর্বলভাবে বর্ণনা করেন। (الْفَدَّادِينَ) থেকে উদ্দেশ্য হলো, যারা জনমানবহীন উন্মুক্ত মরু অঞ্চলে বসবাস করে। এ অর্থ সুদূর পরাহত।
আবূ ‘উবায়দাহ্ মা'মার ইবনুল মুসান্না বলেন, যাতে দু’শত থেকে হাজারের অধিক সংখ্যক উট রয়েছে তাদেরকে (الْفَدَّادِينَ) বলা হয়। আবূ ‘আমর শায়বানী-এর বর্ণনার ভিত্তিতে এটা মূলত (أَصْحَابُ الْفَدَّادِينَ) ছিল। অর্থাৎ এখানে (مُضَافٍ)-কে বিলুপ্ত করা হয়েছে। আবূল আব্বাস বলেন, উটওয়ালা ও রাখালাদেরকে (فَدَّادُونَ) বলা হয়। খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তারা যে বিশ্বাস মনে লালন করত সেসব আলোচনায় তাদের ব্যস্ত থাকার কারণে তাদেরকে মন্দ বলা হয়েছে। এতে তাদের অন্তর রূঢ় হয়েছে।
(وَالسَّكِينَةُ) নম্রতা, সহনশীলতা, স্থিরতা ও প্রশান্তি অর্থে (السَّكِينَةُ)-এর ব্যবহার হয়ে থাকে। বকরি ওয়ালাদেরকে খাস করার কারণ তার অর্থে ও আধিক্যে উটের মালিকদের চাইতে নিচে। আর এ দুটো গর্ব ও অহমিকার মাধ্যম। কেউ কেউ বলেন, বকরিওয়ালা থেকে উদ্দেশ্য হলো ইয়ামানের অধিবাসী। কারণ তাদের অধিকাংশ চতুষ্পদ জন্তু হলো বকরি। কিন্তু রবী'আহ্ ও মুযার গোত্র এর বিপরীত। কারণ তাদের উট বেশি। (ফাতহুল বারী হা. ৩৩০১)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
৬২৬৯-[৪] আবূ মাস্’উদ আল আনসারী (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: এই দিক অর্থাৎ পূর্বদিক হতে ফিতনা-ফ্যাসাদের উৎপত্তি হবে। কঠোর ভাষা ও হৃদয়ের কাঠিন্য, উট ও গরুর লেজের পাশে চিৎকারকারী, পশমি তাঁবুর অধিবাসী রবী’আহ্ ও মুযার গোত্রের মধ্যে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مِنْ هَهُنَا جَاءَتِ الْفِتَنُ - نَحْوَ الْمَشْرِقِ - وَالْجَفَاءُ وَغِلَظُ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ الْإِبِلِ وَالْبَقَرِ فِي رَبِيعَةَ وَمُضَرَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
متفق علیہ ، رواہ البخاری (3498) و مسلم (81 / 51)، (181) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: (مِنْ هَهُنَا) অর্থাৎ (المشرق) (পূর্ব) থেকে। (جَاءَتِ الْفِتَنُ) যদিও এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো অতি শীঘ্রই আসবে। কিন্তু এখানে তা সুনিশ্চিতভাবে সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারটিকে চূড়ান্তভাবে বলার জন্য (فعل ماضى) এর সীগাহ্ ব্যবহার করা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
আল কিরমানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রবী'আহ্ ও মুযার গোত্রদ্বয়ের নাম উল্লেখের কারণ যা সুস্পষ্ট তা হলো ‘আরবের অধিকাংশ মানুষই এ মূল দু' বংশের সাথে যুক্ত হয়। আর তারা ছিল পূর্ববাসীদের জন্য কারণস্বরূপ। যেসব কুরায়শীদের মাঝে আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সা.) -এর আগমন ঘটেছে তারা হলো মুযার গোত্রের একটি শাখা। আর ইয়ামানবাসীদের ব্যাপারে সরাসরি পরবর্তী হাদীসে উল্লেখ হয়েছে। যার শিরোনাম হলো- (مِنْ نَسَبِ الْعَرَبِ كُلِّهِمْ إِلَى إِسْمَاعِيلَ) অর্থাৎ সমস্ত ‘আরব বংশধর ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশ। (ফাতহুল বারী হা. ৩৪৯৮)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
৬২৭০-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: অন্তরের কঠোরতা ও ভাষায় কর্কশতা পূর্বদিকে রয়েছে এবং ঈমান রয়েছে হিজাযবাসীদের মাঝে। (মুসলিম)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «غِلَظُ الْقُلُوبِ وَالْجَفَاءُ فِي الْمَشْرِقِ وَالْإِيمَانُ فِي أَهْلِ الْحِجَازِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
رواہ مسلم (92 / 53)، (193) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (فِي أَهْلِ الْحِجَازِ) অর্থাৎ মক্কাহ্ ও মদীনার চারপাশে। ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ থেকে উদ্দেশ্য হলো আনসারগণ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ) হিজাবাসীদের মধ্যে ঈমান রয়েছে। হিজায এমন ভূখণ্ডের নাম যেখানে মক্কাহ্-মদীনাহ অবস্থিত। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৯২)
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ইয়ামান ও শাম (সিরিয়া) দেশের বর্ণনা এবং উওয়াইস করানী-এর আলোচনা
৬২৭১-[৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী (সা.) (দু’আয়) বললেন, “হে আল্লাহ! শাম দেশে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। হে আল্লাহ! ইয়ামান দেশে আমাদের জন্য বরকত দান করুন।” তখন সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের নাজদের জন্যও (দু’আ করুন)। তিনি (সা.) আবারও বললেন, “হে আল্লাহ! শাম দেশে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। হে আল্লাহ! আমাদের ইয়ামান দেশে আমাদের জন্য বরকত দান করুন। এবারও সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের নাজদের জন্যও। বর্ণনাকারী [ইবনু উমার (রাঃ)] বলেন, আমার ধারণা, তিনি তৃতীয়বারে বললেন, সেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হবে। (বুখারী)
الفصل الاول ( بَاب تَسْمِيَة من سمي من أهل الْبَدْر فِي «الْجَامِعِ لِلْبُخَارِيِّ» )
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَامِنَا اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي يَمَنِنَا» . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَفِي نَجْدِنَا؟ فَأَظُنُّهُ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ: «هُنَاكَ الزَّلَازِلُ وَالْفِتَنُ وَبِهَا يَطْلُعُ قرن الشَّيْطَان» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
رواہ البخاری (7095) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: বরকতের জন্য দুটি স্থানকে বিশেষিত করার স্পষ্ট কারণ হলো, মদীনাবাসীর খাদ্যদ্রব্য ইয়ামান ও নাজদ- এ দু' স্থান থেকে আমদানী করা হয়। আশরাফ বলেন, মূলত রাসূল (সা.) - এ দু' স্থানের জন্য বরকতের দু'আ করেছেন, এর কারণ হলো মক্কাহ্ রাসূল (সা.) -এর জন্মভূমি। আর তা ইয়ামানের সাথে সম্পৃক্ত। মদীনাহ্ হলো তাঁর বসবাসের ও দাফনের স্থান। সেটা শামের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বাহ! কি চমৎকার দু'দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্ব যে, তার একটি জন্মস্থান, অন্যটি তাঁর দাফনস্থান। তিনি (সা.) দু’টিকে নিজের সাথে যুক্ত করেছেন। মর্যাদা বুঝানোর জন্য তিনি (সা.) বহুবচনের যামীর ব্যবহার করেছেন এবং বারংবার দু'আ করেছেন।
(وَفِي نَجْدِنَا) খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, নাজদ পূর্বদিকে। যে ব্যক্তি মদীনায় অবস্থান করে, নাজদ তার নিকটে ‘ইরাকের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেটা মদীনাবাসীর পূর্বে। মূলত উঁচু ভূমিকে নাজদ বলা হয়। এটা নিচুর বিপরীত। কারণ তা তুলনামূলকভাবে নিচু। পুরো তিহামাহ্ নিম্নাঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। মক্কাহ্ তিহামাহর অন্তর্ভুক্ত।
হাফিয (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: দাউদী বর্ণনা করেন, নাজদ ‘ইরাকের প্রান্তে অবস্থিত। তিনি কল্পনা করে বলেন, নাজদ একটি নির্দিষ্ট স্থান, অথচ এমনটি নয়। বরং তুলনায় অপেক্ষাকৃত উঁচু সব স্থান কে নাজদ বলা হয় এবং অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাকে (غور) (গওর) বলা হয়।
(الزَّلَازِلُ) অর্থাৎ বাহ্যিক বোধগম্য অথবা অভ্যন্তরীণ প্রকম্পন। সেটা হলো মনের টলমলতা এবং মানুষের দোদুল্যমানতা।
(وَالْفِتَنُ) বিপদ মুসীবাত যাতে দীন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধর্মীয় হ্রাস ঘটে। সে কারণে তার জন্য দু'আ করা তাঁর জন্য সমিচীন নয়। মুহাল্লাব বলেন, আসলে রাসূল (সা.) পূর্ববাসীদের জন্য দু'আ বাদ দিয়েছেন যাতে তারা অকল্যাণ থেকে দুর্বল হয়ে যায়, যা সেদিকে শয়তানের প্রভাবের কারণে ফিতনাহ্ হিসেবে সৃষ্ট।
(قرن الشَّيْطَان) সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর অর্থ হলো শয়তানের সে সময়ের অনুসারী ও সাহায্যকারী দলবল। কেউ কেউ বলেন, (قرن) থেকে উদ্দেশ্য হলো শয়তানী শক্তি বা এমন সহযোগী যার দ্বারা সে বিপথগামী করতে পারে। সে সময় পূর্ববাসীরা কাফির ছিল। তাই রাসূল (সা.) বর্ণনা করেন যে, ফিতনাহ্ সৃষ্টি হবে সেখান থেকে। যেমন তিনি জানিয়েছিলেন পরে তাই হয়েছে প্রথম ফিতনাহ্ পূর্বদিক থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এ ফিতনাহ্ ছিল মুসলিমদের বিভক্ত হওয়ার কারণ। এটা ছিল শয়তানের আনন্দের বিষয়। এতে শয়তান খুশি হয়। অনুরূপভাবে বিদ'আতও সেখান থেকে সৃষ্টি হয়। যেমনটি উল্লেখ আছে ফাতহুল বারীতে। অনুরূপভাবে উট যুদ্ধের ঘটনা সিফফীনের যুদ্ধ। খারিজীদের উদ্ভব ঘটেছে পূর্বদিকের নাজদ, ‘ইরাক ও তার পিছনের এলাকায়। ফাসাদের মূল বড় ফিনাহ যেটা তাদের মাঝে সংঘটিত হয়েছিল, তা হলো ‘উসমান (রাঃ)-এর শাহাদাত। সে কারণে রাসূল (সা.) এ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং সংঘটনের পূর্বে তা জানিয়ে, দিয়েছেন। এটা হলো নবী (সা.) -এর নুবুওয়্যাতের লক্ষণ। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৩৯৬৫)।