পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯৭-[২২] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সামনের দাঁত দুটির মাঝে কিছুটা ফাঁক ছিল। যখন তিনি (সা.) কথাবার্তা বলতেন, তখন মনে হত যেন দু দাঁতের মাঝ দিয়ে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে। (দারিমী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصِفَاته)
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَفْلَجَ الثَّنِيَّتَيْنِ إِذَا تَكَلَّمَ رُئِيَ كَالنُّورِ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ ثَنَايَاهُ. رَوَاهُ الدَّارمِيّ
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الدارمی (1 / 30 ح 59) و الترمذی فی الشمائل (15 بتحقیقی) * فیہ عبد العیزیز بن ابی ثابت الزھری : متروک ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (أَفْلَجَ الثَّنِيَّتَيْنِ) ثَنَايَا বলা হয় মুখের সামনের, উপরের ও নীচের পাটিতে যে দু'টি চ্যাপ্টা দাঁত রয়েছে। অনুরূপভাবে এ দুটি দাঁতের ডানে ও বামে যে দু' দু'টি দাঁত রয়েছে তাকে (رَبَاعِيَاتِ) বলা হয়। অত্র হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর দাঁতের মাঝে ফাঁকা ছিল সামান্যতম পরিমাণ। অন্য কোন কোন হাদীস হতে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সানায়া দাঁতের মাঝে ফাঁকা ছিল না।
(إِذَا تَكَلَّمَ رُئِيَ كَالنُّورِ) যখন তিনি (সা.) কথা বলতেন, তখন তার থেকে আলো বের হত। এর দু'টি কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। (১ম কারণ) (وَجْهُهُ الْبَيَانُ) এর সাথে সাদৃশ্য প্রদান করা হয়েছে অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মুখমণ্ডলের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। (২য় কারণ) এখানে সাদৃশ্য দেয়া হয়নি। বরং রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মু'জিযাহ্ বর্ণনা করা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯৮-[২৩] কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও যখন কোন ব্যাপারে আনন্দিত হতেন তখন তার চেহারা আলোময় হয়ে উঠত। মনে হত যেন তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের টুকরা। বস্তুত আমরা সকলেই তা অনুভব করতে পারতাম। (বুখারী ও মুসলিম)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصِفَاته)
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتَّى كَأَنَّ وَجْهَهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
متفق علیہ ، رواہ البخاری (3556) و مسلم (53 / 2769)، (7016) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯৯-[২৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক ইয়াহূদী বালক নবী (সা.) -এর সেবা করত। এক সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়ল। তখন নবী (সা.) তার সেবার জন্য কাছে গেলেন, তখন তিনি তার পিতাকে তার মাথার কাছে বসে তাওরাত পাঠরত অবস্থায় পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন তাকে লক্ষ্য করে বললেন, ওহে ইয়াহুদী! আমি তোমাকে সেই আল্লাহ তা’আলার শপথ দিয়ে প্রশ্ন করছি, যিনি মূসা আলায়হিস সালাম-এর ওপর তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তুমি কি তাওরাত কিতাবে আমার পরিচিতি, আমার গুণাবলি এবং আমার আগমন ইত্যাদি সম্পর্কে কিছু পেয়েছ? সে বলল, না। তখন বালকটি প্রতিবাদ করে বলল, হ্যা আছে- আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আমরা তাওরাত কিতাবে আপনার পরিচিতি, গুণাবলি ও আপনার আগমন ইত্যাদি সম্পর্কীয় বর্ণনা পেয়েছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা ছাড়া সত্য অন্য কোন মা’বুদ নেই এবং নিশ্চয় আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন নবী (সা.) তাঁর সাথিদেরকে বললেন, এই লোকটিকে (বালকটির পিতা ইয়াহূদীকে) তার মাথার নিকট হতে উঠিয়ে দাও এবং তোমাদের (নওমুসলিম) ভাইটির যাবতীয় তত্ত্বাবধান তোমরাই কর। (বায়হাক্বী’র “দালায়িলুন নুবুওয়্যাহ্” গ্রন্থে)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصِفَاته)
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ غُلَامًا يَهُودِيًّا كَانَ يَخْدُمُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ فَوَجَدَ أَبَاهُ عِنْدَ رَأْسِهِ يَقْرَأُ التَّوْرَاةَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا يَهُودِيٌّ أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ الَّذِي أَنْزَلَ التَّوْرَاةَ عَلَى مُوسَى هَلْ تَجِدُ فِي التَّوْرَاةِ نَعْتِي وَصِفَتِي وَمَخْرَجِي؟» . قَالَ: لَا. قَالَ الْفَتَى: بَلَى وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَجِدُ لَكَ فِي التَّوْرَاة نعتك وَصِفَتَكَ وَمَخْرَجَكَ وَإِنِّي أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّكَ رَسُولَ اللَّهِ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهِ: «أَقِيمُوا هَذَا مِنْ عِنْدِ رَأْسِهِ وَلُوا أَخَاكُمْ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «دَلَائِل النُّبُوَّة»
حسن ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 272 و سندہ حسن) * فیہ مؤمل بن اسماعیل حسن الحدیث و ثقہ الجمھور ولہ شواھد عند البیھقی فی الدلائل (6 / 272 ۔ 273) وغیرہ فالحدیث حسن ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: (نَعْتِي) দ্বারা বুঝানো হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সত্ত্বাগত ও অভ্যন্তরীণ গুণাবলি।
আর (صِفَتِي) দ্বারা বুঝানো হয়েছে, বাহ্যিক কার্যাবলী, অবস্থাসমূহের গুণাবলি।
যদিও (نَعْتِي) ও (صِفَتِي) এর শাব্দিক অর্থ একই।
(مَخْرَجِي) বের হওয়ার স্থান অথবা জন্মের সময় বুঝানো হয়েছে অথবা নুবুওয়্যাত ও রিসালাত পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বুঝানো হয়েছে অথবা মক্কাহ্ হতে মদীনায় হিজরত করে চলে আসার কথা বুঝানো হয়েছে।
(أَقِيمُوا هَذَا مِنْ عِنْدِ رَأْسِهِ وَلُوا أَخَاكُمْ) সাহাবীগণকে সম্বোধন করে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা এই বালকের দায়িত্ব নিবে। রসূলের এই আদেশ ছিল ঐ এলাকার গভর্নর বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলের জন্য। এই বালকের মৃত্যুর পর তার কাফন, দাফন ও ইসলামের অন্যান্য বিধানাবলী সকল বিধান পালন করার জন্য উপস্থিত সাহাবীগণকে বলেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৮০০-[২৫] আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: নিশ্চয় আমি আল্লাহ তা’আলার পাঠানো অনুগ্রহ। (দারিমী, আর বায়হাক্বী’র শুআবূল ঈমান)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ ( بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصِفَاته)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّمَا أَنَا رَحْمَةٌ مُهْدَاةٌ» . رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ»
اسنادہ ضعیف ، رواہ الدارمی (1 / 9 ح 15 و سقط منہ ذکر ابی ھریرۃ رضی اللہ عنہ) و رواہ البیھقی فی شعب الایمان (1446 بدون سند و فی دلائل النبوۃ 1 / 158) [و البزار (3 / 114 ح 2369)] * الاعمش مدلس و عنعن فی حدیث ابی صالح و فی حدیث ابی ھریرۃ ولا شک بانہ صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم رحمۃ مھداۃ و رحمۃ للعالمین و لکن ھذا السند لم یصح
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা'আলা আমাকে জগদ্বাসীর পথ নির্দেশ, হিদায়াত ও কল্যাণের জন্য প্রেরণ করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি এই দিক-নির্দেশনা গ্রহণ করবে, সে সফলতা ও কামিয়াবী অর্জন করে নাজাত পাবে। আর যে তা গ্রহণ করবে না, সে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হবে। তাই তো আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা দিয়ে বলেছেন: (وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ) “আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমতস্বরূপই প্রেরণ করেছি”- (সূরাহ আল আম্বিয়া- ২১: ১০৭)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।