পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৬০৭-[৪২] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তোমাদের সামনে (কিয়ামতের দিন) আমার হাওয থাকবে, যার দুই কিনারার দূরত্ব জারবা’ ও আযরুহ স্থানদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের মতো। কোন রাবী বলেছেন, এ দুটি সিরিয়ার দুই বস্তির নাম। এর মধ্যবর্তী দূরতু তিন রজনীর পথ। অপর এক বর্ণনায় আছে, তার পেয়ালার সংখ্যা আকাশের নক্ষত্রের মতো (অগণিত)। যে উক্ত হাওযে এসে একবার তা থেকে পান করবে, সে পরে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ أَمَامَكُمْ حَوْضِي مَا بَيْنَ جَنْبَيْهِ كَمَا بَيْنَ جَرْبَاءَ وَأَذْرُحَ» . قَالَ بَعْضُ الرُّوَاةِ: هُمَا قَرْيَتَانِ بِالشَّامِ بَيْنَهُمَا مَسِيرَةُ ثَلَاثِ لَيَالٍ. وَفِي رِوَايَةٍ: «فِيهِ أَبَارِيقُ كَنُجُومِ السَّمَاءِ مَنْ وَرَدَهُ فَشَرِبَ مِنْهُ لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهَا أَبَدًا» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6577) و مسلم (34 / 2299)، (5986 و 5988) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن ابن عمر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ان امامكم حوضي ما بين جنبيه كما بين جرباء واذرح» . قال بعض الرواة: هما قريتان بالشام بينهما مسيرة ثلاث ليال. وفي رواية: «فيه اباريق كنجوم السماء من ورده فشرب منه لم يظما بعدها ابدا» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (6577) و مسلم (34 / 2299)، (5986 و 5988) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সম্মুখে (কিয়ামতের দিন) আমার হাওয থাকবে যার দুই কিনারার দূরত্ব হবে জাবরা ও আযরুহ স্থানদ্বয়ের দূরত্বের ন্যায়। কোন কোন রাবী বলেছেন, এ দুটি সিরিয়ারে দু'টি বস্তির নাম। উভয়টির মধ্যবর্তী দূরত্ব তিন রাতের পথ। তবে মুহাক্কিক মুহাদ্দিসগণের মতে, এ দুটি স্থান সিরিয়ায় অবস্থিত এটা ঠিক কিন্তু এ দুটির মধ্যবর্তী দূরত্ব তিন রাতের পথ এ কথা ঠিক নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৬০৮-[৪৩] ও ৫৬০৯-[৪৪] হুযায়ফাহ্ ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। অতঃপর মু’মিনগণ এক স্থানে দাঁড়াবেন, সবশেষে জান্নাতকে তাদের কাছাকাছি করা হবে। এরপর তারা আদম ’আলায়হিস-এর নিকট এসে বলবে, হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য জান্নাত খুলে দিন। তিনি বলবেন, তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে। অতএব আমি এ কাজের উপযুক্ত নই। তোমরা আমার পুত্র আল্লাহর বন্ধু ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর কাছে যাও। তিনি বলেন, তখন ইবরাহীম আলায়হিস সালাম বলবেন, এ কাজের যোগ্য আমি নই। আমি আল্লাহর বন্ধু ছিলাম বটে, কিন্তু পশ্চাতে পশ্চাতে (কখনো আল্লাহর সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ হয়নি,) বরং তোমরা মূসা আলায়হিস সালাম -এর দারস্থ হও। যার সাথে আল্লাহ তা’আলা সরাসরি কথা বলেছেন। অতএব তারা মূসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা ’ঈসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর কালিমাহ এবং তাঁর রূহ। তখন ’ঈসা আলায়হিস সালাম বলবেন, আমি যোগ্য নই। সবশেষে তারা মুহাম্মাদ (সা.)-এর নিকট আসবে।

তখন তিনি (’আরশের ডানপার্শ্বে) দাঁড়াবেন। (শাফা’আতের জন্য) তাঁকে অনুমতি দেয়া হবে। অতঃপর আমানত ও রেহেমকে (আত্মীয়তার সম্পর্কে) পাঠানো হবে, তখন উভয়টি (ইনসাফের প্রার্থী হয়ে) পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শে দাড়িয়ে যাবে। তার উপর দিয়ে এবার লোকেরা অতিক্রম করতে থাকবে। তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের মতো চলে যাবে। আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি কুরবান, বিদ্যুতের মতো চলে যাবে’ এর অর্থ কী? তিনি বলবেন, তোমরা কি দেখতে পাও না, বিদ্যুতের রশ্মি কিরূপে দ্রুত গতিতে চলে যায় এবং চোখের পলকেই পুনরায় ফিরে আসে? তারপরের দল বাতাসের মতো এবং পুরুষদের দৌড়ের মতো আমল তাদেরকে (সম্মুখের দিকে) নিয়ে যাবে। আর তোমাদের নবী পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে বলতে থাকবেন, ’ইয়া- রব্বি! সাল্লিম সাল্লিম (অর্থাৎ হে আমার রব। নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ)

পরিশেষে কিছুসংখ্যক বান্দার ’আমল এতই কম হবে যে, তাদের পুলসিরাত অতিক্রম করার সাধ্য থাকবে না। এমনকি সে সময় এক লোক হামাগুড়ি দিতে দিতে অতিক্রম করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পুলসিরাতের উভয় কিনারায় আংটা ঝুলন্ত থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ থাকবে উক্ত আংটা তাকে পাকড়াও করবে। ফলে কেউ কেউ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মুক্তি পাবে আবার কোন কোন ব্যক্তিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। শপথ ঐ সত্তার! যার হাতে আবূ হুরায়রার প্রাণ! জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছর দূরত্বের সমান। (মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَن حذيفةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَجْمَعُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى النَّاسَ فَيَقُومُ الْمُؤْمِنُونَ حَتَّى تُزْلَفَ لَهُمُ الْجَنَّةُ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ: يَا أَبَانَا اسْتَفْتِحْ لَنَا الْجَنَّةَ. فَيَقُولُ: وَهَلْ أَخْرَجَكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ إِلَّا خَطِيئَةُ أَبِيكُمْ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى ابْنِي إِبْرَاهِيمَ خَلِيلِ اللَّهِ قَالَ: فَيَقُولُ إِبْرَاهِيمُ: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ إِنَّمَا كُنْتُ خَلِيلًا مِنْ وَرَاءَ وَرَاءَ اعْمَدُوا إِلَى مُوسَى الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ تَكْلِيمًا فَيَأْتُونَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُولُ: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى كَلِمَةِ اللَّهِ وَرُوحِهِ فَيَقُولُ عِيسَى: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُومُ فَيُؤْذَنُ لَهُ وَتُرْسَلُ الْأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ فَيَقُومَانِ جَنَبَتَيِ الصِّرَاطِ يَمِينًا وَشِمَالًا فَيَمُرُّ أَوَّلُكُمْ كَالْبَرْقِ . قَالَ: قُلْتُ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَيُّ شَيْءٍ كَمَرِّ الْبَرْقِ؟ قَالَ: أَلَمْ تَرَوْا إِلَى الْبَرْقِ كَيْفَ يَمُرُّ وَيَرْجِعُ فِي طَرْفَةِ عَيْنٍ. ثُمَّ كَمَرِّ الرِّيحِ ثُمَّ كَمَرِّ الطَّيْرِ وَشَدِّ الرِّجَالِ تَجْرِي بِهِمْ أَعْمَالُهُمْ وَنَبِيُّكُمْ قَائِمٌ عَلَى الصِّرَاطِ يَقُولُ: يَا رَبِّ سَلِّمْ سَلِّمْ. حَتَّى تَعْجِزَ أَعْمَالُ الْعِبَادِ حَتَّى يَجِيءَ الرَّجُلُ فَلَا يَسْتَطِيعُ السَّيْرَ إِلَّا زَحْفًا . وَقَالَ: «وَفِي حَافَتَيِ الصِّرَاطِ كَلَالِيبُ مُعَلَّقَةٌ مَأْمُورَةٌ تَأْخُذُ مَنْ أُمِرَتْ بِهِ فَمَخْدُوشٌ نَاجٍ وَمُكَرْدَسٌ فِي النَّارِ» . وَالَّذِي نَفْسُ أَبِي هُرَيْرَةَ بِيَدِهِ إِنَّ قَعْرَ جَهَنَّمَ لَسَبْعِينَ خَرِيفًا. رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (329 / 195)، (482) ۔
(صَحِيح)

وعن حذيفة وابي هريرة قالا: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يجمع الله تبارك وتعالى الناس فيقوم المومنون حتى تزلف لهم الجنة فياتون ادم فيقولون: يا ابانا استفتح لنا الجنة. فيقول: وهل اخرجكم من الجنة الا خطيىة ابيكم لست بصاحب ذلك اذهبوا الى ابني ابراهيم خليل الله قال: فيقول ابراهيم: لست بصاحب ذلك انما كنت خليلا من وراء وراء اعمدوا الى موسى الذي كلمه الله تكليما فياتون موسى عليه السلام فيقول: لست بصاحب ذلك اذهبوا الى عيسى كلمة الله وروحه فيقول عيسى: لست بصاحب ذلك فياتون محمدا صلى الله عليه وسلم فيقوم فيوذن له وترسل الامانة والرحم فيقومان جنبتي الصراط يمينا وشمالا فيمر اولكم كالبرق . قال: قلت: بابي انت وامي اي شيء كمر البرق؟ قال: الم تروا الى البرق كيف يمر ويرجع في طرفة عين. ثم كمر الريح ثم كمر الطير وشد الرجال تجري بهم اعمالهم ونبيكم قاىم على الصراط يقول: يا رب سلم سلم. حتى تعجز اعمال العباد حتى يجيء الرجل فلا يستطيع السير الا زحفا . وقال: «وفي حافتي الصراط كلاليب معلقة مامورة تاخذ من امرت به فمخدوش ناج ومكردس في النار» . والذي نفس ابي هريرة بيده ان قعر جهنم لسبعين خريفا. رواه مسلم رواہ مسلم (329 / 195)، (482) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ) যখন কিয়ামতের দিন মানুষেরা পরস্পর অস্থির হয়ে পড়বে তখন তারা কঠিন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সুপারিশ পাওয়ার আশায় একের পর এক সকল নবীর নিকট যাবে। সকলেই নিজেদের ত্রুটির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অক্ষমতা প্রকাশ করবেন। পরিশেষে রাসূল (সা.) -এর নিকটে এসে তারা সুপারিশ কামনা করবে। এরপর রাসূল (সা.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট সুপারিশের অনুমতি প্রার্থনা করবেন। অনুমতি পাওয়ায় তিনি তাদের জন্য কঠিন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের সুপারিশ করবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার সুপারিশ কবুল করে তাদেরকে মুক্তি দিবেন। (ফাতহুল বারী হা. ৬৫৬৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৬০৮-[৪৩] ও ৫৬০৯-[৪৪] হুযায়ফাহ্ ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। অতঃপর মু’মিনগণ এক স্থানে দাঁড়াবেন, সবশেষে জান্নাতকে তাদের কাছাকাছি করা হবে। এরপর তারা আদম ’আলায়হিস-এর নিকট এসে বলবে, হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য জান্নাত খুলে দিন। তিনি বলবেন, তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে। অতএব আমি এ কাজের উপযুক্ত নই। তোমরা আমার পুত্র আল্লাহর বন্ধু ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর কাছে যাও। তিনি বলেন, তখন ইবরাহীম আলায়হিস সালাম বলবেন, এ কাজের যোগ্য আমি নই। আমি আল্লাহর বন্ধু ছিলাম বটে, কিন্তু পশ্চাতে পশ্চাতে (কখনো আল্লাহর সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ হয়নি,) বরং তোমরা মূসা আলায়হিস সালাম -এর দারস্থ হও। যার সাথে আল্লাহ তা’আলা সরাসরি কথা বলেছেন। অতএব তারা মূসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা ’ঈসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর কালিমাহ এবং তাঁর রূহ। তখন ’ঈসা আলায়হিস সালাম বলবেন, আমি যোগ্য নই। সবশেষে তারা মুহাম্মাদ (সা.)-এর নিকট আসবে।

তখন তিনি (’আরশের ডানপার্শ্বে) দাঁড়াবেন। (শাফা’আতের জন্য) তাঁকে অনুমতি দেয়া হবে। অতঃপর আমানত ও রেহেমকে (আত্মীয়তার সম্পর্কে) পাঠানো হবে, তখন উভয়টি (ইনসাফের প্রার্থী হয়ে) পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শে দাড়িয়ে যাবে। তার উপর দিয়ে এবার লোকেরা অতিক্রম করতে থাকবে। তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের মতো চলে যাবে। আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি কুরবান, বিদ্যুতের মতো চলে যাবে’ এর অর্থ কী? তিনি বলবেন, তোমরা কি দেখতে পাও না, বিদ্যুতের রশ্মি কিরূপে দ্রুত গতিতে চলে যায় এবং চোখের পলকেই পুনরায় ফিরে আসে? তারপরের দল বাতাসের মতো এবং পুরুষদের দৌড়ের মতো আমল তাদেরকে (সম্মুখের দিকে) নিয়ে যাবে। আর তোমাদের নবী পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে বলতে থাকবেন, ’ইয়া- রব্বি! সাল্লিম সাল্লিম (অর্থাৎ হে আমার রব। নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ)

পরিশেষে কিছুসংখ্যক বান্দার ’আমল এতই কম হবে যে, তাদের পুলসিরাত অতিক্রম করার সাধ্য থাকবে না। এমনকি সে সময় এক লোক হামাগুড়ি দিতে দিতে অতিক্রম করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পুলসিরাতের উভয় কিনারায় আংটা ঝুলন্ত থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ থাকবে উক্ত আংটা তাকে পাকড়াও করবে। ফলে কেউ কেউ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মুক্তি পাবে আবার কোন কোন ব্যক্তিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। শপথ ঐ সত্তার! যার হাতে আবূ হুরায়রার প্রাণ! জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছর দূরত্বের সমান। (মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَن حذيفةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَجْمَعُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى النَّاسَ فَيَقُومُ الْمُؤْمِنُونَ حَتَّى تُزْلَفَ لَهُمُ الْجَنَّةُ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ: يَا أَبَانَا اسْتَفْتِحْ لَنَا الْجَنَّةَ. فَيَقُولُ: وَهَلْ أَخْرَجَكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ إِلَّا خَطِيئَةُ أَبِيكُمْ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى ابْنِي إِبْرَاهِيمَ خَلِيلِ اللَّهِ قَالَ: فَيَقُولُ إِبْرَاهِيمُ: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ إِنَّمَا كُنْتُ خَلِيلًا مِنْ وَرَاءَ وَرَاءَ اعْمَدُوا إِلَى مُوسَى الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ تَكْلِيمًا فَيَأْتُونَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُولُ: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى كَلِمَةِ اللَّهِ وَرُوحِهِ فَيَقُولُ عِيسَى: لَسْتُ بِصَاحِبِ ذَلِكَ فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُومُ فَيُؤْذَنُ لَهُ وَتُرْسَلُ الْأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ فَيَقُومَانِ جَنَبَتَيِ الصِّرَاطِ يَمِينًا وَشِمَالًا فَيَمُرُّ أَوَّلُكُمْ كَالْبَرْقِ . قَالَ: قُلْتُ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَيُّ شَيْءٍ كَمَرِّ الْبَرْقِ؟ قَالَ: أَلَمْ تَرَوْا إِلَى الْبَرْقِ كَيْفَ يَمُرُّ وَيَرْجِعُ فِي طَرْفَةِ عَيْنٍ. ثُمَّ كَمَرِّ الرِّيحِ ثُمَّ كَمَرِّ الطَّيْرِ وَشَدِّ الرِّجَالِ تَجْرِي بِهِمْ أَعْمَالُهُمْ وَنَبِيُّكُمْ قَائِمٌ عَلَى الصِّرَاطِ يَقُولُ: يَا رَبِّ سَلِّمْ سَلِّمْ. حَتَّى تَعْجِزَ أَعْمَالُ الْعِبَادِ حَتَّى يَجِيءَ الرَّجُلُ فَلَا يَسْتَطِيعُ السَّيْرَ إِلَّا زَحْفًا . وَقَالَ: «وَفِي حَافَتَيِ الصِّرَاطِ كَلَالِيبُ مُعَلَّقَةٌ مَأْمُورَةٌ تَأْخُذُ مَنْ أُمِرَتْ بِهِ فَمَخْدُوشٌ نَاجٍ وَمُكَرْدَسٌ فِي النَّارِ» . وَالَّذِي نَفْسُ أَبِي هُرَيْرَةَ بِيَدِهِ إِنَّ قَعْرَ جَهَنَّمَ لَسَبْعِينَ خَرِيفًا. رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (329 / 195)، (482) ۔
(صَحِيح)

وعن حذيفة وابي هريرة قالا: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يجمع الله تبارك وتعالى الناس فيقوم المومنون حتى تزلف لهم الجنة فياتون ادم فيقولون: يا ابانا استفتح لنا الجنة. فيقول: وهل اخرجكم من الجنة الا خطيىة ابيكم لست بصاحب ذلك اذهبوا الى ابني ابراهيم خليل الله قال: فيقول ابراهيم: لست بصاحب ذلك انما كنت خليلا من وراء وراء اعمدوا الى موسى الذي كلمه الله تكليما فياتون موسى عليه السلام فيقول: لست بصاحب ذلك اذهبوا الى عيسى كلمة الله وروحه فيقول عيسى: لست بصاحب ذلك فياتون محمدا صلى الله عليه وسلم فيقوم فيوذن له وترسل الامانة والرحم فيقومان جنبتي الصراط يمينا وشمالا فيمر اولكم كالبرق . قال: قلت: بابي انت وامي اي شيء كمر البرق؟ قال: الم تروا الى البرق كيف يمر ويرجع في طرفة عين. ثم كمر الريح ثم كمر الطير وشد الرجال تجري بهم اعمالهم ونبيكم قاىم على الصراط يقول: يا رب سلم سلم. حتى تعجز اعمال العباد حتى يجيء الرجل فلا يستطيع السير الا زحفا . وقال: «وفي حافتي الصراط كلاليب معلقة مامورة تاخذ من امرت به فمخدوش ناج ومكردس في النار» . والذي نفس ابي هريرة بيده ان قعر جهنم لسبعين خريفا. رواه مسلم رواہ مسلم (329 / 195)، (482) ۔ (صحيح)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৬১০-[৪৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: শাফা’আতের দ্বারা এমন কিছু সংখ্যক লোক জাহান্নাম থেকে বের হবে, তারা সা’আরীর-এর মতো। আমরা প্রশ্ন করলাম, সা’আরীর কি? তিনি বললেন, তা হলো ক্ষীরা। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَخْرُجُ مِنَ النَّار بالشفاعة كَأَنَّهُمْ الثعارير؟ قَالَ: «إِنَّه الضغابيس» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6558) و مسلم (318 / 191)، (471) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن جابر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يخرج من النار بالشفاعة كانهم الثعارير؟ قال: «انه الضغابيس» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (6558) و مسلم (318 / 191)، (471) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: শাফা'আতের মাধ্যমে এমন কিছু সংখ্যক লোক জাহান্নাম থেকে বের হবে যারা দেখতে ক্ষিরার মতো হবে। কেউ কেউ বলেছেন, ক্ষিরা যেমন তরতাজা ও সুন্দর আকৃতিতে বের হয় ঠিক তারাও জাহান্নাম থেকে অনুরূপ হৃষ্টপুষ্ট ও সুন্দর আকৃতিতে বের হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৬১১-[৪৬] ’উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন: কিয়ামতের দিন তিন ধরনের লোক সুপারিশ করবেন- নবীগণ, ’আলিমগণ ও শহীদগণ। (ইবনে মাজাহ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

مَوْضُوع وَعَن عُثْمَان بن عَفَّان قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُشَفَّعُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَلَاثَةٌ: الْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الْعلمَاء ثمَّ الشُّهَدَاء . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

اسنادہ موضوع ، رواہ ابن ماجہ (4313) * عنبسۃ بن عبد الرحمن کان ’’ یضع الحدیث ‘‘ کما قال ابو حاتم و ابن معین رحمھما اللہ و علاق : مجھول و السند ضعفہ العراقی و البوصیری ۔
(ضَعِيف)

موضوع وعن عثمان بن عفان قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يشفع يوم القيامة ثلاثة: الانبياء ثم العلماء ثم الشهداء . رواه ابن ماجه اسنادہ موضوع ، رواہ ابن ماجہ (4313) * عنبسۃ بن عبد الرحمن کان ’’ یضع الحدیث ‘‘ کما قال ابو حاتم و ابن معین رحمھما اللہ و علاق : مجھول و السند ضعفہ العراقی و البوصیری ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: নবী, ‘আলিম ও শাহীদগণ কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। কেননা এ তিন শ্রেণির সম্মান ও মর্যাদা সর্বাধিক। তাই তাদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মুমিন ও সৎ ব্যক্তিরাও সীমিত পর্যায়ে সুপারিশ করবেন, যা মশহুর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। মুসলিমদের মাঝে খারিজী ও মু'তাযিলা সম্প্রদায় ব্যতীত আর কেউ শাফা'আতকে অস্বীকার করে না। (ফাতহুল বারী হা. ৬৫৭৭)


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে