পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৪৮-[১২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যামানা সংকুচিত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। অর্থাৎ একটি বছর হবে একটি মাসের সমান। একটি মাস হবে একটি সপ্তাহের সমান, আর একদিন হবে এক ঘণ্টার পরিমাণ, আর একটি ঘণ্টা হবে অগ্নিশিখা উঠার সময় পরিমাণ। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يتقاربَ الزَّمانُ فتكونُ السَّنةُ كالشهرِ والشَّهرُ كالجمعةِ وتكونُ الجمعةُ كاليومِ وَيَكُونُ الْيَوْمُ كَالسَّاعَةِ وَتَكُونُ السَّاعَةُ كَالضَّرْمَةِ بِالنَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
صحیح ، رواہ الترمذی (2332 وقال : غریب) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: ‘আল্লামাহ্ তুরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: উক্ত যামানাতে বরকত কমে যাবে এবং প্রত্যেক স্থান হতে কল্যাণ বিনষ্ট হবে। মানুষদের বিপদাপদের আধিক্যের কারণে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে আর তারা বড় বড় ফিতনার মোকাবেলায় এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়বে যে, তাদের দিনরাত কিভাবে কাটবে সেদিকে তাদের কোন খেয়াল থাকবে না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ২২৫ পৃ., হা. ২২৩২)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৪৯-[১৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু হাওয়ালাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) এ গনীমতের সম্পদ লাভ করার জন্য আমাদেরকে পদাতিক বাহিনী হিসেবে এক অভিযানে পাঠালেন। আমরা এমন অবস্থায় ফিরে আসলাম যে, আমরা গনীমতের কিছুই লাভ করতে পারিনি। তিনি আমাদের চেহারায় ক্লান্তি ও দুর্বলতার ছাপ দেখতে পেয়ে আমাদের মাঝে (বক্তৃতার উদ্দেশে) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ! তাদের দায়িত্ব এভাবে আমার ওপর অর্পণ করো না যে, আমি তাদের পক্ষ হতে তা বহন করতে দুর্বল হয়ে পড়ি। (হে আল্লাহ!) তাদের ওপর এমন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করো না যা সমাধা করতে তারা অক্ষম হয়ে পড়ে। (হে আল্লাহ!) তাদেরকে অন্য লোকের ওপরও অর্পণ করো না। কেননা তারা নিজেদের প্রয়োজনকে তাদের প্রয়োজনের উপর গুরুত্ব দেবে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি (সা.) আমার মাথার উপর স্বীয় হাত রেখে বললেন, হে ইবনু হাওয়ালাহ্! যখন তুমি দেখবে খিলাফাত (মদীনাহ্ হতে স্থানান্তরিত হয়ে) পবিত্র ভূমিতে (সিরিয়ায়) পৌছে গেছে, তখন তুমি বুঝে নিবে যে, ভূমিকম্প, দুঃখ-দুর্দশা, বড় বড় নিদর্শনসমূহ ও ফিতনা-ফাসাদ খুবই কাছে এসে গেছে এবং আমার এই হাত তোমার মাথা থেকে যত নিকটে, কিয়ামত সেদিন এটা অপেক্ষাও অতি কাছাকাছি হবে। (আবু দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَن عبدِ الله بنِ حوالةَ قَالَ: بعثَنا رَسُول الله صلى اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِنَغْنَمَ عَلَى أَقْدَامِنَا فَرَجَعْنَا فَلَمْ نَغْنَمْ شَيْئًا وَعَرَفَ الْجَهْدَ فِي وجوهِنا فقامَ فِينَا فَقَالَ: «اللَّهُمَّ لَا تَكِلْهُمْ إِلَيَّ فَأَضْعُفَ عَنْهُمْ وَلَا تَكِلْهُمْ إِلَى أَنْفُسِهِمْ فَيَعْجِزُوا عَنْهَا وَلَا تَكِلْهُمْ إِلَى النَّاسِ فَيَسْتَأْثِرُوا عَلَيْهِمْ» ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِي ثُمَّ قَالَ: «يَا ابْنَ حَوَالَةَ إِذَا رَأَيْتَ الْخِلَافَةَ قَدْ نَزَلَتِ الْأَرْضَ الْمُقَدَّسَةَ فَقَدْ دَنَتِ الزَّلَازِلُ وَالْبَلَابِلُ وَالْأُمُورُ الْعِظَامُ وَالسَّاعَةُ يَوْمَئِذٍ أَقْرَبُ مِنَ النَّاسِ مِنْ يَدِي هَذِه إِلَى رَأسك» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
اسنادہ حسن ، رواہ ابوداؤد (2535) [و صححہ الحاکم (4 / 425) و وافقہ الذھبی] ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: মদীনাহ্ হতে সিরিয়া পর্যন্ত খিলাফত বিস্তৃতি লাভ করবে যেমনটা বানূ উমাইয়্যার রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অতঃপর কিয়ামত প্ৰকম্পের পূর্বক্ষণে (ইসরাফীল-এর প্রথম ফুৎকারে) প্রচণ্ড বেগে ভূমিকম্প হবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন, “যখন জমিনকে প্রকম্পিত করা হবে”- (সূরাহ্ আহ্ যিলযাল ৯৯: ১)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫০-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন গনীমতের সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পদরূপে ব্যবহার করা হবে, আমানতকে গনীমতের সম্পদ মনে করা হবে যাকাতকে জরিমানা ধারণ করা হবে, দীন ছাড়া অন্য উদ্দেশ্য বিদ্যা হাসিল করা হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের নাফরমানী করবে আর বন্ধুকে খুব কাছে স্থান দেবে এবং আপন পিতাকে দুরে সরিয়ে রাখবে, মসজিদসমূহে উচ্চ আওয়াজ করা হবে, ফাসিক লোকই গোত্রের সরদার হবে, জাতির নিকৃষ্টতম লোক তাদের নেতা হবে, ক্ষতির আশঙ্কায় মানুষের সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রাদি ব্যাপকভাবে প্রকাশ লাভ করবে, মদ্যপান বেড়ে যাবে এবং এ উম্মাতের পরবর্তীকালের লোকেরা পূর্ববর্তী লোকেদের প্রতি অভিসম্পাত করতে থাকবে। সেই সময় তোমরা অপেক্ষা কর, রক্তবর্ণের ঝড়ের, ভূকম্পনের ভূমি ধসের, রূপ বিকৃতির, পাথর বর্ষণের এবং সুতা ছেড়ে পুঁতির দানা যেভাবে পড়তে থাকে অনুরূপ একটির পর একটি নিদর্শনসমূহের। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اتُّخِذَ الْفَيْءُ دِوَلًا وَالْأَمَانَةُ مَغْنَمًا وَالزَّكَاةُ مَغْرَمًا وَتُعُلِّمَ لِغَيْرِ الدِّينِ وَأَطَاعَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ وَعَقَّ أُمَّهُ وَأَدْنَى صَدِيقَهُ وَأَقْصَى أَبَاهُ وَظَهَرَتِ الْأَصْوَاتُ فِي الْمَسَاجِدِ وَسَادَ الْقَبِيلَةَ فَاسِقُهُمْ وَكَانَ زَعِيمُ الْقَوْمِ أَرْذَلَهُمْ وَأُكْرِمَ الرَّجُلُ مَخَافَةَ شَرِّهِ وَظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وشُربتِ الخمورُ وَلَعَنَ آخِرُ هَذِهِ الْأُمَّةِ أَوَّلَهَا فَارْتَقِبُوا عِنْدَ ذَلِكَ رِيحًا حَمْرَاءَ وَزَلْزَلَةً وَخَسْفًا وَمَسْخًا وَقَذْفًا وَآيَاتٍ تَتَابَعُ كَنِظَامٍ قُطِعَ سِلْكُهُ فَتَتَابَعَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2211 وقال : غریب) * فیہ رمیح : مجھول کما فی التقریب و الکاشف (1 / 243) وغیرھما ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা: (ظَهَرَتِ الْأَصْواتُ) মসজিদে লোকজন উচ্চ আওয়াজ করে কথা বলবে। বিশেষভাবে ব্যবসায়িক লেনদেন, অনর্থক কথা ও হাসি-তামাসা; এসবই মসজিদে চলতে থাকবে। মুল্লা ‘আলী আল ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এসব বর্তমান যামানায় অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থাৎ আমাদের কতিপয় হানাফী উলামাগণ বলেন: মসজিদে যিক্র-আযকারও উচ্চ আওয়াজ করা হারাম। (তুহফাতুল আহওয়ায়ী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৭৬ পৃ., হা, ২২১০)
(وَلَعَنَ آخِرُ هَذِهِ الْأُمَّةِ أَوَّلَهَا) এখানে এ ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, নিশ্চয় এ আলামতটি এ জাতির বৈশিষ্ট্য যা পূর্ববর্তী জাতির মাঝে ছিল না। আর এটাই হলো কিয়ামতের আলামত। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, এ জাতি পূর্ববর্তীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে ও তাদেরকে খারাপভাবে স্মরণ করবে। তাদের কোন সৎ ‘আমলের অনুসরণ না করা এটাই যেন তাদেরকে অভিশাপ দেয়া। বিশ্ববাসীর কাছে এ বিষয়টি গোপন নেই যে, আল্লাহ তা'আলা পূর্ববর্তীদের ব্যাপারে বলেছেন: “পূর্ববর্তী মুহাজির ও আনসারগণ এবং যারা তাদের একনিষ্ঠ অনুসারী, আল্লাহ তা'আলা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট ও তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট”- (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯: ১০০) আমরা তাদের শানে কি বলব? আল্লাহ তা'আলা এটাও শিক্ষা দিয়েছেন, তা হলো: “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ও আমাদের ভাইগণ যারা ঈমান আনয়নের ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগামী হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন”- (সূরা আল হাশর ৫৯: ১০)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫১-[১৫] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমার উম্মাত যখন পনেরোটি কাজে লিপ্ত হবে (যা পূর্বের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে), তখন তাদের ওপর বিভিন্ন প্রকারের বিপদবিপর্যয় অবতীর্ণ হবে। তিনি (সা.) উক্ত পনেরোটি কাজ কী কী তা গণনা করে বলেছেন, তন্মধ্যে ’দীন ব্যতীত অন্য উদ্দেশে বিদ্যার্জন করা হবে, এ বাক্যটির উল্লেখ নেই এবং তাতে বলেছেন বন্ধুর সাথে ভালো আচরণ করবে এবং পিতার সাথে কষ্টদায়ক আচরণ করবে, মদ পান করা হবে এবং রেশমি পোশাক পরিধান করা হবে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا فَعَلَتْ أُمَّتِي خَمْسَ عَشْرَةَ خَصْلَةً حَلَّ بِهَا الْبَلَاءُ» وَعَدَّ هَذِهِ الْخِصَالَ وَلَمْ يَذْكُرْ «تُعُلِّمَ لِغَيْرِ الدِّينِ» قَالَ: «وَبَرَّ صَدِيقَهُ وَجَفَا أَبَاهُ» وَقَالَ: «وَشُرِبَ الْخَمْرُ وَلُبِسَ الْحَرِيرُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2210) * فیہ فرج بن فضالۃ : ضعیف ۔
(ضَعِيفٌ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫২-[১৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: দুনিয়া নিঃশেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমার বংশের এক ব্যক্তি সারা আরব ভূখণ্ডের মালিক না হবে। তার নাম হবে আমার নামে। (তিরমিযী ও আবু দাউদ)
আবু দাউদ-এর অপর এক বর্ণনায় আছে- তিনি (সা.) বলেছেন: যদি দুনিয়া শেষ হতে মাত্র একদিন বাকি থাকে, আল্লাহ তা’আলা ঐ দিনকে খুবই দীর্ঘায়িত করবেন এবং পরিশেষে সে দিনের মধ্যে আমার বংশের অথবা বলেছেন, আমার আহলে বায়তের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম হবে আমার নামে এবং তার পিতার নাম হবে আমার পিতার নামে। তিনি ন্যায় ও ইনসাফ দ্বারা জমিনকে তেমনিভাবে পরিপূর্ণ করে দেবেন যেমনিভাবে তৎপূর্বে যুলম ও অত্যাচারে তা ভরপুর ছিল।
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى يَمْلِكَ الْعَرَبَ رَجُلٌ مِنْ أهلِ بَيْتِي يُواطِىءُ اسمُه اسْمِي» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ: «لَوْ لَمْ يَبْقَ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا يَوْمٌ لَطَوَّلَ اللَّهُ ذَلِكَ الْيَوْمَ حَتَّى يَبْعَثَ اللَّهُ فِيهِ رَجُلًا مِنِّي - أَوْ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي - يُوَاطِئُ اسْمُهُ اسْمِيَ وَاسْمُ أَبِيهِ اسْمَ أَبِي يَمْلَأُ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا كَمَا مُلِئَتْ ظُلْمًا وجورا»
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2230) و ابوداؤد (4282) ۔
(حسن)
ব্যাখ্যা: তিনি (ইমাম মাহদী), যার প্রকৃত নাম হবে মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ। এখানে শী'আদের দাবিকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করা হয়েছে। তাদের দাবি হলো: প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী বর্তমান রয়েছেন এবং আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং তিনি মুহাম্মাদ ইবনু হাসান আল আসকারী। (আস্তাগফিরুল্লাহ)
(حَتَّى يَمْلِكَ الْعَرَبَ) ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম ‘আরব ভূখণ্ডের শাসক হবেন। 'ফাতহুল ওয়াদূদ' নামক গ্রন্থে রয়েছে যে, এখানে আরবদের নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে এই কারণে যে, কেননা তারাই জাতি হিসেবে মূল ও সম্মানিত।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এখানে অনারবদের কথা উল্লেখ না থাকলেও তারা এ বাক্যের অন্তর্ভুক্ত হবেন। কারণ যখন তিনি আরবের শাসনকর্তা হবেন তখন সকল মুসলিমের কালিমাহ্ একই হবে এবং তারা সকলেই একটি হাতের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হবেন। ('আওনুল মা'বুদ ৭ম খণ্ড, ৩৪৬ পৃ., হা, ৪২৭৬)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৩-[১৭] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি। [রসূল (সা.) বলেছেন] মাহদী আমার বংশের তথা ফাতিমার বংশ হতে জন্মলাভ করবেন। (আবু দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «الْمَهْدِيُّ مِنْ عِتْرَتِي مِنْ أَوْلَادِ فَاطِمَة» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
اسنادہ حسن ، رواہ ابوداؤد (4284) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: আল খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: আল ইতরাহ হলো কোন লোকের ঔরসজাত সন্তান। তবে কখনও এটা নিকটাত্মীয় অর্থে এর ব্যবহার হয়। যেমন আবূ বাকর (রাঃ) বলেন: আমরা নবী (সা.) -এর নিকট আত্মীয়। হাফিয ইমাদুদ্দীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: একাধিক হাদীস এ কথা প্রমাণ করে যে, ‘আব্বাসীয় রাজত্বকালের পর ইমাম মাহদী আলায়হিস সালাম-এর আগমন ঘটবে এবং তিনি আহলে বায়তের অন্তর্গত ফাত্বিমাহ্ (রাঃ) -এর সন্তান হাসান (রাঃ) -এর বংশ হতে জন্মগ্রহণ করবেন। আস্ সানাদী (রহিমাহুল্লাহ) ইবনু মাজাহর টীকায় উল্লেখ করেছেন যে, ইবনু কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, দারাকুত্বনীতে যে হাদীসটি এককভাবে ‘উসমান ইবনু 'আফফান (রাঃ) হতে মারফু'ভাবে বর্ণিত রয়েছে। “ইমাম মাহদী আলায়হিস সালাম রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর চাচা আব্বাস (রাঃ)-এর বংশধর থেকে আসবেন”। এটা সনদগতভাবে গরীব।
দারাকুত্বনী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: বনী হাশিম-এর কৃতদাস মুহাম্মাদ ইবনু ওয়ালীদ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মান্নাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এ হাদীসের সনদে অতি মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছে (আল্লাহই সর্বজ্ঞাত)। (আওনুল মা'বুদ ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৮, হা. ৪২৭৮)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৪-[১৮] আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: মাহদী হবেন আমার বংশের উজ্জ্বল চেহারা, উঁচু নাকবিশিষ্ট। ন্যায় ও ইনসাফ দ্বারা তিনি জমিনকে এমনভাবে পরিপূর্ণ করে দেবেন যেমনিভাবে তার আগে তা যুলম ও অবিচারে পরিপূর্ণ ছিল। আর তিনি সাত বছর ক্ষমতার মালিক থাকবেন। (আবু দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمَهْدِيُّ مِنِّي أجلى الْجَبْهَة وأقنى الْأَنْفِ يَمْلَأُ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا كَمَا مُلِئَتْ ظُلْمًا وَجَوْرًا يَمْلِكُ سَبْعَ سِنِينَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4285) * قتادۃ مدلس ، عنعن و للحدیث شواھد ضعیفۃ
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৫-[১৯] উক্ত রাবী [আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)] নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। ইমাম মাহদীর ঘটনা প্রসঙ্গে (রসূল সা.) বলেছেন, জনৈক ব্যক্তি তার কাছে এসে বলবে, হে মাহদী! আমাকে কিছু দান করুন! আমাকে কিছু দান করুন। তিনি (সা.) বলেছেন: তখন তিনি তাকে নিজের হাতের অঞ্জলি ভরে তার কাপড়ের মধ্যে এই পরিমাণ সম্পদ প্রদান করবেন, যতটুকু সে বহন করে নিয়ে যেতে পারে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قِصَّةِ الْمَهْدِيِّ قَالَ: فَيَجِيءُ إِلَيْهِ الرَّجُلُ فَيَقُولُ: يَا مَهْدِيُّ أَعْطِنِي أَعْطِنِي. قَالَ: فَيَحْثِي لَهُ فِي ثَوْبِهِ مَا اسْتَطَاعَ أَنْ يَحْمِلَهُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2232 وقال : حسن) [و ابن ماجہ (4083)] * فیہ زید العمی
ব্যাখ্যা: ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম ভিক্ষুকের বহনযোগ্যতা অনুযায়ী সম্পদ দান করবেন। ভিক্ষুক লোকটি যত মাল বহন করতে সক্ষম তত সম্পদ তাকে দান করবেন। কারণ সে সময় প্রচুর রাষ্ট্রীয় সম্পদ, গনীমত ও বিভিন্ন এলাকার বিজিত অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত সম্পদ থাকবে। এছাড়া তিনি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে দানশীল। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ১০৬ পৃ., হা. ২২৩২)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৬-[২০] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: (শেষ যামানায়) একজন খলীফার মৃত্যুর সময় লোকেদের মধ্যে দ্বিতীয় খলীফাহ নিয়োগের ব্যাপারে মতবিরোধ দেখা দেবে। তখন মদীনাহ্ থেকে এক ব্যক্তি বের হয়ে মক্কার দিকে ছুটে পলায়ন করবে। এ সময় মক্কাবাসীরা তার নিকট এসে তাকে বলপূর্বক ঘর হতে বের করে আনবে। কিন্তু সে তা পছন্দ করবে না। অতঃপর হাজারে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে লোকেরা তার কাছে বায়’আত গ্রহণ করবে। এরপর সিরিয়া থেকে একটি সৈন্যবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানো হবে। কিন্তু মক্কাহ্ ও মদীনার মাঝামাঝি ’বায়দা’ নামক স্থানে তাদেরকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে। অতঃপর যখন চতুর্দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়বে এবং লোকেরা বাস্তবে এ অবস্থা দেখতে পাবে, তখন সিরিয়ার ’আবদালগণ এবং ’ইরাকের এক বিরাট দল তার নিকট আসবে এবং তার হাতে বায়’আত করবে। অতঃপর কুরায়শের এক লোক যার একদল সৈন্য পাঠাবে, ইমামের সেনাবাহিনী তাদের ওপর জয় লাভ করবে। এটাই ’ফিতনায়ে কালব’। ইমাম মানুষের মধ্যে তাদের পয়গাম্বর (মুহাম্মাদ সা.)-এর সুন্নাত মোতাবেক কাজকর্ম পরিচালনা করবেন এবং পৃথিবীতে ইসলাম পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি সাত বছর এ অবস্থায় অবস্থান করবেন। অতঃপর ইন্তিকালের পর মুসলিমগণ তার জানাযাহ্ আদায় করবেন। (আবু দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَكُونُ اخْتِلَافٌ عِنْدَ مَوْتِ خَلِيفَةٍ فَيَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ هَارِبًا إِلى مكةَ فيأتيه الناسُ من أهل مَكَّة فيخرجوه وَهُوَ كَارِه فيبايعونه بَين الرُّكْن وَالْمقَام يبْعَث إِلَيْهِ بَعْثٌ مِنَ الشَّامِ فَيُخْسَفُ بِهِمْ بِالْبَيْدَاءِ بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَإِذَا رَأَى النَّاسُ ذَلِكَ أَتَاهُ أَبْدَالُ الشَّامِ وَعَصَائِبُ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَيُبَايِعُونَهُ ثُمَّ يَنْشَأُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ أَخْوَالُهُ كَلْبٌ فَيَبْعَثُ إِلَيْهِمْ بَعْثًا فَيَظْهَرُونَ عَلَيْهِمْ وَذَلِكَ بَعَثُ كلب وَيعْمل النَّاسِ بِسُنَّةِ نَبِيِّهِمْ وَيُلْقِي الْإِسْلَامُ بِجِرَانِهِ فِي الْأَرْضِ فَيَلْبَثُ سَبْعَ سِنِينَ ثُمَّ يُتَوَفَّى وَيُصَلِّي عَلَيْهِ الْمُسلمُونَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (4286) * قتادۃ مدلس و عنعن ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: ‘আলী (রাঃ) হতে হাসান সনদে বর্ণিত রয়েছে যে, সিরিয়া থেকে ইমাম মাহদীর আনুগত্য স্বীকার করবেন একদল আল্লাহভীরু ব্যক্তিবর্গ যারা সংখ্যায় চল্লিশজন হবেন। যখন তাদের মধ্য হতে কেউ মারা যাবে আল্লাহ তা'আলা তার স্থলে অন্যজনকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করবেন এবং আল্লাহ তা'আলা তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। আর তাদেরকে শত্রুদের ওপর সাহায্য করবেন। এ হাদীসটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন। আল আযীযী ও মান্নাবী (রহিমাহুল্লাহ) হাসান সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। মান্নাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: হাকিম-এর বর্ণনায় কিছু বর্ধিত রয়েছে যে, সে সকল লোকজন (উল্লেখিত ৪০ জন) সালাত, সিয়াম কিংবা তাসবীহ পাঠের কারণে অন্যদের থেকে অগ্রগামী হয়নি। বরং তারা উত্তম চরিত্র সততা, বিশুদ্ধ নিয়্যাত, প্রশান্ত হৃদয়ের হওয়ার জন্য তারা অন্যদের থেকে অগ্রগামী হয়েছে। তারাই আল্লাহর দল। ('আওনুল মা'বুদ ৭ম খণ্ড, ৩৫১ পৃ., হা, ৪২৮০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৭-[২১] আবু সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) - একদিন বিপদ-আপদের কথা আলোচনা করলেন, যা এ উম্মাতের শেষ সময় এসে পৌছবে। এমনকি কোন ব্যক্তি তা হতে আশ্রয়স্থল খুঁজে পাবে না। এ সময় আল্লাহ তা’আলা আমার বংশ ও আমার পরিবার হতে এক ব্যক্তিকে দুনিয়াতে পাঠাবেন। তিনি ন্যায় ও ইনসাফ দ্বারা জমিনকে এমনিভাবে পরিপূর্ণ করে দেবেন। যেমনিভাবে তা ইতোপূর্বে যুলম-অবিচারে পরিপূর্ণ ছিল। তার কার্যকলাপে আসমান ও জমিনের অধিবাসী সকলেই সন্তুষ্ট হয়ে যাবে। আকাশ তার এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট রাখবে না; বরং সম্পূর্ণই বের করে দেবে। (প্রাচুর্য ও সচ্ছলতা দেখে) জীবিত লোকেরা মৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করবে। লোকেরা এই অবস্থায় সাত অথবা নয় বছর জীবনযাপন করবে। (হাকিম তাঁর ’মুসতাদরাক’-এ বলেন, হাদীসটি সহীহ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَلَاءً يُصِيبُ هَذِهِ الْأُمَّةَ حَتَّى لَا يَجِدَ الرَّجُلُ مَلْجَأً يَلْجَأُ إِلَيْهِ مِنَ الظُّلْمِ فَيَبْعَثُ اللَّهُ رَجُلًا مِنْ عِتْرَتِي وَأَهْلِ بَيْتِي فَيَمْلَأُ بِهِ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا كَمَا مُلِئَتْ ظُلْمًا وَجَوْرًا يَرْضَى عَنْهُ سَاكِنُ السَّمَاءِ وَسَاكِنُ الْأَرْضِ لَا تَدَعُ السَّمَاءُ مِنْ قَطْرِهَا شَيْئًا إِلَّا صَبَّتْهُ مِدْرَارًا وَلَا تَدَعُ الْأَرْضُ مِنْ نَبَاتِهَا شَيْئًا إِلَّا أَخْرَجَتْهُ حَتَّى يَتَمَنَّى الْأَحْيَاءُ الْأَمْوَاتَ يَعِيشُ فِي ذَلِكَ سبعَ سِنِين أَو ثمانَ سِنِين أَو تسع سِنِين» . رَوَاهُ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الحاکم (4 / 465 و صححہ فقال الذھبی : سندہ مظلم) * عمر بن عبید اللہ العدوی : لم اجد من وثقہ غیر الحاکم و فی السند علۃ أخری
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৮-[২২] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (শেষ যামানায়) নহরের ঐ প্রান্ত (তথা বুখারা ও সমরকন্দ প্রভৃতি স্থান) থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটবে, যিনি ’হারিসে হাররাস’ নামে পরিচিত হবেন (হাররাস অর্থ কৃষক বা চাষি)। তার সেনাবহিনীর সম্মুখভাগে ’মানসূর’ নামে এক ব্যক্তি থাকবেন। তিনি মুহাম্মাদ (সা.) -এর পরিবার-পরিজনকে (ইমাম মাহদীকে) এমনভাবে আশ্রয় দান করবেন যেমনভাবে কুরায়শগণ আশ্রয় দিয়েছিল রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে। তখন সমস্ত ঈমানদারের ওপর তাকে (হারিস অথবা মানসূরকে) সাহায্য করা কিংবা তিনি (সা.) বলেছেন, তার ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয়ে যাবে। (আবু দাউদ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ وَرَاءِ النَّهْرِ يُقَالُ لَهُ: الْحَارِثُ حَرَّاثٌ عَلَى مُقَدِّمَتِهِ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: مَنْصُورٌ يُوَطِّنُ أَوْ يُمَكِّنُ لِآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا مَكَّنَتْ قُرَيْشٌ لِرَسُولِ اللَّهِ وَجَبَ عَلَى كُلِّ مُؤْمِنٍ نَصْرُهُ - أَوْ قَالَ: إِجَابَتُهُ - . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
اسنادہ ضعیف ، رواہ ابوداؤد (2 / 4290) * فیہ ابو الحسن الکوفی و ھلال بن عمرو : مجھولان ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা: যদিও কুরায়শগণ নবী (সা.) -কে প্রথমে মক্কাহ থেকে বের করে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সন্তান-সন্ততিরা পরবর্তীতে ইসালাম গ্রহণ করেছিল এবং নবী (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণকে তাঁর জীবদ্দশায় কিংবা তাঁর মৃত্যুর পর তারা আশ্রয় প্রদান করেছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের আলামত
৫৪৫৯-[২৩] আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সেই মহান সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ। সেই সময় পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত না পশু মানুষের সাথে কথা বলবে এবং যে পর্যন্ত না কারো চাবুক তার সাথে কথা বলবে এবং তার জুতার ফিতা তার সাথে কথা বলবে। আর তাকে তার উরু (রান) জানিয়ে দেবে যে, তার স্ত্রী তার অনুপস্থিতিতে কি (কুকর্ম) করেছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب أَشْرَاط السَّاعَة)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُكَلِّمَ السِّبَاعُ الْإِنْسَ وَحَتَّى تُكَلِّمَ الرَّجُلَ عَذَبَةُ سَوْطِهِ وَشِرَاكُ نَعْلِهِ وَيُخْبِرَهُ فَخِذُهُ بِمَا أَحْدَثَ أَهْلُهُ بَعْدَهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
صحیح ، رواہ الترمذی (2281 وقال : حسن صحیح غریب) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: জংলী হিংস্র প্রাণী যেমন: সিংহ অথবা হিংস্র পাখি যেমন বাজপাখি এদের কেউ মানবজাতির সঙ্গে মিশতে বাধা দিতে পারবে না। মানুষ ঈমানদার কিংবা কাফির যেই হোক না কেন এ প্রাণীগূলো সবার সাথেই কথা বলবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা. ২১৮১)