পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৮-[৩০] আবূ ওয়াক্বিদ আল লায়সী (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) হুনায়নের যুদ্ধে বের হলেন, তখন তিনি মুশরিকদের এমন এক গাছের নিকট দিয়ে গমন করলেন, যাতে তারা নিজেদের অস্ত্রসমূহ ঝুলিয়ে রাখত। উক্ত গাছটিকে ’যাতু আনওয়াত’ বলা হত। এটা দেখে কোন কোন নতুন মুসলিমরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ঐ সমস্ত মুশরিকদের মতো আমাদের জন্যও একটি ’যাতু আনওয়াত’ ধার্য করে দিন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) (বিস্ময় প্রকাশে) বললেন, ’সুবহা-নাল্ল-হ মূসা (আঃ)-এর সম্প্রদায়ও তাকে বলেছিল, “...(হে। মুসা!) আমাদের জন্য এরূপ উপাস্য নির্ধারণ করে দিন যেরূপ ঐ কাফির সম্প্রদায়ের উপাস্য রয়েছে...”(সূরাহ আল আ’রাফ ৭: ১৩৮)। তোমরাও তো সেরূপ কথা বললে, সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয় তোমরা ঐ সকল লোকদের পথ অনুকরণ করে চলবে, যারা তোমাদের আগে অতীত হয়ে গেছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَن أبي واقدٍ اللَّيْثِيّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا خَرَجَ إِلَى غَزْوَةِ حُنَيْنٍ مَرَّ بِشَجَرَةٍ لِلْمُشْرِكِينَ كَانُوا يُعَلِّقُونَ عَلَيْهَا أَسْلِحَتَهُمْ يُقَالُ لَهَا: ذَاتُ أَنْوَاطٍ. فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ اجْعَلْ لَنَا ذَاتَ أَنْوَاطٍ كَمَا لَهُمْ ذَاتُ أَنْوَاطٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سُبْحَانَ اللَّهِ هَذَا كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوسَى (اجْعَل لنا إِلَهًا كَمَا لَهُم آلهةٌ) وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَرْكَبُنَّ سُنَنَ مَنْ كَانَ قبلكُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2180 وقال : حسن صحیح) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : উম্মতে মুহাম্মাদী তাদের পূর্ববর্তীদের তথা ইয়াহূদ-নাসারাদের পথ-পদ্ধতি ও কর্মপন্থার অনুকরণ করবে। আলোচ্য হাদীসের সমর্থনে ইমাম হাকিম (রহিমাহুল্লাহ) ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেছেন: অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতি তথা ইয়াহূদ-নাসারাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে প্রতি বিঘতে বিঘতে ও প্রতি হাতে হাতে, এমনকি যদি তারা গুইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে তবে তোমরাও সেখানে প্রবেশ করবে। এছাড়া যদি তাদের কেউ রাস্তায় কোন মহিলার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয় তবে অবশ্যই তোমরাও সেটা করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫৪০৯-[৩১] ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহ.) বর্ণিত। তিনি বলেন, ইসলামের প্রথম ফিতনাহ্ হলো ’উসমান (রাঃ)-এর হত্যা। এরপর বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন সাহাবীও অবশিষ্ট ছিলেন না। দ্বিতীয় ফিতনাহ্ হলো ’হাররা’র রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, অতঃপর হুদায়বিয়ায় অংশগ্রহণকারী একজন সাহাবীও অবশিষ্ট রইলেন না। আর তৃতীয় ফিতনাহ্ সংঘটিত হওয়ার পর তা কখনো শেষ হয়নি, যতদিন মানুষের মধ্যে জ্ঞান ও সৎ গুণাবলি বিদ্যমান ছিল। (তখন সাহাবী ও তাবি’ঈদের কেউই অবশিষ্ট থাকেননি)। (বুখারী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَن ابْن الْمسيب قَالَ: وَقَعَتِ الْفِتْنَةُ الْأُولَى - يَعْنِي مَقْتَلَ عُثْمَانَ - فَلَمْ يَبْقَ مِنْ أَصْحَابٍ بَدْرٍ أَحَدٌ ثُمَّ وَقَعَتِ الْفِتْنَةُ الثَّانِيَةُ - يَعْنِي الْحَرَّةَ - فَلَمْ يَبْقَ مِنْ أَصْحَابِ الْحُدَيْبِيَةِ أَحَدٌ ثُمَّ وَقَعَتِ الْفِتْنَةُ الثَّالِثَةُ فَلَمْ تَرْتَفِعْ وَبِالنَّاسِ طَبَاخٌ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
رواہ البخاری (4024) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : ‘উসমান (রাঃ)-এর হত্যাটাই হলো প্রথম ফিতনাহ্ বা প্রথম বিপর্যয়। অতঃপর তার পরবর্তীতে বদরী কোন সাহাবী অবশিষ্ট ছিলেন না। অর্থাৎ তারা সকলেই ‘উসমান (রাঃ) -এর হত্যার ফিতনাহ্ ও আল হাররাতে সংঘটিত ফিতনার মধ্যবর্তী সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং তাদের মধ্যে সা'দ ইবনু ওয়াক্কাস (রাঃ) সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করেছেন এবং হাররায় সংঘটিত ফিতনার প্রায় দু' বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। (ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড, ৩৪২ পৃ., হা. ৪০২৪)
নিহায়াহ গ্রন্থে রয়েছে যে, হাররাহ্ হলো কালো পাথর বিশিষ্ট মদীনার একটি উচ্চভূমি। এখানে ইয়াযীদ ইবনু মু'আবিয়াহ-এর সময়কালে প্রসিদ্ধ একটি ঘটনা সংঘটিত হয়। যখন তার সৈন্যবাহিনী মদীনা দখল করে নিয়েছিল এবং শামবাসীরা তাদেরকে মদীনার অধিবাসী সাহাবী ও তাবিঈনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার বৈধতা দিয়েছিল এবং ৬৩ হিজরীর যিলহজ্জ মাসে মুসলিম ইবনু ‘উবাহ আল মুরিয়্যাহ্ তাদের ওপর আমীর নিযুক্ত হন। (মিক্বাতুল মাফাতীহ)