পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৪৬-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নামের মতো ভয়ঙ্কর কোন জিনিস আমি কক্ষনো দেখিনি, পলায়নকারী যা হতে ঘুমিয়ে রয়েছে। আর জান্নাতের মধ্যে আনন্দদায়কও কোন জিনিস দেখিনি, অন্বেষণকারী যা হতে ঘুমিয়ে রয়েছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا رَأَيْتُ مِثْلَ النَّارِ نَامَ هَارِبُهَا وَلَا مِثْلَ الْجَنَّةِ نَامَ طالبها» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
صحیح ، رواہ الترمذی (1633 وقال : حسن صحیح) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : (مَا رَأَيْتُ مِثْلَ النَّارِ) আগুনের বা জাহান্নামের চেয়ে ভয়ানক কিছু রয়েছে বলে আমার জানা নেই।
(امَ هَارِبُهَا) আগুন কঠিন হওয়া সত্ত্বেও তাকে পলায়নকারী ঘুমিয়ে আছে, উদাসীন রয়েছে অথচ এটা আগুন থেকে পলায়নকারীর বৈশিষ্ট্য নয়। তার উচিত হলো পাপ কাজ দ্রুত পরিহার করে আনুগত্যমূলক কাজে দ্রুত ঝাপিয়ে পড়া।
(وَلَا مِثْلَ الْجَنَّةِ نَامَ طالبها) এবং জান্নাতের মতো নি'আমাতপূর্ণ এবং মেহমানদারীর জায়গা অন্য কোথাও দেখিনি তথাপি এর অন্বেষণকারীরা ঘুমিয়ে আছে। অথচ তাদের উচিত ছিল উদ্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে সকল প্রকার আদেশ নিষেধ পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা. ২৬০১)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৪৭-[৯] আবূ যার (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমি যা দেখতে পাই তোমরা তা দেখতে পাও না। আর আমি যা শুনতে পাই তোমরা তা শুনতে পাও না। (ভারী ওযনে) আসমান কড়মড় করছে, আর এরূপ শব্দ করা তার জন্য মানানসই বটে। সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! আসমানের মধ্যে চার অঙ্গুলি জায়গাও এমন নেই যেখানে মালাক (ফেরেশতা)’র ললাট আল্লাহর জন্য সিজদারত নয়। (আখিরাতের বিভীষিকা সম্পর্কে) আমি যা অবগত আছি, যদি তোমরা জানতে পারতে তাহলে তোমরা হাসতে কম এবং কাঁদতে বেশি। আর বিছানায় স্ত্রীদের সাথে উপভোগ বিলাসে লিপ্ত হতে না, বরং চিৎকার করে আল্লাহর আশ্রয় লাভের জন্য জঙ্গলে চলে যেতে। (এতদশ্রবণে) আবূ যার (রাঃ) বলে উঠলেন, হায় রে! যদি আমি (মানুষ না হয়ে) বৃক্ষ হতাম যা কেটে ফেলা হয়। (আহমাদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ وَأَسْمَعُ مَا لَا تَسْمَعُونَ أَطَّتِ السَّمَاءُ وَحُقَّ لَهَا أَنْ تَئِطَّ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا فِيهَا مَوْضِعُ أَرْبَعَةِ أَصَابِعَ إِلَّا وملَكٌ وَاضع جبهتَه ساجدٌ لِلَّهِ وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بِالنِّسَاءِ عَلَى الْفُرُشَاتِ وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأَرُونَ إِلَى اللَّهِ» . قَالَ أَبُو ذَرٍّ: يَا لَيْتَنِي كُنْتُ شَجَرَةً تعضد. رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
حسن ، رواہ احمد (5 / 173 ح 21848) و الترمذی (2321 وقال : حسن غریب) و ابن ماجہ (4190) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : (إِنِّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ) আমি যা দেখি তোমরা তা দেখতে পাও না এবং যা শুনি তোমরা তা শুনতে পাও না।
(أَطَّتِ السَّمَاءُ) আকাশ মালায়িকার (ফেরেশতাদের) “ইবাদতে মুখরিত ধ্বনিতে শব্দে পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে এবং তার জন্য এটাই উপযুক্ত। সেখানে চার আঙ্গুল পরিমাণও জায়গা ফাঁকা নেই, সর্বত্র মালাক (ফেরেশতা) সিজদায় অবনত রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা তাদের অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, (وَ مَا مِنَّاۤ اِلَّا لَهٗ مَقَامٌ مَّعۡلُوۡمٌ) “আমাদের প্রত্যেকের জন্যই একটা নির্ধারিত স্থান রয়েছে।” (সূরাহ্ আস্ সফফাত ৩৭ : ১৬৪)
(اللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا) আল্লাহর কসম, আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে, বেশি বেশি কাঁদতে। আর বিছানায় স্ত্রীদের সাথে আনন্দ করতে না। তোমরা নির্জন ময়দানে বেরিয়ে পড়তে এবং আল্লাহর জন্য কান্নায় লুটিয়ে পড়তে যাতে করে তোমাদের বিপদাপদ বিদূরিত হয়।
(لَوَ دِدْتُ أني كُنْتُ شَجَرَةً تعضد) আবূ যার (রাঃ) বলেন, আমার ইচ্ছা হয়, যদি আমি মানুষ না হয়ে বৃক্ষ হতাম এবং আমাকে কেটে শেষ করা হত, তাহলে আমার কোন হিসাব থাকত না। (মিরকাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬/২৩১২)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৪৮-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে লোক ভয় পায় সে ভোররাতেই যাত্রা শুরু করে, আর ভোররাতেই যে লোক যাত্রা শুরু করে, সে গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে পারে। জেনে রাখ, আল্লাহ তা’আলার পণ্য খুবই দামী। জেনে রাখ, আল্লাহ তা’আলার পণ্য হলো জান্নাত। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ خَافَ أَدْلَجَ وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ الْمَنْزِلَ. أَلَا إِنَّ سِلْعَةَ اللَّهِ غَالِيَةٌ أَلَا إِنَّ سِلْعَةَ اللَّهِ الْجَنَّةُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ضعیف ، رواہ الترمذی (2450 وقال : حسن غریب) * یزید بن سنان : ضعیف ضعفہ الجمھور و ضعفہ راجح ۔
ব্যাখ্যা : (مَنْ خَافَ) যারা প্রভাতে শত্ৰুদলের আক্রমণকে ভয় পাবে।
(أَدْلَجَ) তারা প্রথম রাত্রিতে সফর করবে। (وَمَنْ أَدْلَجَ) যারা প্রথম রাত্রিতে সফর করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে না পৌছার আশঙ্কা করবে তারা রাত্রিতে বিনিদ্রিত থাকবে।
(بَلَغَ الْمَنْزِلَ) যারা রাত্রিতে বিনিদ্রিত থাকবে তারা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছে যাবে।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী (সা.) এ উপমাটি দিয়েছেন তাদের জন্য যারা পরকালের উদ্দেশে যাত্রাকারী। কেননা শয়তান তাদের পথে বাধা দিবে। প্রবৃত্তির তাড়না এবং মিথ্যা আশা-আকাঙ্ক্ষা তার সাহায্যকারী হবে। যদি সে তার যাত্রাপথে সজাগ থাকে এবং তার কার্যকলাপে একনিষ্ঠ থাকে, তাহলে সে শয়তানের চক্রান্ত এবং তার সহযোগীর সকল প্রতিবন্ধকতা থেকে নিরাপদে থাকবে।
(أَلَا إِنَّ سِلْعَةَ اللَّهِ غَالِيَةٌ) সাবধান! আল্লাহ তা'আলার পণ্যসামগ্রী তথা জান্নাতের ভোগ-বিলাসের সামগ্রী অনেক মূল্যবান।
(أَلَا إِنَّ سِلْعَةَ اللَّهِ الْجَنَّةُ) সাবধান! জেন রেখো, নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলার মূল্যবান পণ্যসামগ্রী হচ্ছে উন্নতমানের জান্নাত আর এর ক্রয়কারী সামগ্রী হচ্ছে পরকালীন ‘আমল। যার ইঙ্গিত রয়েছে আল্লাহ তা'আলার এ বাণীতে, (لۡمَالُ وَ الۡبَنُوۡنَ زِیۡنَۃُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ وَ الۡبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیۡرٌ عِنۡدَ رَبِّکَ ثَوَابًا وَّ خَیۡرٌ اَمَلًا) “আর স্থায়ী সৎকাজ তোমার রবের নিকট প্রতিদানে উত্তম এবং প্রত্যাশাতেও উত্তম।” (সূরাহ্ আল কাহফ ১৮ : ৪৬)
আর এদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে আল্লাহ তা'আলার এই বাণীতে, (نَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ) “নিশ্চয় আল্লাহ মু'মিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত”- (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১১১)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৫০)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৪৯-[১১] আনাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা বলবেন, জাহান্নাম হতে ঐ ব্যক্তিকে বের করে নাও, যে একনিষ্ঠ অন্তরে একদিন আমাকে স্মরণ করেছে অথবা কোন এক স্থানে আমাকে ভয় করেছে। (তিরমিযী আর বায়হাকী’র “কিতাবিল বাসি ওয়ান্ নুশূর”)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ جَلَّ ذِكْرُهُ: أَخْرِجُوا مِنَ النَّارِ مَنْ ذَكَرَنِي يَوْمًا أَوْ خَافَنِي فِي مَقَامٍ «رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ والْبَيْهَقِيُّ فِي» كِتَابِ الْبَعْث والنشور
حسن ، رواہ الترمذی (2594 وقال : حسن غریب) و البیھقی فی کتاب البعث و النشور (لم اجدہ و رواہ فی شعب الایمان (740) [و الحاکم (1 / 70)]
ব্যাখ্যা : (أَخْرِجُوا مِنَ النَّارِ مَنْ ذَكَرَنِي) যারা ঈমানের সাথে একনিষ্ঠভাবে আমার যিকর করেছে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে দাও।
(يَوْمًا) একদিন বা কিছু সময় বা কাল।
(أَوْ خَافَنِي فِي مَقَامٍ) অথবা পাপকাজ সম্পাদন করার ক্ষেত্রে, কোন একস্থানে আমাকে ভয় করেছে, যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, (وَ اَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ وَ نَهَی النَّفۡسَ عَنِ الۡهَوٰی ﴿ۙ۴۰﴾ فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ هِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۴۱﴾)
“আর যে স্বীয় রবের সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে, নিশ্চয় জান্নাত হবে তার আবাসস্থল।” (সূরা আন্ নাযি'আত ৭৯ : ৪০-৪১)
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী (সা.) উক্ত হাদীসে একনিষ্ঠতার সাথে যিকর করার কথা বলেছেন। আর তা হচ্ছে অন্তরের একনিষ্ঠতার সাথে বিশুদ্ধ নিয়্যাতে আল্লাহর একত্ব প্রতিষ্ঠা করা। অন্যথায় সকল কাফিরই মৌখিকভাবে আল্লাহর যিকর করে অন্তর দিয়ে নয়। এ কথার প্রমাণ হলো নবী (সা.) -এর বাণী, (مَنْ قَلَ لَا إِلَهَ إَلَّا اللَّهُ خَالِصًامِنْ قَلْبِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ) “যে ব্যক্তি অন্তরের একনিষ্ঠতার সাথে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ'-এর স্বীকৃতি প্রদান করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” আর ভয় দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে : অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে গুনাহের কাজ থেকে বিরত রাখা এবং তাকে আনুগত্যের কাজে নিয়োগ করা। নতুবা এটা হবে মনের প্রলাপ বাক্য এবং অস্থিরতা, যাকে ভয় বলা যায় না। আর তা হয়ে থাকে ভয়ঙ্কর কোন কিছু দর্শন করার ফলে। অতঃপর যখন উক্ত কারণ চলে যায় মন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
‘আল্লামাহ্ ফুযায়ল (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যখন তোমাকে প্রশ্ন করা হবে: তুমি কি আল্লাহকে ভয় কর? তখন তুমি চুপ থাকবে। কেননা তুমি যদি বল; না, তাহলে কুফরী করবে। আর যদি বল : হ্যা, তাহলে মিথ্যা বলবে। এর মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত করেছেন ঐ ভয়ের দিকে যা মূলত পাপ কাজ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বিরত রাখে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৯৪)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৫০-[১২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে একবার (নিম্নবর্ণিত) এ আয়াতটি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম- (وَالَّذِينَ يُؤْتونَ مَا آتوا وقُلوبُهم وَجِلَةٌ)
“এবং যারা তাদের যা দান করার তা ভীত-সন্ত্রস্ত অন্তরে দান করে”- (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩ : ৬০)। এরা কি তারা- যারা মদ্যপান করে এবং চুরি করে? তিনি বললেন, না, হে সিদ্দীকের কন্যা! বরং তারা এ আশঙ্কায় ভীত থাকে তাদের এ সমস্ত কাজগুলো সম্ভবত কবুল নাও হতে পারে। এরা ঐ সমস্ত লোক যারা অগ্রগামী থাকে কল্যাণময় কাজে। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ: (وَالَّذِينَ يُؤْتونَ مَا آتوا وقُلوبُهم وَجِلَةٌ) أَهُمُ الَّذِينَ يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ وَيَسْرِقُونَ؟ قَالَ: «لَا يَا بِنْتَ الصِّدِّيقِ وَلَكِنَّهُمُ الَّذِينَ يَصُومُونَ وَيُصَلُّونَ وَيَتَصَدَّقُونَ وَهُمْ يَخَافُونَ أَنْ لَا يُقْبَلَ مِنْهُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْن مَاجَه
حسن ، رواہ الترمذی (2675) و ابن ماجہ (4198) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা : (وَالَّذِينَ يُؤْتونَ مَا آتوا) “যারা যাকাত দেয় ও দান-খয়রাত ইত্যাদি কাজে অর্থ ব্যয় করে”
(وقُلوبُهم وَجِلَةٌ) “এবং তাদের অন্তর ভয়ে ভীত হয়ে থাকে” এ কারণে যে, যদি তাদের দান কবুল না হয় অথবা সঠিক পন্থায় ব্যয় না করার কারণে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। আয়াতের বাকী অংশ হচ্ছে, (اَنَّهُمۡ اِلٰی رَبِّهِمۡ رٰجِعُوۡنَ) “তারা তো তাদের রবের কাছেই প্রত্যার্তনকারী।
(ولٰٓئِکَ یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ) “তারা তো কল্যাণকর কাজে সর্বদা দ্রুত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।”
(وَ هُمۡ لَهَا سٰبِقُوۡنَ) “এবং তারা তাতে অগ্রগামী”- (সূরাহ্ আল মু'মিনূন ২৩ : ৬১)। অর্থাৎ তারা সমস্ত মানুষের চাইতে আনুগত্যমূলক কাজে অগ্রগামী। অথবা, সাওয়াবের দিকে অথবা জান্নাতের দিকে।
(أَهُمُ الَّذِينَ يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ وَيَسْرِقُونَ؟) আয়িশাহ্ (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, তাদের ভীত হওয়ার কারণ কি? তাহলে তারা কি মদ পান করে এবং চুরি করে? রাসূলুল্লাহ (সা.) ও উত্তর দিলেন, না, হে সিদ্দীক-এর কন্যা! বরং তারা হলো ঐ প্রকৃতির লোক যারা সিয়াম পালন করে, সালাত আদায় করে এবং দান-খয়রাত করে। কিন্তু তারা ভয় করে যে, তাদের ‘আমলগুলো যদি কবুল না হয়। তারা যে মন্দ কাজ করে না তার প্রমাণ হচ্ছে আয়াতে শেষাংশ : (اُولٰٓئِکَ یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ) অর্থাৎ “তারা তো সর্বদা কল্যাণকর কাজে দ্রুত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।” (وَ هُمۡ لَهَا سٰبِقُوۡنَ) “এবং তাতে তারা অগ্রগামী।” আর এটাই হচ্ছে আল্লাহ তা'আলার বাণী (وَالَّذِينَ يُؤْتونَ مَا آتوا) -এর তাফসীর। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৮/৩১৭৫)।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৫২-[১৪] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) একদিন সালাতের উদ্দেশে বের হয়ে দেখলেন, লোকেরা যেন হাসছে। তখন তিনি (সা.) বললেন, তোমরা যদি স্বাদ বিনষ্টকারী অর্থাৎ মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করতে তাহলে তা তোমাদেরকে বিরত রাখত তা হতে যা আমি দেখছি। কাজেই তোমরা সেই স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে খুব বেশি স্মরণ কর। প্রতিদিন কবর নিজের ভাষায় এ কথা বলতে থাকে, আমি পরিবার-পরিজনদের হতে দূরবর্তী একটি ঘর। আমি স্বীয় সাথিহীন একাকী ঘর, আমি মাটির ঘর, আমি পোকামাকড়ের ঘর। আর মুমিন বান্দাকে যখন দাফন করা হয়, তখন কবর এই বলে তাকে শুভেচ্ছা জানায়, তোমার আগমন বরকতময় হোক, তুমি আপনজনের কাছেই এসেছ। আমার পৃষ্ঠের উপরে যারা চলাফেরা করছে, তাদের সকলের চাইতে তুমি ছিলে আমার নিকট অধিক প্রিয়। আজ আমাকে তোমার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রক ধার্য করা হয়েছে এবং তোমাকে আমার নিকট ন্যস্ত করা হয়েছে। তুমি অচিরেই দেখতে পারবে আমি তোমার সাথে কিরূপ উত্তম আচরণ করি।
অতঃপর তিনি (সা.) বললেন, তখন তার দৃষ্টির প্রান্তসীমা পর্যন্ত কবর বিস্তৃত হয়ে যাবে এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দেয়া হবে! আর যখন পাপী অথবা কাফিরকে দাফন করা হয়, তখন কবর তাকে বলে তোমার আগমন কল্যাণকর নয় এবং তুমি আপনজনের নিকট আসনি। বস্তুত যারা আমার পৃষ্ঠের উপর বিচরণ করছে তাদের সকলের অপেক্ষা তুমিই ছিলে আমার নিকট সর্বাপেক্ষা ঘৃণিত। আজ আমাকেই তোমার ওপর পরিচালক বানানো হয়েছে। আমার নিকট তোমাকে ন্যস্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই দেখতে পাবে আমি তোমার সাথে কি ব্যবহার করি। তিনি (সাঃ) বলেন, তখন তার কবর তার উপর চাপ প্রয়োগ করবে, এমনকি তার পাঁজরের হাড় একটি আরেকটির ভিতরে ঢুকে পড়বে।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও নিজের উভয় হাতের অঙ্গুলিগুলো একটিকে আরেকটির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে (পাঁজরের হাড় ঢোকার দৃশ্যই ইঙ্গিতে) দেখালেন। তারপর বললেন, সেই নাফরমান কাফিরের জন্য সত্তরটি বিষধর অজগর স্থির করা হবে (তাদের বিষক্রিয়া এত অধিক হবে যে,) যদি তাদের একটি এই পৃথিবীতে একবার ফুক মারে তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত তার বিষের ক্রিয়ায় একটি ঘাসও উৎপন্ন হবে না। অবশেষে তাকে হিসাব-নিকাশে উপস্থিত করানো পর্যন্ত উক্ত অজগরসমূহ তাকে দংশন করতে ও ছোবল মারতে থাকবে। বর্ণনাকারী আবূ সাঈদ বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এই বললেন : কবর মূলত জান্নাতের উদ্যানসমূহের একটি উদ্যান অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের একটি গর্ত। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصَلَاةٍ فَرَأَى النَّاسَ كَأَنَّهُمْ يَكْتَشِرُونَ قَالَ: أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ أَكْثَرْتُمْ ذِكْرَ هَادِمِ اللَّذَّاتِ لَشَغَلَكُمْ عَمَّا أَرَى الْمَوْتُ فَأَكْثِرُوا ذكر هَادِم اللَّذَّات الْمَوْت فَإِنَّهُ لَا يأتِ على الْقَبْر يومٌ إِلَّا تَكَلَّمَ فَيَقُولُ: أَنَا بَيْتُ الْغُرْبَةِ وَأَنَا بَيْتُ الْوَحْدَةِ وَأَنَا بَيْتُ التُّرَابِ وَأَنَا بَيْتُ الدُّودِ وَإِذَا دُفِنَ الْعَبْدُ الْمُؤْمِنُ قَالَ لَهُ الْقَبْرُ: مَرْحَبًا وَأَهْلًا أَمَا إِنْ كُنْتَ لَأَحَبُّ مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَيَّ فَإِذْ وُلِّيتُكَ الْيَوْمَ وَصِرْتَ إِلَيَّ فَسَتَرَى صَنِيعِي بِكَ . قَالَ: فَيَتَّسِعُ لَهُ مَدَّ بَصَرِهِ وَيُفْتَحُ لَهُ بَابٌ إِلَى الْجَنَّةِ وَإِذَا دُفِنَ الْعَبْدُ الْفَاجِرُ أَوِ الْكَافِرُ قَالَ لَهُ الْقَبْرُ: لَا مَرْحَبًا وَلَا أَهْلًا أَمَا إِنْ كُنْتَ لَأَبْغَضَ مَنْ يَمْشِي عَلَى ظَهْرِي إِلَيَّ فَإِذْ وُلِّيتُكَ الْيَوْمَ وَصِرْتَ إِلَيَّ فَسَتَرَى صَنِيعِي بِكَ قَالَ: «فَيَلْتَئِمُ عَلَيْهِ حَتَّى يَخْتَلِفَ أَضْلَاعُهُ» . قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَصَابِعِهِ. فَأَدْخَلَ بَعْضَهَا فِي جَوْفِ بَعْضٍ. قَالَ: «وَيُقَيَّضُ لَهُ سَبْعُونَ تِنِّينًا لَوْ أَنَّ وَاحِدًا مِنْهَا نَفَخَ فِي الْأَرْضِ مَا أَنْبَتَتْ شَيْئًا مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا فَيَنْهَسْنَهُ وَيَخْدِشْنَهُ حَتَّى يُفْضِي بِهِ إِلَى الْحِسَابِ» قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا الْقَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2460) * عبید اللہ بن الولید الوصافی : ضعیف و عطیۃ العوفی ضعیف مدلس و لبعض الحدیث شواھد ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصَلَاةٍ) নবী (সা.) সালাতের উদ্দেশে বের হওয়ার বাহ্যিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সেটা ছিল জানাযার সালাত। কেননা নবী (সা.)-এর ব্যাপারে এটা প্রমাণিত যে, তিনি জানাযাহ্ দেখলে প্রচণ্ড চিন্তিত হয়ে পড়তেন এবং অল্প কথা বলতেন।
(فَرَأَى النَّاسَ كَأَنَّهُمْ يَكْتَشِرُونَ) তিনি প্রত্যক্ষ করলেন যে, লোকেরা হাসাহাসি করছে। (يَكْتَشِرُونَ) শব্দটি (كثر) মূল ধাতু থেকে নেয়া হয়েছে। যার অর্থ হাসার জন্য দাঁত বের করা। সম্ভবত এ শব্দটিতে ‘তা’ হরফটি মুবালাগাহ্ বা আধিক্যের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অতএব এই শব্দ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, তারা অধিক হাসাহাসি ও কথার সমন্বয় করেছিল।
(قَالَ: أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ أَكْثَرْتُمْ ذِكْرَ هَادِمِ اللَّذَّاتِ) তিনি (সা.) বললেন, সাবধান! যদি তোমরা দুনিয়ার স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুর কথা বেশি করে স্মরণ করতে।
(لَشَغَلَكُمْ عَمَّا أَرَى) তাহলে তা তোমাদেরকে আমি যে অবস্থায় দেখছি তা থেকে বিরত থাকতে। অর্থাৎ তোমরা গাফেলদের মতো হাসাহাসি ও কথাবার্তায় লিপ্ত হতে না।
(إِنَّمَا الْقَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ) মূলত কবর হচ্ছে, জান্নাতের একটি বাগান নতুবা জাহান্নামের একটি গর্ত।
সুফইয়ান আস্ সাওরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যারা অধিক মাত্রায় কবরের কথা স্মরণ করে তারাই কবরকে জান্নাতের বাগান হিসেবে পায় আর যারা তা স্মরণ করা থেকে গাফেল থাকে, তারাই কবরকে জাহান্নামের গর্ত হিসেবে পায়।
(তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৬০, মিরকাতুল মাফাতীহ, শারূহু ইবনু মাজাহ ৩/৪২৫৮, শারহ সুনান আন্ নাসায়ী ২/১৮২৩)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৫৩-[১৫] আবূ জুহায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবায়ি কিরামগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। তিনি (সা.) বললেন, সূরা হূদ ও ঐরূপ সূরাগুলোই আমাকে বৃদ্ধ করে ফেলেছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَن أبي جُحَيْفَة قَالَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ شِبْتَ. قَالَ: «شَيَّبَتْنِي سُورَةُ هُودٍ وَأَخَوَاتُهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (فی الشمائل : 42) و الطبرانی فی الکبیر (22 / 123 ح 317) * ابو اسحاق عنعن و انظر الحدیث الآتی (5354) ۔
ব্যাখ্যা : (يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ شِبْتَ) হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো বার্ধক্যে পৌঁছে গেছেন অর্থাৎ আপনার তো মাথার চুল পেকে গেছে। তবে ‘আল্লামাহ্ কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ বার্ধক্য আসার পূর্বেই আপনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এর দ্বারা এটা উদ্দেশ্য নয় যে, আপনার মাথায় অনেক চুল, পেকে গেছে। যেহেতু তিরমিযী গ্রন্থে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, (مَاعَرَدْتُ فِي رأْسِ رَسُلَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِحْيَتِهِ إِلَّا أَرْبَعَ عَشْرَةَ شَعْرَةً بِيضًا) আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর মাথা ও দাড়িতে ১৪টির বেশি পাকা চুল গণনা করে পায়নি।
(قَالَ: «شَيَّبَتْنِي سُورَةُ هُودٍ وَأَخَوَاتُهَا») তিনি (সা.) উত্তর দিলেন। আমাকে সূরাহ্ হূদ এবং তার সমজাতীয় সূরাগুলো দুর্বল করে দিয়েছে। কেননা এ সূরাগুলোতে কিয়ামাতের ভয়ানক অবস্থার বর্ণনা রয়েছে এবং পূর্ববর্তী উম্মতের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হয়েছে। ফলে উম্মতের চিন্তায় আমি সময়ের পূর্বে বার্ধক্যে পৌছে। গেছি। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৮/৩২৯৭, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না
৫৩৫৪-[১৬] ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, সূরাহ্ হূদ, ওয়াকি’আহ্, মুরসালাত, ’আম্মা ইয়াতাসা- আলূন ও ইযাশ শামসু কুভভিরাত ইত্যাদি আমাকে বৃদ্ধ করে ফেলেছে। (তিরমিযী)
এ ব্যাপারে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হদীস (...لَايَلِجُ النَّارَ) “যারা আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করবে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে না” কিতাবুল জিহাদে উল্লেখ হয়েছে।
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ أَبُو بَكْرٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ شِبْتَ. قَالَ: شَيَّبَتْنِي (هود) و (المرسلات) و (عمَّ يتساءلون) و (إِذا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ) رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَذُكِرَ حَدِيثُ أَبِي هريرةَ: لَا يلج النَّار «فِي» كتاب الْجِهَاد
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3297) * ابو اسحاق عنعن و للحدیث شواھد ضعیفۃ و روی الطبرانی فی الکبیر (17 / 286 ۔ 287 ح 790) بسند حسن عن عقبۃ بن عامر رضی اللہ عنہ ان رجلاً قال : یا رسول اللہ ! شبت ؟ قال : ((شیتنی ھود و اخواتھا)) وھو یغنی عنہ ۔ 0 حدیث ابی ھریرۃ : لا یلج النار ، تقدم (3828) ۔
ব্যাখ্যা : (شَيَّبَتْنِي هود و المرسلات...) আমাকে সূরাহ্ হূদ, ওয়াকি'আহ্, মুরসালাত, ‘আম্মা ও ইযাশ শামসু কুভভিরাত সূরাহ্ বার্ধক্যে উপনীত করেছে। কেননা এই সূরাগুলোতে কিয়ামতের ভয়ানক অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)