পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৬৯৮-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরামের নিকট রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেয়ে অধিক প্রিয় ব্যক্তি আর কেউ ছিল না। কিন্তু তবুও তাদের অবস্থা এই ছিল যে, যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আগমন করতে দেখতেন তার সম্মানার্থে তাঁরা দাঁড়াতেন না। কেননা তারা জানতেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা পছন্দ করেন না। [তিরমিযী; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।][1]

عَن أنس بن مَالك قَالَ: لَمْ يَكُنْ شَخْصٌ أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانُوا إِذَا رَأَوْهُ لَمْ يَقُومُوا لِمَا يَعْلَمُونَ مِنْ كَرَاهِيَتِهِ لِذَلِكَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ

عن انس بن مالك قال: لم يكن شخص احب اليهم من رسول الله صلى الله عليه وسلم وكانوا اذا راوه لم يقوموا لما يعلمون من كراهيته لذلك. رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن صحيح

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সাহাবীগণের নিকট রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহজগতে অধিক, মর্যাদাবান, প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। সাহাবীগণ তাদের পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন সকলের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে। তারপরও তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মানের জন্য দাঁড়াতেন না। কেননা শারী‘আতে এটা নিষেধ। দু’টি হাদীসের মাঝে تعارض বা দ্বন্দ্ব হয়েছে। নিম্নে দ্বন্দ্বের বর্ণনা করা হলো :

আনাস (রাঃ)-এর হাদীসের মাধ্যমে বুঝা যায় যে, সহাবায়ি কিরামগণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনে তাঁর প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য দাঁড়াতেন না। পক্ষান্তরে আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদেরকে সা‘দ (রাঃ)-এর জন্য দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং প্রকাশ্যভাবে হাদীসদ্বয়ে দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে তার সমাধান প্রদান করা হলো :

যদিও হাদীস দু’টিতে দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়েছে, প্রকৃতপক্ষ উভয় হাদীসের মাঝে কোন দ্বন্দ্ব নেই। আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বানূ কুরায়যাকে উদ্দেশ্য করে সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ)-এর জন্য যে দাঁড়ানোর আদেশ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছিলেন তাঁর কারণ ছিল সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ) তখন আহত অবস্থায় গাধার পিঠে আরোহিত অবস্থায় পৌঁছেছিলেন তখন তাকে সাহায্য করার জন্য এ নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়ানোর আদেশ ছিল না, সেজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম قُومُوا إِلَى سيِّدكم বলেছেন। আর আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে সাহাবীগণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়ানো হতে নিষেধ করেছেন। এর অর্থ হলো সাহাবীগণ ‘আরবের রেওয়াজ ও নিয়ম অনুযায়ী অবনত মস্তকে অত্যন্ত অনুনয়-বিনয়ের সাথে মূর্তির মতো দাঁড়াতে অভ্যস্ত ছিলেন, তাই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নিয়মে দাঁড়াতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। ফলে সাহাবীগণ সে নিয়মে দাঁড়ানো বর্জন করেছেন। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৭৫৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৬৯৯-[৫] মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার মনের অভিলাষ এই যে, মানুষ তার সম্মুখে মূর্তির মতো দণ্ডায়মান থাকুক, সে যেন জাহান্নামকে নিজের বাসস্থান বানিয়ে নেয়। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن مُعَاوِيَة قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَتَمَثَّلَ لَهُ الرِّجَالُ قِيَامًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد

وعن معاوية قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من سره ان يتمثل له الرجال قياما فليتبوا مقعده من النار» رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যাঃ উল্লেখিত হাদীস সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি কারো সেবা করার জন্য দাঁড়ায়, সম্মান করার জন্য নয়। তাহলে তা জায়িয তাতে কোন সমস্যা হবে না। যেমনিভাবে প্রমাণিত হয়েছে সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ)-এর হাদীসের মাধ্যমে। হাদীসের মাঝে তার স্থান জাহান্নাম হবে তা ধমকস্বরূপ বলা হয়েছে অহংকারী ব্যক্তিদের জন্য। বলা হয় : সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ) হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, গভর্নর, ন্যায়বিচারক, শিক্ষকের জন্য দাঁড়ানো মুস্তাহাব তা মাকরূহ নয়। ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এই দাঁড়ানো হবে ভালো কাজে, সম্মানিত ব্যক্তিকে সম্মান প্রদান করার জন্য। যেমনিভাবে দাঁড়ানো হয়েছিল সা‘দ ইবনু মু‘আয এবং কা‘ব ইবনু মালিক-এর ক্ষেত্রে। শারহুস্ সুন্নাহয় বর্ণিত রয়েছে : আবূ মিজলায বর্ণনা করেন যে, মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ) বের হলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমির ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু জুবায়র (রাঃ) বসা ছিল। ইবনু ‘আমির দাঁড়ালেন এবং ইবনু জুবায়র বসা ছিল। অতঃপর মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার সম্মানার্থে লোকেদেরকে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আনন্দ পায় সে যেন জাহান্নামে নিজের বাসস্থান বানিয়ে নেয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৭০০-[৬] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঠিতে ভর দিয়ে আমাদের নিকট আগমন করলেন। আমরা তাঁর সম্মানার্থে দণ্ডায়মান হলাম। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ অনারব লোকেরা একে অপরের সম্মানার্থে যেভাবে দাঁড়ায়, তোমরা সেভাবে দাঁড়াবে না। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَّكِئًا عَلَى عَصًا فَقُمْنَا فَقَالَ: «لَا تَقُومُوا كَمَا يَقُومُ الْأَعَاجِمُ يُعَظِّمُ بَعْضهَا بَعْضًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي امامة قال: خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم متكىا على عصا فقمنا فقال: «لا تقوموا كما يقوم الاعاجم يعظم بعضها بعضا» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীসের সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। প্রথমত হাদীসটি দুর্বল। সুতরাং এ হাদীস দ্বারা কারো জন্য দাঁড়ানো যাবে তা প্রমাণিত হয় না। মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ কারো সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়ানো নিষেধ। ইমাম মুসলিম (রহিমাহুল্লাহ) হাদীস বর্ণনা করেছেন, জাবির (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তারা সালাত আদায় করে তার পিছনে বসেছিল। অতঃপর তিনি সালাম ফিরিয়ে বললেন, কিছুক্ষণ পূর্বে তোমরা তা করেছিলে যা পারস্য ও রোমের লোকেরা করে থাকে তারা দাঁড়িয়ে থাকে এবং তাদের নেতাগণ বসে থাকে তোমরা এরূপ করো না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

অনারবরা একে অপরের সম্মানার্থে দাঁড়ায় তোমরা এমনভাবে দাঁড়াবে না। এভাবে সেবাদাসের ভঙ্গিতে দাঁড়ানোকে নিষেধ করা হয়েছে। এর কারণ হলো : ১. প্রচলিত প্রথা দূরীকরণ : সেবাদাসের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামের শিক্ষা বিরোধী। মানুষ কেবল আল্লাহর সামনে মাথা নত করতে পারে আর কোথাও নয়। ২. আত্ম-অহংকারের মূলোৎপাটন : অহংকারের অধিকার একমাত্র আল্লাহর। কিন্তু তৎকালে ক্ষমতাশীল লোকেরা অন্যদের নিকট থেকে সেবাদাসের ভূমিকা আশা করত। তাদের এ অহংকার দূর করার জন্য এ বিধান জারী করা হয়েছে। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না’’- (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ২৩)। [সম্পাদক]


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৭০১-[৭] সা’ঈদ ইবনু আবুল হাসান (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকরাহ্ (রাঃ) এক মামলায় সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আগমন করলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি তাঁকে স্থান দেয়ার জন্য বৈঠক হতে উঠে দাঁড়াল। তিনি তার স্থানে বসতে অস্বীকার করলেন এবং বললেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা নিষেধ করেছেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তির কাপড় দ্বারা হাত মুছতে নিষেধ করেছেন, যাকে সে কাপড় পরিধান করায়নি। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن سعيد بن أبي الْحسن قَالَ: جَاءَنَا أَبُو بكرَة فِي شَهَادَةٍ فَقَامَ لَهُ رَجُلٌ مِنْ مَجْلِسِهِ فَأَبَى أَنْ يَجْلِسَ فِيهِ وَقَالَ: أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ ذَا وَنَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَمْسَحَ الرَّجُلُ يَدَهُ بِثَوْبِ مَنْ لَمْ يَكْسُهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن سعيد بن ابي الحسن قال: جاءنا ابو بكرة في شهادة فقام له رجل من مجلسه فابى ان يجلس فيه وقال: ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عن ذا ونهى النبي صلى الله عليه وسلم ان يمسح الرجل يده بثوب من لم يكسه. رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ হাদীসের অংশ (قَالَ: أَنَّ النَّبِىِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهٰى عَنْ ذَا) দ্বারা উদ্দেশ্য : ذَا শব্দটি ব্যবহার করে যা বুঝতে চেয়েছেন তা কয়েকটি অর্থে ব্যবহার হতে পারে। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :

১. ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন, কোন ব্যক্তি নিজ বসার স্থান ত্যাগ করার পর অন্য লোককে সেখানে বসাবে। ২. মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ নিজে বসার উদ্দেশে কোন ব্যক্তিকে বসার স্থান হতে উঠিয়ে দেয়া। স্বেচ্ছায় যে কোন ব্যক্তি নিজের স্থান ছেড়ে অন্যকে বসতে দিলে শারী‘আত তা জায়িয বলেছে।

অন্যের কাপড়ে হাত মোছার বিধান : ক. ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ যখন হাতে খাদ্য লেগে যাবে তখন বিনা অনুমতিতে অন্যের কাপড় রুমাল, লুঙ্গি কোনটি ব্যবহার করা জায়িয নেই। খ. মুযহির (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ অপরিচিত বা অন্যের কাপড়ে হাত মোছা নিষেধ। তবে দাস-দাসী, ছেলে বা যাকে কাপড় পরিধান করাচ্ছে তাঁর কাপড়ে হাত মোছা জায়িয। কাপড়ওয়ালা সন্তুষ্ট থাকলে যে কোন ব্যক্তির কাপড়ে হাত মোছা জায়িয। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হা ৪৮১৯)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৭০২-[৮] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বসতেন, আমরাও তাঁর চতুষ্পার্শ্বে বসে যেতাম। তাঁর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি উঠে যেতেন এবং পুনরায় ফিরে আসতে ইচ্ছা করতেন, তখন নিজের জুতা বা পরিধেয় কোন বস্ত্র রেখে যেতেন। এতে তাঁর সাহাবীগণ তাঁর প্রত্যাগমনের কথা বুঝতেন এবং নিজ নিজ স্থানে বসে থাকতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أبي الدرداءِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا جلس - جلسنا حوله - فَأَرَادَ الرُّجُوعَ نَزَعَ نَعْلَهُ أَوْ بَعْضَ مَا يَكُونُ عَلَيْهِ فَيَعْرِفُ ذَلِكَ أَصْحَابُهُ فَيَثْبُتُونَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي الدرداء قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا جلس - جلسنا حوله - فاراد الرجوع نزع نعله او بعض ما يكون عليه فيعرف ذلك اصحابه فيثبتون. رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ সাহাবীগণ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে, ডানে এবং বামে বসতেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, মাজলিসে বসা নিষিদ্ধ।

(حوله - فَأَرَادَ الرُّجُوعَ نَزَعَ نَعْلَهٗ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি হালকা, ছোট কোন প্রয়োজনে মাজলিস ত্যাগ করতেন এবং আবার ফিরে আসার ইচ্ছা করতেন তাহলে মাজলিসে জুতা পাগড়ী বা অন্য কিছু নিজ স্থানে রেখে যেতেন।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সম্ভবত রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালি পায়ে হেঁটে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর ঘরে যেতেন। দূরবর্তী কোথাও গেলে খালি পায়ে হেঁটে যেতেন না। জুতা পরে যেতেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৭০৩-[৯] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির জন্য অপর দু’ ব্যক্তির মাঝে ব্যবধান সৃষ্টি করা (মাঝখানে বসে) বৈধ নয়। তবে হ্যাঁ, যদি উভয়ের অনুমতি থাকে, তবে বসতে পারে। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن عبد الله بن عَمْرو عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَحِلُّ لِرَجُلٍ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَ اثْنَيْنِ إِلَّا بِإِذْنِهِمَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ

وعن عبد الله بن عمرو عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا يحل لرجل ان يفرق بين اثنين الا باذنهما» . رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যাঃ উক্ত হাদীস এবং পরবর্তী হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, দু’জন ব্যক্তির মাঝে ব্যবধান সৃষ্টি করা ও তাদের মাঝে বসা কোন ব্যক্তির জন্য জায়িয নয়। কেননা তাদের মাঝে গভীরতম বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা থাকতে পারে। এমতাবস্থায় ভিন্ন তাহলে তাদের কষ্ট হতে পারে। তবে তারা অনুমতি দিলে বসা জায়িয হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডায়মান হওয়া

৪৭০৪-[১০] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ ব্যক্তির মাঝখানে বসো না, যতক্ষণ না তাদের অনুমতি লাভ করো। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو
بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تَجْلِسْ بَيْنَ رَجُلَيْنِ إِلَّا بإِذنهما» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا تجلس بين رجلين الا باذنهما» . رواه ابو داود

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে