পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অনুমতি প্রার্থনা

৪৬৭৪-[৮] ’আত্বা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল, আমি নিজের মায়ের কাছে যেতে কি অনুমতি চাইব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ। লোকটি জিজ্ঞেস করল, আমি এবং আমার মা একসাথে একই ঘরে বসবাস করি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যখন তাঁর কাছে যাবে, তখন অনুমতি নিয়ে যাবে। তখন লোকটি বলল, আমি মায়ের পরিচর্যাকারী (খিদমাতে থাকি)। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ অনুমতি নিয়ে তাঁর কাছে যাবে। তুমি কি তোমার মাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পছন্দ করো? লোকটি বলল : না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ অতএব অনুমতি নিয়ে তাঁর কাছে যাও। [ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।)[1]

عَنْ عَطَاءٍ أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَسْتَأْذِنُ عَلَى أُمِّي؟ فَقَالَ: «نَعَمْ» فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنِّي مَعَهَا فِي الْبَيْتِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْتَأْذِنْ عَلَيْهَا» فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنِّي خَادِمُهَا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْتَأْذِنْ عَلَيْهَا أَتُحِبُّ أَنْ تَرَاهَا عُرْيَانَةً؟» قَالَ: لَا. قَالَ: «فَاسْتَأْذِنْ عَلَيْهَا» . رَوَاهُ مَالِكٌ مُرسلاً

عن عطاء ان رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: استاذن على امي؟ فقال: «نعم» فقال الرجل: اني معها في البيت. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «استاذن عليها» فقال الرجل: اني خادمها. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «استاذن عليها اتحب ان تراها عريانة؟» قال: لا. قال: «فاستاذن عليها» . رواه مالك مرسلا

ব্যাখ্যাঃ কাযী আবূ মুহাম্মাদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অনুমতি নেয়া ওয়াজিব। তিনবার অনুমতি না নেয়া পর্যন্ত প্রবেশ নিষেধ। এর দলীল সূরাহ্ আন্ নূর-এর ২৭ নং আয়াত। ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তিনবার অনুমতি নেয়ার হুকুম সাব্যস্ত হয় আল্লাহর বাণী حَتّٰى تَسْتَأْنِسُوا ‘‘তোমরা অনুমতি ব্যতীত (প্রবেশ করো না)’’ শব্দ থেকে।

শায়খ আবুল কাসিম (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তিনের বেশি অনুমতি চাওয়া উচিত নয়। তবে এতেও যদি শুনতে পেয়েছে বলে বুঝা না যায় তখন তিনবারের বেশি অনুমতি নিতে কোন দোষ নেই।

পুরুষেরা তার মায়ের নিকটে, মাহরাম ও যাদের লজ্জাস্থানের উপর নযর দেয়া দৃষ্টি সর্বদা হারাম তাদের নিকটে অনুমতি চাইতে হবে। সে কারণে মায়ের নিকট অনুমতি চাওয়া সম্পর্কে প্রশ্নকারী ব্যক্তি নিজেকে মায়ের খাদেম বললেও তাকে মায়ের নিকটে অনুমতি নিতে বলেই ক্ষান্ত হননি। বরং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তুমি কি তোমার মাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে চাও? কারণ সে যখন বিনা অনুমতিতে হঠাৎ এসে পড়বে তখন সে তার মাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পারে, যা তার জন্য হালাল নয়। কিন্তু হ্যাঁ, স্ত্রীর নিকটে এবং দাসী যাদের লজ্জাস্থানের উপর নযর দেয়া হালাল তাদের নিকটে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে পারবে। (মুওয়াত্ত্বা ৯ম খন্ড, হাঃ ১৭৩৯)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আতা ইবনু ইয়াসার (রহ.)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অনুমতি প্রার্থনা

৪৬৭৫-[৯] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার জন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট রাত ও দিনের বেলা সর্বদাই যাওয়ার অনুমতি ছিল। আমি তাঁর নিকট রাতের বেলা গমন করলে তিনি আমাকে অনুমতি দেয়ার জন্য গলা খেকড় দিতেন। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ لِي مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَدْخَلٌ بِاللَّيْلِ وَمَدْخَلٌ بِالنَّهَارِ فَكُنْتُ إِذَا دخلتُ بِاللَّيْلِ تنحنح لي. رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن علي رضي الله عنه قال: كان لي من رسول الله صلى الله عليه وسلم مدخل بالليل ومدخل بالنهار فكنت اذا دخلت بالليل تنحنح لي. رواه النساىي

ব্যাখ্যাঃ অপর বর্ণনায় রয়েছে, আমি যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে আসতাম, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাত আদায় করতেন। আর এমতাবস্থায় তিনি গলা খেকড় দিতেন। এখান থেকে বুঝা যায়, প্রয়োজনে সালাতের মধ্যে গলা খেকড় দেয়া যায়। যারা বলেন যে, গলা খেকড় দিলে সালাত নষ্ট হয়ে যায় তারা এ হাদীস সম্পর্কে বেখবর। (মিশকাতুল মাসাবীহ- বোম্বায় ছাপা, ৪র্থ খন্ড, ২৪ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অনুমতি প্রার্থনা

৪৬৭৬-[১০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম না করবে, তাকে তোমরা অনুমতি দেবে না। [ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি শু’আবুল ঈমানে বর্ণনা করেন।][1]

وَعَنْ
جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تَأْذَنُوا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأْ بالسلامِ» رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»

وعن جابر ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لا تاذنوا لمن لم يبدا بالسلام» رواه البيهقي في «شعب الايمان»

ব্যাখ্যাঃ এ হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, অনুমতি নেয়ার পূর্বে সালাম দেয়া আবশ্যক। এ অধ্যায় থেকে এটাও জানা গেল যে কারো বাড়িতে অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করা নিষেধ এবং এটা জরুরী বিষয়। এ রীতি মত, আদর্শ, জ্ঞানী ও সভ্য মু’মিনের। কিন্তু জাহিল, মূর্খ ও অসভ্য লোকেরা অন্য ডাক দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে এবং অপমান লাঞ্ছনা-গঞ্ছনার স্বীকার হয়। যারা বাড়িতে সবসময় যাওয়া আসা করে তাদেরও তিন সময়ে অনুমতি নেয়া উচিত। একবার ফজরের সালাতের পূর্বে, একবার দুপুরের পরে যখন মানুষেরা বিশ্রাম নিবে। আর একবার ‘ইশা সালাতের পরে যেমন কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। এ বিধান এজন্য যে, মানুষ কখনো নিজের স্থানে ব্বিস্ত্র হয়ে থাকতে পারে অথবা স্ত্রী কিংবা দাসীদের সাথে যৌন কর্মে লিপ্ত থাকতে পারে। (মিশকাতুল মাসাবীহ- বোম্বায় ছাপা, ৪র্থ খন্ড, ২৫ পৃষ্ঠা)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে